Article on Bangladesh Politics in Bangla

Article on Bangladesh Politics in Bangla

বাংলাদেশে আবার ও ক্যু রাজনীতির অপচেষ্টা

১.

আমি ব্যক্তিগতভাবে ধারাবাহিক ও নিয়মতান্ত্রিক যে কোন কার্যক্রমের পক্ষে এবং তা সমর্থন করি । কারণ গভীর বিশ্লেষণে দেখা যাবে যে ,প্রকৃতির নিয়ম ও তাই । মানুষ প্রকৃতির সন্তান হিসেবে তার উচিত হবে, প্রকৃতির নিয়মের পক্ষে থাকা এবং তা সর্বত্র অনুসরণ করা ; তা নাহলে বিপর্যয় হতে বাধ্য ।

আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা মানুষের সৃষ্ট এবং মানুষের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফল হোল আজকের এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা । এই ব্যবস্থা যেমন একদিনে গড়ে উঠেনি , ঠিক তেমনি একে একদিনে বিলীন করা ও সম্ভব নয় ।দীর্ঘকালের নিয়মতান্ত্রিক চর্চার ফল হোল আজকের এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা । কাজেই আমাদের দায়িত্ব হোল এই ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা , তা আমাদেরই স্বার্থে এবং ক্রমান্বয়ে তাকে অধিকতর উন্নত ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়া । একেই বলে সভ্যত্য । আমরা কেউ সভ্যতার অগ্রসরমানটাকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পারি না । এটা হবে প্রকৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া , যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হোল আত্মহত্যা ।

রাষ্ট্র ব্যবস্থা মানুষের সৃষ্ট এবং জনগণের কল্যাণ সাধনই য়ের কাজ । আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত । যার মর্ম কথা হোল বাই দি পিওপল , ফর দি পিওপল , অফ দি পিওপল । এখানে জনগণই সব এর ব্যাত্যয় হবার কোন অবকাশ এই ব্যবস্থায় নেই । যদি কেউ তা করতে চান ,তাহলে তা আর গণতান্ত্রিক কাঠামোতে থাকে না । হয়ে যায় অন্য কোন ব্যবস্থায় পরিগ্রহ । কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তার সংবিধানের আলোকে, এখানে সংবিধানের ব্যত্যায় ঘটানো মানে হোল সংবিধানকে অবমাননা করা এবং অবৈধ ব্যবস্থার চর্চা করা । আর অবৈধ ব্যবস্থা কখনো কোন ভাল কাজ করতে পারেনা এবং তা করার তার কোন নীতি বোধ ও কাজ করেনা অর্থাৎ মোদ্দা কথা হোল অবৈধ কাজের প্রশ্রয় দেয়া মানে হোল , নিজে অবৈধ কাজ করা এবং অন্যকে তা করতে উৎসাহিত করা । যা কোনভাবেই কাম্য নয় ।

আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস । তাদের কাজ হোল রাষ্ট্র পরিচালনা করা এবং এই রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারটি করতে হবে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে , যেটা সংবিধানে পরিষ্কারভাবে বিবৃত করা রয়েছে । এর ব্যাত্যয় হবার কোন অবকাশ এখানে নেই । কাজেই এই সংবিধানের বাহিরে যেয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চায় বা করে তাদের ব্যাপারে আমাদের মনোভাব কি হওয়া উচিত? এটাকে যেমন সমর্থন করা যায় না , ঠিক তেমনি সমস্ত শক্তি দিয়ে একে প্রতিহত করা একটা দেশের সকল নাগরিক দায়িত্বের মধ্যে পরে । এ দায়িত্ব এড়ানো মানে হোল নিজেকে অসভ্য প্রাণীর কাতারে নিয়ে যাওয়া , নিজের নীচুঁতাকে প্রতিষ্ঠা করা । যা কোন সভ্য দেশের জনগণের কাম্য হতে পারে না , এখন আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কে ? অসভ্য নিচু জাতের কোন কিছু নাকি , আধুনিক শিক্ষিত গণতন্ত্র মনস্ক জাতি ।

২.

আমরা নিজেকে অধিকতর সভ্য ভাবতাম বলেই পাকিদের সাথে আমাদের বিরোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হয় এবং অন্যায়ের প্রতিবাদে ফেটে পরি । ৭১ য়ের সশস্ত্র সংগ্রামের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হোল আজকের এই প্রিয় বাংলাদেশ । এখন আমরা যারা পাকিদের মত হতে চাই কিংবা তাদেরকে আদর্শভাবি , তাহলে কি পার্থক্য রয়ে যায় আমাদের এবং পাকিদের মধ্যে ? প্রশ্ন দাঁড়ায় তাহলে এই বিভক্তির কিইবা দরকার ছিল ? কেনই বা আমরা শুধু শুধু যুদ্ধকরে ৩০ লক্ষ প্রাণের জীবনদানে প্ররোচিত করতে গেলাম । যদি আমরা পাকিদের চেয়ে উন্নত জাতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নাই পারলাম ,তাহলে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির কোন প্রয়োজনই ছিল না । কিন্তু আসলে কি তাই ? মোটেই না , আমরা শুধু পাকিদের নয় ভারতবর্ষে সবচেয়ে অগ্রসরমান শিক্ষিত জাতি ছিলাম , কালক্রমে ভারতের অন্যান্য জাতিগুলোর সাথে মিশে গিয়ে আমরা একটি সভ্য শান্ত শিক্ষিত জাতির পরিবর্তে একটি নিচু জাতিতে পরিণতি লাভ করতে চলছি । কোথায় আমরা অন্যান্যদের কাছে অনুকরণীয় হব তা না হয়ে আমরা পাকি কিংবা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নীচুঁতা , নোংরামিগুলো অনুসরণ করছি , যা জাতি হিসেবে কখনো কাম্য হতে পারে না । বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সময়কাল হোল ব্রিটিশ পরবর্তী ভারত উপমহাদেশে পাকি পাঞ্জাবীদের অধীনস্থ হওয়া , জাতি হিসেবে যার খেসারত আমরা আজও দিয়ে চলছি , এটা দুইপারের বাঙ্গালীদের ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য ।আমাদের বাঙ্গালীদের মধ্যেকার বিভেদ ও অবিশ্বাসের যে ক্ষতিকর উপাদান পাকি পাঞ্জাবীরা বপন করে গিয়েছে , তা থেকে মুক্তি পেতে কত কাল লাগবে তা একমাত্র আল্লাহ পাক জানেন ।সুতরাং এখনই উপযুক্ত সময় – সমস্ত বিশৃঙ্খলা , নোংরামি , কুসংস্কারকে সমূলে উৎপাটিত করার সমস্ত শক্তি নিয়োগ করা । আমরা অসভ্য হাস্যকর জাতি নয় , বীরের জাতি হিসেবে , সভ্য জাতি হিসেবে , ঐক্যবধদ জাতি হিসেবে , অনুকরণীয় অনুকরণীয় জাতি হিসেবে বিশ্ব সভায় এবার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এবং য়ের জন্যে বর্তমান সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে ;অন্যকেউ তা পারবে না , কারণ তা করার মত নৈতিক জোর ও বৈধতা বাংলাদেশে অন্য কারোর নেই ।

১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি পাকি করণের প্রক্রিয়া শুরু হয় , যা শুরু করে পাকিদের শিক্ষায় শিক্ষিত আমাদেরই জাতিভাইয়েরা । যেহেতু তারা পাকিদের সাথে ছিল , একসাথে পড়াশুনা করছে , একসাথে থেকেছে সেহেতু পাকি ভাব-ধারায় ধাবিত হওয়া তাদের জন্যে বিচিত্র কিছু ছিল না । কিন্তু প্রশ্ন হোল কেন স্বাধীনতার ৪০ বৎসর পর ও পাকি কুশিক্ষার ধকল থেকে জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনার শিক্ষায় ধাবিত করা গেলনা । এই লজ্জা কার ? আমাদের সকলের । কেন ২১ বিংশ শতকের এই সময়ে এসে মানুষ ধর্মান্ধ শিক্ষার প্রতি অনুরক্ত হবে ? ধাবিত হবে ? এই সমস্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজার সময় এসে গিয়েছে ।

দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মত সশস্ত্র বাহিনী ও একটি প্রতিষ্ঠান । তবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে য়ের মৌলিক পার্থক্য হল এটি সবচেয়ে সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এবং শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্ব হল এই বাহিনীর মূল চালিকা শক্তি । এই দুটি বিষয়ের যদি কিঞ্চিৎ ব্যাত্যয় এখানে ঘটে , তাহলে এই প্রতিষ্ঠান পরিণত হতে পারে সবচেয়ে জঘন্য ও সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে কারণ এই একটি মাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেখানে অ্রস্র পরিচালনা শেখানো হয় সবচেয়ে নিখুঁতভাবে । কাজেই এই বাহিনীর জন্যে যেটা সবচেয়ে দরকার তাহলো এখানে কি পাঠদান করা হচ্ছে এবং কারা দিচ্ছেন এই দুটি বিষয়ে রাষ্ট্র তথা সরকারপ্রধানদের সম্যক খেয়াল রাখা । তানা হলে বাহিনী এবং তার সদস্যরা বিপথগামী হতে বাধ্য ।

বাংলাদেশের ৪০বৎসরের ইতিহাসে ৩৩ বার সেনা বিদ্রোহ কিংবা ক্যুয়ের চেষ্টা হয়েছে । যা যে কোন সভ্য রাষ্ট্রের জন্যে বেদনাদায়ক একটি ব্যাপার ।৪০বৎসরের ইতিহাসে এই প্রথম সেনাবাহিনী ১৯ শে জানুয়ারি ২০১২ জাতির সামনে প্রকাশ্যে এসে তাদের ভেতরকার বিদ্রোহের ব্যাপারটি পরিষ্কার করলেন । যার জন্যে সেনাবাহিনী নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাবার যোগ্য । সেনাবাহিনীর এবারের ভূমিকার জন্যে সেনাবাহিনী যেমন প্রংশসিত হয়েছে , ঠিক তেমনি জাতির নিকট তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ।ধন্যবাদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে তাদের এ ধরনের একটি প্রশংসামূলক কর্মকাণ্ডের জন্যে । মনে হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হয়ে সেনাবাহিনী সত্যিই ভাল কিছু শিখেছে এবং এটাই হওয়া উচিত ।সেনাবাহিনীর লোকজন রাষ্ট্রীয় অন্যান্য কাজে অংশগ্রহণ করবে , রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবে – এটা আমরা সকলে চাই । কিন্তু সেটা হতে হবে রাষ্ট্র নির্দেশিত বৈধ পন্থায় , অন্য কোনভাবে নয় ; য়ের ব্যাত্যয় ঘটলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙ্গে পরার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে , যেটা শত্রু পক্ষের জন্যে হতে পারে আনন্দের , কিন্তু আমাদের জন্যে সেটা হবে আত্মহত্যার শামিল । বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই আমাদের জন্যে দরকার আধুনিক শক্তিশালী একটি সশস্র বাহিনী । কাজেই এই দিকটা মাথায় রেখে সকলকে এগুতে হবে ।

৩.

বাংলাদেশের ৪০বৎসরের রাষ্ট্রীয় ইতিহাসে এ পর্যন্ত ৩৩ বার ক্যু কিংবা অন্যান্য সেনা বিদ্রোহ জনিত ঘটনা ঘটেছে । সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে এবং যার খবর জাতি জানতে পেরেছে ১৯ শে জানুয়ারি ২০১২ তে এবং জেনেছে ও সেনাবাহীনির কল্যাণে। বাংলাদেশের ৩৩ বার সেনাবিদ্রোহের মধ্যে ২১ বার হয়েছে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জিয়াউর রহমানের সময়ে এবং ২২তম বিদ্রোহে ১৯৮১ সালের ৩০শে মে তারিখের বিদ্রোহে জিয়া নিজেই নিহত হয়েছিলেন । কাজেই প্রশ্ন থেকে যায় কেন হচ্ছে এসব , কারা করছে এসব , কাদের স্বার্থে এবং কারা এসবের সাথে জড়িত ? এসব প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা আমাদের জন্যে আজ জরুরী হয়ে পরেছে । যদি এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বিচার আমরা না করি ; তাহলে বার বার এসব ঘটনা ঘটতেই থাকবে , যেটা জাতি হিসেবে আমাদের জন্যে হবে অপূরণীয় ক্ষতি ।

এবারের সেনা বিশৃঙ্খলার ঘটনাটিকে একেবারে হালকা ভাবে দেখার কোন কারণ নেই । অন্যান্য ঘটনা বা বিষয়ের মত এ বিষয়টা ও পূর্বপরিকল্পিত ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পরিচালিত , নানা আলামত থেকে তা সুস্পষ্ট । বিভিন্ন পাত্র-পাত্রী যে এ ঘটনার নায়ক নায়িকা তা পূর্বাপর ঘটনা থেকে সুস্পষ্ট । সেনা বিশৃঙ্খলার ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে কর্নেল (অব:) অলি প্রকাশ্যভাবে বলেছিলেন যে , ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের পতন ঘটবে ।কিন্তু কেন ঘটবে , কিভাবে ঘটবে তা স্পষ্ট করেননি ।একজন সত্যিকার গণতন্ত্র মনা দেশপ্রেমিক লোক কখনো , কোন ভাবে এ ধরনের মন্তব্য করতে ও পারেন না কিংবা সাপোর্ট ও করতে পারেননা । কিন্তু এ হোল আমাদের দেশের কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র । খালেদা জিয়া ৯ই জানুয়ারি ২০১২ চট্টগ্রামের জনসভায় ঘোষণা দিলেন যে, সেনাবাহিনীর মধ্যে নাকি গুমের ঘটনা ঘটছে । কিন্তু তার আগ পর্যন্ত জনগণ তথা জাতি এ বিষয়ের ব্যাপারের বিন্দুমাত্র অবগত ছিলেন না । খালেদা জিয়া তথা কর্নেল অলির বক্তব্য এখন যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে য়ের সারমর্ম কি দাঁড়াবে ? য়ের উত্তর পাঠক আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে । আমি করব না ।

এ কালের মেজর জিয়া ও তার সাথে জড়িত অন্যান্য সাঙ্গ-পাঙ্গরা কারা , এ ঘটনা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে সেনাবাহিনীর স্বার্থে , গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং জাতির স্বার্থে । যেখানে আমরা প্রবাসে বসে ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করবার জন্যে দিবা- রাত্রি কাজ করে চলছি ; সেখানে দেশের রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ্য সুবিধা ভোগকারীর দল নিজেদের তথা গোষ্ঠীর স্বার্থে যা খুশী তা করবে এটা যেমন বরদাস্ত করা যায় না , ঠিক তেমনি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না ।

বর্তমান সরকারকে অত্যন্ত কঠোর হাতে যেমন এ বিষয়ের তদন্ত করতে হবে , ঠিক তেমনি এ ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা যারা জড়িত ছিল তাদের সকলকে দেশ তথা জাতির স্বার্থে বিচারের সমখুখীন করতে হবে ।

পাঠক সকলকে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে , এ লেখাটি পড়বার জন্যে জানাচ্ছি আমার কৃতজ্ঞতা ও একরাশ শুভেচ্ছা ।

আরশাদ হোসেন ভূঁইয়া ।

৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০১২।

এডেলেইড , অস্ট্রেলিয়া থেকে।

2012/pdf/bangladesh_politics_508828648.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment