কী কী তথ্য উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে?

কী কী তথ্য উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে?

তদন্ত চলছে জোর কদমে। কী কী তথ্য উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে?

প্যারিস হামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত মেলা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখে নিন এক নজরে:
১) তিনটি দলে ভাগ হয়ে প্যারিসের তিনটি জায়গা- বাতাক্লাঁ মিউজিক হল, ল্য কারিলন বার ও ল্য পতি কামবুজ রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা।
২) ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১২৯। জখম সাড়ে তিনশোরও বেশি।
৩) মৃত্যু হয়েছে সাত জঙ্গির। তাদের মধ্যে ছয় জনই আত্মঘাতী হয়েছিল। এক জন নিহত হয় পুলিশের গুলিতে। কেউ কেউ বলছে, জঙ্গি ছিল আট জন। তারা সকলেই এসেছিল কালো পোশাক পরে। কালাশনিকভ রাইফেল ছাড়াও তাদের হাতে ছিল প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র। মাথায় হেলমেট ছিল তিন জঙ্গির। তাদের গায়ে ও কোমরে জড়ানো ছিল বেল্ট, যাতে প্রচুর বিস্ফোরক রাখা ছিল। তারা গুলি চালাতে চালাতে জিহাদি স্লোগান দিচ্ছিল। তবে সেই অষ্টম জনের হদিশ এখনও মেলেনি। জঙ্গিরা আট জনই এসেছিল কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে।
৪) ফরাসি পুলিশের চিফ প্রসিকিউটর ফ্রাঁসোয়া মলিন্স বলেছেন, ‘‘জঙ্গিরা কোথা থেকে এসেছিল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। কারা তাদের অর্থ জুগিয়েছিল, তারও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।’’
৫) হত জঙ্গিদের মধ্যে এক জনের পরিচয় মোটামুটি ভাবে জানা গিয়েছে। তার নাম- ওমর ইসমাইল মোস্তাফি। ২৯ বছর বয়সী মোস্তাফি এক জন ফরাসি নাগরিক। বহু ছোটখাটো মামলায় তার নাম রয়েছে পুলিশের খাতায়। তবে সে কখনও জেল খাটেনি। তার মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল তার একটি কাটা আঙুল। সেই আঙুলের সঙ্গে পুলিশের রেকর্ডে থাকা ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলে গিয়েছে। মোস্তাফির বাড়ি প্যারিস শহরের উত্তর প্রান্তে ২৫ কিলোমিটার দূরে কুরকরন্‌স নামে একটি মফস্বল শহরে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বাবা ও এক ভাইকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। তার বাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। ২০১৩/২০১৪ সালে মোস্তাফি সিরিয়ায় গিয়েছিল কি না, তার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। মোস্তাফির এক বড় ভাই নিজেই পুলিশের কাছে গিয়ে জানিয়েছে, বহু দিন ধরেই সে ভাইকে সন্দেহের চোখে দেখত। ভাইয়ের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর তার কোনও যোগাযোগই ছিল না।
৬) প্যারিসে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেলজিয়ামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এক জন ধরা পড়েছে ব্রাসেলসে। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী শার্ল মিশেল বলেছেন, ‘‘দেখা হচ্ছে, ব্রাসেলসে যে ধরা পড়েছে, শুক্রবার রাতে সে প্যারিসে ছিল কি না। তবে একটা ব্যাপারে আমরা মোটামুটি ভাবে নিশ্চিত যে, তিনটি দলে ভাগ হয়েই প্যারিসে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা।’’
৭) জঙ্গিদের ব্যবহার করা দু’টি গাড়ির খোঁজেও চালানো হচ্ছে জোর তল্লাশি। প্রথমটি একটি কালো পোলো গাড়ি। প্যারিসের দু’টি জায়াগায় হামলা করার জন্য যে গাড়িতে চড়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। গাড়িটি আপাতত বেহদিশ। আরও একটি কালো রঙের ফোক্সভাগেন গাড়ি ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা। সেই গাড়িটি চড়েই জঙ্গিরা গিয়েছিল বাতাক্লাঁ মিউজিক হলে। গাড়িটিতে বেলজিয়ামের নাম্বার প্লেট লাগানো ছিল। গাড়িটা ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সেই গাড়ির চালক ছিলেন এক জন ফরাসি নাগরিক। সেই চালককে দুই যাত্রী নিয়ে শনিবার সকালে বেলজিয়াম সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকতে দেখা গিয়েছে বলে বেলজিয়াম পুলিশ জানিয়েছে। কারও মতে, ওরা আদতে ওই জঙ্গিদেরই আরও একটি টিম। তাদের রাখা হয়েছিল ‘রিজার্ভ’-এ। যে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে, তারা ব্যর্থ হলে ওই টিমটাকে ব্যবহার করা হত। প্যারিসে হামলার ঘটনার পরপরই তারা পালিয়ে গিয়েছিল।
৮) গ্রিস সরকার জানিয়েছে, ফরাসি পুলিশ যে দু’জনের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তদন্ত করছে, তারা গ্রিসে সিরীয় শরণার্থী বলে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করিয়েছিল। ‘স্তুাদ দ্য ফ্রঁন্স’-এ মিলেছে আরও এক আত্মঘাতী জঙ্গির দেহ। তার দেহের পাশে তার সিরিয়ার পাসপোর্ট পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
৯) হামলার ঘটনার পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওল্যা ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন। বলেছেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্যারিসে এত ভয়ঙ্কর হামলা হয়নি।’’ গোটা ইউরোপে ১১ বছর পর ঘটল এত বড় ঘটনা। ২০০৪-এ ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল মাদ্রিদে।
১০) বাতাক্লাঁয় যখন জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছিল, তখন প্যারিসের উত্তর প্রান্তে একটি মফস্বল শহর ‘স্তুাদ দ্য ফ্রঁন্স’-এর স্টেডিয়ামে ফ্রান্স ও জার্মানির ফুটবল ম্যাচ চলছিল। সেখানে হাজির ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। বাতাক্লাঁয় হামলার খবর পেয়েই তিনি স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে যান। আর তার পরেই সেখানে তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে তিন আত্মঘাতী জঙ্গির মৃত্যু হয়। মৃত্যু হয় এক ফরাসি নাগরিকেরও।


Place your ads here!

Related Articles

নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নির্বিঘ্নই হবে

ফজলুল বারী, নেপিয়ার থেকে পূর্বাভাস পাল্টে দিয়ে আবহাওয়া বদলে গেছে নেপিয়ারের। এরজন্য বলা যেতে পারে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি

রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধান কে করবে?

বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমার এর যে দুটি প্রদেশের সীমান্ত রয়েছে তার মাঝে রাখাইন প্রদেশ একটি। আর একটি চিন প্রদেশ। আর রোহিঙ্গা

এই সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার দেশ

ওয়ারিশ আজাদ নাফি আচ্ছা যদি বলি এই গতকাল শুক্রবারে ২০১৪ সালে কেউ একজন দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে বিশ্বাস করবেন ?

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment