by Anamul Bhuiyan Mukul | July 19, 2015 1:01 am
জীবন ভ্রমন ১ & ২ :
জীবন ভ্রমন ১ :অনেক সময় মনে হয় কোথায় জন্মেছি , কোথায় বড় হয়েছি , আর কোথায় থাকি । ১৯৭২ সালের জুলাই অগাস্ট মাস । ঢাকায় আগমন । যুদ্দ্ব বিধ্বস্ত ঢাকা । মতিঝিলে সরকারী একটি ডাকবাংলায অস্থায়ী আবাসন দেওয়া হয় আব্বাকে । সন্ধার পর একটা ভুতুরে ভাব ছিল । নির্দেশ ছিল রাত সাতটার পর দরজা খোলা যাবে না । এই বাংলায় কিছু সরকারী সম্পত্তি ছিল । গেট টপকিয়ে ভিতরে ঢুকে পিছনের দরজা খোলার জন্য দমক দিত । টিন শেড বিল্ডিং । টয়লেট ও বাথ রুম ছিল বাহিরে । এক রাতে টয়লেট এ যাই । টিনের চালে শব্দ শুনে ভয়ে ঘরে ঢুকে যাই । সকালে দেখি ছাদ বিহীন টয়লেট । গুলির শব্দ শুনে আববা এক রাতে দরজা খুলে দেয় । অনেক কিছু নিয়ে যায় । । জনৈক বিহারী চলে যাওয়ার পর আববা একটা বাসা পায় । শুনেছি আমাদের আগে দুইজন অফিসার এই বাংলায় ছিল। দুই তিন মাসের ঘটনা বহুল ডাকবাংলোর ছোট কাল । (অসমাপ্ত )
জীবন ভ্রমন ২ : ১৯৭২ সালের যুদ্ধ বিধ্বস্ত ঢাকা আর বর্তমান ঢাকার স্ট্রাকচারাল ব্যবধান আকাশ-পাতাল । মতিঝিল ,আরামবাগ ,শাজাহানপুর, পল্টন, শান্তিনগর এলাকায় খাদ-খন্দক বিহীন ২০০ মিটার রাস্তা পাওয়া দুষ্কর ছিল । বর্তমান ইট- পাথরের সভ্যতা আর তখনকার টিন-কাঠ-মাটি ও মানুষের সভ্যতার বেবধান অনেক । ১৯৭১ সালটা গ্রামের বাড়িতেই কাটে । আমাদের বাড়িতে মুক্তি যোদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকার সুবাদে সরাসরি যুদ্দ্বের শত শত গুলির আওয়াজ শুনেছি ,অস্ত্র দেখেছি , রাজাকার দেখেছি , পানিতে ভেসে আসা লাশ দেখেছি ।
তৃতীয় শ্রেণীর মাঝপর্যন্ত আমাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে যাই । আমাদের বাড়ি থেকে তিন থেকে চারশ মিটার দুরুত্ব । এর মাঝে রাস্তা একটু কাটা ছিল , ছোট একটা খালের মুখ ও ধান খেতের সংযোগস্থলে । বর্ষা কালে যতক্ষণ পর্যন্ত মুরুব্বিরা লুঙ্গি উচিয়ে যেতে পারত ততক্ষণ পর্যন্ত সাকো হতো না । আর এই সময়টা আমাদের লুঙ্গি / হাফ পেন্ট মাথায় করে পার হতে হতো । কি মজাই না পেতাম । কতবার যে বইগুলো ভিজিযেছি। ভিজা বই নিযে বাড়ি ফিরে দুই চারটা বকাও খেতে হয়েছে । একবার কাল বৈশাখিতে স্কুল ঘরটি ভেঙ্গে যায় । স্কুল এর পাশে বট গাছ তলায় বসে নামতা শিখা । আজ ও সেই নামটা দিয়েই বিদেশ-অফিসে সব অংক চেক করি ।
১৯৭২ সালে ঢাকায় এলাকার পাশের রাস্তায় একটা আধা পোড়া গাড়ি পড়ে ছিল । আমরা এলাকার সমবয়সী কয়েকজন ভাংগা সীটে বসে প্রায়ই steering ও accelerator নিয়ে খেলতাম । একদিন ঐ গাড়ির পাশে একটা লাশ দেখার পর আর ঐ গাড়িতে খেলা হয নি । এখন ড্রাইভিং সীটে বসলে প্রায়ই ওই গাড়িটির কথা মনে হয় । (অসমাপ্ত )
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2015/%e0%a6%9c%e0%a7%80%e0%a6%ac%e0%a6%a8-%e0%a6%ad%e0%a6%ae%e0%a6%a8-1-2/
Copyright ©2024 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.