Rajnitir Kushti Nama 1

Rajnitir Kushti Nama 1

রাজনীতির কুষ্ঠি নামা (১)

৫৪জ্ঞর আওয়ামী লীগ ,যুক্তফ্রন্ট , ৬৬জ্ঞর ৬দফা ,৬৯জ্ঞর গন আন্দোলন , ৭০জ্ঞর নির্বাচন , ৭১জ্ঞর মুক্তিযুদ্ধ , ১৫ই আগস্টের হত্যার মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ,সামরিক শাসন ,তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, এরপর ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজনীতির গুরুত্বপুর্ণ তথ্যের উপর লেখা ধারাবাহিক লেখা পড়ুন , মতবিনিময়ে সরাসরি সমালোচনাকে স্বাগতম জানাবো ।

১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান ও ১৫ই আগস্ট ভারত ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতার সনদ বুঝে নেন । ৪৯ সালে মরণ যাত্রা পথে গভর্নর জেনারেল মোঃ আলী জিন্নাহ বাংলায় এসে বলে বলে যান পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু এবং উর্দু ,এ যেন ভেংগুরের বাসায় হানা !সেই যে প্রতিরোধ শুরু হল সেই পথ ১৯৫২জ্ঞর ভাষা আন্দোলনে রফিক , শফিক , বরকত , ছালাম , জাব্বার ,ঘুমন্ত বাঙালী জাতিকে জাগিয়ে তোলার জাগরণ বলা যায় । তাই সেই স্তম্ভ ধরে এ লেখা শুরু করছি ।

সেদিনের ভাষা আন্দোলন রাজনৈতিক ভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে যে প্রেরণা দিয়েছিল সেখান থেকে ই আওয়ামী লীগের প্রতি জাতি ঝুঁকে পরেছিল । তা প্রমাণিত হয় ১৯৫৪ সালে তৎকালীন যুক্ত ফ্রন্টের নির্বাচনের সময় ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২৩৪ টি আসনে যুক্তফ্রন্ট বিজয়ী হলেও একক ভাবে আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে ১৪৩ টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল !দলীয় ভাবে তা ছিল সর্বোচ্চ, তবে ১৯৫৪জ্ঞর (পূর্ব পাকিস্তান )যুক্তফ্রন্ট তথা মহাজোট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করলেও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোঃ সে সরকার ভেঙ্গে দিয়েছিল । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তখন বগুড়ার মোঃ আলী ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সেই যুক্ত ফ্রন্ট সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগেই রোপণ করেন ভাষা আন্দোলনের স্থায়ী ঠিকানা আজকের বাংলা একাডেমী ভবন।

১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ আবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করেন ,পাকিস্তান রিপাবলিকান পার্টীকে সাথে নিয়ে । সহরাওয়র্াদি তখন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ।সামরিক শাসক জে: ইস্কান্দার র্মীজা তখন প্রেসিডেন্ট । কিছুদিনের মধ্যে সিংহ পুরুষ সহরাওয়র্াদির সাথে রাজনৈতিক দন্দ রাড়তে থাকলে ১৯৫৭ সালের ১০ই অক্টোবর সহরাওয়র্াদি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন । ১৯৫৮জ্ঞর ১০ই অক্টোবর জে: ইস্কান্দার মীর্জাকে সরিয়ে জে: আইয়ুব খান নতুন করে মার্শাল দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন ।

সাথে সাথে আওয়ামীলিগের মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত দলের সে সময়ের নেতাদের উপর নির্যাতন চালানো হয় । এক পর্যায়ে গণতন্ত্রের মানস পুত্র সহরাওয়র্াদিকে ১৯৬৩ সালের ৫ই ডিসেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে তার হোটেল কক্ষে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় । ধারণা করা হয় আইয়ুব সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছিলেন !!তখন থেকেই সহরাওয়ার্দির নামের পূর্বে হোসেন শহীদ ব্যবহৃত হয় ।পাকিস্তানের সৃষ্টির পর থেকেই একের পর সামরিক শাসক পালাক্রমে আপোষে নয় তো লাথি মেরে ক্ষমতা দখল করে পাকিস্তান শাসন করে চলছেন ।

অবৈধ শাসকেরা যখন ক্ষমতা দখলকে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভাবেন ,ঠিক তখনই তারা প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার শুরু করতেন । আর তখনই জাতিয় সংকট, জাতিয় ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠত !এমনি অবস্থায় ১৯৬৩ সালে ও ১৯৬৫ সালে ভারতের সাথে যুদ্ধ করে তৎকালীন মার্কিন পপেট নিজেই নিজেকে ফিল্ড মার্শাল ঘোষণা করে আতংকের রাজা সেজে স্বার্থ হাসিলের পথ ধরে ,রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখার পথে আগাতে থাকেন । এক পর্যায়ে ফিল্ড মার্শাল জে: আইয়ুব খান বুনিয়াদি গণতন্ত্র নামে নতুন তন্ত্র মন্ত্র মাথায় নিয়ে,নতুন বুনিয়াদি গণতন্ত্রের মুসলিম লীগ গঠন করেন ।

যেহেতু জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান , আর চেয়ারম্যানের ভোটে সংসদ ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ,তাই সামরিক শাসকদের ক্ষমতা ধরে রাখার পদ্ধতিটা সহজ হিসাবে ধরে নিয়েছিলেন । জিন্নাহজ্ঞর মুসলিম লীগ ,আইয়ুবের বুনিয়াদি গণতন্ত্রের মুসলিম লীগ জনগণের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় তখন বিভ্রান্ত । তবে আইয়ুব খান রাজনৈতিক অবরোধ থেকে তখনো মুক্তি পাননি ।সারা পাকিস্তানে আইয়ুব তখন অবরুদ্ধ !আওয়ামী লীগের কর্ণধার শেখ মজিবুর রহমান তখন বন্দী ! আইয়ুব খানের ডাকা সর্বদলীয় রাউন্ড টেবিল মিটিংয়ে যোগদানের শর্তসাপেক্ষে শেখ মুজিবকেমুক্তিদেওয়া হয় ।

সারা পাকিস্তান ব্যপি রাজনৈতিক দলগুলি এক পর্যায়ে সেই বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেন । তবে আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান না করে বুকে ধারণ করা স্বপ্নের বাংলাদেশ এর বীজ বপনের এটাই মুখ্য সময় ধরে নিয়ে শেখ মজিবুর রহমান মাওলানা ভাষানীর সাথে গভীর রাতে দেখাকরে পাকিস্তান বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান । মাওলানা বলেন পাকিস্তানের কেউই গোলটেবিলে বসবেনা আইয়ুব তো এখন একটা মরা লাশ ।শেখ মুজিব বললেন আমি যাচ্ছি জানাজা পড়াতে । প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে নৌকার পাল উড়ালেন , ছুঁটলেন ইসলামাবাদ । উদ্দেশ্য গোলটেবিল মিটিং ।! আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মজিবুর রহমান বিশ্বাস করতেন আলোচনা ছাড়া সমস্যা সমাধানের কোন সুযোগ নাই , তাই ছুটে গেলেন ঢাকা থেকে ইসলামাবাদ।

১৯৬৬ সালের ৫ইফেব্রে²য়ারি গোলটেবিল বৈঠক ,সারাবিশ্ব অবাক চেয়ে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের সামনে পাকিস্তানি জনগণের স্বায়ত্ত শাসনের ফর্মুলা তুলে ধরলেন শেখ মজিবুর রহমান ,তার ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি !। প্রস্তাবটি এক নজর দেখে নীরবে বসে থাকা আইয়ুব ক্ষিপ্ত হয়ে সভাকক্ষ ত্যাগ করে চলে গেলেন ।পরেরদিন সংবাদ পত্রের শিরোনাম হয় Shiekh mujib Demand Autonomous for East Pakistan it’s mean independent এভাবেই হতাশাগ্রস্ত রাজনীতির বন্ধ দুয়ার খুলেছেন শেখ মজিবুর রহমান ।

হারুন রশীদ আজাদ (সিডনি থেকে)azad.banglamedia@gmail.com

2011/pdf/Politics_v_Marshallaw1_875333605.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment