ভাষা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানাল ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল।
আমরা ছাড়া কে পেরেছে মায়ের ভাষাকে এমন করে ভালবাসতে। আমরা ছাড়া কে পেরেছে ভাষার জন্য প্রাণ বিলিয়ে দিতে। মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করা জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিবছরের মত এবারো ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল আয়োজন করেছিল অমর একুশে ( আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ) এর অনুষ্ঠান।
২১শে ফেব্রুয়ারি রবিবার স্কুল প্রাঙ্গনে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং কার্যকরী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে ভাষা সংগ্রামীদের স্মরণ করে। কোভিড মহামারী সংখ্যা নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ থাকায় শুধুমাত্র আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে এবারের আয়োজন পরিবেশিত হয়।
অমর একুশের অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মত গাওয়া ” অ আ বাংলা ভাষা” গানের গীতিকবি ও সুরকার, জয়পুরহাটের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সুনিল দাস এবং এই গানের সংগ্রাহক বিশিষ্ট সংবাদিক প্রয়াত অধ্যাপক আবুল হোসেনের স্মৃতির প্রতি বাংলা স্কুলের পরিবেশনাটি উৎসর্গ করা হয়।
সকাল সাড়ে দশটার প্রভাত ফেরির মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠানসৃচীর সূচনা ঘটে। প্রভাত ফেরিটি স্কুলের খেলার মাঠ থেকে শুরু হয়ে পুরো স্কুল প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনালের বেদীমূলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
সকাল এগারোটার বাংলা স্কুল সাধারন সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান সবাইকে অমর একুশে ( আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ) দুই হাজার একুশের আয়োজনে সবাইকে স্বাগত জানান।
এরপরই কোভিড সংখ্যা নিষেধাজ্ঞার কারণে সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও লিখিত বাণী পাঠান ক্যাম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিলের মেয়র জর্জ ব্রিটসেভিক, স্থানীয় স্টেট এমপি এনালাক চানটিভং এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসান জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম। তাদের পাঠানো বক্তব্য অনুষ্ঠানে পাঠ করেন স্কুল সভাপতি মসিউল আজম খান স্বপন।সভাপতি তার বক্তব্যে স্কুল পরিচালনা এর প্রসারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি এই অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এই পর্যায়ে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি প্রসারে অসামান্য অবদান রাখা বিশিষ্ট সমাজ কর্মী, ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মওলার হাতে একুশে সম্মাননা ২০২১ তুলে দেয়া হয়। জনাব গোলাম মওলার হাতে সম্মাননা তুলে দেন স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য নাজমুল আহসান খান। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মসিউল আজম খান স্বপন, সাধারণ সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান, অধ্যক্ষ রোকেয়া আহমেদ, কার্যকরী কমিটির সহ সভাপতি ফায়সাল খালিদ শুভ এবং কোষাধ্যক্ষ রুমানা খান মোনা।
এই পর্ব শেষে বাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা একটি অনবদ্য পরিবেশনার মাধ্যমে ভাষা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানায়। পাঁচটি একক আবৃত্তি, দুটি একক গান, দুটি বৃন্দ আবৃত্তি এবং তিনটি সমবেত সংগীতের প্রতিটিতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সমর্থ হয়। একক আবৃত্তিতে অংশ নেয় রুশনান, তাইশা, স্বপ্নীল, স্বাধীন এবং দৃপ্ত। একক সংগীত পরিবেশন করে রেহনুমা ও এলভিরা। বৃন্দ আবৃত্তি নিয়ে আসে ইয়াসফিন, আরিয়ান, মারজান, রেহনুমা, মাহদিয়া, রুশনান।
মহান ভাষা আন্দোলনকে উপজীব্য করে একটি চমৎকার ক্ষুদ্র নাটিকা ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশন যা উপস্থিত দর্শকদের মধে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে। আভিনয়ে অংশ নেয় নুরিন, এলভিরা, দৃপ্ত, স্বপ্নীল, নাদিন, সম্প্রীতি, আনিকা, রোদ্দুর, অলিভিয়া, তাইশা, শায়ান, সাফওয়ান, মাহাদিয়া, রেহনুমা, রাইনা, আজনিহা, আইজা, সুহারদিতি, কাইজান, সাজিদ, নারমিন, মারজান, ইয়াসফিন, স্বাধীন, এশান, অর্ণিলা, মেহরাব, সেহজাদ, অস্কার, ইয়ারা, রাইসা, সাদাফ, শহীদ, রাশমিয়া। শহীদ মিনারের প্রতীকী ভূমিকায় ছিলেন ইয়াকুব, সাগর ও গৌরব।
মসিউল আজম খান স্বপন এর মূল ভাবনায়, নাটিকার সংলাপ রচনা করেন ফয়সাল খালিদ শুভ। নির্দেশনায় ছিলেন মাসি খান স্বপন, আজিম সাগর ও মৃন্ময় পাল। এই পুরো পর্বটি পরিচালনা করেন স্কুলের সংগীত শিক্ষক রুমানা ফেরদৌস লনি এবং অমর একুশে অনুষ্ঠান আহবায়ক বিজয় সাহা। সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন অধ্যক্ষ রোকেয়া আহমেদ এবং শ্রেণি শিক্ষক নুসরাত আহমেদ।
শেষ পর্বে পরিবেশনা নিয়ে আসেন সিডনির বরেণ্য শিল্পীবৃন্দ। গানে গানে শ্রদ্ধা জানান ফারিয়া নাজিম, নাফিসা আজাদ, রুমানা ফেরদৌস লনি এবং ফয়সাল খালিদ শুভ। আবৃত্তিতে ছিলেন মৌমিতা চৌধুরী। পুরো অনুষ্ঠানে তবলায় সংগত করেন বিজয় সাহা। দোতারা ও বাশিতে ছিলেন তারিক আহমেদ। শব্দ নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করেন স্কুলের কার্যকরী কমিটির সহ সভাপতি ফয়সাল খালিদ শুভ। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন নাফিসা আজাদ।
শহীদ মিনার নির্মাণ ও মঞ্চ সজ্জায় ছিলেন ইয়াকুব, সাগর, ফারহানা, রাফায়েল, স্বপন, শুভ, শাহিন, মেহেদী মৃন্ময় ও গৌরব। আপ্যায়ন ছিলেন দিশা, সুমনা , মোনা, রুপক ও শাহিন। বরাবরের মত এবারো খাবার সরবরাহ করেন ওলি আহমেদ। অনুষ্ঠান আহবায়ক বিজয় সাহার পরিচালনায় আর রুমানা খান মোনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে অমর একুশের অনুষ্ঠানটি বিকাল তিনটায় শেষ হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব বাংলা ভাষাভাষীর জন্য উন্মুক্ত থাকে।
Kazi Ashfaq Rahman
ছেলেবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট ছিলাম বলে আমার মায়ের কাছে শুনেছি। দুষ্টুমি করার জন্য যে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন তা নিশ্চয়ই আমার ছিল না। আমার এই নিবুর্দ্ধিতা একসময় আমার মাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন আমার এই ছেলে জীবনে চলবে কি করে। এখন যেভাবে চলছি তাতে কোনও আক্ষেপ নেই। ভালই তো আছি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত শিক্ষা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে অনন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারাকে জীবনের বড় অর্জন বলে মনে করি। আমার স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী, আমার শত বোকামী, আলসেমী আর বৈষয়িক না হওয়াকে প্রকারান্তরে প্রশ্রয় দেওয়াতে আমার আর মানুষ হয়ে ওঠা হয়নি। আমার দুই সন্তান, আমি চাই তারা আমার মত বোকাই থেকে যাক কিন্তু আলোকিত মানবিক মানুষ হোক যা আমি হয়তো হতে পারিনি।
Related Articles
সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদযাপন
গত ১৬ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় সিডনিস্থ রকডেলের বনলতা ফাংশন সেন্টারে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা
Indian Election 2014: Possible Impact on Bangladesh if BJP wins
On 5th March, the Election Commission has decided to hold the 16th parliamentary election of the Lower House (Lok Sabha)
জীবন ভ্রমন ২২ , ২৩
জীবন ভ্রমন ২২ : ১৯৭২ সালে ঢাকা এসে মতিঝিল পোস্ট অফিস প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হই । ডিপামেনটাল স্কুল । অগ্রাধিকার