আমার একটা বাসা ছিল
আমার একটা বাসা ছিল
তার চিলেকোঠায় স্বপ্ন ছিল।
অনেক রকম স্বপ্ন,
রঙিন প্রজাপতির মতন,
সুদর্শন যুবার মতন,
ইচ্ছে পূরণের চেরাগের মতন
আরও কতো রকম!
আমি দেখতাম, ছুঁয়ে ছুঁয়ে।
স্বপ্নের রোদ, কল্পনার জোছণা,
ভেজা পাতা, তার ওপর
শিউরে ওঠা শূককীট,
আমার খোলা পায়ে চিকন নূপুর,
আমার গল্পের বই, হারমোনিয়াম, তানপুরা,
জায়নামাজ, কোরান শরীফ…
সব জুড়ে আমার গন্ধ..।
তবু ওরা দিল না।
হঠাৎ করে অচ্ছুৎ হয়ে গেলাম।
নির্বাসিত হলাম অন্য জগতে।
মৃতের মত? না না…
মৃতের সম্মান থাকে,
সে ভাল মন্দ যাই হোক…
অসম্মান, অপমান, যন্ত্রণার তীব্র চাবুকে
আমাকে কেটে ফালাফালা করল ওরা…
যতবার যাই নাড়ীর অপ্রতিরোধ্য টানে,
এক রাশ জখম নিয়ে কাৎরাই।
ঘেন্নায় মুখ ফেরালো গর্ভধারিণী।
তার শরীরে আমি খুঁজে নিয়েছিলাম
আমার ছয়টি সন্তান,
আজন্ম শিশুসুলভ আহ্লাদে।
আমার রক্তও হঠাৎ অপবিত্র তাঁর কাছে,
যদিও অভিন্ন রুধির স্রোত।
পিতার চোখে, ঘৃণা মেশানো করুণা।
আমি একা একা চলি
অচেনা শহরে
রোদে পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি।
শীত পার হয়ে বসন্ত আসে…
আমার উদর স্ফীত হয়
এক আনন্দ মেশানো যন্ত্রণায়।
আহ! মাতৃত্ব…
কেউ আসে না পাশে।
বড় ভয় করে…
ইচ্ছে করে মা’কে জড়িয়ে কাঁদি,
মা জেনেও নীরব থাকে
মুখ ফিরিয়ে রাখে।
অনেক দিন পর…
শুকনো পাতা হয়ে
ঝরে পড়ে যাওয়ার আগে
বুঝে নিলাম
কেউ কারও নয়
কেউ কারও হয় না।
আমার একটা বাসা ছিল…।
Related Articles
প্রশ্ন করোনা – ৯
প্রশ্ন করোনা কেন আমার কবিতার শব্দে এখন আর নিজেকে খুঁজে পাওনা তুমি আমি কেন ভাবি – আমিতো আছি! তুমি কোথায়
শ্রাবণের বরষায়
শ্রাবণের বরষায় লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী (নবাগত কবি) ঐ আসে দুরন্ত বর্ষা এল যে শ্রাবণ মাস, গাঁয়ের চাষীর দল মাঠে মাঠে করে
স্বাধীন ভারতবর্ষ
স্বাধীন ভারতবর্ষ লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী (নবাগত কবি) কত না সংগ্রাম করে পেয়েছি মোদের স্বাধীনতা ভারত মাতাকে মোরা করেছি স্বাধীন।