Why the government cannot solve Dhaka city's transportation problem ?

Why the government cannot solve Dhaka city's transportation problem ?

ঢাকার যাতায়াত সমস্যার সমাধান হয় না কেন ?

ভূমিকাঃ
আজকের বিজ্ঞানের এই চরম উন্নতির যুগে কোন শহরের যাতায়াত সমস্যা কি এমনি একটি বিষয় যার কোন সমাধান নেই ? তাহলে বাংলাদেশের রাজধানী, ঢাকা শহরে এত অর্থ ব্যয় করেও সরকার এই সমস্যার সমাধান করতে পারছে না কেন ? এই বিষয়টিই আমরা আজ আলোচনা করব । তবে শুরুতেই দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, এই সমস্যার সমাধান থাক আর নাই থাক, এ পর্য্যন্ত এই সরকারের যে কর্ম পরিকল্পনা দেখা গেছে বা উদ্দেশ্য বোঝা গেছে তাতে সমস্যা সমাধানের আশা সুদুর পরাহত ।

এই হতাশাজনক কথাটি বলার কারন প্রথমেই পরিষ্কার করে নেয়া ভাল । কল্পনা করা যাক, এই সরকারের গৃহীত কিছু পরিকল্পনার ফলে আমাদের গ্রামগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভাল হয়ে গেল, গ্রামে প্রচুর চাকুরী ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলো । তাহলে কি হবে ? অবধারিত ভাবেই অনেক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাবে । তার ফলে কি হবে ? শহরের লোক সংখ্যা কমে যাবে । শহরে জিনিশ পত্রের চাহিদা কমে যাবে, জমির দাম কমে যাবে, ব্যবসায়ীরা আর ইচ্ছে মত পন্যের দাম বাড়াতে পারবে না, বাড়ী ভাড়া কমে যাবে, নতুন নতুন “পাখীর বাসা” সদৃশ বাড়ী বানানোর “পাগলা হিড়িক” বন্ধ হয়ে যাবে, এ ধরনের বাড়ীর দামও কমে যাবে ।

সরকার প্রকাশ্যে যাই বলুক, তাদের কর্মপরিকল্পনা থেকে এটা সবাই বোঝে যে, উপরোক্ত ব্যবস্থার ফলে যাদের ক্ষতি হবে, বর্তমান সরকারকে তাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলতে হয় । ইতিমধ্যেই তারা এর সপক্ষে বেশ কিছু কাজও করেছে । কিন্তু কেনো ? এর সম্ভাব্য কারন হিসাবে একটি পুরানো কথা বলা যেতে পারে । তা হলো, “বাংলাদেশে রাজনীতি করার জন্য যে বিপুল খরচ তা সংগ্রহ করার কোন স্বচ্ছ পথ নেই । অধিকাংশ সময় আবার এই খরচের সংগে যুক্ত হয় রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের ধনবান হবার ব্যপারটি । এটা এখন সবারই জানা যে, সরকারের নানাবিধ সহায়তার কারনে যারা বেশী বেশী আর্থিক সুবিধা লাভ করে থাকে তারা তাদের বাড়তি লাভ রাজনীতিক এবং সংশ্লিষ্ট আমলাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয় ।“ মূলতঃ সরকার যতদিন তাদের উপরোক্ত নীতি বদল না করবেন, ততদিন যাতায়াত সহ ঢাকা শহরের অনেক সমস্যারই সমাধান হবে না, তা সে জনগনের যত কষ্টই হোক না কেন ।

লেখার শুরুতেই আমরা একটি হতাশাজনক বক্তব্য রেখাছি এই কারনে যে, “(০১) বাংলাদেশে রাজনীতি করার জন্য অদূর ভবিষ্যতে স্বচ্ছভাবে অর্থ যোগান দেবার কোন সম্ভাবনা নাই, (০২) সরকারকে তাই অর্থযোগানদারদের স্বার্থ রক্ষা করেই চলতে হবে, এবং (০৩) ঢাকা শহরের লোক সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে না থাকলে সরকারের পক্ষে তাদের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হবে না ।“

যাতায়াত সমস্যা ও ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ঃ
ঢাকা শহরের জনসংখ্যা কমলেই যে যাতায়াত সহ অনেক সমস্যার সমাধান হবে এটা একটা শিশুও বুঝতে পারে । কিন্তু সেটা হলে আজ যারা শহরে বা তার আশে পাশে অনেক দামে জমি কিনে রেখেছেন, আরো দামে এপার্টমেন্ট, দোকান, অফিস তৈরী করে বিক্রি করবেন বা ভাড়া দেবেন বলে পরিকল্পনা নিয়েছেন তাদের কি হবে ? ঢাকা শহরের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি । যত দ্রুত এই জনসংখ্যা বাড়ানো যাবে উপরোক্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থও ততই ভালো ভাবে রক্ষা করা যাবে। শহরের জনসংখ্যা বাড়ানোর উপায় হচ্ছে, (ক) শহরে উন্নয়নের নামে বেশী বেশী টাকা খরচ করা এবং (খ) গ্রামের উন্নয়নের জন্য বেশী টাকা না দেয়া। দূর্ভাগ্যবশতঃ বর্তমান সরকার ঠিক এই কাজ গুলিই করে চলেছে ।

গনতান্ত্রিক দেশে জাতীয় সংসদের কাজ হচ্ছে, আইনের মাধ্যমে দেশের ও জনগনের সার্বিক কল্যান করা। এ জন্য তারা দেশ ও সমাজের পরিবর্তনশীল অবস্থার সংগে তাল রেখে নতুন পরিস্থিতিতে যুগোপযোগী আইন প্রনয়ন করবেন এবং পুরানো আইন সংশোধন বা বাতিল করবেন । স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সরকারগুলির কর্মপদ্ধতি লক্ষ করলে মনে হয়, তারা গনতন্ত্রের এই শিক্ষা ভুলে গেছে । তাদের কাজ দেখে মনে হয়, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাজ আইন প্রনয়ন নয়, বরং বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের টাকা পয়সা খরচের বিষয়টি দেখা, যদিও এগুলি একেবারেই প্রশাসনিক বিষয় । গনতন্ত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রশাসনিক বিষয়ে যুক্ত হবার কোন সুযোগ নেই, যদিও কোন কোন দেশে ক্ষমতাসীন দল জনকল্যানে নয়, বরং নিজেদের স্বার্থে এসব প্রবর্তন করেছে । স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে কাজ না করিয়ে বিপুল অর্থ সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে খরচ করার এক অদ্ভুত প্রবনতা আমরা এই সরকারের মধ্যে দেখছি । গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ জাতীয় কনভেনশন-২০১০এ গত ১৩ই নভেম্বর, ২০১০ শনিবার গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করার কথা বললেও ক্ষমতা ক্রমশ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। যে কারণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।“ … “ সাংসদদের উপদেষ্টা হওয়ার বিধান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের দ্বান্দ্বিক অবস্থানের কারণে কার্যতঃ উপজেলা পরিষদ অকার্যকর।“

গ্রামের বা উপজেলার উন্নয়নের অনেক কথা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে বলা হলেও এই সরকার যে নানা ভাবে গ্রামকে অবহেলা করে চলেছে তা তাদের উপজেলা কার্য্যক্রমকে চাঙ্গা না করা, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী করা, তাদের কাজের উপর সাংসদদের খবরদারী করার ব্যবস্থা ইত্যাদির মাধ্যমে বোঝা যায় । গ্রামের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলে গ্রামের লোক কম দামে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হবে । এতে শহরের ধনীরা সস্তায় গ্রাম এলাকায় জমি কিনতে সক্ষম হবে ।
সরকারী উদ্দোগ ব্যর্থ হয় কেন ?
বাংলাদেশের মানুষের সাধারন অভিজ্ঞতা এই যে উচ্চশিক্ষিত জ্ঞানীদের দ্বারা প্রনীত, দেশী বিদেশী উপদেষ্টাদের উপদেশ সমৃদ্ধ এবং অভিজ্ঞ সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত প্রকল্পও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়। এর কারন সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হলে বিশেষজ্ঞগন রাজনীতিকদের অযাচিত হস্তক্ষেপের কথা বলে থাকেন । বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞদের কথা না শুনে রাজনীতিকদের নিজেদের বুদ্ধিতে করা এ ধরনের কোন প্রকল্পের কথা উঠলে প্রথমেই আসবে জিয়াউর রহমানের খাল কাটা প্রকল্পের কথা।
(ক) খাল কাটা প্রকল্পঃ সেচ কাজের জন্য খাল কাটা সুদূর অতীতকাল থেকেই চলে আসছে । এমনকি মহেঞ্জোদারো হরপ্পাতেও এর প্রচলন ছিল। বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এটি এখন প্রকৌশলের একটি বিষয়ে পরিনত হয়েছে । কিন্তু প্রেসিডেণ্ট জিয়া বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী সকলকে অগ্রাহ্য করে এটিকে একটি রাজনৈতিক বিষয়ে পরিনত করলেন। কোন বিশেষ এলাকায় রাজনীতি চাঙ্গা করা প্রয়োজন, অমুককে রাজনৈতিক প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা করা প্রয়োজন, অতএব নাও “খাল কাটা প্রকল্প”, এত মাইল খাল কাটতে হবে। রাজনীতিকগন বলে দিলেন, অমুক নদী থেকে অমুক খাল বা বিল পর্যন্ত খাল কাটতে হবে । স্থান চিহ্ণিত হল । এটিকে টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বন্টন করা হল । প্রেসিডেণ্ট জিয়া একদিন এক কোদালের কোপ দিয়ে উদ্বোধন করে গেলেন, শুরু হয়ে গেলো কাজ । অনেক খালের অবস্থাই এরকম, ব্যাবসায়ী সমিতির অংশ-খুব ভাল করে নিয়ম মাফিক কাটা, রাজনৈতিক দলের অংশ – মাঝামাঝি মানের, ছাত্রসংস্থার অংশ – জমি একটু কুপিয়ে রাখা ইত্যাদি। কিছু সংখ্যক খাল কাটা হল, এখন প্রেসিডেণ্ট জিয়া আসবেন উদ্বোধন করতে । তাকে পানিভরা খাল দেখানো হবে । সারারাত ধরে চালান হলো পাম্প, কিন্তু খাল খটখটে শুকনো । একটু পরেই লোকজন এসে জানালো, “আপনারা করছেন কি ? এদিকে যে আমাদের বাড়ীঘর সব ডুবে গেলো” । আবার বিপরীত ব্যাপার ও আছে । পাম্প চলছে, মেশিন ডুবে যাচ্ছে, জল দূরে যাচ্ছে না । বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে অবজ্ঞা বা অবহেলা করে শুধু রাজনীতির বুদ্ধি নিয়ে কাজ কঅরতে গেলে এমনই হয় ।

এই প্রসঙ্গে বর্তমান সরকারের নেয়া একই ধরনের আরও একটি প্রকল্পের উদাহরন দেয়া যেতে পারে । এটি হলো, “ঘড়ির কাঁটা ঘোরানো” প্রকল্প ।
(খ) ঘড়ির কাঁটা ঘোরানো প্রকল্পঃ রোম-এ রাত আটটায় সূর্যের আলো থাকে, বেলজিয়াম এ রাত দশটায় পরিষ্কার সূর্য্য দেখা যায়। এসব তথ্য আমাদের জানা । এসব দেশে ঝতূ পরিবর্তনের সাথে সাথে সূর্য-সময়ের এই বিরাট পরিবর্তনের কারনে বার বার অফিস সময় পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় । সেটা করার চাইতে ঘড়ির সময় পরিবর্তন করে কাজটি সহজে করা যায় । তাই সেসব দেশ তা করেছে। আমাদের দেশে এই পরিবর্তনকাল বড় জোর এক বা দেড় ঘন্টা । এর জন্য ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে সময় পরিবর্তন অপ্রয়োজনীয় । শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক জাফর ইকবাল সহ অনেকেই একথা বলেছিলেন । কিন্তু সরকার তা না শুনে এবং হয়তো কোন বিশেষ বিশেষজ্ঞের কথা শুনে অনেক কারিকূরী করেছে । ফলে, ভোররাতে অন্ধকারের মধ্যে দেখেছি রাস্তায় জ্যাম লেগে গেছে, গাড়ীতে রিক্সায় ঘুমন্ত বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে । না গিয়ে কি করবে, ঘড়িতে যে সকাল সাড়ে সাতটা বেজে গেছে । যাই হোক, মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়ে সরকার শেষ পর্য্যন্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে । এই প্রকল্পের ফলে মানুষ হাসিঠাট্টা এবং কৌতূক করার একটি ভালো উপাদান পেয়ে গেছে । এতদিন “খাল কাটা”র কথায় যাদের মন খারাপ হোত এতে তারাই সব চেয়ে বেশী আমোদ পেয়েছে । এখন আবার গ্রামে একটি বাড়ি একটি খামার নামে একটি প্রকল্প চলছে । ভবিষ্যতই বলে দেবে এটি আমাদের গ্রামীন অর্থনীতিতে কোন সাফল্য আনবে, না কি কৌতূকের ভান্ডার সমৃদ্ধ করবে ।

উপজেলা প্রকল্পঃ
হোসাইন মোহাম্মাদ এরশাদের হাজার দোষ সত্বেও তাকে যে “পল্লীবন্ধু” বলা হয় তা একেবারে ঠিক । উপজেলা নিয়ম প্রবর্তন করে তিনি বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের যে উপকার করেছিলেন তার কোন তূলনা হয় না । দূর্ভাগ্য, পরবর্তী কোন সরকারই সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারে নি । এরশাদের সময়ে “রাতের আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস” প্রবর্তিত হয়েছিল । গ্রামের লোক রাতে বাসে এসে দিনে কাজ সেরে আবার রাতেই চলে যেতো । এর ফলে অনেক হোটেলের ব্যবসার ক্ষতি হয়েছিল । তারা কোন দাবী বা চাপ প্রয়োগ করে থাকলেও এরশাদ তা অগ্রাহ্য করছিলেন । কিন্তু তার চেয়েও তিনি অনেক বেশী সাহস দেখিয়েছেন তার চার পাশের প্রভাবশালী সরকারী কর্মকর্তাদের চাপ উপেক্ষা করায় । গ্রাম উন্নয়নের নামে শত শত কোটি টাকা সরাসরি গ্রামে চলে যাচ্ছে, এটা সহ্য করা কারো কারো পক্ষে কি কম কষ্টের ? কর্মকর্তারা তো আগে দেখে এসেছেন, টাকা তাদের হাত দিয়েই বন্টন হয় । এক্ষেত্রে তাদের স্বার্থ রক্ষাকারী শত শত প্রকল্প তৈরী করা হয়, তার পর সামান্য ছিটে ফোঁটা যা থাকে তাই গ্রামে যায় । উপজেলা প্রকল্পের মাধ্যমে এরশাদ যে অতি শক্তিশালী একটি চক্রকে উপেক্ষা করতে পেরেছেন তা কি অন্যরা পেরেছে, না পারবে ?

“অধিকন্তু নঃ / অতি দোষায়”ঃ
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, অধিকন্তু নঃ দোষায় । বাস্তবের আলোকে এখন আমাদেরকে বলতে হবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অধিকন্তু অতি দোষায় । যার সন্তান সংখ্যা বেশী তার কপাল পোড়া, যে দেশের জনসংখ্যা বেশী দুর্ভিক্ষ তার নিকটতম প্রতিবেশী । বাংলাদেশে বড় জোর পঞ্চাশ লক্ষ লোক বাস করতে পারে এমন একটি স্থান, ঢাকায় এক কোটি লোক বসবাস করছে । দেশের সরকার অলিখিত ভাবে একটি কর্তব্য পালন করে যাচ্ছে, তা হলো ঢাকার শহরের সম্পদের মূল্য বৃদ্ধি যেন অব্যাহত থাকে, আর এখানকার সব ব্যবসায় যেন বাড় বাড়ন্ত থাকে । এই উদ্দেশ্য পুরনের জন্য প্রয়োজন শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা । এই প্রবনতা অব্যাহত থাকলে ঢাকার জনসংখ্যা এক দশকেই দেড় কোটি হয়ে যেতে পারে । ফলাফল ? নাই বা বললাম ।
“অধিকন্তু অতি দোষায়”। ব্যক্তিগত যানবাহন মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দের জন্য ভালো । সেই গাড়ীর সংখ্যা বেশী বেড়ে গেলে কি হয় আমরা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি । যে ভবনে অনেক লোক কাজ বা বসবাস করে সেখানে অনেক গাড়ী রাখার জন্য মাটির নীচে পার্কিং রাখা হয়, বা অন্য ক্ষেত্রে বহুতল পার্কিং বানানো হয় । এই পার্কিং থেকে একই সময় যখন অনেক গাড়ী বেরোতে থাকে তখন সামনের রাস্তার কি অবস্থা হয় তা সবারই জানা আছে । আসলে মানুষ বা তাদের ব্যবহৃত জিনিষপত্র এমন কিছু নয় যাকে ছোট চোঙ্গায় ইচ্ছেমত পোরা যাবে, এবং তার পরও তারা সুস্থ থাকবে । অথচ স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হলে জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়াতেই হবে ।

উপসংহারঃ
নতুন নতুন প্রকল্প থেকে সবারই লাভ । আবার, দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পের সুবিধা এই যে, অনেক পরে যখন তা ব্যর্থ হবে তখন কাদের বুদ্ধিতে সেগুলি করা হয়েছিল তা আর খুঁজে দেখার সুযোগ থাকবে না । শুধুমাত্র এই কারনেই আমাদের দেশে অনেক প্রকল্প গ্রহন করা হয় । একেবারে নিঃস্বার্থভাবে দেখলে দেখা যাবে, ঢাকার যাতায়াত বা যান বাহন সমস্যার সমাধান দুটিঃ (০১) শহরের লোক সংখ্যা কমানো এবং (০২) প্রাইভেট গাড়ীর সংখ্যা কমানো । বর্তমান অবস্থায় এটি করতে হলে গ্রামের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে । আর এ দুটি করা হলে গাড়ী, বাড়ী, জমির ব্যবসার সংগে জড়িত প্রভাবশালী অনেকের ক্ষতি হবে । সংগত কারনেই তাই প্রশ্ন থেকে যায়, এই সরকার কি এত সাহসী পদক্ষেপ আদৌ নিতে পারবে ?

অধ্যাপক বিজন বিহারী শর্মা, ডীন, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ, আসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।

pdf/2010/Jam_Unsolved_649230157.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment