অরিত্রি ও লেখকের জন্মদিন

অরিত্রি ও লেখকের জন্মদিন

আজ ২৩শে ডিসেম্বর। অরিত্রি এবং তার মত ছোট আরও অনেক সোনামনিদের একজন প্রিয় মানুষের জন্মদিন। হ্যা অরিত্রির একজন প্রিয় মানুষ হচ্ছেন জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আজ তার জন্মদিন। ওরা কেউ কেউ এরমাঝেই হয়তো কার্ড, কেউ বা ওদের সাধ্যমত ছোটখাটো উপহারও প্রিয় লেখককে পাঠিয়েছে। উপহারের মাঝে একশ’ বলপেন থাকে কখন বা। অসংখ্যবার বার লেখকের ফোন বাজবে আজ তবে ধরার ফুরসত সবসময় মেলে না বা হয়না। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে এত্তো এত্তো এসএমএস পাঠায় ক্ষুদে পাঠকরা যা পড়ে শেষ করতেই লাগে দিন দু’য়েক সময়। এসবই লেখকের নিজের অভিজ্ঞতাজাত ভাষ্য।

অরিত্রির গল্পটি লেখক জানেন না। গতবছরের একটা সময়ে বাংলাদেশে ছিলাম। ছোট্ট অরিত্রি নানান গল্প করছিল। সে বললো ‘জান, ২৩শে ডিসেম্বর আমি জাফর স্যারকে ফোন করে বার্থ ডে উইশ করেছি’

আমি ভেবেছি অরিত্রির কোন প্রিয় শিক্ষককের কথা বলছে। একটু আশ্চর্যও হলাম জেনে যে এইটুক ছুট্‌কি স্যারের জন্মদিনের খবর রাখে। আমি প্রশ্ন করি

‘জাফর স্যার কে?’

প্রশ্ন করে বিপদেই পড়লাম। আমার অঘার মত প্রশ্ন ছিল। অবজ্ঞা মেশানো বিস্ময় নিয়ে আমাকে বললো

‘জাফর স্যারকে চেন না!’

হাজার মাইল দূরে থেকে ওর শিক্ষকদের আমারতো চেনার কথা নয়। তার কথার বাকীটুকু শুনেই জাফর স্যার কে বুঝে গেলাম।

‘মুহম্মদ জাফর ইকবাল, উনার লেখা বই পড়নি?’

এবার মাথায় ঢুকলো অরিত্রি উচ্ছাস নিয়ে তার প্রিয় লেখকের কথা বলছে। মহা উৎসাহ নিয়ে বললো ফেব্রম্নয়ারীর বইমেলাতে কিভাবে গেল। বইহাতে লম্বা লাইনে অনেকক্ষন দাড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। যখন লেখকের কাছে পৌঁছাল খুব আনন্দ হল। আরও আনন্দ হল নিজের পরিচয় দিয়ে জন্মদিনে ফোন করার কথা মনে করালো যখন তখন ওর জাফর স্যার বললেন

‘অরিত্রি তুমি কেমন আছ?’

মজার ব্যাপার হল অরিত্রির মা-বাবাও লেখকের কোন বই কবে পড়েছিল তাতে কোন ঘটনা কিভাবে মনে দাগ কেটেছে কলকল বলে যাচ্ছিল। আমি বুঝে গেলাম অরিত্রি যতটুকু না নিজে পড়েছে তারচেয়ে বেশী গল্প সে শুনেছে মা-বাবার কাছ থেকে। এভাবে লেখকের জন্য তার মাঝে শ্রদ্ধামেশানো এক মমতা তৈরী হয়েছে। বর্তমান সময় পাঠকের সাথে লেখকের লেখার মাঝ দিয়ে লেখক-পাঠক যোগসূত্র তৈরী করেছে। এখন কি মানুষ বেশী বই পড়ে? জানি না।

আমার মনে পড়ে আমাদের ছোটবেলায় এক ঈদে বাবা একখানা বই ভাইবোনে মিলেঝুলে কাড়াকাড়ি করে পড়ার জন্য উপহার দিয়েছিলেন। তাতে ‘মুমু’র গল্প পড়ে খুব মন খারাপ হয়েছিল। ‘মুমু’র কষ্টে লুকিয়ে চোখের পানি মুছেছি। মুমু একটি কুকুর ওর কাহিনী লিখেছেন রম্নশ লেখক তুর্গেনেভ। তবে লেখকের কথা কখনো একটি বার মনে হয়নি। লেখকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে এক জগতে থাকতেন।

গর্ব হয় আমাদের দেশে এখন এমন লেখক আছেন যিনি মানুষের সাথে মানুষের কাছাকাছি হন, ভালবাসা যেমন পান ভালবাসা বিলিয়ে যান।

আজ ২৩শে ডিসেম্বরে অরিত্রির ও আরও অনেকের প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে লেখা কবিতার ক’টি লাইন দিয়ে শেষ করছি

স্মৃতির সড়ক ধরে চলে যায় মন দূরে

ছোট সোনামনি অরিত্রি,রিসানা, গার্গী

আরও রয়েছে নাগীব,নাজিম, ভিকি।

সারি বেঁধে ওরা বই হাতে সব দাড়িয়ে

তোমার কাছে পৌঁছাবে যেই

স্বাক্ষর শুধু নয়

স্নেহের করস্পর্শে ধন্য যে

ওরা হয়।

ওদের মতো হওয়ার ইচ্ছে হ


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment