বিউটিফুল বাংলাদেশ: মঈনুল হোসেন মুকুল এর প্রেস ব্রিফিং

বিউটিফুল বাংলাদেশ: মঈনুল হোসেন মুকুল এর প্রেস ব্রিফিং

প্রিয় মিডিয়ার বন্ধুরা,
আমার সালাম শ্রদ্ধ্যা ও ভালবাসা গ্রহন করবেন।
আজ অতন্ত্য বিশ^য় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আমি মনে করি কম্যুউনিটির ছন্দ বজায় রাখতে সত্যি প্রকাশিক হওয়া খুবই প্রয়োজন। আপনারা সবই দেখেছেন কি নির্লজ্জভাবে, চমৎকার অভিনয়ের মাধ্যমে একটি মিথ্যাকে সত্য প্রমানের জন্য একটি সংগবদ্ধ দল মাঠে নেমেছে। তারা শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশে^ যাতে এ মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করতে দিন রাত প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। মিডিয়ায় তারা কাজে লাগাচ্ছে তাদের সেলিব্রেটি ইমেজকে। প্রতারনা করছে দর্শকদের সংগে। আমি কৃতজ্ঞ যারা আমার সংগে সংহতি জানিয়েছেন। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ, তবে কেউ না এলেও আমি একাই এ লড়াইয়ে প্রস্তুত ছিলাম। আমার আস্থা সত্যের নিজস্ব শক্তিতে। হাজার মিথ্যা দিয়ে একটি সত্যিকে কখনই চাপা দেয়া যায় না। কারন সত্য আপনা থেকে বেরিয়ে আসে আর মিথ্যা বলতে হয় বানিয়ে বানিয়ে। তাই একেকবার মিথ্যা হয় একেক রকম। মিথ্যার নানান রং হতে পারে কিন্তু সত্যের রং হয় একটাই। গাজী শুভ্র এবং রেড ডট নিজেদের তৈরী মিথ্যার ফাঁদে ইতিমধ্যে পা দিচ্ছেন একের পর এক। প্রতিটি অপরাধীই তার অপরাধের প্রমান সে নিজেই রেখে যায়। এক্ষেত্রেও তার ব্যত্তয় ঘটেনি। চলুন জেনে নিই কি ঘটেছিল শুরুতে:
২০১০ সার এর ডিসেম্বর মাস:
বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল ফরমাট শো’ ‘কে হতে চায় কোটিপতি’ নিয়ে চুড়ান্ত মিটিং চলছে। আপনারা অনেকেই জানেন সারা বিশে^ জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘হু ওয়ান্টস টুবি এ মিলিনিয়ারে’র বাংলা সংষ্করনের আমি ছিলাম লাইসেন্সী ও প্রযোজক আর প্রোডাকশন পার্টনার ছিল রেড ডট। ‘কে হতে চায় কোটিপতি?’র সে ঠিক শুরু হবার আগের ব্যস্ততম সময়ে প্রথম গাজী শুভ্র আমাকে বল্লেন ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর কথা। তিনি বল্লেন সাড়ে ৩ তিন মিনিটের কমাশিয়ালটি তিনি করবেন আর ১০মিনিট দৈর্ঘেরটি তিনি আমাকে পরিচালনার প্রস্তাব দিলেন। একদিনে ইন্টারন্যাশনাল ফরমাট শো’র হাজারো ব্যস্ততা অন্যদিকে দেশের জন্য কাজ করার এক অপূর্ব সূযোগ! কি করে হাতছাড়া করি। আমি ভীষন উৎসাহ নিয়ে সেই প্রস্তাবে প্রাথমিক সম্মতি জানালাম।
তার ২/৩দিন পর রেড ডটের আরেক পার্টনার জিয়াউল পাইকার জুয়েলের সংগে রেড ডট এ আলোচনা হলো। জুয়েল আমার সহকর্মী ছিল। ২০০৩ সালে আমি যখন এটিএন বাংলায় এডিটিং বিভাগের প্রধান ছিলাম তখন জুয়েল ছিল আমার ডিপার্টমেন্টের গ্রাফিক্স ডিজাইনার। সে সময় এটিএন বাংলায় দু‘টি ধারাবাহিক প্রামান্যচিত্র প্রচারিত হত আমার পরিচালনায়। আদিবাসীদের জীবনযাত্রা নিয়ে ‘আদিবাসী জনপদ’, আর গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবহেলিত বাউলদের নিয়ে মাহমুদুজ্জামান বাবুর উপস্থাপনায় ‘পরানের গান’। এর আগে, প্রায় ৮ বছর আমি ‘দেখা-অদেখা’, ‘এখানে আমার দেশ’ সহ নানা ধারাবাহিক প্রামান্যচিত্র নির্মানের সংগে যুক্ত ছিলাম। যার ইংরেজী ভার্সান নিয়োমিতভাবে বিটিভি সহ সার্ক দেশ সমুহের জাতিয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়ে দেশের গৌরব বয়ে এনেছে। তো সে সূত্র ধরেই জুয়েল বল্লেন আমি যেহেতু বড় ব্যাপ্তির প্রামান্য চিত্র তৈরী করতে অভস্থ্য তাই বিউটিফুল বাংলাদেশ ১০ মিনিট এর দ্বায়িত্ব তারা আমাকে দিতে চান । আমি গ্রে’র সুন্দর, অনন্য সেই স্ক্রিপ্টটি দেখলাম এবং সংগে একটি কপি নিয়ে গেলাম।
সেই রাতেই আমার স্ত্রীর সংগে ফোনে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ‘ নিয়ে কথা বল্লাম, সেও ইতিবাচক সাড়া দিলো এবং আমাকে আমার পজিশনের বিষয়ে কনফার্ম হতে বল্লো।
তার একদিন পরই রেড ডট এ আমার টীমের সংগে জিয়াউল পাইকার জুয়েল আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। মিটিং শেষে আমি জুয়েলকে বিউটিফুল বাংলাদেশে আমার পজিশন নিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম। জুয়েলের উত্তর ছিল ‘‘ডিরেক্টর”।
আমি আর কিছু জানতে চাইনি। দেশের জন্য এতো বড়ো একটি কাজ করার সূযোগ পেয়েছি তাতেই আমি ছিলাম অনেক খুশী। রেড ডটের পক্ষ থেকে জুয়েলই আমাকে পুরো কাজটির দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।
পেজেন্টার ভিকি এবং আমি ছাড়া পুরো প্রোডাকশন টীমের সকলেই ফুল টাইম বা পার্ট-টাইম রেড ডটের সংগে কর্মরত ছিল। ১০ মিনিটের ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ জন্য একটি আর সাড়ে ৩মিনিটের কমর্শিয়াল ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর জন্য ছিল ভিন্ন একটি টীম। ১০ মিনিটেরটি শ্যুটিং হয়েছিল সিনে আল্ট্রায় আর সাড়ে তিন মিনিট শ্যুট হয়েছিল ফিল্মে। কিছু কিছু সময় এই দুই টীম আমরা একই জায়গায় কাজ করলেও গাজী শুভ্র কখনোই আমাদের লোকেশনে বা স্পটে আসেননি। কাজের অবসরে বা কাজ শেষে কখনো কখনো দুই টীমে আড্ডা হতো মাত্র।
কক্সবাজার থেকে আমাদের দুই টীমেরই শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। তারপর সেখান থেকে সাড়ে ৩ মিনিটের টীম চলে যায় চা বাগানের দৃশ্য ধারন করতে খাগড়াছড়িতে আর আমরা ১০ মিনিটের টীম চলে আসি চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলে। শ্রীমঙ্গলে এসে আমি মূল স্কিপ্টের বাইরে সে এলাকার বিশ^খ্যাত মনিপুরী নাচ এবং লাউয়াছড়া বন অন্তর্ভূক্ত করি। যাই হোক এভাবে প্রায় ২৫ দিন আমাদের শ্যুটিং হয় সারা বাংলাদেশ জুড়ে।
একসময় পোষ্ট প্রোডাকশন শুরু হল। এডিটিং এবং কালার গ্রেডিং যথেস্ট সময় নিয়েই করা হলো, কিন্তু হলো না কোন গ্রাফিক্স ওয়ার্ক বা স্পেশাল এফএক্স। অনেকবার বলেও রেড ডট এর কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। স্কিপ্টের কিছু কিছু জায়গায় সিজি করার কথা ছিল, কোথাও কোথাও আমি কম্পোজিশনে সিজির জন্য স্পেস রেখেছিলাম। শেষ পর্যন্ত সে গ্রাফিক্সগুলো না করেই রেড ডট ফিল্মটি জমা দিয়ে দেন। একটি প্রোডাকশন হচ্ছে সন্তানের মতো, বিশেষ করে সেটা যদি হয় ‘বিউটিফুল বাংলাদেশে’র মতো মাস্টার পীচ। আজো ঐ ত্রুটিপূর্ন শটগুলো দেখলে আমার খারাপ লাগে।
যাই হোক এভাবেই কাজটি শেষ হল ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ১০ মিনিটের প্রামান্যচিত্র।
আইসিসি ওয়ার্ল্ডকাপের উদ্ভোধনি অনুষ্ঠান, তখন চারিদিকে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ সাড়ে ৩মিনিট নিয়ে দারুন হইচই। সবার মুখে মুখে, সোশার মিডিয়াতে লক্ষ লক্ষ শেয়ার হচ্ছে। আমিও ভীষন প্রাউড। লোকজনকে আমিও বলি আরেকটা ১০মিনিট ভার্সান আছে যার ডিরেকটর আমি।
রেড ডটের টীম মেম্বার কাউকে কাউকে ট্যাগ করে ১০মিনিটের ফিল্মটি ফেসবুকে তুললাম, রেডডট সহ মেজর ক্রেডিটগুলো সেখানে দেয়া আছে সেই তখন থেকে আজ পর্যন্ত।
গাজী শুভ্র সহ রেড ডটের অনেকেই বহুবার সাড়ে ৩মিনিটের ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ সোশাল মিডিয়াতে শেয়ার দিয়েছেন কিন্তু কখনই ১০ মিনিটের ফিল্মটি শেয়ার দেননি, এমনকি আজ পর্যন্ত না। গাজী শুভ্র কখনো বলেনওনি যে তিনি ১০ মিনিটের পরিচালক ছিলেন এবং তার শো রিলে ১০ মিনিটের প্রামান্যচিত্রের কোন ক্লিপ ব্যবহার করেননি। হ্যা ব্যবহার করেছেন তার নিজের সাড়ে ৩ মিনিটের বিউটিফুল বাংলাদেশ থেকে।
বেশ অনেক পরে রেড ডট এর পরিচালক জিয়াউল পাইকার জুয়েল ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর পরিচালক হিসেবে আমাকে এপ্রিসিয়েশন লেটার দিলেন। জুয়েলের সাক্ষরসহ মূল কপিটি বর্তমানে আমার কাছে রয়েছে।
তার কিছুদিন পরই ক্রোয়েশিয়া থেকে জাগরেব ট্যুরফিল্ম ফেস্টিভাল ডিরেক্টর আমার কাছে তার ফেস্টিবালে নতুন ডক্যুমেন্টারি চায়। আমি ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ আমার ভার্সানটি দিলে তিনি বলেন এটি তার ফেস্টিভালে ২০১২ এ ৩য় স্থান পায়। আমি বিশ^াস করিনি, আমি বলেছিলাম সাড়ে ৩মিনিটের কমর্শিয়ালটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। তিনি তখন তার ওয়ের সাইটের লিংক দিলে আমি অবাক হই। তখন পর্যন্ত আমি বিশ^াস করেছিলাম যে দুটি ফিল্মই হয়তো এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। তা নিশ্চিত হবার জন্য রেড ডটের জুয়েলকে ফোন দিই, তিনি নিশ্চিতভাবে বল্লেন সাড়ে ৩ মিনিটেরটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। আমার এক বন্ধুকে বলি ট্যুরিজম বোর্ডের সংগে কথা বলার জন্য। সে কি কথা বলেছিলো আমি জানি না। কিন্তু তার পরই জুয়েলের কাছ থেকে ফোন এ অভিযোগ পেলাম, আমি নাকি এ্যাওয়ার্ড ক্লেইম করছি।
এখানে আমার এ্যাওয়ার্ড ক্লেইম করার কিছু নেই। আমার ফিল্মটি যদি এ্যাওয়ার্ড পায় তবে আমি সেই গৌরবের অংশিদার হতে পারি। বলতে পারি যে ফিল্মটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে আমি সেই ফিল্মটির ডাইরেক্টর ছিলাম। আর যদি সাড়ে ৩মিনিটের ফিল্মটিও পায় তবেও আমি গর্বিত, কারন আমিতো সেটিও সহযাত্রী ছিলাম।
গত তিন মাস আগে শুনলাম এই একই ১০ মিনিটের ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ পোল্যান্ডে আরো একটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। তখন আমার শুভানুধ্যায়ী সংগঠন বেঙ্গল আর্ট ফোরাম সিদ্ধান্ত দেয় এটি উৎযাপন করার। যা আপনারা কাভার করেছিলেন।
এর মধ্যে আমি রেড ডটের জিয়াউর পাইকার জুয়েলকে ই-মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রস্তাব রাখি। তিনি তখন বল্লেন যে তিনি আমাকে বিশেষ ফেবার করে রেড ডটের লেটারটি দিয়েছিলেন।
এরপর ফিল্মএট পোলেন্ড ফেস্টিভালের আমন্ত্রনে আমি ওয়ারস যাই এবং ১০ মিনিটের ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর পরিচালক হিসেবে একটি এ্যাওয়ার্ড এবং আমার বিগত অন্যান্য ডক্যুমেন্টারীগুলো নির্মানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকার জন্য এবং টিবিএন২৪ চ্যানেলকে ওয়ার্ড ট্যুরিজমে ভূমিকা রাখার জন্য আরেকটি স্পেশাল এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়।
এই এ্যাওয়ার্ডের খবর বাংলাদেশে পৌঁছানো মাত্রই রেড ডট শুরু করে নোংরা এক মিডিয়া যুদ্ধ। তারা বলতে থাকে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ নিয়ে প্রতারনা।
আমি আপনাদের মাধ্যমে একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ১০ মিনিট ্এর আমি কোন স্বত্ব দাবী করিনি। আমি এর প্রযোজক নই, এটার প্লট, কনসেপ্ট আমার নয়, প্রোডাকশনও আমার নয়। আমি কখনো এসব দাবীও করিনি। আমি এটির পরিচালক ছিলাম, আমি এর কম বা বেশী কোন কৃতিত্বই আমি নিতে চাই না। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, আইসিসি, গ্রে এ্যাডভারটাইজিং এবং রেড ডটের টোটাল টীমওয়ার্ক ছাড়া কখনই এমন কাজ করা সম্ভব হতো না। আমি শুধু দাবী করতে পারি ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ১০ মিনিটের পরিচালকের ভূমিকাটুকু।
৪ বছর পর ্এখন এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির খবরে প্রশ্ন উঠেছে আমি এই ১০ মিনিটের ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর ডিরেক্টর ছিলাম কিনা! ফিল্মটি এ্যাওয়ার্ড না পেলে হয়তো কখনো এমন বিব্রতকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হতো না। সাধারন দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো বিশ^াস করেছেন, তাদেরইবা দোষ কি, বিভ্রান্ত হবারইতো কথাই কারন কতো বড় বড় সেলিব্রেটিরা কত আত্মবিশ^াসের সংগে মনগড়া কথাগুলো বলছেন। আর আমিতো সামান্য এক ডিরেকটর মাত্র।
আসুন এবার দেখি এ কথাগুলোর পক্ষে কি প্রমান আছে আমার কাছেঃ
১. রেড ডটের এপ্রিসিয়েশন লেটার
২. মূল চরিত্র ভিকি কার্টারের বক্তব্য
৩. পাশর্^ চরিত্র আদিবাসী গাইডের বক্তব্য
৪. প্রোডাকশনের ছবি
৫. বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সরবরাহকৃত ডিভিডির ক্রেডিট লাইন

রেড ডটের এপ্রিসিয়েশন লেটার ঃ তিন ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন এ নিয়ে। রেড ডট থেকে দেয়া চিঠিটিকে কখনো বলা হচ্ছে বানানো, কখনো বলা হচ্ছে ফটোশপ আবার কখনো বলা হচ্ছে এটা আমাকে অস্ট্রেলিয়া যাবার জন্য দেয়া হয়েছে। আমার মনে হয় আপনারা সকলেই বুঝতে পারছেন এটা কত হাস্যকর যুক্তি যে, আমি ইউকে থেকে অস্ট্রেলিয়া যেতে চাইলে বাংলাদেশের রেড ডট নামক একটি প্রতিষ্ঠানের চিঠি আমাকে সাহায্য করবে। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি এই চিঠির যে কোন ফরেনসিক, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য।
মূল চরিত্র ভিকি কার্টারের বক্তব্যঃ এই টীমে বৃটিশ মেয়ে ভিকি কার্টার, একটি আদিবাসী গাইড চরিত্র আর আমি ছাড়া বাকী সবাই ছিল রেড ডটের সংগে পার্ট টাইম অথবা ফুল টাইম হিসেবে কর্মরত। ভিকির মতামত এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিকি হচ্ছে এই ঘটনার সবচেয়ে বড় সাক্ষী। যার ভিডিও ইতিমধ্যে আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। ভিকিকে নিয়ে বলা হচ্ছে, সে প্রফেশনাল নয়। ছবির নায়িকা জানবেনা পরিচালক কে এটা কি হাস্যকর নয়?!
পাশর্^ চরিত্র আদিবাসী গাইডের বক্তব্যঃ পার্বত্য বান্দারবানে আমরা ৩দিন কাজ করেছিলাম। গাইড হিসেবে পাশর্^ চরিত্রে কাজ করেছিল একটি আদিবাসী যুবক। তার নিরাপত্ত্বার কথা চিন্তা করে আমরা তার বক্তব্যটি অনলাইনে দিইনি। সেও বলছে আমিই ছিলাম ডিরেকটর। কারন ঔ ৩দিন সে আমাকে ছাড়া আর কাউকে ডিরেকটর হিসেবে দেখেনি।
প্রোডাকশনের ছবি ঃ গাজী শুভ্র কখনোই ১০মিনিটের লোকেশনে আসেননি। যেকারনে গাজী কখনই ১০মিনিটের কোন স্যুটি এর স্টিল ছবি দিতে পারেনি। প্রায় একমাস ধরে শুটিং হোল অথচ গাজী শুভ্রর কোন প্রোডাকশন ষ্টিল নাই। তিনি দিতে পারছেন না, কেন? কোন ছবিই কি নাই তার কাছে? একটি ছবিওকি তিনি তোলেননি? না। কারন তিনি সেটা পরিচালনা করেননি। বিউটিফুল বাংলাদেশে গাজী শুভ্র শুধু স্টীল নয় বিহাইন্ড দা সিন তোলার জন্য একটি হান্ডিক্যামও ব্যবহার করেছেন। এখন ফটোশপে কেউ যদি নতুন ছবি তৈরী করে সেটি ধরার বহু পদ্ধতি রয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সরবরাহকৃত ডিভিডির ক্রেডিট লাইনঃ বাংলাদেশে সফল বিশ^কাপ আয়োজনের পর বিসিবি’র সৌজন্য ‘বিউটিফুল বাংলাদেশে’ এবং ওপেনিং সিরিমনির বেশ কিছু ডিভিডি কপি লন্ডনে আসে, যে ডিভিডিগুলো ২০১১ সালের ৩ অগাস্ট বার্ণ করা হয়েছে। ইউকে‘র অনেক ক্রীড়ামোদীদের কাছে সেই ডিভিডি আজো সংগ্রহে আছে। তাতে দুটি ‘বিউটিফুল বাংলাদেশে’র ক্রেডিটলাইন সহ রয়েছে, সাড়ে ৩মিনিটের কমর্সিয়ালে গাজী শুভ্র‘র নাম এবং ১০ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্রে আমার নাম স্পষ্ট করে ডিরেক্টর হিসেবে লেখা রয়েছে। এটি রেড ডট এবং গ্রে থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। তবে আর কি প্রমানের অপেক্ষা করতে হবে আমাদের। এর কপি আপনাদের কারো কারো কাছেও থাকতে পারে। দয়া করে ক্রেডিট লাইন দেখে নেবেন।
তবে সবচেয়ে বড় প্রমান হচ্ছে দু’টি ছবির ডিরেক্টর সিগ্নেচার দু’রকম। আমারটি আমার মতো আর গাজী শুভ্ররটি তার মতো। চলচ্চিত্র বোদ্ধারা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন এই দু‘টি একই পরিচালকের নয়।
তবে ইতিমধ্যে আমার সম্মান ধ্বংস করে দেয়ার জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। আমার সন্তানদের সেই খারাপ সময়ের অভিজ্ঞতা নিতে হয়েছে। আমাকে হেয় করা হয়েছে। এসময় আমি আমার পাশে অনেক নতুন বন্ধু পেয়েছি, আবার চার পাশের কিছু মানুষের যে নোংরা চেহারা আমি দেখেছি তা অনেকদিন মনে থাকবে।
ইতিহাসে অনেক অর্জনকে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ করেছি, শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা ডিজাইন, স্বাধীনতার ঘোষনা থেকে হিমালয় বিজয় কোনটাকেই আমরা ছাড় দিইনি। সর্বশেষ বিউটিফুল বাংলাদেশ।
গ্রে এ্যাডভারটাইজিং কিংবা বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের কাছ থেকে গাজী শুভ্র’র পরিচালনায় ওয়ার্ক-অর্ডার নিয়ে যদি তা আমাকে দিয়ে বানানো হয় তবেতো এখানে প্রতারক হচ্ছে গাজী শুভ্র। আপনি মাঠে না থেকেতো প্লেয়ার দাবী করতে পারেন না। পরিচালনা এমন একটি বিষয় আপনাকে মাঠে না থেকে এটি দাবী করার কোন সূযোগ নেই।
আন্তর্জাতিক এ্যাওয়ার্ড গ্রহন করার আগ পযর্ন্ত ১০ মিনিটের বিউটিফুল বাংলাদেশের পরিচালনা নিয়ে কোন প্রতিবাদ ছিল না। ২০১২ সাল থেকে আমার নাম সহ এটি আপলোড হয়। শুধুমাত্র আমার একাউন্ট থেকে এটি শেয়ার হয়েছে প্রায় ৮০০র মতো। রেড ডটের সকল পরিচালক ফেন্ড লিস্টে থাকলেও কেউ প্রতিবাদ করেননি। কোন কোন রেড ডট কর্মচারী বরং আপলোডের জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। কেউ কেউ শেয়ার দিয়েছেন, তবে আজ কেন এতো প্রশ্ন?? কারন একটাই এ্যাওয়ার্ড!
এ ধরনের আন্তর্জাতিক এ্যাওয়ার্ড কেউ ভুল তথ্য দিয়ে নিতে পারেনা। চাইলে উনারা চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
বাংলাদেশের বয়স আর আমাদের বয়স প্রায় একই। অন্তত এ বয়সে আমাদের পরিনত আচরন করা উচিত। আমরা যাতে যার যার যোগ্য সম্মান দিতে পারি।
সবিনয়ে আমি আবারও বলতে চাই, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, আইসিসি, গ্রে এ্যাডভারটাইজিং এবং রেড ডটের টোটাল টীমওয়ার্ক ছাড়া কখনই এমন কাজ করা সম্ভব হতো না। আমি শুধু ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ১০ মিনিটের পরিচালকের পদটির দাবীদার, যা আমি আমার শ্রম দিয়ে অর্জন করেছি। আশাকরি আমার বক্তব্যে সকলের ভুল ধারনা ভেঙ্গে যাবে।
বিতর্ক তৈরী না করে, আসুন যার যতটুকু ভূমিকা, যার যতটুকু প্রাপ্য তার ততটুকু সম্মান আমরা দিই। নিজেকে বড় করতে গিয়ে কাউকে যেনো আমরা ছোট না করি। সত্য একদিন প্রকাশিত হবেই, তখন ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
বাকপটু হবার চেয়ে বিউটিফুল বাংলাদেশে‘র নির্মাতাদের বিউটিফুল মাইন্ড থাকাটা খুবই প্রয়োজন। যে শ্লোগান দিয়ে সারা বিশ^কে আমন্ত্রন জানাবো আজ সে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ব্যান্ডটি ব্যক্তি স্বার্থে কলংকিত করেছে রেড ডট। সারা বিশে^র কাছে ব্রিবত করছে বাংলাদেশকে। অনলাইনে বিউটিফুল বাংলাদেশ সার্চ করলে এখন শুধু বিতর্ক আর বিতর্ক। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ^ব্যপী গত অর্ধ যুগে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ যে ব্যান্ড ভেল্যু তৈরী করেছিল গত ১ সপ্তাহে তা ধ্বংস করে দেয়ার দায় দায়িত্ব রেড ডট’কেই নিতে হবে!
সবাইকে ধন্যবাদ,

মঈনুল হোসেন মুকুল
লন্ডন, যুক্তরাজ্য


Place your ads here!

Related Articles

ড কামালের মুখ ও মুখোশ!

ফজলুল বারী: বাংলাদেশ তথা ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রথম ছবির নাম ছিল ‘মুখ ও মুখোশ’। কালেক্রমে এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক ব্যবহৃত শব্দ

ভার্চুয়াল চিঠি (পর্ব – পাঁচ)

?ইনবক্স চিঠি , সেতো আজ যান্ত্রিক ভালবাসা । বড্ড বেশী মায়া কান্না ! কেউ আর সেই আবেগ ঢেলে এখন আর

IEB Australia Chapter holds GM and elects new Executive Committee

Date: 18 September 2018 The Institution of Engineers, Bangladesh (IEB) Australia Chapter held its 1st General Meeting on 16th September

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment