Birth Anniversary of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman and National Children Day
ক্যানবেরাতে বঙ্গবন্ধু’র ৯২তম জন্ম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন – অজয় কর, ক্যানবেরা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১২ উদযাপন উপলক্ষে ক্যানবেরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস গত ১৭ মার্চ ২০১২ বঙ্গবন্ধুর উপর এক প্রামণ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা অনুষ্ঠান, এবং শিশু কিশোরদের বক্তৃতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ক্যানবেরাতে বসবাস্রত প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনেকেই দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী শিশু কিশোরদের উত্সাহ দিতে মান্যবর রাস্ট্রদুত লেঃ জেঃ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং ম্যাড্যম চৌধুরী শিশু কিশোরদের পাশে এসময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অভিভাবকদের উদ্যেশ্যে মান্যবর রাস্ট্রদুত বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কিছু হলেও যেন আমরা আমাদের সন্তান’দের মধ্যে দিতে পারি- সে চেস্টা যেন আমাদের সকলের মধ্যে থাকে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ ছিলেন, যার জন্ম না হলে হয়ত বাংলাদেশের জন্ম হত না। তিনি আজীবন বাংলাদেশের জন্যে কাজ করেছেন, দেশের ভালোর জন্যে চিন্তা করেছেন, দেশের মানুষ-এর মঙ্গলের জন্যে নিজেকে নিবেদন করেছেন। ৫২’এর ভাষা আন্দোলনে, ৫৪’এর যুক্তফ্রন্টে, ৫৮’ সামরিক শাষনের বিরুদ্ধে, ৬৬’র ৬-দফা, ৬৯’ গন আন্দোলন, ৭০’র নির্বাচন সহ বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দলনে বঙ্গবন্ধু জরিত ছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠার জন্যে ধাপে ধাপে এগিয়ে নেবার জন্যে বঙ্গবন্ধুর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাই হচ্ছে ৬৬’র ৬-দফা’। সেই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিটি ছেলে মেয়ে যাতে বঙ্গবন্ধুর মত সৎ সাহসী হিসাবে গড়ে উঠে, সেজন্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন তারা যেন নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দেশটির উন্নয়নে্র জন্যে অবদান রাখে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর এই আলোচনায় অংশ নিয়ে মিঃ ণজরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা’র কারনেই বাংলাদেশ স্বাধীন হবার অল্প কদিনের মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়- বাংলাদেশ সত্যিকারভাবে স্বাধীন হয় সেদিন, যেদিন ভারতীয় সেনাবাহিনী দেশ ছেরে চলে যায়। তিনি বলেন, পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই, যে দেশ থেকে যুদ্ধ শেষে এত অল্প দিনের মধ্যে অন্য দেশের সেনাবাহিনী চলে গেছে- এটা কেবল মাত্র বাংলাদেশর ক্ষেত্রেই ঘটেছে, আর সেটা কেবল সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা’র কারনে।
ডঃ এজাজ-আল-মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন যে মানবতার কথা বলতেন স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও বাংলাদেশে সেই মানবতার অভাব।
ডঃ কামাল-ঊদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহমরমিতার অভাব।
মিঃ কামরুল আহসান খান বলেন যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধু স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন, সে সময় বঙ্গবন্ধুর যারা সমালোচক ছিলেন তারাও এখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রহন করেছেন। মিঃ খান মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর মত সাহাসি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশের শিশু, কিশোর আর তরুনরা যাতে গড়ে উঠে সে চিন্তা চেতনা থেকেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনের দিন নির্ধারিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবসে কিশোরদের বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অররা কর জানায় যে, Children Day is to honor children. তার বয়সের বাংলাদেশী আর অস্ট্রেলিয়া’র কিশোরদের ‘childhood’- এর এক তুলনামুলক আলোচনা করে অররা বলে, ‘…Non-resident Bangladeshi parents and their children in Australia should come forward to contribute to build Bangladesh where all children will be honored and have access to their rights- rights to enjoy their childhood…’
শিশু কিশোরদের বক্তৃতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে ছিল Zayad, Zaima, Raad, Zumana, Arara, Hasan, Rafee, Abida, Ruponti, Sameen, Mahadi, Aurpan, Ariful, আর Mahran. এসব শিশু কিশোরদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করেন ম্যাড্যম চৌধুরী, আর তাকে সহযোগিতা করেন আফসানা রহমান।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু’র ৯২তম জন্ম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দেওয়া গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাস্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের বানী পড়েন দূতাবাসের কর্মকর্তা শেলী শাবরীন, আর প্রধান্মন্ত্রী শেখ হাসিনার বানী পড়েন শামিমা পারভীন।
শিশু কিশোরদেরকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু’র ৯২তম জন্ম জন্মবার্ষিকীর কেক কাটেন ম্যাড্যম চৌধুরী। আর পুরো অনুষ্ঠান টির পরিকল্পনায এবং পরিচালনার দায়ীত্তে ছিলেন দূতাবাসের কর্মকর্তা শামিমা পারভীন।