আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অষ্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা
ইসলামী ব্যাংক সহ জামায়াতের সব প্রতিষ্ঠান সরকারি হেফাজতে না নিলে জঙ্গীবাদ নির্মূল হবে না
সিডনি থেকে পি.এস. চুন্নু।। সিডনি, ২৩ ফেব্র“য়ারী: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অষ্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ও আলোচনা সভায় বলা হয়েছে যুদ্ধাপরাধীর বিচার এখন নতুন সরকারের কাছে দেশের মানুষের পয়লা নম্বর রাজনৈতিক দাবি। আর এটি শুরু করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদের মতো কয়েকজনকে বিচারের শাসি— দেয়া গেলে অনেক কাজ এগোবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এদের বিচারের মাধ্যমেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না। জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে হলে জামায়াতের অর্থের উৎস বন্ধ করতে হবে। ইসলামী ব্যাংক সহ জামায়াতের যত প্রতিষ্ঠান আছে এগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রনে না নিলে বাংলাদেশের জঙ্গী সমস্যা নির্মূল হবে না। বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরত না যাওয়া পর্যন— ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি, জঙ্গীবাদ নির্মূল করা যাবে না।
গত ২২ ফেব্র“য়ারী, রবিবার সিডনির গ্রীন স্কোয়ার কমিউনিটি হলে াাওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া’র সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিন বনিকের সভাপতিত্বে ব্যারিষ্টার সিরাজুল হকের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রবীণ কলামিস্ট, রাজনীতিবিদ রনেশ মৈত্র। বাসভূমি সম্পাদক আকিদুল ইসলাম, সোনার বাংলা সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া’র জয়েন্ট সেক্রেটারী পি এস চুন্নু, বাংলা টিভির পরিচালক ও বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ডিজাস্টার রিলিফ কমিটির সভাপতি রহমত উল¬াহ, আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া’র সাংগাঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মোল¬া, মহিলা আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া’র সাধারন সম্পাদিকা বিলকিস জাহান,এমদাদ হোসেন বকুল, ইফতেখার উদ্দিন ইফতু, জহিরুল ইসলাম মোহসিন, মোহাম্মদ আলী, কবি অসিত রায়, সাংবাদিক ফজলুল বারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথি রনেশ মৈত্র বলেন বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা পৃথিবীর বাঙ্গালিরা এখন একুশকে, মুক্তিযুদ্ধকে স্মরন করেন। নাড়ির টানের প্রতি বাঙ্গালীর এই যে আস’া-বিশ্বাস এটিই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিপুল বিজয়ী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে তিনি মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের আন্দোলনকে ধরে রাখতে না পারাতেই বিএনপি-জামায়াত জোট আবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিল।
ধর্মকে আমরা যে রাজনীতির বাইরে রাখতে পারিনি এটা আমাদের সবার ব্যর্থতা। জামায়াতী নেটওয়ার্ক সর্ম্পকে সবাইকে সতর্ক করে তিনি বলেন, বাঙ্গালীর জন্যে যা কিছু কল্যানকর যুদ্ধাপরাধীদের এই দলটি এর সবকিছুর বিরোধী। দেশকে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরিয়ে না নেয়া গেলে ধর্মাশ্রয়ী জামায়াতী জঙ্গী রাজনীতির বিপদ থেকেই যাবে। নতুন সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, জামায়াতীদের হাতে অনেক টাকা। এদের ইসলামী ব্যাংক, নানা নামের ইন্সুরেন্স কোম্পানি, হাসপাতাল সহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টাকায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে। অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত এসব তাঁর গবেষনা গ্রনে’ তথ্য-উপাত্ত সহ উল্লেখ করেছেন। কাজেই এসব অর্থের উৎস বন্ধ না করা পর্যন— জঙ্গীবাদের বিপদ কমানো সম্ভব নয়।
অষ্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার সিরাজুল হক, সিনিয়র সহ সভাপতি এবং মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিন বনিক বাংলাদেশের বিগত বন্দী দিনগুলোতে অষ্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সক্রিয় ভূমিকার উলে¬খ করে বলেন, দেশের নতুন সরকার সবার আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করবে বলে তারা আশাবাদী। বাসভূমি সম্পাদক আকিদুল ইসলাম বলেন নতুন সরকারের কাছে দেশের মানুষের প্রবাসীদের প্রত্যাশা অনেক। সরকারকে এসব প্রত্যাশা পূরনের জন্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ সহ এগিয়ে যেতে হবে।
আন—র্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিস—ম্ভ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন পক্ষপাত দুষ্ট দূর্বল নেতৃত্বে কারনে একুশে একাডেমীর বইমেলা এখন আর সিডনির বাঙ্গালী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। সে কারনে যে শহরে চলি¬শ হাজারের বেশি বাঙ্গালী আছেন সেখানে একুশের বইমেলায় এবার মাত্র আড়াইশ-তিনশ লোক হয়েছে। আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া’র জয়েন্ট সেক্রেটারী ও সোনার বাংলা সম্পাদক পিএস চুন্নু বলেন অষ্ট্রেলিয়াতেও অনেক স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এবং তাদের বিরোধী সহানুভূতিশীল প্রগতিশীল নামধারী ব্যক্তি আছে। এদের মোকাবেলার শক্তিও আছে সিডনির মুক্ত চিন—ার মানুষদের। আওয়ামী লীগের তরুন নেতা ইফতেখার উদ্দিন ইফতু বলেন, শুধু যুদ্ধাপরাধী নয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা ধর্মের নামে অনাচার চালায় তাদেরকেও রুখতে হবে। মৌলবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারলেই বাংলাদেশ একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে।