বিশ্বায়নে শহীদ মিনার
নিউ সাউথ ওয়েলস গভর্নমেন্ট (এডুকেশন এন্ড কমিউনিটিজ)সেটারডে স্কুল অব কমিউনিটি ল্যাংগুয়েজ- ডালউইচ হীল সেন্টার এর উদ্যোগে বিগত ৬ই ডিসেম্বর ২০১৪ সেন্টারের অধীনস্থ বিভিন্ন কমিউনিটি ভাষার উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বার্ষিক সনদ পত্র বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ডালউইচ হীল হাই স্কুল অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ভাষাভাষীর ছাত্রছাত্রীদের সাথে সংশ্লিষ্ট ভাষার শিক্ষকসহ ছাত্রছাত্রীদের পিতামাতা বন্ধুবান্ধব এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদেরকে নিজ নিজ ভাষা শিক্ষায় বিশেষভাবে উৎসাহিত করে। প্রত্যেক ভাষাভাষীর ছাত্রছাত্রীরা নিজ নিজ ক্লাসের সনদ পত্র গ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট ভাষার উপর পরিবেশিত সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থিত সকলকে ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত এবং একাত্ব হওয়ার বিশেষ সুযোগ করে দেয়। বাংলা প্রসার কমিটির লাগাতর প্রচেষ্টায় পরিচালিত ডালউইচ হীল হাই স্কুলের বাংলা ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের বাংলার প্রখ্যাত কবি সুকুমার রায়ের ‘জীবনের হিসাব’ (ষোল আনাই মিছে) কবিতাটি অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপনা সকল দর্শকদেরকে বাংলার প্রকৃতি ও জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে সমর্থ হয়। বাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এই উপস্থাপনা পরিচালনা করেন স্কুলের শিক্ষক মিসেস সেলিনা আক্তার। বাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে স্টেজ-৪ এবং স্টেজ-৫ এ প্রথম হয় যথাক্রমে ফায়াদ নোমানী এবং মারুফা সাত্তার।
এই সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে সেটারডে স্কুল অব কমিউনিটি ল্যাংগুয়েজ- ডালউইচ সেন্টার-এর পক্ষ থেকে সনদ বিতরণের জন্য পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণের গবেষণা ভিত্তিক কৌশল উপস্থাপিত গ্রন্থ, “বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” এর লেখক, এবং মাদার ল্যাংগুয়েজেস কনজারভেশন মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক-এর প্রতিষ্ঠাতা মি. নির্মল পাল বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হন। অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণের কথা, এবং তাঁর সাথে ছাত্রছাত্রীদের সরাসরি মত বিনিময় একটি সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে সেন্টারের পক্ষ্ থেকে ছাত্রছাত্রীদের আভিবাবকদেরকে লিখিতভাবে জানানো হয়। সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানের পূর্বে সেন্টারের সুপারভাইসর মিসেস এথিনা গ্লাভাসের অনুরোধে মি নির্মল পাল পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধের নকশার তাৎপর্য এবং গ্রন্থে উপস্থাপিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি বাংলা ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের কাছে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করেন। তারপর মিসেস এথিনা গ্লাভাস অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে মি নির্মল পালকে পরিচয় করিয়ে দেন, এবং নির্মল পাল মিসেস সেলিনা আক্তারের উপস্থাপনায় বাংলা ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নির্মল পালের কাছ থেকে মিসেস এথিনা গ্লাভাস সেন্টারের লাইব্রেরীর জন্য একটি গ্রন্থ উপহার হিসেবে গ্রহন করেন, এবং তিনি সেন্টারের ছাত্রছাত্রীদেরসহ এসফিল্ড পার্কে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের আগ্রহের কথা জানান। উল্লেখ্য, এই আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় বাঙালিদের ঐতিহাসিক অর্জনের বিষয়টি সকল ভাষাভাষীর মধ্যে পরিচিত করা এবং মাতৃভাষা শিক্ষায় সকলের আগ্রহ সৃষ্টির জন্য বাংলা প্রসার কমিটির পক্ষে কমিটির প্রাক্তন সভাপতি ডঃ মাকসুদুল বারী এবং স্কুল শিক্ষিকা মিসেস সেলিনা আক্তার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেটারডে স্কুল অব কমিউনিটি ল্যাংগুয়েজ-ডালউইচ হীল সেন্টার এর সংশ্লিষ্ট সকল ভাষাভাষীর কাছে বাঙালিদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে অবহিত করন এবং বাংলাভাষাভাষী ছাত্রছাত্রীদের কাছে গ্রন্থটির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি উপস্থাপন সম্ভব হয়েছে।