'বাংলাদেশী আইডল' কেন দেখবেন?

'বাংলাদেশী আইডল' কেন দেখবেন?

Every Saturday 12.30am and repeat 7.30pm Australia time on SA-TV. Watch SA-TV on-line at http://www.jagobd.com

মিডিয়া টাইমস প্রতিবেদক: আজ ২৮ জুন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশের টেলিভিশন জগৎ হতে যাচ্ছে এক ইতিহাসের অংশ। আজ থেকে এসএ টিভিতে শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশী আইডল’! বিশ্বজুড়ে সাধারণের মাঝে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ সঙ্গীত প্রতিভা অন্বেষণের রিয়েলিটি শো ‘আইডল’ এর মূল ফরম্যাটে বাংলাদেশী সংস্করণে নির্মিত হয়েছে এই ‘বাংলাদেশী আইডল’।

দর্শক ভাবতে পারেন, এতো এতো সঙ্গীত প্রতিভা খুঁজে বের করার প্রতিযোগীতা আছে, তাহলে ‘বাংলাদেশী আইডল’ এর মতো একটা ‘কপি-পেস্ট’ প্রোগ্রাম কেন দেখবেন?
‘বাংলাদেশী আইডল’ এ দেখবেন কারণ, প্রথমত এটি আর যাই হোক, কপি-পেস্ট প্রোগ্রাম নয়। ২০০১ সাল থেকে ইউরোপ, আমেরিকাসহ এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৪৮টি দেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে আইডল, এবং এর মূল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রিম্যান্টল’ সব সময়ই আইডল এর ফরম্যাট এবং মানের বিষয়ে আপোষহীন। তাই এটি কোনভাবেই সঙ্গীত প্রতিভা অন্বেষণের ‘কপি’ করা অনুষ্ঠান নয়, বরং এটিই মূল অনুষ্ঠান।

সারাবিশ্বে ‘আইডল’ পরিচিত ‘মাদার অফ অল রিয়েলিটি শো’ বা সব রিয়েলিটি শো এর প্রসূতি হিসাবে। কারণ, ২০০০ সালে সাইমন ফুলার নামের একজন ব্রিটিশ মিডিয়া ব্যক্তিত্ব বিশ্বে প্রথম ‘এসএমএস এর মাধ্যমে টেলিভিশনের পারের মানুষের সাথে এপারের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ’ ঘটিয়েছিলেন। এবং তা ঘটেছিলো পপ আইডল অনুষ্ঠানে! ফলে, এসএমএস ভিত্তিক ভোটিং এর সূচনাও বিশ্বের টেলিভিশন জগতে প্রথম ঘটিয়েছিলো আইডল।

পরবর্তীতে ‘পপ আইডল’ এর সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আইডল’ ছড়িয়ে পরে পৃথিবী জুড়ে, এবং নির্মিত হয় আমেরিকান আইডল, আরব আইডল, ভিয়েতনাম আইডল, অস্ট্রেলিয়ান আইডল, ইন্ডিয়ান আইডল সহ আরো অনেক দেশের ‘আইডল’।

আমাদের দেশে মানুষ ভারতীয় টিভি চ্যানেল বেশি দেখে বলেই ‘হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নিয়ার’ এর চেয়ে ‘কওন বানেগা ক্রোড়পতি’ বেশি ভালো চেনে! তেমনি তারা আন্তর্জাতিক রিয়েলিটি শো ‘আইডল’ এর আমেরিকান, ফরাসী বা অন্যান্য দেশের চেয়ে ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ এর সাথেই বেশি পরিচিত। ফলে, খুব স্বাভাবিকভাবে এটা মনে হতে পারে, ‘বাংলাদেশী আইডল’ আসলে ভারতীয় অনুষ্ঠানের নকল করে বানানো, অথচ এরকম হওয়ার কোন অবকাশই নেই।

‘বাংলাদেশী আইডল’ এর বাংলাদেশের লাইসেন্সি প্রতিষ্ঠান ‘ডেল্টা বে প্রোডাকশান এন্ড ডিস্ট্রিবিউশান লিঃ’ যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রিম্যান্টল মিডিয়া’ থেকে এই অনুষ্ঠানের লাইসেন্স কিনে আনে, যার ফলে দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক একটি প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি হয় দেশের আনাচে কানাচে লুকিয়ে থাকা সঙ্গীত প্রতিভাদের জন্য। ‘বাংলাদেশী আইডল’ এর মাধ্যমে তারা সহজেই বিশ্বের দরবারে হাজির হতে পারবে নিজেদের সঙ্গীত নিয়ে।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৪৮টি দেশে, ‘আইডল’ অনুষ্ঠিত হয়েছে, এবং প্রায় দুইশো জন ‘আইডল’ নির্বাচন করেছে বিশ্বের সঙ্গীতপ্রেমী টেলিভিশন দর্শকেরা। ক্লেরি ক্লার্কসন, জোর্ডিন স্পার্কস সহ আরো অনেক বিখ্যাত আমেরিকান সঙ্গীতশিল্পীর ক্যারিয়ারের সূচনা হয়েছে আইডলের মাধ্যমে। এছাড়াও সম্প্রতি যুদ্ধ বিদ্ধস্ব গাজা উপত্যকায় একমাত্র আনন্দের সংবাদ বয়ে এনেছে ফিলিস্তিনি সঙ্গীত শিল্পী মোহাম্মদ আসাফ, ‘আরব আইডল’ নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে।

‘বাংলাদেশী আইডল’ দেখতে পারেন আরো একটি কারণে, এটি সম্প্রচারিত হবে দেশের প্রথম থ্রিজি প্রযুক্তির হাই ডেফিনেশান টেলিভিশন চ্যানেল এসএ টিভিতে। এই চ্যানেলটি সম্পূর্ণ এইচডি হওয়ায়, ‘বাংলাদেশী আইডল’ অনুষ্ঠানটি হবে চোখ ধাঁধানো ও ঝকঝকে। আপনি একই সাথে দারুন সুন্দর গান শুনতে পারবেন, হাসি আনন্দে মেতে উঠবেন, আবেগে ভাসবেন এবং চোখের সামনে দেখতে পাবেন পুরোপুরি জমকালো এক আয়োজন। এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বাংলালায়ন এবং ক্লিয়ার এন্টি ড্যান্ডরাফ শ্যাম্পু।

সবশেষে, ‘বাংলাদেশী আইডল’ দেখবেন এর বিচারকমন্ডলীর জন্য। বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের বাঘা বাঘা চারজন তারকা শিল্পী এই রিয়েলিটি শোয়ের বিচারক হিসাবে আছেন। ষাট দশকের অন্যতম গুণী সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসি রহমান ‘বাংলাদেশী আইডল’ এর একজন বিচারক। তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে গানের জগতেই আছেন, সারা দেশে একনামে পরিচিত ‘খালামনি’ হিসাবে। গুণী এই শিল্পী বিচারক হয়ে আইডলের মান তুলে ধরেছেন আরো উচ্চতায়। এরপরেই আসে আশির দশক থেকে গানের জগতে বিচরণকারী ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের নাম। বাংলা সিনেমার প্লেব্যাকে যিনি আজও অনবদ্য।

বাংলাদেশের লিজেন্ডারি রকব্যান্ড এলআরবি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আইয়ুব বাচ্চু আছেন ‘বাংলাদেশী আইডল’ এর বিচারক হিসাবে। লাইভ পারফরম্যান্সে স্টেজ মাতানো, ভীষন জনপ্রিয় আইয়ুব বাচ্চুকে দেশের মানুষের কাছে নতুন করে পরিচয় করানো বাহুল্যমাত্র!

এবং, গ্ল্যামারাস, সুকন্ঠী পপ গায়িকা, যিনি তার গানের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রোতাদের জ্যাজ, সাম্বার মত অনেক আন্তর্জাতিক ধারার গানের ফিউশনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন, সেই মেহরীন মাহমুদ ‘বাংলাদেশী আইডল’ এর আরেকজন বিচারক।

এই চার গুণী বিচারক, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম, ঝকঝকে টিভি পর্দা এবং এক ঝাঁক হৃদয় কেড়ে নেয়া নতুন শিল্পীর সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ, তাদের হাসিতে-কান্নায়-আবেগে ভেসে যাওয়ার পালা, ‘বাংলাদেশী আইডল’ ছাড়া আর কোথায় পাওয়া যাবে এতোকিছু একসাথে?

অতএব, আপনার শুক্রবার সাড়ে ৮টা ‘বুক’ করে রাখুন শুধুই এসএ টিভিতে ‘বাংলাদেশী আইডল’ দেখার জন্য!

রোকসানা রশীদ
২৮ জুন, ২০১৩

http://www.mediatimes24.com/news/microapps/2467/6/detail.aspx


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment