Day of Mourning been observed by Bangabandhu Parishad
The Bangabandhu Parishad of Australia Incorporated (INC 9891249)
10 FALCON PLACE INGLEBURN NSW 2565
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত শোক দিবস এর অনুষ্ঠান সম্পন্ন
গত রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত শোক দিবস ২০১২ অনুষ্ঠানটি ইঙ্গেলবার্ণ কমিউনিটি হলে ড. বোরহান উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে আগত বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহীম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জনাব মিজানুর রহমান তরুণ, সাধারণ সম্পাদক হারুনূর রশীদ আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা বেলায়েত হোসেন, শাহাদাত হোসেন, বঙ্গব্ধু সোসাইটি অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি আবদুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক ডা. লাভলী রহমান, ড. নিজামউদ্দিন, ড. মোহাম্মদ আলী, ডা. নূরুর রহমান খোকন, যুবলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি মোস্তাক মেরাজ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক দর্শক শ্রোতার উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
১৫ আগস্টে নিহতদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া ও এক মিনিট নিরবতা পালন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার উদ্দিন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুরভী ছন্দার উপস্থাপনায় জনাব শাহীন শাহনেওয়াজ সুন্দর ও ব্যতিক্রমধর্মী কবিতা আবৃত্তি করেন। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ তার বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারায় গর্বিত বলে জানান। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে তিনি সকলের সর্বাত্মক সমর্থনের উপর জোর দেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূল্যায়নের নজীর তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদেরকে সম্মানিত করা হয়েছে অথচ বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সেভাবে সম্মানিত ও মুল্যায়ন না করার জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অতিথিবক্তা বিশিষ্ট সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ ও কবি নজরুল এ তিন শ্রেষ্ঠ বাঙালীর প্রতি সার্বজনীন শ্রদ্ধা ও মুল্যায়নের আহবান জানান। এরপর বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সহসভাপতি শাহ আলম সৈয়দ বঙ্গবন্ধু পদক ২০১২ প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। এ বছর বঙ্গবন্ধু পদক লাভ করেন ‘ফোরসাইট’ অস্ট্রেলিয়ার প্রফেসর ডা. ফ্যাঙ্ক বিলসন ও আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত নূতন প্রজন্মের সংগঠন “প্রবাসি” মান্যবর হাইকমিশনার জনাব মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, “প্রবাসি” সংগঠনকে বঙ্গবন্ধু পদক হস্তান্তর করেন।‘‘ফোরসাইট অস্ট্রেলিয়ার’ প্রফেসর ডা. ফ্রাঙ্ক বিলসন বর্তমানে বাংলাদেশে চক্ষু চিকিৎসার সেবামূলক কাজে নিয়োজিত থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তিনি আগামী জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারি মাসে তার পদকটি গ্রহণ করবেন। অস্ট্রেলিয়ান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি জনাব ইসমাইল মিয়া “প্রবাসি” সংগঠনের কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদেরকে ১০০০ ডলার অনুদান দেন এবং মাননীয় প্রতিমন্ত্রী প্রধান অতিথি জনাব এবি তাজুল ইসলাম প্রবাসী সংগঠনকে ১০০০ ডলার এর চেক হস্তান্তর করেন।
নূতন প্রজন্মের অংশগ্রহণে মোহনী মেহেরা ও মাহীর উপস্থাপনায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা করা হয়। ড. এজাজ আল মামুন বঙ্গবন্ধু বাঙলার সাংস্কৃতিক মুক্তি ও বিশ্বায়ন বিষয়ে তার গবেষণামুলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বিশেষ অতিথি জনাব ইকবালুর রহীম এমপি তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত অনুরণের মাধ্যমে তার আদর্শ ও দর্শনকে ধারণের আহবান জানান। প্রবাসী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞানদানের বিষয়ে জোর দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। “প্রবাসি” সংগঠনের সেবামূলক কার্যক্রমে তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন। ধন্যবাদ দেন এবং তাদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান। জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও শিক্ষার প্রসারে বাংলাদেশে শিক্ষাবৃত্তি চালুকরণসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে বর্তমান সরকারের কার্যক্রম ও প্রচেষ্টার বিবরণ তুলে ধরেন। স্বজনহারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য পরামর্শ ও গঠনমূলক নির্দেশনা প্রবাসীদের থেকে কামনা করেন। শেখ হাসিনা তার পিতার মত জনগণের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন এবং অনেক ত্যাগ স্বীকার করে সরকার পরিচালনা করছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব এবি তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বর্তমান সরকারের বিডিআর বিদ্রোহ দমনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ভূমিকার ব্যাখ্যা দেন। বিরোধী দলের হরতাল কর্মসুচী পালন প্রসংগে জনগণের সমর্থন না থাকায় বৃহত্তর স্বার্থে জনগণের কল্যানের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার আহ্ববান জানান। তিনি আশা করেন এ বছরের শেষ নাগাদ শীর্ষস্থানীয় যুদ্দাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন হবে। সরকারের সীমিত সামর্থ্য সত্ত্বেও ও গৃহিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ ও সমর্থনের আহবান জানান। দেশী বিদেশী চক্রান্তে ১৫ আগস্টের জঘন্যতম হত্যাকান্ডে বাঙালী জাতির অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। সরকার নিরস্তর চেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়াকে প্রবাসে শোক দিবসের এ আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
এরপর উপস্থিত সকলকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। এ উপলক্ষ্যে “চেতনায় মুজিব” শিরোনামে আহসান হাবিব এর সম্পাদনায় একটি চৌকশ স্মরনীকা প্রকাশ করা হয়। হলভর্তি দর্শক শ্রোতা হলের বাইরে প্রচুর মানুষকে অপেক্ষারত দন্ডায়মান শ্রোতা হলের তিন দিকে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়ে পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে। সিডনিতে এ ধরনের দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। সফল এ অনুষ্ঠানের আয়োজকরা সার্থকভাবে শোক দিবস ২০১২ কে পরিপূর্ণতা দিয়েছেন।
পরিশেষে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. বোরহান উদ্দিন তার সমাপনী বক্তব্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশাত্মবোধক গান ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী সম্ভব না হওয়ার জন্য সুধী দর্শক শ্রোতার নিকট দুঃখ প্রকাশ করেন। সার্বজনীনভাবে শোক দিবসের এ অনুষ্ঠানে প্রচুর জনসমাগম প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের অকৃত্রিম ভালবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশের আগ্রহ ও ইচ্ছার প্রতিফলন। সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সকল বাঙালী জাতির কোন পক্ষের নন এটাই আজকের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রমানিত হলো। সফল এ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সকল বিজ্ঞাপনদাতা সংবাদ মাধ্যম, শুভানুধ্যায়ী ও সংগঠনের সদস্যদের শ্রম সার্থক হয়েছে সকলকে তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও কর্মসূচিতে সকলকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।