টিম বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া মিশন!
এই বিশ্বকাপ ক্রিকেট উৎসব উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়া এসে প্রথম অঘটন ঘটিয়েছেন একজন সাংবাদিক! এবার ঘটালেন একজন খেলোয়াড়! সিডনি আসার পথে বিমানে এক কোরীয় তরুনীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে এখন সিডনির ব্ল্যাকটাউনের কাছের একটি জেলে আছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাংবাদিক রহমান পিয়ার। আর এখন শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে বিশ্বকাপের কোন ম্যাচ খেলার আগেই আকসুর অভিযোগের ভিত্তিতে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে পেসার আল আমিন হোসেনকে। সোমবার এমিরেটসের ফ্লাইটে তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য এই বিশ্বকাপে আর কোন দেশ-দলের কোন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত এ ধরনের অভিযোগ ওঠেনি। ক্যানবেরায় আফগানিস্তানকে হারানোর পর উজ্জিবিত দল নিয়ে যে আশা করা হচ্ছিল, আল আমিনের ঘটনা যেন হঠাৎ সেখানে ঢেলে দিয়েছে হতাশার জল! সূত্রগুলো বলেছে শনিবার ব্রিসবেনে অনেক রাতে হোটেলে ফিরেছেন আল আমিন হোসেন। নিয়ম হচ্ছে কোন খেলোয়াড় রাত ১০ পর হোটেলে ফিরলে আগে থেকে টিম ম্যানেজমেন্টের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু আল আমিন হোসেন তা নেননি। ক্যানবেরায় থাকতেও তার গতিবিধি আকসুর কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছিল। কিন্তু ব্রিসবেনে তার চলাচলে তাদের আরও সন্দেহ বাড়লে আকসু তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর তারা অফিসিয়েলি বিষয়টি বিসিবিকে জানায়। আকসু আসলে খেলোয়াড়দের সঙ্গে জুয়াড়ি সঙ্গের বিষয়ে সন্দেহ-অনুসন্ধান করে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছেন, আকসু আল আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে কোন দূর্নীতির অভিযোগ করেনি। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ বিসিবির কাছে আসায় তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এরসঙ্গে শেষ হয়ে যাচ্ছে তার বিশ্বকাপ মিশন!
ঝিনাইদহের ছেলে আল আমিন নামের অর্থ বিশ্বাস। বিশ্বাস রাখতে পারলেন না আল আমিন হোসেন! আল আমিনের খোঁজ নিতে রবিবার রাতে ব্রিসবেনের ওয়াকিফাল প্রবাসী বাংলাদেশি সূত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করলে একটি সূত্র বলেছে, একটা প্লেয়ার নিয়মের বাইরে বেশিক্ষন হোটেলের বাইরে ছিল, এ আবার এমন কী! টিম ম্যানেজমেন্টেই যদি শৃংখলা না থাকে তাহলে খেলোয়াড়রা শিখবে কার কাছে? শনিবার রাতে বিসিবির উর্ধতন কর্তা ব্যক্তিরা ব্রিসবেনের ওয়েস্ট ইনের মাটার হাসপাতালের কাছে বেঙ্গল কিচেন নামের এক রেষ্টুরেন্টে অনেক রাত পর্যন্ত ছিলেন বিয়ারের আড্ডায়! বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, গুরুত্বপূর্ন সদস্য নাইমুর রহমান দূর্জয়ও সেই আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উপস্থিত একটি সূত্র বলেছে বিদেশে এসে তারা যার যার হোটেলে বসে বিয়ার গিলতেই পারেন। কিন্তু একটি বাংলাদেশি রেষ্টুরেন্টে তাদের এই আচরন প্রবাসীদের চোখে দেশিয় সংস্কৃতির পরিপন্থী মনে হলেও তাদের তা কেন মনে হলোনা তা প্রবাসীদের বিস্মিত করেছে। একটি সূত্র বলেছে আল আমিনকে তিনি শুক্র-শনিবার দিনে রাতের একাধিক সময়ে বাংলাদেশের এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছেন। সেখানেও তার দেরি হলো কীনা তা তিনি নিশ্চিত বলতে পারেন নি। একটি সূত্র বলেছে শনিবার রাতে পুরো টিমই রাত দশটার পরেও হোটেলের বাইরে ছিল। আল আমিন বাইরে ছিল আরেকটু বেশি সময়। শনিবার রাতে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কে কোথায় ছবি তুলেছেন, সেগুলো খোঁজা হচ্ছে। আল আমিনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সিডনি-ক্যানবেরার সূত্রগুলো বেশ কিছু তথ্য দিয়ে বলেছে, দলটাকে তাদের কেমন যেন লাগামছাড়া মনে হয়েছে! ঢাকায় রুবেলের ঘটনা জানাজানি হবার পর বিসিবির সভাপতি বলেছিলেন, টিম বাংলাদেশের সদস্যদের ওপর নজরদারি আরোপ করা হবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া আসার পর সেটির দেখভাল যে শুরু হয়েছে তা ওয়াকিফহালদের মনে হয়নি। চট্টগ্রামের স্কুল জীবনের এক সহপাঠিনী নুশরাতের সঙ্গে সিডনি ঘুরে বেড়িয়েছেন তামিম ইকবাল। নুশরাত তামিমকে সিডনির লাকেম্বার একটি বাংলাদেশি রেষ্টুরেন্টেও নিয়ে এসেছিলেন। সিডনির রকডেলের হাটবাজার রেষ্টুরেন্টে অনেক রাত পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশি মেয়েসঙ্গ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন রুবেল আর নাসির হোসেন! আরও অনেকের উপস্থিতিতে মেয়ে বন্ধু অথবা ভক্তরা তাদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছিলেন, তারা তাদের চুল হাতিয়ে গল্প করছিলেন! ক্যানবেরার একটি সূত্র বলেছে খেলোয়াড়রা যেভাবে যার তার বাসায় খেতে চলে যাচ্ছিল তাতে তাদের ভয় করছিল এদের ফুড পয়েজনিং হলে তাদের খেলার কী দাঁড়াবে? খেলোয়াড়দের যার তার ড্রাইভিং’এ এখানে সেখানে চলে যাবার বিষয়টিও তাদের খুব অনিরাপদ মনে হয়েছে।