সিডনিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোঃ হানিফ বলেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আগামী মার্চে শুরু হবে
সিডনি,২ নভেম্বরঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোঃ মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সরকার আন—রিক। এর পিছনে নির্বাচনে স্ট্যান্টবাজি বা কোন রাজনৈতিক মতলববাজির সুযোগ নেই। মাহবুবুল আলম হানিফ স্বীকার করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যাতে না হয়, সে ব্যাপারে জাতীয়-আন—র্জাতিক চাপ আছে। কারণ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম যাতে না হয় সে ব্যাপারে ১৯৭১ সালে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল। এখনও পাকিস্হান নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হয়। কিন্তু এ বিচার আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার। চলতি বছরের ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপর আগামী মার্চে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করা হবে। মার্চের শুরুর দিন থেকে সারাদেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এ ব্যাপারে একটি বিশেষ জনমত গড়ে তুলতে চায় সরকার। অষ্ট্রেলিয়ায় এবং বিদেশের দেশগুলোতে অবস্হানরত প্রবাসী বাঙ্গালীদেরও তিনি এ ব্যাপারে বিশেষ মতামত গড়ে তোলার আহবান জানান।
মাহবুবুল আলম হানিফ গত ০১ নভেম্বর, রবিবার সিডনিতে হলিডে ইন এয়ারপোর্ট হোটেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া শাখা আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ চার জাতীয় নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যদিয়ে অনুষ্টান শুরু হয়।
অষ্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ব্যারিষ্টার সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের প্রধান উপদেষ্টা গামা আব্দুল কাদির, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, উপদেষ্টা ড. বোরহান উদ্দিন , উপদেষ্টা ড. মাসুদুল হক, সাধারন সম্পাদক পি এস চুন্নু, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, সাংবাদিক ফজলুল বারী , সাংবাদিক ও কলামিষ্ট অজয় দাশগুপ—, বাসভূমি সম্পাদক সাংবাদিক আকিদুল ইসলাম প্রমুখ। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে উপসি’ত ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারী বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী-শুভানুধ্যায়ী। সেমিনারটি সার্বিকভাবে গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা করেন আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারন সম্পাদক পি এস চুন্নু।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে জিয়াউর রহমানের ভূমিকার কারনে বিএনপি এতদিন বিচার আটকে রেখেছে। খুনিদের বিদেশে প্রাইজ পোষ্টিং ছাড়াও ওই সময়ে প্রতিদিন একশ ডলার করে ভাতা দিয়ে গেছেন জিয়াউর রহমান। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। খুনি কর্নেল রশিদের গ্রেফতারকৃত মেয়ে মেহনাজ রশীদও বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জিয়ার নানা ভূমিকার তথ্য দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বলেন, ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে রাজি না হওয়াতে মার্কিন তেল কোম্পানি শেল ষড়যন্ত্র করে ২০০১ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জিতে আসতে দেয়নি। তখন শেখ হাসিনাকে রাজি করাতে ভারত সরকারের অনুরোধে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন কয়েক ঘন্টার সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ক্লিনটন ওই সময়ে শেল কোস্পানির শর্ত মেনে নিতে শেখ হাসিনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের মজুদ নিশ্চিত না রেখে শেখ হাসিনা বিদেশিদের কাছে গ্যাস বিক্রিতে রাজি না হওয়াতে তারা চক্রান— করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আটকে দেয়। মাহবুবুল আলম হানিফ দাবি করে বলেন, বর্তমান সরকার দেশের স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেবার সিদ্ধান— নিয়েছে। জাতীয় তেল-গ্যাস রক্ষা পরিষদের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, এরা দেশের ভালো চাইছে না বলে, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছে। ফুলবাড়িয়ায় কয়লা উত্তোলনে বাধা নিয়েও তিনি একই অভিযোগ করেন।
এছাড়া অন্যান্য বক্তারা ঢাকা বিমান বন্দরে প্রবাসীদের বিভিন্নভাবে হয়রানীর অভিযোগ তুলে ধরেন এবং এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ চার জাতীয় নেতার হত্যার রায় দ্রুত কার্যকরের জন্য আহবান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকলকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়।