আমি ও আমার ঘুড়ি
সবার বয়স বাড়ে, আমার বাড়ে না ।
আমি এখনো শৈশবের সেই ঘুড়ি উড়ানো মাঠের চির বালক ;
সেই কেটে যাওয়া ঘুড়ি টি মনের আকাশে চক্কর দিচ্ছে চক্কর দিচ্ছে; কিন্তু মাটিতে পড়ছেনা;
আজ পঞ্চাশ বছর হয়ে গেল
সুতা কাটা সে ঘুড়ি টি চুরি করে নিয়ে গেছে আমার বয়স
চিরঞ্জীব করেছে আমাকে ।
যাদের মনে এমন ঘুড়ির সুতা নেই ; তারা গম্ভীর, বয়সী
তারা বাংলা গীতি কবিতার গবেষক;
তারা ষাটের দশকের দুরন্ত বিপ্লবী;
যার পেশানিতে এখন কাল সেজদার দাগ’
কিংবা বিগত যৌবনা অভিনেত্রী নয়নে কাজল ;
এই মানুষেরা
কৈশোরেই ঘুড়ি কে ছিঁড়ে ফেলেছে; যেভাবে কৃষকেরা
স্বপ্নের লাঙ্গল ফেলে দিয়ে
চলে এসেছিলো বাস্তব শহরে ;
তেমনি তারা কেটে ফেলেছে নাড়ির সূতাকে ।
আজ দেখি বয়সের বাঘ তাদের উপর ঝাপিয়ে ;
তাদের তাড়িয়ে জমা করছে মসজিদে মন্দিরে গিরজায়;
মৃত্যুর তাড়ায় তারা কেউ কেউ শ্মশানের হুতাশন;
কিংবা গোরস্তানের পাথরে তাদের নামের দীর্ঘ সারি ।
আমি সেই হাহাকার করা প্রান্তরে শুধু এক নবীন শালিক
হৃদয়ে র অচিন গুহায় আমি মৃত্যুঞ্জয় ।
ঘুড়ির বালক বনের শালিক শোন,
নিরাশার চরাচরে আমাকে কবর দিতে চায় মানুষ ।
আমার অন্তিম শিয়রে ফাতেহা পড়বে বলে
হাজির মানুষের এক দীর্ঘ মিছিল ।
ঘুড়ির বালক
তোমার হাতে আমি আমার ঘুড়িটিকে দিলাম ;
শালিক তোমায় দিলাম আমার ভবঘুরে দিনের সকল সংগীত ;
আমাকে তোমরা মনে রেখো ;
আমাকে তোমরা ঘুমাতে দিয়ো না
Abed Chaudhury
আবেদ চৌধুরী একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি জিনবিজ্ঞানী, বিজ্ঞান লেখক এবং কবি। তিনি ক্যানবেরা শহরে বসবাস করেন। আবেদ চৌধুরী আধুনিক জীববিজ্ঞানের প্রথম সারির গবেষকদের একজন। তিনি পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে, যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন স্টেট ইনস্টিটিউট অব মলিক্যুলার বায়োলজি এবং ওয়াশিংটনের ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। ১৯৮৩ সালে পিএইচডি গবেষণাকালে তিনি রেকডি নামক জেনেটিক রিকম্বিনেশনের একটি নতুন জিন আবিষ্কার করেন, যা নিয়ে সে সময় আমেরিকা ও ইউরোপে ব্যাপক গবেষণা হয়। তিনি অযৌন বীজ উৎপাদন-সংক্রান্ত (এফআইএস) তিনটি নতুন জিন আবিষ্কার করেন, যার মাধ্যমে এই জিনবিশিষ্ট মিউটেন্ট নিষেক ছাড়াই আংশিক বীজ উৎপাদনে সক্ষম হয়। তাঁর এই আবিষ্কার অ্যাপোমিক্সিসের সূচনা করেছে, যার মাধ্যমে পিতৃবিহীন বীজ উৎপাদন সম্ভব হয়। ১৯৯১ সালে তিনি শৈবাল ও অন্তরীক্ষ নামে কবিতার বই লেখেন।
Related Articles
আমার বাড়ি স্বর্গ আমার
আমার বাড়ির সারা উঠোন ঢাকা কচি সবুজ ঘাসে। সকাল হলেই ময়না চড়ুই খেলতে রোজই আসে। আমার বাড়ির পেছন ধারে ঐ
আবর্তিত জীবন
তোমার জন্য কবিতাখানি তুমি – তনয়া, রমণী, নারী। তোমারই শরীরখানি কত উপাদেয় উপকরণ শত কবিতা, গল্প কিংবা চিত্রাঙ্কন অথবা কোনো
ক্লান্ত সূর্য ডোবে দিনের শেষে
ফুল বাগিচায় ফুটেছে ফুলকলি অরুণ তপন পূব গগনে হাসে, ভোরেরবেলা ঝরে রাতের শিশির উঠোনের ঐ কচি সবুজ ঘাসে। দিঘির জলে