Dr Yunus and Grameen Bank

Dr Yunus and Grameen Bank

অধ্যাপক ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বিতর্কে সত্যসন্ধান

ভূমিকা:
নোবেল লরিয়েট অধ্যাপক ইউনুসকে নিয়ে ইদানীং অনেক বিতর্ক চলছে । কারো কারো মতে অধ্যাপক ইউনুস একজন সৎ ও ভালো মানুষ এবং তার বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন তারা বিদ্বেষ বশত: তা করছেন । আবার কারো কারো ধারনা, অধ্যাপক ইউনুসের সবটাই ফাঁকিবাজি । আমরা দেখেছি, এই দুই দলের লোকের মতামতে আবেগ অনুভূতির বিষয় যতটা থাকে, যুক্তির বা তথ্যভিত্তিক কথা ততটা থাকে না । এমনকি অধিকাংশ লেখায় অধ্যাপক ইউনুসের “মাইক্রো-ক্রেডিট” ব্যবসাটা যে কি, তাও সাধারণ মানুষের বোধগম্য করে লেখা থাকে না । এর ফলে অনেক সাধারণ মানুষ মূল বিষয়টি ধরতে পারে না । স্বভাবতই অনেক সাধারণ মানুষ এ নিয়ে দ্বিধায় আছেন । এই লেখাটি মুলতঃ তাদের বোঝার জন্য সহজ করে লেখা। মূল আলোচনায় যাবার আগে আমরা কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় আলোচনা করবো ।

এনরন স্ক্যান্ডালঃ
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮৫ সালে কেনেথ লে-এর প্রতিষ্ঠিত এনরন কর্পোরেশন নামের একটি কোম্পানি এতটাই বাণিজ্যিক সাফল্য দেখিয়েছিল যে বিখ্যাত বাণিজ্যিক পত্রিকা “ফরচুন” পর পর ৬ বৎসর এটিকে “আমেরিকার সবচেয়ে আবিষ্কার ধর্মী কোম্পানি” বলে উল্লেখ করেছিল । প্রধান কারন, ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল সময়কালে এনরন তার এসেট ১৩.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ১০০.৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করে । এই কোম্পানির অন্যতম প্রধান জেফ্রি স্কিলিং বলে বেড়াচ্ছিলেন, তারা কোন এসেট (বাস্তব ভাবে দৃশ্যমান সম্পদ) ছাড়াই আয় বাড়ানোর এক নতুন পদ্ধতি “আবিষ্কার” করেছেন । ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে লক্ষ লক্ষ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান ঘটিয়ে এটি ইন্তেকাল করে । এনরন স্ক্যান্ডাল সম্বন্ধে বলা হয়, এই কোম্পানির তথাকথিত সাফল্য আনা হয়েছিল “প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে, নিয়ম মেনে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিকল্পিত হিসাবের কারসাজি” এর মাধ্যমে । ধ্বসটি শুরু হয় যখন বেথানি ম্যাকলিওন নামের একজন হিসেব কর্মকর্তা প্রকাশ করে দেন যে, এনরন কোম্পানিটি কোন রকম কাজ না করেই একটির পর একটি কোম্পানি খুলে যাচ্ছে, উচ্চতর মূল্যে তার শেয়ার বিক্রি করে ‘বাড়তি আয়’ দেখাচ্ছে, আর লোকজন পাগলের মতন তাদের শেয়ার কিনে যাচ্ছে ।
এ থেকে আমরা শিখতে পারি: (ক) অতি শিক্ষিত লোককেও এই যুগে ঠকানো যায়, (খ) বস্তু-তান্ত্রিক কিছু ছাড়া হাওয়া থেকে কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব নয় এবং (গ) ফাঁকিবাজি একদিন না একদিন ধরা পড়তে বাধ্য ।

সাব-প্রাইম স্ক্যান্ডালঃ
সাব-প্রাইম স্ক্যান্ডাল সম্বন্ধে এখন সবারই কমবেশি জানা আছে । এটি এমন একটি স্ক্যান্ডাল যা আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের মতন দেশটিকে পৃথিবীর একনম্বর শক্তিধর অবস্থান থেকে টেনে নামিয়েছে এবং অন্য বহু কিছুর মধ্যে, দেশটির প্রেসিডেন্টকে বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের জন্য ভারতের মতন দেশ ভ্রমণ করতে বাধ্য করেছে । যাদের জানা নেই তাদের অবগতির জন্য বলি, জমি বন্ধক রেখে টাকা ধার নেবার কথা আমরা জানি, এখানে টাকা শোধের জন্য দায়ী থাকে জমির মালিক । সাব-প্রাইম হচ্ছে এমন একটি নিয়ম যেখানে তৃতীয় একজন জমির মালিকের সঙ্গে বোঝাপড়া করে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে পারতো । স্বার্থপর লোকজন নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে সরকারকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে এই নিয়ম প্রবর্তন করেছিল । যুক্তিটি চমৎকার ; “এত সম্ভানময় জমি নিয়ে লোকটা বসে আছে কারন তার এটি উন্নয়ন করার ইচ্ছা বা ক্ষমতা নেই, যা আমার আছে । তাই আমাকে ঋণ দেয়া হোক” । ঋণ শোধ না হলে কিন্তু ধরা খাবে ‘জমি’। ব্যাঙ্ককে ‘খুশী” করে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেয়া হয় । পরে দেখা যায়, সবার (অথবা অধিকাংশের) জমি যখন এই পদ্ধতিতে উন্নত হচ্ছে তখন তার বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বা ব্যবহার আর থাকছে না । ইতিমধ্যে ঋণ দিয়ে দিয়ে ব্যাংক কিন্তু খালি । বিভিন্ন প্রজেক্টের ব্যর্থতার কারনে ব্যাঙ্কের ঋণ আর শোধ হয় না এবং অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছায় যে অনেক ব্যাঙ্ক লালবাতি জ্বালানোর অবস্থায় চলে যায় । সেই চরম অবস্থা ঠেকাতে সরকারকে নিজের চরম ক্ষতি করে ভর্তুকি বা অনুদান দিয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়েছিল ।
এ থেকে আমরা শিখতে পারি: (ক) শিক্ষিত মানুষও কি মারাত্মক ধরনের ভুল করতে পারে, (খ) বস্তু-তান্ত্রিক কিছু ছাড়া হাওয়া থেকে কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব নয় এবং (গ) নিয়মে ভুল থাকলে একদিন না একদিন তা ধরা পড়বেই ।

অধ্যাপক ইউনুসের মাইক্রো-ক্রেডিট:
ব্যাঙ্কের কাজ সুদের বিনিময়ে মানুষের সঞ্চয়ের টাকা জমা রাখা । এই টাকা উচ্চতর হারে ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে ব্যাংক লাভ করে থাকে । এই হচ্ছে ব্যাঙ্কের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবার মূল কথা। নিরাপত্তার খাতিরে ব্যাঙ্ক বিনা বন্ধকীতে ঋণ দেয় না । যুক্তিসঙ্গত কারনে ব্যাঙ্ক গরীব এবং অসৎ ব্যাক্তিকে ঋণ দেয়ার কথা চিন্তায়ও আনে না। এমতাবস্থায় ব্যাঙ্ক ন্যুনতম যে টাকা ঋণ দেয়া লাভজনক মনে করে তার চেয়ে কম টাকা ঋণ দেয়াকেই দীর্ঘকাল ক্ষুদ্রঋণ বলা হতো । বাণিজ্যিক ভাবে তেমন লাভজনক না হলেও প্রধানত: ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশের অনেক ব্যাঙ্ক প্রধানত: কৃষিজীবীদেরকে ফসল উৎপাদনে সহযোগিতার জন্য ক্ষুদ্রঋণ দিতো । প্রাক ব্রিটিশ ও ব্রিটিশ ভারতে ক্ষুদ্রঋণের প্রচলন ছিল । প্রধানত: ধনী ব্যক্তি বা মহাজনেরা নিম্নোক্ত দুই ভাবে এই ঋণ দিতো ।

(০১) বন্ধক রেখে: জমি, বাড়ী, গহনা এমনকি ব্যবহার্য্য ঘটি বাটিও বন্ধক রাখা হত ।
(০২) বন্ধক না রেখে: ক। সৎ লোককে কোন বন্ধক ছাড়াই ঋণ দেয়া হত।
খ। অসৎ ব্যক্তিকেও বন্ধক ছাড়া ঋণ দেয়া হত । এক্ষেত্রে মহাজনকে ভয়াল দর্শন লাঠিয়াল বাহিনী পুষতে হতো ।

এমনই এক পটভূমিতে বাংলাদেশের অধ্যাপক ইউনুস ক্ষুদ্র ঋণ বা মাইক্রো-ক্রেডিট এর এক নতুন ধারনা নিয়ে এলেন । ইতিপূর্বে এনরন বা সাব-প্রাইম এর সাফল্য সম্বন্ধে প্রচার কালে বিভিন্ন বিজ্ঞ ব্যক্তি যে ধরনের দুর্বোধ্য বা ভাববাদী শব্দ ব্যবহার করেছিলেন অধ্যাপক ইউনুসের ক্ষুদ্র ঋণ বা মাইক্রো-ক্রেডিট এর বিভিন্ন প্রচারপত্রেও তেমন অনেক কিছু আছে, যা তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত অসংখ্য পুস্তক পুস্তিকায় দেখা যেতে পারে । তবে তার সব প্রচারণার মূল কথা – “কোন বন্ধকী ছাড়াই ঋণ দেয়া” এবং “বাংলাদেশের মতন দেশে এভাবে দেয়া ঋণ সুদ সহ শতকরা একশত ভাগ ফেরত পাওয়া”র কাহিনী ।

বিনা বন্ধকীতে ঋণ দেয়া:
আগেই বলা হয়েছে, এই দেশেও বিনা বন্ধকীতে ঋণ দেয়া এবং সুদ সহ তা ফেরত পাবার কথা আমাদের জানা আছে । মানুষ সৎ হলে এটি হতে বাধা কোথায় ? আবার লাঠিয়াল বাহিনীর সাহায্যে একই কাজ করার কথাও আমরা জানি । তবে বাংলাদেশের মানুষের সাধারণ সততার যে মাত্রা তাতে অন্যকোন ভাবে এটিযে সম্ভব নয় তা সবাই বুঝতে পারেন । এমন বাস্তবতায় অধ্যাপক ইউনুস দাবী করলেন, তিনি একেবারে গরীব, এমন কি ভূমিহীনদের বিনা বন্ধকীতে ঋণ দিয়ে শতকরা ১০০% ভাগ টাকা উসুলের এক পন্থা উদ্ভাবন করেছেন ।

দেশে এ বিষয়ে তেমন প্রচারণা না চালিয়ে তিনি বিদেশীদের দেখালেন, এই ঋণ পেয়ে কিভাবে বাংলাদেশের গরীব মানুষ উপকৃত হয়েছে । অধ্যাপক ইউনুস বিদেশী সাহায্য পেলেন এবং কাজ চালিয়ে যেতে থাকলেন। বাংলা দেশের মানুষকে সাধারণ ভাবে অসৎ বলা যায়, যদিও ১০০০ মানুষের একটি গ্রামে ৫০ জন সৎ মানুষ সব সময়েই পাওয়া যাবে । প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের ব্যাপারে ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার উদাহরণ সবারই জানা । এমন দেশে অধ্যাপক ইউনুস কি ভাবে এমন অসম্ভবকে সম্ভব করলেন ? এটা সাধারণ লোকের ভাবনা হলেও বিজ্ঞজনেরা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, ঘাপলা কোথাও একটা আছেই । অনেকে আবার একজন বাংলাদেশীর সন্মানের স্বার্থে সব বুঝেও চুপ করে ছিলেন । আজ এতদিন পরে মূল বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে । তবে, আমরা এই ভেবে সান্ত্বনা পেতে পারি যে বাংলাদেশীরা নানা কথা বললেও এই গুমর ফাঁকের কাজটি তারা করে নি । বরং করেছে সে সব বিদেশীরা যারা অধ্যাপক ইউনুসের “অদ্ভুত তত্ব-কথা” বিশ্বাস করেছিল । সঙ্গে ইন্ধনের কাজ করেছে কিছু সাংবাদিকের অনুসন্ধান প্রবণতা, যা এখন পুরো দমে চলছে ।

অধ্যাপক ইউনুসের “অদ্ভুত তত্ব-কথা”ঃ
অধ্যাপক ইউনুসের “তত্ব-কথা”টি হচ্ছে, আমাদের দেশের বিদ্যমান স্তরের সততার “গরীব মানুষকে বিনা বন্ধকীতে ঋণ দেয়ার পরও ১০০% ঋণ ফেরত পাওয়া যায়” । আসলে অধ্যাপক ইউনুস এটি করেছেন বলে বিদেশীদের কাছে প্রমাণ পত্র দেখিয়েছেন । অবশ্যই তিনি তা করেছেন, তবে যে পদ্ধতিতে তা করেছেন তা ছিল ধোঁকাবাজি, আজকের যুগে ডিপ্লোম্যাটিক ভাষায় যাকে বলা হয় “স্টেজ ম্যানেজড” । অধ্যাপক ইউনুসের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ হচ্ছে, (ক) ঋণ পরিশোধের এমন চমৎকার উদাহরণ থাকা স্বত্বেও তিনি এই কার্যক্রম দেশে কেন আরও বাড়াচ্ছেন না, যেখানে বাংলা দেশে গরীবের কোন অভাব নেই, এবং (খ) ঋণ পরিশোধের জন্য কেন মাঝে মাঝে ঋণ গ্রহীতার উপর অত্যাচার করা হয় ।

যে পদ্ধতিতে অধ্যাপক ইউনুস তার কার্যক্রম চালান, তাতে আসলে সুদের, এমনকি আসল টাকার তার কোন প্রয়োজন নেই । বরং এই কাজটি করার জন্যই তিনি ঋণ গ্রহীতাদেরকে তার কয়েক গুন টাকা দেবার ক্ষমতা রাখেন । তবুও তাকে এসব করতে হয় তার ব্যবসার মূল পূঁজি ধরে রাখার জন্য। যাদু দেখাবার অভ্যাস যাদের আছে তারা জানেন, ‘ম্যাজিক ওয়ান্ড’-এর আসলে কোন ক্ষমতা থাকে না । কিন্তু এটি না রাখা হলে অনেক দর্শকই যাদুকরের কেরামতি ধরে ফেলত । আসলে ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা না বাড়ানো এবং মাঝে মাঝে ঋণ পরিশোধের জন্য অত্যাচারও হচ্ছে অধ্যাপক ইউনুসের কার্যক্রমের পক্ষে ‘ম্যাজিক ওয়ান্ড’ ।

অধ্যাপক ইউনুস অনুসৃত পদধতিঃ
শতকরা ১০০ ভাগ ঋণ পরিশোধ নিশ্চিত করার প্রয়োজনে অধ্যাপক ইউনুস প্রধানত: দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করেন । এগুলি হলোঃ
(০১) গ্রামবাংলার বিপুল জনগোষ্ঠী থেকে ‘সৎ’ লোক খুঁজে বের করা এবং
(০২) ঋণগ্রহীতাকে ঋণ পরিশোধ করার জন্য সমষ্টিগত চাপ প্রয়োগের ব্যবস্থা করা ।

কিভাবে তা করা হয়:
বাংলাদেশের অনেক থানা হেড কোয়ার্টারেই গ্রামীণ ব্যাঙ্কের নিজস্ব ভবন আছে । এটি করা হয়েছে এমন সময় যখন সরকার নীতিগত ভাবে কোন ব্যাঙ্ককে এমনকি জেলা সদরেও নিজস্ব ভবন তৈরির অনুমতি দিত না । আসলে কিছুটা বিদেশী আশীর্বাদের কথা বলে অধ্যাপক ইউনুস বাংলাদেশের অনেক সরকারের কাছ থেকেই অনেক অতিরিক্ত সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন । থানা হেড কোয়ার্টারে নিজস্ব ভবন প্রতিষ্ঠার বিশেষ অনুমতি থেকে শুরু করে রেলওয়ের ফাইবার অপটিক্স ব্যবহারের সুবিধা সহ অনেক কিছুই এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় ।

নিজস্ব ভবনের সুবিধা নিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের উচ্চ বেতনভুক লোক দীর্ঘকাল ধরে গ্রামে পর্যবেক্ষণ করে বের করে, কারা সৎ, কাদের মুরুব্বির জোর নেই, কারা দেশত্যাগ করে চলে যেতে পারবে না ইত্যাদি । এর পর তাদের দিয়ে গ্রুপ বা দল তৈরি করা হয় । এই গ্রুপকে কম টাকায় একটি লাভজনক ব্যবসা বা কাজ বেছে নিতে বলা হয় । দলের সবাইকে নির্দিষ্ট হারে টাকা জমাতে হয়, যা একটি সাধারণ ফান্ডে রাখা হয় । তারপর সবার পছন্দনীয় একজনকে বাছাই করা কাজটি করার জন্য ঋণ দেয়া হয় । সে ভাল কাজ দেখালে তবেই দলের পরের লোকটি ঋণ পাবে । এদিকে ঐ ঋণের মধ্যে দলের সকলেরই কিছু না কিছু টাকা আছে । আসলে ঠিক এই কারনে প্রথম লোকটির ঋণ সময়মত পরিশোধের উপর দলের সবাই কঠোর দৃষ্টি রাখে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে না পারলে দলের অন্য লোক তার হয়ে সময়মত ঋণের টাকা পরিশোধ করে । এই হচ্ছে অধ্যাপক ইউনুসের ১০০% ঋণ পরিশোধের কাহিনীর মূল কথা ।

উপরে যে ঋণের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে কিন্তু ঐ দলের লোকদের টাকাও থাকে । এ থেকে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক-এর সুদের একটি নতুন হার বের করা যেতে পারে । ধরা যাক, দলের সবাই এক বছরে ১০,০০০.০০ টাকা জমালো । গ্রামীণ ব্যাঙ্ক তাদেরকে ১০,০০০.০০ টাকা ঋণ দিল । এখন মোট ২০,০০০.০০ টাকার সুদ নেয়া হবে । ধরা যাক, সুদের হার ৩০% । ধরা যাক, এক বছরে যে ১০,০০০.০০ টাকা জমানো হল, গ্রামীণ তা থেকে কোন সুবিধা নিল না । এর পরে তারা কাজ চলাকালীন এক বছরে ২০,০০০.০০ টাকার সুদ নিল ৬,০০০.০০ । আসলে কিন্তু এই সুদ নেয়া হল ১০,০০০.০০ টাকার জন্য । সেক্ষেত্রে সুদের হার হবে ৬০% । যারা ৩০%কেই উচ্চহার বলে মনে করেন তারা এই হিসাবটি কষে দেখতে পারেন ।

বন্ধনহীন ঋণ সুদ সহ ফেরত পাবার কারনঃ
উপরে আমরা বন্ধনহীন ঋণ সুদ সহ ফেরত পাবার দুটি কারন দেখিয়েছি যা হল, সততা এবং লাঠিয়াল বাহিনী । আর অধ্যাপক ইউনুস এজন্য যা ব্যবহার করছেন তা হলোঃ সৎ লোক খুঁজে বের করা এবং ঋণ পরিশোধের জন্য দলের সকলের চাপ ব্যবহার করা ।
এই সমগ্র কাজে যে “স্টেজ-ম্যানেজড” বিষয় আছে তা হল: (০১) শতকরা ১০০% ঋণ পরিশোধ করার বিষয়ে একজন লোককে ঋণ দেয়া এবং তার সেই ঋণ পরিশোধ করে বলে ধরা হয় । প্রকৃত সত্য এই যে, ঋণ দেয়া হয় একজনকে, আর ঋণ পরিশোধ করে দলের সকলে মিলে ।
(০২) সুদের হার যা বলা হয় বাস্তবে তা এর চাইতে অনেক বেশী (উপরে যে কারন বলা হয়েছে সে জন্য এবং প্রতি সপ্তাহে কিস্তি আদায় করার জন্য) ।

এগুলি অসঙ্গতি হলেও আসল সমস্যা কিন্তু অন্য খানে । এটি হল, অধ্যাপক ইউনুস যেহেতু তার প্রতিষ্ঠানকে বিশেষায়িত ব্যাঙ্ক বলেন, তাই এটির লাভ লোকসান হিসেব করে এটি যে লাভজনক ভাবে চলতে পারে সেটা তার প্রমাণ করার কথা । এন-জি-ও-র হিসাব তার এই প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় । যেক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র ঋণ দিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠানের আয় কত, আর ব্যয় কত এটা বের করা দরকার । তার আয় হবে যে টাকা গ্রামীণ ঋণ দেয় তার ৩০% (অন্তত কাগজে পত্রে তাই দেখানো হবে, যদিও আসল আয় তার চেয়ে বেশী । এই বেশী টাকাটি কোথায় যায় তা খুঁজে দেখা প্রয়োজন) । গ্রামীণের ব্যয় হচ্ছে, কর্মচারীর বেতন ভাতা ও অন্যান্য যাবতীয় খরচ । এই বিপুল খরচ তিনি তার “সাফল্যের নাটক দেখিয়ে বিদেশীদের কাছ থেকে পাওয়া টাকা” “রোলিং ফান্ড” এ রেখে তার সুদ থেকে নির্বাহ করে থাকেন । এটিকে কি কোন অর্থনৈতিক কাজ বলা যায় ? এইটিই হচ্ছে সেই মহামূল্যবান কারন যা আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থারই জানা এবং যার জন্য অধ্যাপক ইউনুসের নাম বেশ কয়েক বার অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য পাঠালেও তাকে তা দেয়া হয় নি।

তাছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সমূহ বিভিন্ন সময়ে তার কাজের প্রশংসা করলেও বিপুল প্রাতিষ্ঠানিক খরচের কথা অনেক আগে তারা বলে এসেছে । যেমন, সেই ১৯৯৯ সালেই নরওয়ের এক মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, “গ্রামীণের ষ্টাফিং খরচ এটির প্রাতিষ্ঠানিক এবং আর্থিকভাবে টিকে থাকার ক্ষমতা কমিয়ে দেবে এবং এটিকে দীর্ঘকাল অনুদান দেয়া হুমকির সম্মুখীন করবে … “ (… But Grameen’s staffing costs may be weakening both organizational and financial sustainability, and thus pose a threat to the long term contributions of this highly impressive organization” – Ref : Enclosure 3: Conclusions from the joint evaluation carried out by Grameen Bank and Norway in 1998/1999) .

উপরে নরওয়ের যে মূল্যায়ন দেখানো হল তার ভাষা দেখলে বোঝা যায়, তারা জানেন, গ্রামীণ ব্যাঙ্ক একটি এন জি ও । অথচ দেশে তখন এটি স্পেসিয়ালাইজড ব্যাঙ্ক হিসেবে নিবন্ধিত । আসলে গ্রামীণের অধিকাংশ অনিয়মের এবং অধ্যাপক ইউনুসের বিপুল অর্থের আসল রহস্য নিহিত আছে, এই এন জি ও এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে গুলিয়ে ফেলার মধ্যে । এর অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যেতে পারে । যেমন, গ্রামের মহিলাদের জনকল্যাণের নামে ফোন দেয়াকে যখন এন জি ও কর্মকান্ড হিসেবে দেখানো হয় তখন কিন্তু গ্রামীণ ফোন ছিল (এবং আছে) একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান । আসলে এটি ইচ্ছে করেই করা হয়েছিল । তদন্ত করলে দেখা যাবে, ঐ সময় এই প্রচারণার মাধ্যমে এন জি ও-র কর রেয়াতের সুবিধে নিয়ে অনেক যন্ত্রপাতি আনা হয়েছিল যা গ্রামীণ ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে ।

গ্রামীণের কর্ণধারের আর্থিক সাফল্যের মুল কথা:
কোনরকম অর্থনৈতিক লাভ বা সুবিধা না থাকার পরেও যে কোন প্রতিষ্ঠান কর্মকান্ড চলতে পারে এবং অন্তত: কিছুদিন বা বেশ কিছু বৎসর টিকে থাকতে পারে উপরে এনরন এবং সাব-প্রাইমের উদাহরণ থেকে তা বুঝতে কষ্ট হয় না । ইতিমধ্যে অবশ্য এনরন এবং সাব-প্রাইমের অসারতা প্রমাণ হয়ে গেছে । “বাংলাদেশের গরীব লোকের সুদ সহ ১০০% ঋণ ফেরত দেয়া” আসলেই সত্য, না কি কোন ব্যক্তি বিশেষের আর্থিক সুবিধার জন্য সযত্নে প্রস্তুত সাজানো নাটক তা অদূর ভবিষ্যতে প্রমাণিত হবে ।

ব্যাঙ্ক তার ক্লায়েন্টকে দেয়া ও ক্লায়েন্টের কাছ থেকে নেয়া সুদের হারের ব্যবধানের মাধ্যমে যে টাকা লাভ করে তা দিয়ে তারা সকল ব্যয় নির্বাহ করে । অথচ গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সুদের মাধ্যমে যা পায়, তা দিয়ে তার কোন খরচই নির্বাহ হয় না । খরচটা আসে,এই “নাটক”টি দেখিয়ে বিদেশ থাকে পাওয়া টাকার সুদ থেকে। যে কোন হিসেবে এটি অর্থনৈতিক কাজ বলে গণ্য না হলেও অধ্যাপক ইউনুসের জন্য এটি খুবই লাভজনক একটি কাজ । এখানে “নাটক” করার জন্য তার বেশ কিছু টাকা খরচ হয় বটে, কিন্তু তার কয়েক হাজার গুন পাওয়া যায় বিদেশীদের প্রশংসা মিশ্রিত করুণার দান থেকে। আর এই আয় থেকেই অধ্যাপক ইউনুস গড়ে তুলেছেন অনেকগুলি বড় বড় এন জি ও, কমার্শিয়াল কোম্পানি, যার অনেকগুলির মালিকানা তার নিজের বা পরিবারের । আসলে এই পরিপ্রেক্ষিতে সন্তর্পণে ঋণদান কর্মসূচীটি বন্ধ করে দিলেই হতো তার জন্য মঙ্গল । এদিকে এক ফান্ড থেকে অন্যত্র টাকা সরানোর একটি ঘটনা ধরা পড়ার পর সবার দৃষ্টি সেদিকে পড়েছে, এখন সাংবাদিকের অনুসন্ধানে সবই হয়তো বেড়িয়ে আসবে । ঐ ফান্ড থেকে টাকার খোঁজ পড়ার পরে এখন তিনি টাকা ফেরত দিয়েছেন । এতেই বোঝা যায় কাজটা অন্যায় ছিল । এখন টাকা ফেরত দিলেও তিনি যে অন্যায় বা ভুল করেছিলেন তা নিজেই প্রমাণ করে দিলেন। মূল টাকা ফেরত দিলেও এই টাকায় ঐ সময় যে কাজ করার ‘কমিটমেন্ট’ ছিল তা কি আর করা সম্ভব হবে ? এই প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে অনেক টাকা দিয়েছে বলে তারা তার হিসেব রেখেছে এবং চুক্তি করেছে । আর তার ব্যতিক্রম হওয়ায় কিছু বলতে পেরেছে । কিন্তু যে অগণিত প্রতিষ্ঠান সরল বিশ্বাসে দেশের বা দরিদ্র জনগণের উপকারে জন্য কোটি কোটি টাকা দিয়েছে এবং কোন চুক্তি করেনি তাদের টাকা কোথায় গেছে ? এটা প্রায় চোখ বুজেই বলে দেয়া যায়, ঐসব টাকা যথেচ্ছ ব্যবহার না করা হলে অধ্যাপক ইউনুসের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলি এত শাঁসালো হত না ।

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের অবদান:
সাধারণ মানুষ ও সরকারের সহানুভূতি এবং শক্তিশালী বিদেশী লবির সমর্থন থাকায় অধ্যাপক ইউনুস এদেশে তার কাজে অনেক সহায়তা, এমন কি অনেক সময় ‘অন্যায্য” সহায়তাও পেয়েছেন । কিন্তু এদেশে তার এই কাজের অবদানটা কি ? তিনি প্রচুর মানুষকে চাকুরী দিয়েছেন । কিন্তু তাদের এতো পরিশ্রম, কষ্ট এবং বিদেশীদের এতো টাকা কি সম্পদ সৃষ্টি করেছে ? অতি সামান্য সংখ্যক মানুষ ঋণ নিয়ে গরু কিনেছে । ধরা যাক, ৫ হাজার টাকার গরু ৩ বছরে ৮ হাজার দামের বা, ১ মন ওজনের গরু ২ মন ওজনের হয়েছে, কিছু গাছ, কিছু মাছ বেড়েছে । এর পরিমাণ কত, আর তিনি যে তার প্রকাণ্ড প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষকে খাটিয়ে লক্ষ কোটি টাকা খরচ করলেন, তার পরিমাণ কত ?

“আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশী” এমন বহু প্রতিষ্ঠান দেশে আছে । বৃহত্তর স্বার্থে পরিচালিত সরকারী প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয় বিবেচনায় আনা হয় না । বাংলাদেশের এন-জি-ও গুলির আয় ব্যয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য । কিন্তু অধ্যাপক ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাঙ্ক তো (স্পেসিয়ালিজড) ব্যাঙ্ক হিসেবে রেজিস্ট্রিকৃত ।

ধরে নেয়া যাক, তিনি বিদেশের দেয়া টাকা খরচ করেছেন, আমাদের লোক চাকরী পাচ্ছে, বেতন পাচ্ছে, তাই আমাদের অসুবিধাটা কি ? মেনে নিলাম, কিন্তু এতো বিপুল টাকা খরচ করে দেশ কি লাভ করছে ? এত টাকা খরচের খেলার মাধ্যমে অধ্যাপক ইউনুস অনেকগুলি কোম্পানি খোলার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু বিদেশীদের এত অনুদানের বিনিময়ে দেশ বা দেশের মানুষ কি সম্পদ পেল ? যেসব বিদেশী তাকে টাকা দিয়েছে তারা তো এই দেশ বা দেশের মানুষকে তা দিয়েছে, কাউকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান করার জন্য দেয় নি ।

গ্রামীণ ব্যাঙ্কের আয় ব্যয়ের হিসাব নিলে এক অদ্ভুত ব্যাপার দেখা যেতে পারে । হয়ত দেখা যাবে, মোট ব্যয়ের ৯০% খরচ হয় কর্মচারীদের বেতন ভাতা, অফিস ইত্যাদি খাতে, আর ১০% ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানে । আবার আয়ের ক্ষেত্রে দেখা যাবে, ক্ষুদ্র ঋণ বাবদ ব্যয়িত টাকার ২৯% আয় (যেহেতু সুদের হার প্রায় ২৯% এবং সবটাই আদায় হয়), যা কিনা মোট ব্যয়ের (দশমিক) ০.০২৯% ।

গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ছাড়া এত বিপুল অর্থ ব্যয় করে এত কম উৎপাদনের দ্বিতীয় কোন উদাহরণ পৃথিবীতে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ । আর এ ধরনের অন্য উদাহরণটি (এনরন) তো এখন ইতিহাস । কোন বিবেকবান মানুষ কি কারও ভুল পরিকল্পনায় অথবা কারও ব্যক্তিগত স্বার্থে এমন কাজ সমর্থন করতে পারে ? এতদিন বিষয়টি অনেকের চোখের আড়ালে ছিল, এখন বিদেশীরাই এ বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়েছে ।

উপসংহার:
একসময় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কর্মকান্ড নিয়ে দেশে বিদেশে প্রশংসার তুফান বয়ে যেত । অভিজ্ঞতা আমাদের শেখায়, এসব কিছু কিন্তু একটা অবাস্তব কর্মকাণ্ডের সত্যতা নির্ধারণ করে না । আমাদের ভুললে চলবে না যে, অতি ফালতু এবং জনসাধারণকে ঠকানোর পদ্ধতির জন্য এনরন কোম্পানিকে এক সময় বিশ্ববিখ্যাত বাণিজ্যিক পত্রিকা “ফরচুন” পর পর ৬ বৎসর “আমেরিকার সবচেয়ে আবিষ্কার ধর্মী কোম্পানি” বলে উল্লেখ করেছিল । অথচ তাদের উৎপাদন ছিল শূন্য ।

“এনরন” সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারনার জন্য পড়া যেতে পারে:
01. Bryce, Robert (December 17, 2008). Pipe Dreams: Greed, Ego, and the Death of Enron. PublicAffairs. ISBN 1-586-48201-7.

02. Collins, Denis (May 24, 2006). Behaving Badly: Ethical Lessons from Enron. Dog Ear Publishing, LLC. ISBN 1-598-58160-0.

03. Cruver, Brian (September 1, 2003). Anatomy of Greed: Telling the Unshredded Truth from Inside Enron. Basic Books. ISBN 0-786-71205-8.

04. Eichenwald, Kurt (December 27, 2005). Conspiracy of Fools: A True Story. Broadway Books. ISBN 0-767-91179-2.

05. Fox, Loren (December 22, 2003). Enron: The Rise and Fall. John Wiley & Sons. ISBN 0-471-47888-1.

06. Fusaro, Peter C.; Ross M. Miller (June 21, 2002). What Went Wrong at Enron: Everyone’s Guide to the Largest Bankruptcy in U.S. History. John Wiley & Sons. ISBN 0-471-26574-8.

07. Salter, Malcolm S. (June 30, 2008). Innovation Corrupted: The Origins and Legacy of Enron’s Collapse. Harvard University Press. ISBN 0-674-02825-2.

08. Swartz, Mary; Sherron Watkins (March 9, 2004). Power Failure: The Inside Story of the Collapse of Enron. Broadway Business. ISBN 0-767-91368-X.

09. Toffler, Barbara Ley; Jennifer Reingold (April 13, 2004). Final Accounting: Ambition, Greed and the Fall of Arthur Andersen. Broadway Business. ISBN 0-767-91383-3.

সাব-প্রাইম সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারনার জন্য পড়া যেতে পারে:
01. Fengbo Zhang (2008): 1. Perspective on the United States Sub-prime Mortgage Crisis , 2. Accurately Forecasting Trends of the Financial Crisis , 3. Stop Arguing about Socialism versus Capitalism .
02. Kolb, Robert (2010). “Lessons from the Financial Crisis: Causes, Consequences, and Our Economic Future” (Robert W. Kolb Series), Publisher: Wiley ISBN 978-0470561775
03. Demyanyk, Yuliya (FRB St. Louis), and Otto Van Hemert (NYU Stern School) (2008) “Understanding the Subprime Mortgage Crisis,” Working paper circulated by the Social Science Research Network.
04. DiMartino, D., and Duca, J. V. (2007) “The Rise and Fall of Subprime Mortgages,” Federal Reserve Bank of Dallas Economic Letter 2(11).
05. Reinhart, Carmen M., and Kenneth Rogoff (2008) “Is the 2007 U.S. Sub-Prime Financial Crisis So Different? An International Historical Comparison,” Harvard University working paper.

গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কাজ সম্বন্ধে এই প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য তাদের প্রকাশিত পুস্তক ও পত্রপত্রিকায় পাওয়া যাবে । তবে ইন্টারনেটে এই প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে ভিন্নমতের অনেক তথ্য পাওয়া যাবে ।

অধ্যাপক বিজন বিহারী শর্মা, ডীন, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ, আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ।

2011/pdf/YUNUSbd_142312999.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment