৭৭ বছর পেরিয়ে কুষ্টিয়ার বাড়াদী হিতসাধন সমিতি
বাড়াদী হিতসাধন সমিতি এ বছর তাদের প্রতিষ্ঠার ৭৭ বছর পালন করেছে। সেই উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিলো। তন্মধ্যে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরুস্কার প্রদান এবং দুজন গুণী মানুষকে সংবর্ধণা প্রদান করা হয়। সেই সাথে এ বছর যোগ করা হয়েছে দুজন কিশোরীকে তাদের স্কুল কলেজে যাওয়া আসার সুবিধার জন্য সাইকেল কিনে দেয়া।
প্রতি বছর শারদিয়া উৎসবে হিতসাধন সমিতির পরিচালনায় শ্রী শ্রী জগমোহন রায় জিউর মন্দিরের ব্যানারে বিশিষ্ঠ ব্যাক্তির আর্থিক সহায়তায় পাঁচশ থেকে ছয়শ মানুষকে বস্ত্র দান করা হয়। এছাড়াও তাদের ব্যানারে এবং পরিচালনায় শারদিয়া উৎসব চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় যার পুরস্কার বিতরণ হয় এই অনুষ্ঠানের দিন।
প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে বাচ্চাদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আসরে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দইচিড়া সহযোগে নাশতা করানো হয়। হিতসাধন সমিতি তাদের বাৎসরিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সকল জাতীয় দিবস গুলোও পালন করে থাকে।
বঙ্গাব্দ ১৩৪৮ সালে হিতসাধন সমিতির সমিতির পরিচালনায় প্রতিষ্ঠা হয় “শ্রী শ্রী জগমোহন রায় জিউর মন্দির”। একটি প্রস্তর খন্ডে মন্দির প্রতিষ্ঠার সময়কালের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর আর তেমনভাবে কোন কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। পরবর্তিতে ১৪১৭ সালে তরুণ প্রজন্ম এটার দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন প্রকারের কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।
এবছর উক্ত অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার গুণীজনেরা উপস্থিত থেকে বাউল আব্দুর রব ফকিরের স্ত্রী ও পুত্র পরান ফকিরের হাতে ” শৈলেন্দ্র নাথ সাহা” সম্মাননা স্মারক তুলে দেন স্বগীয় শৈলেন্দ্র নাথ সাহার স্ত্রী রানীবালা সাহা ও কনিষ্ঠ পুত্র বিশ্বজিৎ সাহা সন্টু আর মো: মসিউর রহমান আর মোঃ মশিউর রহমান (দিনু) স্যারের পক্ষে তাঁর ভাতিজা সম্মাননা গ্রহণ করেন। পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান শেষে এক মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাতে সংগীত পরিবেশন করেন কুষ্টিয়ার স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে আরেকটি ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। এবছর থেকে “হিতসাধন সঙ্গীতালয় “স্কুল চালু হতে যাচ্ছে”। তার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। আর সামনের বছর সবার সহযোগিতা থাকলে একটি পূর্ণাঙ্গ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হবে।
হিতসাধন সমিতি ভবিষ্যতেও তাদের এই সকল সমাজ সংস্কারমূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। হিতসাধন সমিতির সভ্যরা সকল কর্মকান্ডে সবার সহযোগিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও দেশে বিদেশে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাড়াদী গ্রামে হিন্দু মুসলমান দুই ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করেন তাই বাইরে থেকে কেউ যদি না বলে দেন কে হিন্দু আর কে মুসলমান তাহলে তাদের মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল। এখানে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষ সবাই একে অপরের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে বাঁধা। তাদের আলাপচারিতা শুনলে মনেহয় সবাই যেন একটি একান্নবর্তী পরিবারের সদস্য।
Related Articles
প্রকৌশলী দেলোয়ার হত্যা – প্রেক্ষিত অস্ট্রেলিয়া
বছর দুয়েক আগের ঘটনা। বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসার পর প্রথম দিন অফিসে। টেবিলের উপর একটা টেন্ডার ডকুমেন্ট রাখা; খুলে
পেন্সিল অস্ট্রেলিয়ার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন: আলোকচিত্র প্রদর্শনী
২০২১ সাল আমাদের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক বছর। এ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছর। তাই বাঙ্গালী হিসাবে, বাংলাদেশের মানুষ হিসাবে
বিবাহের সমতা কিংবা ম্যারেজ ইকুয়ালিটি !!!
আপনারা যারা বাংলাদেশে এই লেখা পড়ছেন তারা হয়তো মনে করছেন এটা আবার কি? ম্যারেজ তো ম্যারেজই এটার আবার সমতা কি?