যাদের কারণে প্রবাসীদের মাথা নীচু হয়!

যাদের কারণে প্রবাসীদের মাথা নীচু হয়!

একজন পিতা, একজন অভিবাবক, একজন শিক্ষক ও একজন প্রবাসী হিসাবে আমার হৃদয়ে প্রচন্ড ঝাকুনি এসেছে। আমার বিশ্বাস সাড়া বিশ্বে প্রতিটি প্রবাসী বাংলাদেশী এ ধরনের ঘটনায় বিস্মিত, হতভম্ব ও লজ্জিত! যদিও আইনগতভাবে অভিযুক্ত ছাড়া কারো কোন দায় নেই। তারপরও কেন এ লজ্জা, কেন এ গ্লানি?

অতীতেও সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরেক বাংলাদেশি রেজাওয়ানুল হক নাফিসের যুক্তরাষ্ট্রে সাজা হয়েছে। বছর না গড়াতেই আরো একটি ঘটনার জন্ম, যা নানাভাবে আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

আটক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আগাম কোন মন্তব্য করতে চাইনা । তবে সন্ত্রাসবাদের উৎস্যমূল কোথায়? কি ব্যবস্থা আমাদের সন্তান-সন্তুতিদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ রাজনীতি, এ সংস্কৃতি, এ সন্ত্রাস, এ সহিংসতা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? আমরা যারা প্রবাসে, আমাদের দুঃখ বেদনা যেন কারো উপলব্দিতেই নেই।

কোন দল নয় বরং যাদের কারণে বিদেশে প্রবাসী হিসেবে আমাদের মাথা নীচু হয়, আমরা লজ্জিত, আমরা কলঙ্কিত হই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শৈথিল্য, দ্বিধা, কুন্ঠা আমাদের চরমভাবে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ করে।

পবিত্র শবেবরাতের রাতে পল্লবীর কালশী বিহারি ক্যাম্পে যারা আগুন দিয়ে নারী-শিশুসহ ৯ জন এবং গুলিতে একজনকে মেরেছে তারা অপরাধি, তারা মানবাধিকার লংঘনকারী।

নারায়ণগঞ্জে সেভেন মার্ডারের ঘটনায় নানাভাবে কারা সংশ্লিষ্ট এর তথ্য-প্রমাণও বের হয়ে এসেছে। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক একরামকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অভিযোগের ইঙ্গিত ও একজন সংসদ সদস্যের দিকে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এবং ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে তারা হত্যার কথা স্বীকার ও করেছে।

দেশে সরকারি চাকরিজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবি এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীরা পর্যন্ত এখন সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ ও এমনকি সময়ে কার্যকর হচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় লোকের কার্যকলাপে সরকার যেমন বিব্রত বিদেশে এসব খবর প্রবাসীদের ভাবমূর্তিকে করছে কলঙ্কিত ও ক্ষতিগ্রস্থ ।যেমন করেছে নাফিস ও আশিকিম এর খবর।

প্রবাসে দেশের ভাবমমূর্তি ক্ষুন্ন হউক প্রবাাসীরা এটা চায় না।বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক সংহতির উপর ভিত্তি করে আমরা মাথা উচু করে দাড়াতে চাই। মানবজাতির বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক সংহতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত -সংবিধান ছাড়াও সংস্কৃতির ব্যাপক আশ্লেষ,ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা এবং শান্তি, মানবতার শিক্ষা, মানুষের মর্যাদা ও সন্মান প্রদর্শনের অপরিহার্যতাকে তুলে ধরতে চাই বিশ্ব পরিমন্ডলে, আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

লেখক: দেলোয়ার জাহিদ, রিচার্স ফেলো, সেন্ট পলস কলেজ, ইউনির্ভাসিটি অব ম্যানিটোভা, কানাডা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক। সম্পাদক, সমাজককন্ঠ এবং সভাপতি, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সেন্টার অব আলবার্টা (বিপিসিএ)।


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment