মুজিব ভাই – বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবনের ছায়া

মুজিব ভাই – বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবনের ছায়া

বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের বই লেখা হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে কিন্তু এবিএম মুসার লেখা দু’মলাটের চটি এই বইটা বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের এমনসব দিকে আলোকপাত করেছে যেগুলো সাধারণত কেউ আলোচনায় আনেন না সচরাচর। এই বইটার ফ্ল্যাপে লেখা আছে “একেবারে ঘরোয়া আটপৌরে ভাষায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক এই বইয়ে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে, এক কথায় যাকে বলা যায় অতুলনীয়।” ছোট এই বইটা অনুচ্ছেদ আকারে লেখা আরও সহজ করে বললে, বিভিন্ন সময়ের লেখকের লেখা কলামের বই আকারে আত্মপ্রকাশ। বইয়ের শুরুতেই আছে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর বিশাল ভূমিকা। এরপর আছে লেখকের কথা “আমার কথা” শিরোনামে তারপর আছে এগারোটি অনুচ্ছেদ এছাড়াও আছে কিছু আলোকচিত্র। লেখকের দুই দশক ধরে বিভিন্ন দৈনিক ও সাময়িকীতে প্রকাশিত কতিপয় কলাম, প্রবন্ধ না নিবন্ধের সংকলন এই বইটি। বন্ধুবন্ধুকে নিয়ে লিখতে যেয়ে সবাই “জনগণের অবিসংবাদিত নেতা”, “সাহসী এক সিংহপুরুষ” এসব বিষয়ে লিখেছেন কিন্তু এর বাইরেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন “শ্যাখ সাহেব”, “শ্যাখের পোলা” আবার কারও কাছে শুধু “মুজিব ভাই” বা “নেতা”।

‘মুজিব ভাই’ – বইয়ের প্রচ্ছদ

লেখক বঙ্গবন্ধুকে সম্বোধন করতেন মুজিব ভাই নাম তাই এই বইটিতে বঙ্গবন্ধুর অন্যান্য গুণাবলীর চেয়ে লেখকের দেখা মুজিব ভাইয়ের ব্যক্তিত্বের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। লেখক শুরু করেছেন একটা লাইন দিয়ে “হিমালয়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে ওপরে তাকিয়ে সর্বোচ্চ পর্বতমালার উচ্চতা মাপা যায় না।…তবে গজ-ফিতা দিয়ে হিমালয়-সদৃশ শেখ মুজিবুর রহমানের শারীরিক উচ্চতা অনুমান করা গেলেও তাঁর ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা অথবা হৃদয়ের বিশাল ব্যাপ্তি কোন মানদন্ড দিয়ে মাপা অথবা দাড়িপাল্লায় ওজন করা সম্ভব ছিল না।” আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, ফয়েজ আহমদ এবং লেখককে বঙ্গবন্ধু একসঙ্গে দেখলেই বলতেন, “এই রে সারছে! আপদ, বিপদ আর মুসিবত একসঙ্গে। কী জানি কী ফ্যাসাদে ফেলবে।” বঙ্গবন্ধু পরিচিত অপরিচিত সকলের জন্যই ছিলেন এমন দিলখোলা। লেখকের ভাষায়, “সত্যিই বঙ্গবন্ধুকে যারা বুঝেছিল, শুধু তারাই বাঙালিকে চিনেছিল, বাংলাদেশকে ভালোবাসতে পেরেছিল।” অনেকেই ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রশাসনিক দক্ষতা বা দূরদর্শিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কিন্তু লেখক কয়েকটা উদাহরণের মাধ্যমে বুঝতে চেয়েছেন বঙ্গবন্ধু ঠিক কতখানি দক্ষ ছিলেন।   

একবার জার্মান দূতাবাসের প্রেস সচিব মিস্টার ব্রেমের আমন্ত্রণে জামান সফরের আমন্ত্রণ পত্রে বঙ্গবন্ধুর অনুমতি আনতে গেলে বঙ্গবন্ধু সেটাতে লিখেন “দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে আপনাদের বিদেশযাত্রার অনুমতি দিতে পারলাম না বলে আমি দুঃখিত।” এরপর লেখক এমপি হিসেবে নির্বাচিত হবার পর নিজ এলাকায় কাজ করার জন্য একটা গাড়ির জন্য আবেদনপত্র নিয়ে গেলেন বঙ্গবন্ধু সেখানে লিখেনঃ “জীবনে কখনো কোন অন্যায় আবদার প্রশ্রয় দিই নাই, ভবিষ্যতেও দিব না। আপনার প্রার্থনা মঞ্জুর করিতে পারিলাম না বলিয়ে দুঃখিত।” বঙ্গবন্ধুর সাথে লেখক তার শেষ সাক্ষাতের স্মৃতির কথাও লিখেছেন। ১৪ই আগস্ট পড়ন্ত বেলায় দেখা করতে গিয়েছিলেন লন্ডনের সানডে টাইমসের আমন্ত্রণে একটা সেমিনারে যোগ দিতে যাওয়ার প্রাক্কালে। আবেদনটি শুনে বঙ্গবন্ধু বিষণ্ণ কণ্ঠে বললেন, “চলে যেতে চাস, যা ফিরে এলে নিশ্চয় দেখা হবে।” বঙ্গবন্ধুর রঙ্গরস করে কথা বলার ক্ষমতা ছিলো একেবারেই স্বভাবজাত এমনকি উনি অন্যের গলা নকল করে গল্প শোনাতে ভালোবাসতেন। উদ্ভুত পরিস্থিতি অনুযায়ী উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে যেকোন ঘটনার মধ্যেই উনি কৌতুকের উপাদান খুঁজে নিতেন। এছাড়াও সবার সাথে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো একেবারেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতেন। 

সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি এই বইয়ে এসেছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাদামাটা জীবনপ্রণালী। এসেছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুরু মাওলানা ভাসানীর কথা, এসেছে সবসময়ের প্রেরণাদায়িনী সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছার কথা, এসেছে বঙ্গবন্ধুর সন্তানদের অনাড়ম্বর জীবনযাপনের কথা, এসেছে বঙ্গবন্ধুর অন্তরঙ্গ বন্ধু  এবং পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আইনজীবী সিরাজুল হক এবং তার পুত্র আনিসুল হকের কথা। এই বইটাতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবনের খন্ডিত ছায়া পাওয়া যায়। বেগম ফজিলাতুন্নেছার কথা বলতে যেয়ে লেখক বলেছেন উনি ‘ফার্স্ট লেডি’ হতে চাননি। বহু বছর আগে স্বামীর সঙ্গে গ্রাম্য বধূর যে লেবাসটি পরে এসেছিলেন, গণভবন বা বঙ্গভবনে এসে তা ছাড়তে চাননি। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে জেলখানায় জেলখানায়। সেই সময়ে শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরে এগিয়ে নিয়েছে বেগম ফজিলাতুন্নেছা একাই। বলা হয়ে থাকে শুধুমাত্র ফজিলাতুন্নেছার টানে বঙ্গবন্ধু গণভবনের সুরক্ষিত কামরা ছেড়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে ফিরে আসতেন কর্মক্লান্ত দিনের শেষে কারণ বেগম ফজিলাতুন্নেছা একদিনে যেমন ছিলেন তার প্রেরণাদায়িনী আবার অন্যদিকে ছিলেন রাজনৈতিক পরামর্শকও। সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে এই আটপৌরে অন্তঃপুরবাসিনী মানুষটা বাড়ির চার দেয়ালের বাইরে না যেয়েও কিভাবে যেন পড়তে পারতেন বাংলাদেশের মানুষের মনের কথা।

বেগম মুজিবের সাদাসিধে জীবনের বর্ণনা দিতে যেয়ে লেখক লিখেছেন তাঁর সবসময়ের সংগী ছিলো একটা পিতলের পানের বাটা। উনাকে একবারই মাত্র একটা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর সম্মানে রেসকোর্স ময়দানে নির্মিত হয়েছিলো ‘ইন্দিরা মঞ্চ’। বঙ্গবন্ধু বহু খোশামোদ করে উনাকে সেই অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু বেগম মুজিব তাঁর পানের বাটাটা নিতে ভুল করেননি। সেই প্রথম কাতান শাড়ি পরে কোথাও গেছেন তাই একহাতে সামলাচ্ছেন শাড়ি আর অন্যহাতে ধরে আছেন সেই পিতলের পানের বাটা। যাতে লোকজন না দেখতে পায় তাই সেটা কাপড়ের আড়াল করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। এটা দেখে বঙ্গবন্ধু মৃদুস্বরে ধমকে উঠে বলেছিলেনঃ ‘ওটা আবার নিয়ে আসলা ক্যান?’ আগরতলা ষড়যন্ত্রের মামলা চলছে ক্যান্টনমেন্টে। এরমধ্যেই আয়ুব খান পাকিস্তানে একটা গোলটেবিল বৈঠক ডাকেন তখন সংগঠিত গণঅভ্যূথানের বিষয়ে আলোচনার জন্য এবং বঙ্গবন্ধুকে প্রস্তাব দেয়া হয় তিনি যেন প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বৈঠকে যোগ দেন। সেসময় বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে একটা খবর পাঠালেন, ‘হাতে বটি নিয়ে বসে আছি, প্যারোলে মুচলেকা দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যেতে পারেন; কিন্তু জীবনে ৩২ নম্বরে আসবেন না।’ প্রকৃতপক্ষে বেগম মুজিব স্বামীর প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত না থেকেও দেশে কি ঘটছে, জনগণ কি ভাবছে তার খবরাখবর রাখতেন কিন্তু বাঙালি জাতির মুক্তিদাতার স্ত্রী শক্তিদায়িনী, প্রেরণাদায়িনী, মহিলার স্থান কেন বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় থাকবে না বলে লেখক আক্ষেপ করেছেন। 

বঙ্গবন্ধুর অনাড়ম্বর জীবনপ্রণালী

বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলের কথা এসেছে বেশ বিস্তারিত আকারে কারণ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সবচেয়ে বেশি কুৎসা ছড়ানো হয় তাঁর ছেলেদের কর্মকান্ড নিয়ে। ব্যাপারটাকে অনেকটা ব্যক্তিগত চরিত্র হননও বলা যেতে পারে তাই হয়তোবা লেখক ইচ্ছে করেই উনার ছেলেদের কর্মকান্ডের বিশদ বিবরণ তুলে ধরেছেন। কামাল, জামালের পর ছোট ছেলের নাম কেন রাসেল রাখা হলো এই বিষয়ে মজা করে বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলেন লেখক, কামাল জামালের সাথে মিল রেখে ছোট ছেলের নাম দামাল রাখতে। এই প্রশ্ন শুনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেনঃ ‘তোর ভাবীকে জিজ্ঞেস কর. আমি তো জেলে জেলেই কাটালাম, কে কখন এলো, কার নাম কি রাখা হলো জানতাম না কি?’ রাসেলের কোন প্রকার বিশেষ নিরাপত্তা ছাড়াই একা একা   স্কুলে যাওয়াটা লেখক কে বিস্মিত করেছিলো। আর অবসরে বড় বোনের বাসা পর্যন্ত একা একাই সাইকেল চালিয়ে চলে যাওয়া ছিলো তার দৈনন্দিন কাজের অংশ। বঙ্গবন্ধুর মেজো ছেলে জামালের বিষয়ে বলা হয়েছে সে ছিলো মুখচোরা, লাজুক প্রকৃতির। সর্বদা পশ্চিম কোণের একটা ছোট ঘরে পড়াশোনা করতে দেখা যেতো কিন্তু সেই জামালই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে ভারতে যেয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং সাহসিকতার পরিচয় রাখেন।

বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে কামাল ছিলো একেবারেই অন্যধাঁচের। রাজনীতি তাঁর মোটেও ভালো লাগতো না। সারাক্ষণ ক্রীড়া, শিল্প, সাহিত্য, সংগীত এইসব নিয়ে থাকতেন। উনিও মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে যেয়ে প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তিতে তাঁকে নিযুক্ত করা হয় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কের এডিসি পদে। যুদ্ধ শেষে কামাল তাঁর দূরদৃষ্টি দিয়ে বুঝেছিলেন, সদ্য স্বাধীন নিঃস্ব দেশে যুদ্ধফেরত তরুণদের সবার রাতারাতি কর্মসংস্থান করা যাবে না। তখন তিনি তরুণ যুবাদের নিয়ে গঠন করলেন বাংলাদেশের প্রথম ব্যান্ড দল যাতেকরে তারা কোন খারাপ কাজে জড়িয়ে না পরে। এছাড়াও যারা প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার অঙ্গন আর গানের সংস্কৃতিতে আগ্রহী নয়, তাদের আকৃষ্ট করলেন খেলার জগতে। প্রতিষ্ঠা করলেন আবাহনী ক্রীড়া চক্র।  শেখ কামালের রাজনীতিতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিলো না কিন্তু একবারই তাঁকে নির্বাচনী প্রচারে দেখা গিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু লেখককে জোর করে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দিলে উনি কি করবেন বুঝতে পারছিলেন না। তখন শেখ কামালকে বঙ্গবন্ধু রাজি করান লেখকের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার ব্যাপারে। তিনি একটা খোলা জিপে দাঁড়িয়ে নির্বাচনী এলাকার মধ্যে দিয়ে গেলেন আর আসলেন। তাঁকে দেখার জন্য রাস্তার দুপাশে মানুষ দাঁড়িয়ে গেলো। সবার মুখে একটাই কথা ‘শ্যাখের পোলারে দেখতে যায়।’ শেখ কামাল জনগণের সালাম নিলেন আর হাত নেড়ে নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন।       

মাওলানা ভাসানীর সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে যেয়েই অবশ্যম্ভাবীরূপে উঠে এসেছেন তাঁর রাজনৈতিক গুরু মাওলানা ভাসানীর কথা। মাওলানা ভাসানীর সম্মন্ধে লেখক বলেছেনঃ “একদিন যাঁর পদভারে এ দেশের মাটি কম্পিত হতো, যাঁর মুখে খামোশ শব্দটি উচ্চারিত হলে ইসলামাবাদের মসনদ কেঁপে উঠতো, সেই মাওলানা ভাসানীকে এ দেশের মানুষ ভুলে যেতে বসেছে।…মাওলানা ভাসানী না হলে আওয়ামী লীগ হতো না, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ভারত থেকে পাকিস্তানে আসতেন না…এমনই অনেক কিছু হতো না, যদি না এই ক্ষণজন্মা পুরুষটির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হতো।…বস্তুত সারা জীবন এই মানুষটি বিতর্কিত থেকেছেন।” শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন, মাওলানা সাহেবের আদরের ‘মজিবের’. মাওলানা সাহেব সবসময়ই বলতেনঃ ‘আমার মজিবর’ না থাকলে এটা হতো না, ওটা করতে পারতাম না। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আওয়ামী লীগের তৃতীয় কাতারের নেতা কিন্তু তাঁর মধ্যেই ভাসানী দেখতে পেয়েছিলেন ভবিষ্যতের দাবদাহের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ, যে আগুন ছড়িয়ে গেলো সবখানে। কালের স্রোতে দুজনের পথ দুদিকে বেঁকে গেলেও যোগাযোগটা ছিলো। চরম বিপদের মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু স্মরণ করতেন তাঁর প্রিয় মাওলানা সাহেবকে। মাওলানা সাহেবের নেতৃত্বেই বাংলাদেশের মানুষ ‘জেলের তালা ভাঙবো/শেখ মুজিবকে আনবো’ স্লোগান দিয়ে তাঁকে আগরতলার মিথ্যা মামলা থেকে মুক্ত করে এনিছিলেন। দেশ স্বাধীন হবার পর বঙ্গবন্ধুকে প্রথম দেখায় জড়িয়ে ধরে মাওলানা সাহেব কেঁদে বলেছিলেনঃ ‘মজিবর তুমি বেঁচে এসেছো?’ বাহাত্তর সালে এক টিভি সাক্ষাৎকারে মাওলানা সাহেব বলেছিলেনঃ ‘মজিবরের বিপদ এখনো কাটেনি।’ তিন বছরের মাথায় সেটা সত্যি হয়েছিলো। একবার আওয়ামীলীগের ছেলেরা মাওলানা সাহেবকে নিয়ে অপমান করার চেষ্টা করলে বঙ্গবন্ধু উত্তেজিত হয়ে উঠে বলেনঃ ‘তারা পেয়েছে কি? কতটুকু জানে তারা মাওলানা সম্পর্কে।’

এরপর এসেছে সাতই মার্চের ভাষণ প্রসঙ্গ। লেখক বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে মার্কিন গণতন্ত্রের পথনির্দেশক আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গ ভাষণ, ব্রিটিশ জাতির সংকটকালে উইনস্টন চার্চিলের যুদ্ধকালীন একটি বেতার ভাষণের সাথে তুলনা করেছেন। গেটিসবার্গ ভাষণে আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন ‘এ নিউ নেশন’-এর কথা, ‘এ নিউ বার্থ অব ফ্রিডম’-এর কথা। আর চার্চিল তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, হিটলারের ফ্যাসিস্ট আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। তিনি দেশবাসীকে আহবান জানিয়েছিলেন ‘শেষ রক্তবৃন্দ দিয়ে যুদ্ধ করতে’. সাতই মার্চের ভাষণ শুধু একটি ঘোষণা নয়. ছিলো স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ ঘোষণা। এই ভাষণ বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন অতি ধীরেসুস্থে পরে একসময় চরমে পৌঁছেছেন। শুরুতে তিনি একটা ইতিহাস বিবৃত করেছেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক পটভূমি ব্যাখ্যা করেছেন। তারপর প্রস্তুতির কথা বলেছেন। সবশেষে একটি আহবান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেছেন। তাঁর বক্তব্য অতীত থেকে বর্তমানে এলো, তারপর ভবিষ্যতের দৃঢ় প্রত্যয়ের ঘোষণা ‘জয় বাংলা’ তাই সাতই মার্চের ভাষণ পড়তে হবে, বিশ্লেষণ করতে হবে আবেগ দিয়ে নয়।   

রোসকোর্স ময়দানে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ মঞ্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বঙ্গবন্ধুর বিশাল হৃদয়ের পরিচয় করিয়ে দিতে যেয়ে লেখক লিখেছেনঃ “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আলোচনায় কখনো ব্যক্তি মুজিবকে পরিচিত করানো হয় না। জাতির পিতা শেখ মুজিব, স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিব, রাজনীতিবিদ ও একটি জাতিসত্তার প্রবক্তা, একটি স্বাধীন দেশের রূপকার, ব্যর্থ বা সফল প্রশাসক শেখ মুজিব আলোচিত হন, সমালোচিত হন, কিন্তু ব্যক্তি মুজিব, আমাদের মুজিব ভাই এবং জনগণের শ্যাখ সাব সেইভাবে আলোচিত হন না।” বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই অনেক স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমা পেয়েছিলেন।  আসলে বঙ্গবন্ধু তাঁর চরম শত্রুরও সংসারের খবর নিতেন। বন্দিদশা থেকে ফিরেই তিনি প্রথমে সাংবাদিকদের খবর নিয়েছিলেন। একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক যে সবসময় বঙ্গবন্ধুর সকল কর্মকান্ডের কঠোর সমালোচনা করতেন বঙ্গবন্ধু নিজ উদ্যোগে তাকে খুঁজে বের করে তাকে পাকিস্তানে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন কারণ তখন পর্যন্ত পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃত দেয়নি তাই বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পাকিস্তানের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ ছিলো না।

বঙ্গবন্ধুর নেতা হওয়া নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেন, শেখের মাথায় কিছু নাই, মুখের জোরে রাজনীতি করে গেলো। এসব ঢালাও মন্তব্যের জবাবে লেখক লিখেছেন, ”এদেশে নেতা হওয়ার জন্য একটিমাত্র বস্তু অতীব প্রয়োজন। তা হচ্ছে হৃদয়, বিরাট এক হৃদয়ের অধিকারী হতে হবে। আর সেজন্য থাকতে হবে একটা বড়সড় ওজনদার কলিজা।” অবশ্য বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের সবচেয়ে দুর্বল দিকও ছিলো তাঁর নরম কলিজা। যে যত সমালোচনাই করুক একটা বিষয় খুবই স্পষ্ট ছিলো সেটা হচ্ছে, একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য কেউ পুনর্গঠিত করতে পারতেন না। বঙ্গবন্ধুর মতো পৃথিবীর আর কোন নেতা শূন্য কোষাগার নিয়ে কোন রাষ্ট্রের হাল ধরেননি। বঙ্গবন্ধুর সরকার হাল না ধরলে দেশের বিবদমান পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিত, সে কথা খুব কমই আলোচিত হয়। তিনি একটা সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের হাত থেকে দেশকে বাঁচিয়েছিলেন। ভারতীয় সেনাদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেন কেন তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন? আসলে তিনি সমগ্র বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষকে একটি পরিবার মনে করতেন, নিজে ছিলেন সেই পরিবারের প্রধান। পরিবারে সবাই ছিলো তার স্বজন, আপনজন, আত্মার আত্মীয়। আসলে বঙ্গবন্ধুর মতো করে এতো বলিষ্ঠ উচ্চারণে আর কেউ জনগনকে ভালোবাসার কথা বলতে পারতেন কি?

বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশমাটিক চরিত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছিলো তাঁর অসাধারণ স্মৃতিশক্তি। বাংলার যেকোনো প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যে-কেউ দেখা করতে এলেই বলতেন, আরে তুই অমুক গ্রামের অমুকের পোলা না? তোর দাদা কেমন আছে? সেই ছোট্ট বোনটির বিয়ে হয়েছে। লেখকের নিজ জেলা ফেনীর মরহুম রুহুল আমিনকে বঙ্গবন্ধু অনেক স্নেহ করতেন। ভুসির ব্যবসা করতেন বলে বঙ্গবন্ধু তাঁকে ভুসি বলেই সম্বোধন করতেন। একবার একটা তদবির নিয়ে লেখকের সাথে ৩২ নম্বরে আসলে বঙ্গবন্ধু তাঁকে জড়িয়ে ধরে ‘ওরে আমার ভুসি এসেছে’ বলে হইচই শুরু করলেন। এরপর ভুসি মাখনের মতো গলে গেলেন  তদবিরের কথা বেমালুম ভুলে গেলেন। দেশে ফেরার পর বিবিসির সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য ঢাকা এলে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি কি? হোয়াট ইজ ইওর স্ট্রেংথ?’ বঙ্গবন্ধু জবাব দিয়েছিলেন, ‘মাই পিপল৷ আমার জনগণ।’ তার পরের প্রশ্ন, ‘হোয়াট ইজ ইওর উইকনেস? আপনার সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা কি?’ বঙ্গবন্ধু উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমার জনগণের জন্য ভালোবাসা। মাই লাভ ফর মাই পিপল।’ শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র জাতির জনগণের নেতা, যিনি গর্বের সঙ্গে এমনটি বলতে পারতেন।

ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সস্ত্রীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁর বিচার নিয়ে চলেছে দীর্ঘসূত্রিতা। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায়ের পর লেখক লিখেছিলেন, ‘খুনের বিচার হয়েছে, হত্যার বিচার হয়নি।’ আর এই বিচার প্রক্রিয়ার সাথে শুরু থেকেই জড়িত ছিলেন আইনজীবী সিরাজুল হক আর তাঁর সুযোগ্য সন্তান আনিসুল হক। একবার লেখক আনিসুল হককে জিজ্ঞেস করেছিলেন এই বিষয়ে উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এই বিষয়টা বিচারকাজকে বিলম্বিত করতো কারণ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা আসলে ‘কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্য’ করেনি। বনফবন্ধুকে হত্যা ছিলো আন্তর্জাতিক রাজনীতির কূটচালের একটি অংশ। বঙ্গবন্ধুর হত্যার রহস্য যদি কেউ উদ্যোগ নেন, তাহলে তাকে এর আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। ক্রিস্টোফার হিচেনস এর লেখা বই ‘দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার’ বইয়ে কিছুটা আলোকপাত করা হয়েছে। হিচেনসের বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে “কিসিঞ্জার একজন বদমায়েশ, দুষ্কৃতকারী ও একজন খুনি – এ রৌগ, এ ক্রিক এন্ড এ মার্ডারার।” ক্রিস্টোফারের অনেক আগে লিফৎশুলজ বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন মহলের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে লেখালেখি করেছেন। সর্বপ্রথম ‘আনফিনিশ্ড রেভ্যুলুশন’ বইটিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেনানী কর্নেল তাহেরের ফাঁসি ও বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কাহিনী বর্ণনা করেছেন। লরেন লিফৎশুলজ ছাড়াও একাত্তরের বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকান কনসাল আর্চার ব্লাডের ‘দ্য ব্রুটাল বার্থ অব বাংলাদেশ’ বইয়ে এর উদ্ধৃতি রয়েছে। 

কিসিঞ্জার যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখনই মার্কিন দূতাবাসে একটি রহস্যজনক বৈঠক হয়েছিলো। স্টেট ডিপার্টমেন্টে সাবেক সিআইএ-প্রধানের সাক্ষ্য থেকে আরও যে বক্তব্য বেরিয়ে এসেছে, তা হলো, এই বৈঠকের ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকে অবহিত করা হয়েছিলো। কিসিঞ্জার ঢাকা থাকাকালেই আমেরিকান দূতাবাসে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল অথবা তার বীজ বপন করা হয়েছিল। এমন্যাস্টি ইন্টারনেশনাল, ইউরো শাখার তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট টমাস হ্যামবার্গার লেখকের সাথে এক সাক্ষাতে বলছিলেন, ”বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আভাস অন্য বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের কূটনীতিকেরা পেয়েছিলেন।” তাঁর জানা মতে, আরও অনেক দেশের কূটনীতিকের সঙ্গে হত্যাকারীরা কথা পর্যন্ত বলেছিল। কু ব্যর্থ হলে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আশ্বাস চেয়েছিলেন। যেসব দেশ আলোচনায় আসে তার মধ্যে এক নম্বরে ছিলো পাকিস্তান। পরবর্তিতে লেখকের সাথে পাকিস্তান ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ বার্নারের কথা হয় যার ভাই মিরাজ মোহাম্মদ ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টোর একান্ত সচিব। বার্নার বলেন, “১৫ আগস্ট ভোর ছয়টার (বাংলাদেশ সময় সাতটা) ভুট্টো উল্লাসিত কণ্ঠে মিরাজকে বঙ্গবন্ধু হত্যার খবরটি টেলিফোন করে দিয়েছিলেন।” তখন লেখক এবং মিনহাজ বার্নার দুজনেই আলোচনা করেছিলেন সেদিন এতো ভোরে এমন একটি সংবাদ পেলেন কি করে? 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সত্যিকার অর্থেই ছিলেন নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান যার বুকভরা ছিলো বাংলাদেশের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা কিন্তু তাঁকে নিয়ে বা তাঁর কর্মকান্ড নিয়ে সেই অর্থে কোন গবেষণা চোখে পরে না। বঙ্গবন্ধুর মাথায় সবসময়ই চিন্তা ঘুরপাক খেতো কিভাবে এই জাতির মানুষকে শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করবেন। উনার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলবে। বর্তমান সময়ে এসে উনার অনেক সিদ্ধান্তকেই অপরিপক্ক আবেগঘটিত মনেহতে পারে কিন্তু আমরা ভুলে যায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্যোজাত একটা দেশের কথা। যে দেশের সরকারি কোষাগারে কোন টাকা ছিলো না। আইনশৃংখলা রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কোন সুসংবদ্ধ পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। প্রশাসনে ছিলো না কোন অভিজ্ঞ লোক এমনকি ছিলো না কোন প্রশাসনিক কাঠামো। শুধু একটি ভৌগোলিক সীমানা, একটি মানচিত্র, গর্ব করার মতো একটা ইতিহাস আর একটা পতাকা নিয়ে যাত্রা শুরু একটি জাতির। সেই জাতির নেতৃত্বে ছিলেন একজন সর্বজনমান্য জননেতা, যার উপর দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছিল সেই অগোছালো বিশৃংখল পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র ও সরকারে পরিচালনার। দেশটির নাম বাংলাদেশ, নেতার নাম শেখ মুজিবুর রহমানবঙ্গবন্ধু বলতেনঃ “একটি ইউনিয়ন কাউন্সিল চালানোর অভিজ্ঞতা নেই, এদের নিয়ে আমাকে সাড়ে সাত কোটি মানুষের দেশ চালাতে হচ্ছে, এ কথাটি কেউ বুঝতে চায় না।”

Md Yaqub Ali

Md Yaqub Ali

আমি মোঃ ইয়াকুব আলী। দাদি নামটা রেখেছিলেন। দাদির প্রজ্ঞা দেখে আমি মুগ্ধ। উনি ঠিকই বুঝেছিলেন যে, এই ছেলে বড় হয়ে বেকুবি করবে তাই এমন নাম রেখেছিলেন হয়তোবা। যাইহোক, আমি একজন ডিগ্রিধারী রাজমিস্ত্রি। উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে অস্ট্রেলিয়াতে আমার আগমন ২০১৫ সালের মার্চে। আগে থেকেই ফেসবুকে আঁকিবুকি করতাম। ব্যক্তিজীবনে আমি দুইটা জীবের জনক। একটা হচ্ছে পাখি প্রকৃতির, নাম তার টুনটুনি, বয়স আট বছর। আর একজন হচ্ছে বিচ্ছু শ্রেণীর, নাম হচ্ছে কুদ্দুস, বয়স দুই বছর। গিন্নী ডিগ্রিধারী কবিরাজ। এই নিয়ে আমাদের সংসার। আমি বলি টম এন্ড জেরির সংসার যেখানে একজন মাত্র টম (আমার গিন্নী) আর তিনজন আছে জেরি।



Place your ads here!

Related Articles

দ্বি-খন্ডিত জাতীয়তা: কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব?

বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে সম্প্রতিকালে কিছু লেখা ছেপেছে বাংলাদেশের পত্রিকা। সেসব লেখা প্রমাণ করে নেতৃত্বের সংকট উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা। ১/১১ পর

মরে যাব (অনুগল্প )

প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন মা সবসময় বলেন একটু স্থির হও। কিন্তু রোদেলা স্থির হওয়ার জন্য জন্মায়নি। সবসময় একটা

ড কামালের মুখ ও মুখোশ!

ফজলুল বারী: বাংলাদেশ তথা ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রথম ছবির নাম ছিল ‘মুখ ও মুখোশ’। কালেক্রমে এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক ব্যবহৃত শব্দ

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment