Chander Buri
চাঁদের বুড়ি
চাঁদের বুড়ি, গানটি শুনছি আর লিখছি, চাঁদ আর তার বুড়িকে নিয়ে এ পর্যন্ত কম লেখালেখি হয়নি, চাঁদ মামাও শিশুদের অতি প্রিয় এক ব্যাক্তিত্ব ! আর কবিদের তো ব্যাপারই আলাদা ! সুকান্ত থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যত বড় বড় কবি আছেন তাদের মাঝে চাঁদ নিয়ে দু’এক লাইন লেখেননি এমন জন খুব কমই আছেন ! “পূর্ণিমা চাঁদকে তো ঝলসানো রুটি বলেও আখ্যায়িত করা হয়েছে !
ছোটকাল থেকেই চাঁদ আমার বড়ই প্রিয়, মা-বাবার কাছে একদিকে চাঁদ মামার গল্প,গান যেমন শুনেছি তেমনি অন্যদিকে বুড়িকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছি, তবে কখনো চাঁদ মামার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন জাগেনি মনে কিন্তু আজকালাকার শিশুদের কথা একটু ভিন্ন, কারন তারা আমাদের মত শুধু গল্প,গান শুনে গিয়েই ক্ষ্যান্ত নয়, নানান প্রশ্ন করে বসে যার উত্তর দেয়া রীতিমত দুঃসাধ্য ব্যপার, যেমন, আমার ছোটা ভাইএর ৪ বছরের মেয়েটা “আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা” গানটি শোনার সময় ওর মা’কে জিগ্গেস করে বসে, “মা, চাঁদ মামার তো পা নেই তাহলে আসবে কি করে?
যাইহোক, আজ আমার এই লেখাটা লেখার উদ্দেশ্য ভিন্ন, আগেই বলেছি, চাঁদ বিষয়ক যে কোন কিছু আমাকে দারুন ভাবে আকর্ষিত করে তাই হটাৎ করেই যখন উপরোক্ত গানটি কানে এল, চমকে গেলাম ! সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী আন্গিকে উপস্থাপন করা এক অসম্ভব সুন্দর গান, যার প্রতিটি লাইনের মাধ্যমে লেখকের অনুভূতির এক চমৎকার বহিপ্রকাশ ঘটেছে , যেটাকে তিনি চাঁদের বুড়ির কার্যকলাপের সাথে তুলনা করেছেন। লেখক যেন তার মনের না বলা কথাগুলিকে চাঁদের বুড়ির সাথে সেয়ার করে তার চাওয়া-পাওয়ার সন্গী হিসেবে তাকে পেতে চাচ্ছেন। কিন্তু যতই তিনি চাঁদের বুড়িকে কাছে ডাকছেন বুড়ি তার ডাকে সাড়া না দিয়ে এক মনে নিজের কাজ করে যাচ্ছে, কিছুতেই ধরা দিচ্ছেনা তাকে, যে যেন কবির ডাকে সাড়া না দিয়ে এক মনে ঘুড়ি উড়িয়েই যাচ্ছে আর তিনি তা উপলব্ধি করছেন তার অন্তর থেকে !
গানটির মাঝ দিয়ে ফুটে উঠেছে অসাধারন ভাবে বর্ননা করা এক কল্পকাহিনী যা কিনা কবির অনুভূতিকে অতুলনীয় ভাবে তুলনা করা হয়েছে চাঁদের বুড়ির সাথে ! আর সে কথামালায় সংযোজিত হয়েছে এক দারুন আবেগময় সুর ! যে সুরের মূর্ছনায় মন চলে যায় কোন সুদূরে ! সেই চাঁদ মামার দেশে ! কয়েকবার করে এই গানটা শোনার পর খুব জানতে ইচ্ছা হলো এর গীতিকার ও সুরকার সম্পর্কে, খোঁজ নিয়ে জানলাম ,ওনাদের কথা। অসংখ্য ধন্যবাদ এই দুজন ব্যাক্তিত্বকে, যারা এমন চমৎকার একটি গান আমাদের উপহার দিয়ে গানের সাম্রাজ্যকে আরও অলংকৃত করেছেন।
আমি গীতিকার ও সুরকার দুজন সম্পর্কে যেটুকু জানতে পেরেছি আপনাদের সাথে তা সেয়ার করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আশাকরি গানটি আপনাদেরও ভাল লাগবে।
কণ্ঠ, সুর ও শব্দঃ আতিক হেলাল
কথাঃ শাহাদত মানিক