একজন সপ্নবাজ দেশপ্রেমিক

একজন সপ্নবাজ দেশপ্রেমিক

কাল রাতে একাত্তরে টিভিতে অনন্ত জলিলের একটা ইন্টারভিউ দেখিয়েছে। অবাক হয়ে শুনলাম তার কথা। একটা মানুষ কত সপ্নবাজ হতে পারে, যতটুকু মনে আছে তুলে দিলাম

একাত্তর– স্যার আপনার মুভিতে আসার প্ল্যান কিভাবে ?

অনন্ত– আমার আসলে মুভিতে আসার প্ল্যান ছিলনা প্রথমে। দেশের বাইরে যেতাম প্রায়ই। আই ম্যাক্সে মুভি দেখা হত। আফসোস হত ইশ এখানে যদি বাংলাদেশের সিনেমা আসত বাইরের মানুষরা বলত দেখ বাংলাদেশের সিনেমা এটা। দেশের সুনাম বাড়ত। চিন্তা করলাম গার্মেন্টসের মত মুভিও আমরা বাইরে এক্সপোর্ট করতে পারি। সে ভাবনা থেকেই মুভিতে আসা

একাত্তর– আপনি তো নাকি সমাজ সেবামুলক কাজও করেন?

অনন্ত– দেখুন আল্লাহ তা আলা আজকে আমাকে কোটি টাকা দিয়েছে। এটা সবই আল্লাহর দয়া। আমি শুধু বাহকমাত্র। আমি যখন প্রতিদিন অফিসে যাই গাড়িতে বসে আমি ভাবি , ” ওই যে রিকশাওয়ালার জায়গায় আমিও থাকতে পারতাম। ” এই ভাবনা থেকেই কাজগুলো করা।

একাত্তর– দুই বছর আগে আপনার ইংলিশ উচ্চারণ.নিয়ে আপনাকে বিদ্রুপ করেছিল?

অনন্ত– কিছু মানুষ মনে করে অপরকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায়। সবকিছু নিয়ে হাসাহাসি করাটাকে তারা একটা বিরাট বড় কাজ মনে করে। আল্লাহ সবাইকে ক্ষমতা দিয়েছে কিছু না করার্। সবার উচিত নিজের দিকে নজর দিয়ে সেই ক্ষমতাটাকেই কাজে লাগান।

একাত্তর– সম্প্রতি শাকিব খানের সাথে আপনার মনোমালিন্যের ব্যাপারে?

অনন্ত– আমি বলেছিলাম , আমরা কেন তামিল সিনেমা নকল করব টাকা খরচ করে। আমাদের দেশে কত কত ভালো গল্প আছে লেখক আছে। আপনি কম বাজেটেই মনপুরার মত মুভি বানাতে পারলে তামিলে যাওয়ার কি দরকার্। আমি শুধু এটুকুই বলেছিলাম

একাত্তর– মোস্ট ওয়েলকাম টু এর প্রচারণার জন্য তো ইংল্যান্ড গিয়েছেন?

অনন্ত– হা ইংল্যান্ডে প্রিমিয়ার হয়েছে। এটা সপ্ন সত্যি হওয়ার মত একটা ব্যাপার্। মুভি শেষ হওয়ার পরে যখন ইংলিশ দর্শকরা উঠে হাত তালি দিল আমার চোখ ভিজে গিয়েছিল। এমন না যে এটা অনন্তর মুভি বলে। বাংলাদেশের একটা মুভি দেখে ইংরেজরা হাত তালি দিয়েছে এর চাইতে বড় পাওয়া আর কি আছে

একাত্তর– এই যে আপনি কোটি কোটি টাকা খরচ করে ছবি বানান লাভ কি উঠে আসে?

অনন্ত– আমি তো লাভের জন্য মুভিতে আসিনি। টাকা পয়সা খোদা আমাকে অনেক দিয়েছি। আমি চেয়েছি বাংলা মুভিতে একটা স্ট্যান্ডার্ড সেট করতে। টেকনিক্যালি ইন্টারন্যাশনাল মান আনতে। আমি লাভ টাভ কিছুই চাই না। চাই বাংলা সিনেমা আরো এগিয়ে যাক। বিদেশী হলে বাংলা সিনেমা দেখার জন্য দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়ুক। তাহলেই আমার সপ্ন সার্থক হবে। লাভ টাভের চিন্তা করিনা আমি…”

দেশে তো অনন্তর চাইতে ধনী অনেক.আছে। বাংলা সিনেমার যখন দুর্দিন কেউ কি এসেছিল নিজের গাটের টাকা খরচ করে দেশের সিনেমা শিল্প কি বাচাতে। এতো টাকা খরচ করার কি ঠেকা পড়েছে অনন্তর্। এটাই দেশপ্রেম। কেউ কি ভাবতে পেরেছিল লন্ডন আমেরিকার সিনেপ্লেক্সে বড় বড় অক্ষরে লেখা থাকবে মোস্ট ওয়েলকাম টু – আ বাংলাদেশি মুভি। বিদেশীরা বড় বড় চোখে দেখবে একসময়ের তলা বিহীন ঝুরি নামক দেশ এখন ইন্টারন্যাশনাল মুভি বানায়। দা স্ট্যান্ডার্ড হ্যাজ বিন সেট। আজ সাতটি দেশে বাংলাদেশের সিনেমা মোস্ট ওয়েলকাম টু চলতেসে। কাল সত্তরটা দেশে চলবে। ভারতীয়রা ঢালিউডি মুভি.দেখার জন্য পাগল হবে। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরেই হয়ত কোডাক থিয়েটারে অস্কার হাতে দাড়িয়ে থাকবে কোন বাংলাদেশী পরিচালক। সেদিন ঠিকি সবাই বলবে, শুরুটা অনন্ত নামে এক সপ্নবাজ যুবক করেছিল , যার ইংলিশ উচ্চারণ ঠিক ছিলনা কিন্তু সপ্নটা অনেক বড় ছিল।


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment