Agun na Golap

Agun na Golap

আগুন না গোলাপ? -ড. ফরিদ আহমেদ

ড. কামাল হোসেন, বীর উত্তম কাদের সিদ্দিকী,অলি আহমেদ এবং আরোও অনেকে বলছেন দেশ সংঘাতের দিকে এগুচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সরকারের রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করতে হলে সংঘাতকে এড়িয়ে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। সরকার আমাদের ঐক্যের ভিত্তি যে মহান মুক্তিযুদ্ধ তাকে সবার সামনে নিয়ে এসেছেন। এবং চেষ্টা করছেন দেশ পরিচালনা। সরকার অঙ্গীকার করেছিলেন যুদ্ধপরাধীদের বিচার করবেন। সেই বিচারে যদি কোন রাজনৈতিক ,দলের, যারা ঐ যুদ্ধপরাধীদেরকে বিগত ৩৯ বছর প্রশয় দিয়েছে ,মুখ থেকে কথা আসে যে সরকার সংঘাতের দিকে যাচ্ছে তাহলে সরকার কি নিরুপায় নয়?

বেগম জিয়া ও তার দল প্রকাশ্যে যুদ্ধপরাধীদের রক্ষা করতে নানান হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছেন। আমার মনে হয়েছে সরকার একান্ত বাধ্য হয়ে বেগম জিয়াকে সেনানিবাস ছাড়তে বাধ্য করেছেন। এটি প্রতিহিংসা থেকে নয়। এটি এমন নয় যে শেখ হাসিনাকে তিনি বাড়ী ছাড়া করেছেন বিধায় খালেদা জিয়াকে শেখ হাসিনা বাড়ি ছাড়া করেছেন।বিষয়টি হল যুদ্ধপরাধীদের নিয়ে রাজনীতি।

আজকের সেনাবাহিনী একটি নতুন দিগন্তে । তাঁরা আজ জাতিসংঘ মিশনে কাজ করে। মানবাধিকার কি তাদের জানতে হয়। আর তাই জেনারেলরা ১/১১-তে সামরিক শাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।আমার ধারণা হয়েছে কোন সৈনিক বা তরুণ অফিসার সামরিক শাসন সামরিক শাসন চান না। এমনি এক রাজনৈতিক সামাজিক প্রেক্ষাপটে কিছু মানুষ আবার উসকানী দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। আশা করি মানবাধিকার লংঘনের অপবাদ সেনাবাহিনী আর নেবে না।
সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, অনেক র্দূনীতি করছে ইত্যাদি অভিযোগ নিয়ে মাঠ গরম করবার মত সময় আসেনি। রুটি সেকতে গলে তাওয়া গরম হতে হয়। যদি অসময়ে জনগণের দূর্ভোগ নিয়ে মাঠগরম করতে চায় কেঊ তবে সন্দেহতো থাকবেই। সাম্প্রতিক হরতাল রাজনীতি নয়। এটি নিছক যুদ্ধপরাধীদের রক্ষার একটি পায়তারা।

আমি অবশ্যই স্বীকার করবো ১/১১-তে সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক আচরণ না করলে আজ হয়তো মহাজোট ক্ষমতায় আসতো না। কিন্তু তারা কেন মহাজোটকে ক্ষমতায় যেতে সাহায্য করেছে? কারণ একটিই। তাঁদের সচেতন উপলব্ধি: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশকে কেবল অস্ত্র দিয়ে রক্ষা করা যাবে না। তাঁরা জাতিসংঘে কাজ করেছে। তারা বোঝে ১৯৭১ সালে যা ঘটেছে তা মানবাধিকারের মহালংঘন। সেই মহাহত্যা যজ্ঞের বিচার না হলে দেশ কেবলই থমকে থাকবে।

বেগম জিয়া তাঁর নির্বাচনী ভাষণে বলেছিলেন তিনি প্রতিশোধ নেবেন না। কিন্তু তিনি কি তাঁর সেই প্রতিশ্রতি রেখেছেন। আজ র্দূনীতির মামলাগুলো নিয়ে সমাজে আলোচনা নেই। জনগণ সেগুলো ভুলে গেছে। সরকার তারেক- কোকোকে প্যারোল দিয়েছে। তাঁরা কি বিদেশে থাকতেন যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো? সরকারের এই মহানুভাবতা কেন? কারণ তারাও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

বিরোধী দলীয় নেত্রী এত সম্মান ও শ্রদ্ধাকে উপেক্ষা করে আবার ঐ যুদ্ধাপরাধীদের চক্রান্তে মেতে উঠেছেন কি? আর তাই বোধহয় আদালতও ক্ষুব্ধ। আমার মনে হয় আদালত ভেবেছেন যদি আজ বেগম জিয়ার প্রতি মানবিক আচরণ করি তবে তিনি এমন দানবিক হবেন যে ৭১, ৭৫ বা ২৫ শে ফেব্র“য়ারির চাইতে বড় একটি প্রলয়ঙ্কর কিছু করে বসবেন। জনাব ওবায়দুল কাদের হয়তো এজন্য আতঙ্কিত।

হতে পারে ৩০টি সিট। কিন্তু ৩০ শতাংশ ভোটের প্রতিনিধি তিনি। কেন তিনি সংসদে যাবেন না? নিজেকে কেন এত দূর্বল ভেবে বাঁকা পথে যাচ্ছেন? কেন আজ হুমকি ধামকি। সবাই আজ শেখ হাসিনাকে তিরষ্কার করছেন কেন ? তিনি ড. ইঊনুসের মত পবিত্র আত্মাকে কলঙ্কিত করছেন কি? তিনি কি পবিত্র দেবী খালেদা জিয়াকে সংসদে দাড়িয়ে কলঙ্কিত করছেন? ড. ইঊনুস কি জাতির জনককে স্বীকার করেন? তিনি কি লোভী হয়ে ১/১১-তে রাজনীতিতে মাঠে নেমেছিলেন না? কি পার্থক্য কোরেশী আর ড. ইঊনুসের মাঝে?

আর বিরোধী দলীয় নেত্রী একটি বাড়ির মায়া কান্নায় আমরা উত্তেজিত হচ্ছি। যদি সত্যিকারের দেশনেত্রী হতেন তবে তিনি পার্লামেন্টে আসতেন। বাড়ি ছিল বেগম জিয়ার একটি পরীক্ষা। তিনি সেই পরীক্ষায় তিনি ফেল করেছেন। আর ফেল করে তিনি যখন চিৎকার করছেন তখন গদগদ হয়ে তাদের তোষোমদে মেতেছেন কেঊ কেঊ।

বেগম জিয়া, মাননীয় বিরোধী দলীয় নেত্রী, যদি আপনি সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হয়ে থাকেন, যদি আপনি বীরঙ্গনা হয়ে থাকেন, তবে ঐ যুদ্ধপরাধীদের দল ছেড়ে জনতার কাতারে আসুন। প্রায়ত জিয়াউর রহমান যে ভুল গুলি করেছেন তার জন্য ক্ষমা চেয়ে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আগামী বিজয় দিবসে নতুন যাত্রা শুরু করেন। তবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তবেই আপনার আত্মা শান্তি পাবে। আরেকবার ১/১১ সৃষ্টি করে ক্ষমতায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে সেই শান্তি পাবেন না। আগুন না গোলাপ সেটি আপনার বিবেচ্য!

লেখক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনায় নিয়োজিত ।

pdf/2010/ampm____208144965.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment