এভাবে হারবে বাংলাদেশ?
ফজলুল বারী, কলকাতা থেকে: কুলবান্ত সিং’এর কষ্ট নিজেকে আরও স্পর্শ করে। কলকাতায় গত দু’দিন এই কুলবান্ত সিং বেশিরভাগ সময়ের সঙ্গী। শনিবারের খেলায় ইডেনে খেলা দেখতে ঢুকিয়ে দিয়ে দূরের রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে দাঁড়িয়ে রেডিওতে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড খেলার ধারাবিবরনী শুনেছেন কুলবান্ত। খেলা শেষে বেরিয়ে আসার পথে গায়ে বাংলাদেশের জার্সি-পতাকা থাকায় এক শ্রেনীর ভারতীয় যুবকদের নানা কটাক্ষও শুনতে হয়েছে। কেউ কেউ ছড়া কেটে এমনও বলছিলেন, ‘তিন বলে দুই রান করতে পারেনা কারা, বাংলাদেশ ছাড়া আর কারা’! কিন্তু কুলবান্তের গাড়ির কাছে আসতেই অন্য প্রতিক্রিয়া পাই। রাগে-কষ্টে গরগর করছিলেন যুবক। আমাকে তিনি বলেন, এই সাকিবকে আমরা এতো ভালোবাসি। কলকাতার মাঠের হাজার হাজার মানুষ সাকিবকে এতো ভালোবাসে। সে মাঠে নামলে একসঙ্গে এতো মানুষ তালি দেয়। কিন্তু সেই সাকিব কিনা এভাবে আউট হলো? খেলায় হারজিৎ আছে। টি-টোয়েন্টিতে সাহস করে মারলে ছয়, না মারলে ভয়। খেলায় হারারওতো একটা ধরন আছে। তাই বলে কী এভাবে হারবে বাংলাদেশ? কুলবান্তকে কোনভাবেই প্রবোধ দিতে পারছিলাম না।
শনিবারের ম্যাচে এমন অনেক ভারতীয় দর্শক বাংলাদেশকে সমর্থন করতে এসেছিলেন। কথা বলতে গিয়ে বুঝি তাদের পূর্ব পুরুষের আদিবাস বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মতো উড়ন্ত দলকে বাংলাদেশ ১৪৬ রানে বেধে ফেলেছে দেখে তারা জয়ের সুবাস পাচ্ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের এমন পরাজয় তাদের মুষড়ে দেয়। আসলে ব্যাঙ্গালুরুতে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য হারের পর শনিবার ইডেনে বাংলাদেশ দলের শারীরিক ভাষাই বলে দিচ্ছিলো এটি একটি বিধস্ত ভাঙ্গাচোরা দল। খেলার পর রাতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এই প্রতিনিধিকে বলেছেন, ব্যাঙ্গালুরুর হারের পর অনুশোচনায় দু’দিন রূম থেকে বেরোননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিক। এমনকি টিম মেম্বারদের সঙ্গে এক সঙ্গে খেতেও বসেননি। তার এ কথার পর কি আর বুঝতে বাকি থাকে কি অবস্থায় খেলতে নেমেছিল আমাদের দল! এক মুস্তাফিজ নিজেকে মেলে ধরেছেন তার বিস্ময়কর নিজস্বতায়। আর কেউ নিজেকে সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। বাংলাদেশ দলের জন্যে এক দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকলো ইডেন গার্ডেনস।
শনিবার ম্যাচ শেষে চলে যাই কলকাতার গ্র্যান্ড হোটেলের বাংলাদেশের জন্মদিনের পার্টিতে। কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের এই পার্টিতে কলকাতার অনেক বিশিষ্ট বাঙালি উপস্থিত ছিলেন। খেলার মাঠ থেকে সরাসরি ফেরায় পরনে বাংলাদেশ দলের জার্সি থাকায় আমাকে সহজে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল। সেখানে সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী পবিত্র সরকার, শিল্পী ঈশা মোহাম্মদ, আনন্দবাজার পত্রিকার অনমিত্র চট্টোপাধ্যায়, দেবদু্লাল বন্দোপাধ্যায়ের ছেলে দেবরাজ বন্দোপাধ্যায় সহ অনেকে এক রকম আর্তনাদের সুরে বলেন, এ কী করলো বাংলাদেশ? এ দলটাকে আমরা এতো ভালোবাসি। তবে এদের সবাই এও বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটে বিস্ময়কর উন্নতি করেছে। এতো ছোটছোট লিকলিকে একদল ছেলে। কিন্তু এরাই যে এতো ভালো ক্রিকেট খেলে যে না দেখে বিশ্বাস করা কঠিন। টি-টোয়িন্টি বিশ্বকাপ ২০১৬ থেকে বাংলাদেশের বিদায় নিয়ে এমন নানান প্রতিক্রিয়া এখন কলকাতায়।
Related Articles
Pranab Mukherjee’s visit to Dhaka
India’s Minister for External Affairs, Pranab Mukherjee’s visit on 9th February, has been called a “goodwill” one, perhaps because the
জন্মদিন ও কান সমাচার
রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক যে কোন সভ্য দেশের জন্যেই আসল চালিকা শক্তি। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হয়, স্বপ্ন দেখে, রাজনীতিবিদরা সে স্বপ্নের
বঙ্গবন্ধুর ৯৫তম জন্মদিন ও গৌরবময় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
পি.এস.চুন্নু,সিডনি: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৫তম জন্মদিন ও বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া এক