Analysis on AL BNP Local Election in Bangladesh

Analysis on AL  BNP Local Election in Bangladesh

আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, শরিকদের মুচকি হাসি, বিএনপিতে আশার আলো !!

চিটাগাঙয়ে- আওয়ামী লীগের বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দাড় করিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার মধ্যদিয়ে বিজয় যাত্রার শুভ সূচনাটা আসলেও বিএনপির জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ।
সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ধারণা জন্মেছিল তারেক-কোকোর ঐতিহাসিক লুটপাটের ঘটনার পর বি এনপির এত সহজে ঘুরে দাঁড়ানোর কোন সুযোগ নেই !কারণ জিয়াউর রহমানের অবৈধ স্বৈরাচারী শাসন , উচ্চাদালতের রায় , রাজাকার আলবদরদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের অপরাধকে জনগণ ভাল দৃষ্টিতে নেবেনা ।অন্যদিকে হিসাব করতে পারি নিম্নলিখিত বিষয়গুলির কারণে ও এমনটা হতে পারে ।
(ক)নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আরও একটি নির্বাচন করে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কঠোর ভাবে আইন প্রয়োগকরে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রেখে “আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশী তাকে দেব“ এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন ।
(খ)রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ দেশকে নতুন ধারায় ফিরিয়ে আনতে নীরব ভূমিকায় পরিস্থিতি ও ফলাফল জেনে নিচ্ছেন ।
(গ)যেহেতু স্থানীয় সরকার পদ্ধতিটি জাতিয় রাজনীতি প্রভাবিত একটি অরাজনৈতিক প্রশাসন তাই এ বিজয় কে পুরো পুরি দলীয় বিজয় বলা যায়না । তবে বৃহত্তর দুটি দল এবিজয়ের সূত্রে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান অনুমান করলে ভুল হবেনা ।
(ঘ)এ নির্বাচনে বুঝতে কাহারো ভুল হয়নি যে ,বি এনপির শীর্ষস্থানে সংকট থাকলেও তৃণমূলে তারা ঐক্যবদ্ধ এই নির্বাচন তাই প্রমাণ করে।
(ঙ)দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দলটির ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ আর্থিকভাবে আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থানে থাকার সুবাদে ভোটারদের কাছে টানতে পেরেছে ।

আওয়ামী লীগের তৃণমূল ভেঙ্গে পরেছে:

বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত কাছের মানুষ ৭১জ্ঞর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিপ্লবী সরকারের নেতৃত্বদানকারী ,ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র, উদার মনের মানুষ ,পরিপক্ব রাজনীতিবিদ স্থানীয় সরকারের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ও দলীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ।এত-বড় একটি দলের নেতৃত্বে ও ক্ষমতায় থেকে দলের জনসমর্থনে এত দ্র²ত অবনতির দায় ও ব্যর্থতাকে এড়াবেন কি করে ? নির্বাচন হচ্ছে, হবে ,এমন গুঞ্জরন ও প্রস্তুতি তিনিই সবার আগে জানার কথা ।তবে কেন তৃণমূল পর্যায়ে দলের অবস্থা সম্বন্ধে অবগত নন । আর অবগত থাকলে কেন গুছানো হলনা ?-এমন প্রশ্ন উঠে আসতেই পারে ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার অতিতে যেকোনো সরকারের পুর্ণমেয়াদের কাজের চেয়ে দুই বছরে তার অনেক বেশী উন্নায়নমোলক কাজ করেছেন ,তা চ্যালেঞ্জ দিয়ে তারা বলর মত। তারপরেও কেন এই বিপর্যয় !
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিটা একটা কারণ হতে পারে । তাইবলে এমন হতে পারেনা ।পৃথিবীর সর্বত্র যখন মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত ,তখন বাজার পরনির্ভরশীল বাংলাদেশে লাগাম ধরবে কে ? ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদদের এবং দলের তহবিলে চাঁদা ,অনুদান , উপহার দিয়ে নিজ আখের গুছিয়েছেন । আমাদের দেশে তা এখন সংঘবদ্ধ অপরাধের রূপ নিয়েছে । ঐ ,”হোলা বিড়ালের” গলায় ঘণ্টা বাধবে কে !

এছাড়া যা হতেপারে তা নিম্মরুপ ।

(ক)আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের এমনকি শীর্ষ পর্যায়েও সরকারের দলীয় আশীর্বাদী হতে পারেনি , কারণ আওয়ামী লীগ সরকার যেহেতু দুর্নীতির দায়ে সাবেক সরকারে থাকা জামাত-বিএনপিকে আইনের দড়িতে বেঁধে তাদের অপকর্ম দিতে চাচ্ছে ,তাই সেই অপরাধটি করে তারা দুষিত হতে রাজিনয় । আর সেই কারণেই তৃণমূল থেকে তিন স্তরেই একটা ঘুপটি মেরে থেকে দলীয় বিপর্যয়ে যোগান দিয়েছেন ।
(খ)এখন স্থীমিত হলেও ছাত্রলীগের উৎরে উঠা সন্ত্রাসী ও টেনডারবাজির কিছু ঘটনা প্রচারমাধ্যমে-আসাতে সাধারণ মানুষ সরকারের প্রতি সন্দেহের তীর ছুঁড়ে ঘায়েল করেছে ।পৃথিবীর সবদেশেই দলীয় দল ক্ষমতায় গেলে নেতা কর্মীরা সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে , তবে তা আইন বহির্ভূত হতে পারবেনা ।এখানে কিছুটা
ঘাটতি দেখা যাচ্ছে ।
(গ)এছাড়া সাংগঠনিক একটি সংকট দলকে রোগাক্রান্ত করেছে ।বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের উচিত নেতা ও উঠতি নেতাদের নজরে আনতে দক্ষতা , সফলতা , সততা , আর রাজনৈতিক প্রঞ্চার জন্য পয়েন্ট ভিত্তিতে একটি ডাটা তৈরি করে বাৎসরিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে নথিভুক্তকরে তাদের মূল্যায়ন করা । তা হলে বিদ্রোহিতা থাকবেনা এবং নেতৃত্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বড় নেতাদের খুশি করে অযোগ্যদের যোগ্য বানানোর ফন্দিফিকির কাজে আসবেনা ।
(ঘ) খালেদার দখলে থাকা সেনানিবাসের বাড়ী ও তাকে উচ্ছেদের আইনি বিষয়টিকে সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসাবে নিয়েছেন ।

এছাড়া আরও দুর্বল দিক রয়েছে ,

শীর্ষে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ,জোটের সঙ্গীদের মুখ ফিরিয়ে চলা , ছাত্রলীগের সন্ত্রাস , বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ হীনতা,অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যর্থতা,খালেদা উচ্ছেদ আদালতের আইনি বিষয় ,একথাটা সাধারণ মানুষকে বুঝাতে দলীয় কর্মসূচী না থাকা । চাঁদাবাজি , সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য , পৌর ও যুবশ্রেনীতে দলীয় দুরত্বতা বৃদ্ধি , আমলাতন্ত্রের কাছে সরকারের নির্ভরতা, সব কিছু
মিলিয়ে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থায় ভাঁটা পরেছে বলে মনে হচ্ছে। তা-না হলে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের ১সপতাহের মধ্যে পৌর নির্বাচন হয়ে গেল ! জনগণ ভোট দিয়ে জানিয়ে গেল আমরা কাছের মানুষ, কাছেএসে আবার দুরে সরে যাচ্ছি । জাতি কি আবার শুনিবে সেই ধ্বনি ! “আওয়ামী লীগ হেরে গেলে মনে হয় বাংলাদেশ হেরে গেল “ আর যদি”আওয়ামী লীগ জিতে যায় তবে আওয়ামী লীগই শুধু জিতে”

দুই বছরের সেবা খতিয়ানে সফল সরকার ।

নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করে অতীতের সকল সরকারে নির্বাচনী দুর্নীতি থেকে রেড়িয়ে আসতে পেরেছেন ,আর সে কারণে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা পুনঃ প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছেন । উন্নয়নের পরিকল্পিত ব্যবস্থায় অতীতের যে কোন সরকারের চেয়ে বর্তমান মহাজোট সরকার ভাল করলে ও শরিকদের সাথে সমন্বয়ের অভাবে কেউ পিঁেছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ! আবার কেউ ক্ষমতার আশে পাশে থেকে সোনার হরিণ শিকার করছেন ।কৃষি , যোগাযোগ , শিক্ষা , আইন ,পররাষ্ট্র , অর্থ ,পরিকল্পনা , সুখ্যাতির সাথে দায়িত্ব পালনে ৮০% মার্কে রয়েছে ।নৌ , বাণিজ্য , স্থানীয় সরকার ,খাদ্য, ৫০% মার্কের বাইরে যেতে পারেনি ।প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ৯০% মাকর্ পেলেও রেকর্ডে আনা যাচ্ছেনা, কারণ সফলতার ১০০% ভাগ খুব তারা তারি জাতি ভোগ করতে পারবে বিধায় অঘোষিত রইলো বিদ্যুতের সফলতা।

তাছাড়া খালেদা জিয়া তার ৫ বছর শাসনামলে ১২শত মেগাওয়াটস উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিলেন বলে তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন ।শেখ হাসিনা তার দুই বছর শাসনামলে ১হাজার মেগাওয়াটস উৎপাদন বাড়িয়েছেন ,আগামী বছরে আরও যোগ হচ্ছে ১৪শত মেগাওয়াটস ।হাতে থাকছে আরও দুই বছর ,শেষের দুই বছর ৪হাজার মেগাওয়াট যোগ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ।সেখানে যদি ২হাজার মেগাওয়াটস আরও যোগ হয় তা হবে ইতিহাসের অভাবনীয় রেকর্ড উৎপাদন ।চাহিদা মিটবে কিনা তা জানার দরকার নাই , কারণ এই জাতির দৈনন্দিন ব্যবহারিক , পানীয় জল , বিদ্যুৎ , গ্যাস বাজার নিয়ন্ত্রণ চাহিদা মোতাবেক কোন সরকার এযাবৎ পূরণ করতে পারেনি । আগামী ৪০ বছরেও কেউ তা পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে ।বিদ্যুৎ , গ্যাস ,পানি হল দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের অতি মূল্যবান সম্পদ, চুরি করা সহজ !দৈনিক ৩শতটন উৎপাদন ক্ষমতার একটি রি-রোলিং মিলের ব্যবহৃত গ্যাসের মাসিক বিল হওয়ার কথা ৬৫-৭৫ লক্ষ টাকা ।

অথচ দিচ্ছেন ৮-৯ লক্ষ টাকা ।মাসে সরকারের গ্যাস , বিদ্যুৎ খেয়েই তো ওরা গণেশ ঠাকুরের পেট বানিয়েছে ।দেশের মানুষের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ববোধ ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়া পর্যন্ত কোন সরকারের দ্বারা এসবের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়।তাছাড়া উন্নয়নের গতি ধারা আমলাতন্ত্রের গদিঘরে আটকে রেখে আর্থিক ও রাজনৈতিক সুবিধার দফাদার (চৌকিদারের উপরে )হয়ে জাতির ক্ষতি করে চলছে ।সরকারকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের আকর্ষণীয় করতে প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়নে ওয়ান স্টপ পদ্ধতির পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে ।আমলাদের কে বুঝাতে হবে মানুষিকতার পরিবর্তন আনুন ।
যে দেশের রাষ্ট্রীয় নকরকে “স্যার “বলতে বাধ্যকরা হয় সে দেশের নাগরিকের মর্যদাই নকরের মর্যদা মেনেনিতে হয় । সাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের, কর্মচারীর নয় ।তাই রাষ্ট্রের সকল স্তরের কর্মচারী ও কর্মকর্তা সার্ভিস তথা সেবা প্রদান কালে জনগণকে স্যার কিংবা জনাব বলে সম্বোধন করতে হবে তা বাধ্যতা মূলক না করা গেলেজনগনের উপর যে মানুষিকতা চাপিয়ে দিয়ে প্রভু সুলভ আচরণ করা হচ্ছে তাতে শোষণ নীতির পরিবর্তন আসবেনা ।
সবশেষে বলতে হচ্ছে সরকারি দলের এখনো তিন বছর হাতে রয়েছে ,সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আইনি কঠোরতা আরও বাস্তব ধর্মী হতে হবে ।আমদানি কারক দের ডাটা ধরে মজুদের পরিমাণ , বাজার দর মূল্যায়ন সম্পর্কে অবগত হয়ে জনগণকে বুঝাতে হবে । কাজের আগে প্রচার নয় ,শেষ করে প্রচার বাড়াতে হবে । দলীয় পূর্ণগঠনে আঞ্চলিকতাকে নয় ,যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিতে হবে । যোগ্য ব্যক্তি কে প্রয়োজনে দলীয় তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে নেতৃত্বে এগিয়ে আনতে সাহায্য করতে হবে । দলের তৃণ মুলের কথা বিচার বিবেচনায় আনতে হবে ।গুরুত্ব পূর্ণ দলীয় পদগুলি সচল রাখতে মন্ত্রীদেরকে ঐ সব পদথেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে অথবা কারি পদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দলকে আগামী নির্বাচনের আগেই আজকের এই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে হবে ।

হারুন রশীদ আজাদ ( সিডনি থেকে ) azad.banglamedia@gmail.com

2011/pdf/welcome_BNP_231894284.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment