কথা, সুর আর গানে অলিম্পিকে দ্বিতীয় সেরা ‘আমার সোনার বাংলা’ গার্ডিয়ানের সাংবাদিকের মূল্যায়ন
প্রথম আলো ডেস্ক
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বিশ্বের ২০৫টি দেশের জাতীয় সংগীতের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে। ব্রিটেনের বিখ্যাত দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক অ্যালেক্স মার্শাল কথা, সুর ও সংগীত বিবেচনা করে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতকে এ মর্যাদা দিয়েছেন। গত সোমবার এ সম্পর্কিত তাঁর প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অ্যালেক্স বলেন, ‘আমার সোনার বাংলা’ অতুলনীয় একটি জাতীয় সংগীত। মনে হয়, যেন ভাসা জালের পাশ দিয়ে পায়চারি করতে করতে গাওয়ার জন্য এই সংগীত রচিত হয়েছে। এর জন্য আসলে দরকার ছিল জ্যাকস ব্রেলকে। কিন্তু বাংলাদেশি সংগীতকার হয়তো সে রকম কিছু ভেবে করেননি।
অ্যালেক্সের তালিকার শীর্ষে রয়েছে উরুগুয়ের জাতীয় সংগীত, যাকে তিনি তাঁর শোনা সবচেয়ে আনন্দদায়ক চিরায়ত সংগীত বলে উল্লেখ করেন। তৃতীয় স্থানে তিনি রেখেছেন তাজিকিস্তানের জাতীয় সংগীতকে। দেশটি যখন সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ছিল, সে সময় এটি রচনা করা হয়েছিল। এ গানটি তাঁর কাছে জেমস বন্ডের ছবির সংগীতের মতো মনে হয়েছে। তাঁর তালিকার শীর্ষ দশের পরবর্তী স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মৌরিতানিয়া, ডমিনিক প্রজাতন্ত্র, ইউএস ভার্জিন আইলস, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, নেপাল ও জাপানের জাতীয় সংগীত।
অ্যালেক্স মার্শাল এবারের অলিম্পিকে বাজানোর জন্য সংগৃহীত ২০৫টি দেশের জাতীয় সংগীত কয়েক সপ্তাহ ধরে শোনেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমার পরিকল্পনা ছিল সব গান শোনা, একজন সংগীতবিষয়ক সাংবাদিকের মনোভাব নিয়ে সেগুলোর যান্ত্রিক ব্যবহার খেয়াল করা।’ তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই জাতীয় সংগীত একই রকম−একটি জাতির জন্য গর্ব করে লেখা ছোট্ট চিরায়ত গান; অনেক ক্ষেত্রে রণসংগীতের মতো।
সব দেশের জাতীয় সংগীত একসঙ্গে মিলে সময় হচ্ছে দৈর্ঘ্য চার ঘণ্টা ২৬ মিনিট ২৫ সেকেন্ড। প্রতিদিন পাঁচটি করে গান শুনে তিনি এসব জাতীয় সংগীতের সৌন্দর্য বিবেচনা করেন। তালিকা করার পর তিনি দেখতে পান, মাত্র ডজনখানেক গান শোনার মতো। আর এগুলোর বেশির ভাগই এমন দেশের, যাদের বেইজিং অলিম্পিকে সোনা জেতার সম্ভাবনা খুবই কম।
ঔপনিবেশিকতার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সংগীতও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তবে গত শতাব্দীর বিশ ও ত্রিশের দশকের আগে সেগুলো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি। ঔপনিবেশিকতার কারণে ইউরোপজুড়ে স্তুতিমূলক ও সামরিক যাত্রার গানকেই জাতীয় সংগীত করা হয়। তবে সব দেশে তেমনটি ছিল না। ২০৫টি দেশের জাতীয় সংগীত শোনার পর অ্যালেক্সের মনে হয়েছে, এ সংগীতগুলোর দুটি ধরন রয়েছে−একটি প্রাণহীন, অন্যটিতে রয়েছে ভিন্ন স্বাদ। দুঃখজনক হলেও সত্য, ১৯০টি গানই পড়েছে প্রথম ধারায়।