Wajed Mia Research Centre
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০১১
জাকারিয়া পলাশ, জাবি থেকে: দেশীয় গবেষকদের গবেষণার সুযোগ করে দিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহৎ পরিসরে দেশের প্রথম ও একমাত্র বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রটির উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের প্রত্যাশা, এবার বিজ্ঞান গবেষণায় ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ।
প্রতিষ্ঠিত হল যেভাবে-
২০০৯ সালের ৩০মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’ নামে এই বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পেশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৯ সদস্য মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা তৈরি করার পর অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রস্তাবনাটি পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী সেটি সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ে প্রেরণ করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়ে পরিকল্পণা মন্ত্রাণালয়ের প্রেরণ করে। পরিকল্পণা মন্ত্রণালুয় থেকে পাশ হবার পর অর্থ মন্ত্রাণালয় থেকে ১০কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
বর্তমান অবস্থাঃ
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের এক অংশে এই গবেষণা কেন্দ্রের কাজ পরিচালিত হচ্ছে। তবে গবেষণা কেন্দ্রের ভবন নির্মানের জন্য সরকারী বরাদ্ধে (১০কোটি) ছয় তলা ভবনের প্রথম চার তলা নির্মানের কাজ চলছে। গবেষণা কেন্দ্রে’র জন্য এপর্যন্ত ছোটখাটো বিভিন্ন যন্ত্রপাতির পাশাপাশি চারটি ভারী যন্ত্র কেনা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, এ্যাটোমিক এ্যাবসর্বশান স্পেক্ট্রোফোটোমেটার (এ এ এস), হাই পারফর্মেন্স লিকুইড ক্রোম্যাটোগ্রাফ (এইচ পি এল সি), এফটি-ইনফ্রারেড স্পেক্ট্রোফোটোমেটার এবং ইউভি-ভিজিবল স্পেক্ট্রোফোটোমেটার। এছাড়া আরো নয়টি যন্ত্র কেনা হয়েছে কিন্তু এখনো হাতে এসে পৌছেনি।
অর্থায়ন হচ্ছে যেভাবেঃ
বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে চার বছরের জন্য ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। হায়ার এডুকেশন ইনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের ৫ কোটি টাকা দিয়ে নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রিসোনেন্স (এন এম আর) মেশিন ক্রয় করা হবে। যার মাধ্যমে রসায়ন, প্রাণ-রসায়ন, ফার্মেসী সংক্রান্ত গবেষণায় যে সকল কম্পাউন্ড সিনথেসাইজ করা হয় সেগুলো চিহিৃত করা যাবে। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অনুদানে গবেষণাগারের ভবন নির্মানের জন্য ১০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। গবেষণা কেন্দ্রের ভবন নির্মাণে সেই অর্থ ব্যায় করা হচ্ছে।
পরিচালিত হচ্ছে যেভাবেঃ
বর্তমান গবেষণা কেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির এর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি অস্থায়ী পরিচালনা কমিটি রয়েছে। এছাড়া এই গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক (অস্থায়ী) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়েল রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আলী আজম। তার অধীনে একজন করে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী, অফিস সহকারী ও পিয়ন দায়িত্ব পালন করছেন।
গবেষণা করবেন যারাঃ
গবেষণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টেবর পর্যন্ত এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষিত শিক্ষকরাই পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষক-শির্ক্ষাথীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক কাজী
আলী আজম বলেন, অত্যন্ত উচ্চমানের ও ব্যায়বহুল গবেষণাগুলো এখানে করা হবে। শির্ক্ষাথীরা বিভাগে প্রাথমিক গবেষণা সম্পন্ন করার পর চুড়ান্ত গবেষণার জন্য এ গবেষণাগার ব্যবহার করবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন, জৈব-রসায়ন, মলিকুলার বায়োলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও গবেষকরা এখানে কাজ করতে পারবে। এছাড়া দেশি-বিদেশী গবেষক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এখানে গবেষণা করার সুযোগ পাবেন।এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, বিজ্ঞান গবেষণা হঠাৎ করে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। তবে এই গবেষণা কেন্দ্র আমাদের দেশের গবেষকদের জন্য কাজ করার নতুন ক্ষেত্র তৈরি করবে। এখানে দেশীয় গবেষকরা নিয়মিত কাজ করলে অচিরেই বিজ্ঞান গবেষণায় বাংলাদেশ নুতন ইতিহাস গড়বে বলে আমি আশাবাদী।’
Link request by Jainal Abedin | Original source at http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&view=article&id=26637:2011-11-27-15-28-36&catid=52:2010-09-02-12-02-53&Itemid=79