Few Important Hadith on Ramadan

রমজানের গুরুত্ব পূর্ণ কিছু হাদিস

রমজান মাসে যে সকল বিষয় বর্জনিয়

আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সিয়াম হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও মুর্খতাসুলভ কথা ও কাজে লিপ্ত না হয়। যদি তাকে কেউ গালি দেয়, তাহলে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী, আমি রোজাদার। [বুখারী]

আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। [বুখারী]

রমজান মাসে যে সকল বিষয় বৈধ

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. সকালে গোসল ফরজ হওয়া নাপাকী অব¯‘ায় নিদ্রা থেকে উঠে গোসল করতেন। এরপর মসজিদে যেতেন তখন তার মাথা থেকে গোসলের পানির ফোটা পড়তে থাকত। অতঃপর তিনি এ দিন রোজা পালন করতেন। [আহমাদ, নাসায়ী ]

আবু সালমা বিন আব্দুর রহমান আয়েশা রা. হতে বর্ণনা করেন- তিনি বলেছেন, রাসূল সা. নিজ স্ত্রীদের রোযা অব¯‘ায় চুমু দিতেন। আমি আয়েশা রা. কে জিজ্ঞেস করলাম ফরজ এবং নফল সব ধরনের রোযা অব¯‘ায়? তিনি বললেন, ফরজ-নফল সব ধরনের রোযা অব¯‘ায়। [বুখারি, মুসলিম , আবু দাউদ]

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমারা তাদের পরিচ্ছদদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্মপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অত:পর তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যাকিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরণ কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিস্কার দেখা যায়। এতে করে সাহাবায়ে কিরাম খুব খুশি হলেন। [বুখারি ]

সফর অব¯‘ায় রোযা রাখা না রাখা

ইবনে আব্বাস রা. থেকে রা. বর্ণিত,

রমজানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোযা অব¯‘ায় সফর করে আসফান নামক ¯‘ানে পৌঁছলেন। অতঃপর পান পাত্র চাইলেন দিনের বেলায় মানুষকে দেখায়ে পান করলেন। রোযা না রাখা অব¯‘ায় মক্কায় প্রবেশ করলেন। ইবনে আব্বাস রা. বলতেন: সফর অব¯‘ায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোযা রেখেছেন এবং ভেঙ্গেছেন, দুটিই করেছেন। অতএব যার ইচ্ছে হবে রোজা রাখবে, যার ইচ্ছে হবে না রোজা রাখবে না। [বুখারী]

রোজা পাপ মোচনকারী

আবু হুরাইরা রা. হাদীসে কুদসীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন :

প্রত্যেক আমলের জন্য কাফ্ফারা রয়েছে, আর রোজা হচ্ছে আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।[ বুখারী]

হুজাইফা রা. বলেন, আমি ওমর রা. কে বলতে শুনেছি :

ফেৎনা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বলা হাদীস কার মনে আছে? হুজাইফা রা. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, ব্যক্তির ফিৎনা হল তার পরিবার-পরিজনে, মাল-সম্পদে ও তার প্রতিবেশীর মধ্যে। আর এ ফেৎনা মোচনকারী হচ্ছে সালাত, সিয়াম ও সদকা। [বুখারী , মুসলিম ]

রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত

জায়েদ বিন খালেদ জুহানি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি কাউকে ইফতার করাবে সে ওই ব্যক্তির সমান ছওয়াব পাবে। অথচ রোজাদার ব্যক্তির নেকি থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। [তিরমিযি , ইবনে মাজাহ ]

তারাবির নামাজ

সাহাবি আবু জর রা. বলেন :

আমরা রাসূল সা. এর সঙ্গে রমজানের রোজা পালন করলাম। মাসের কখনো তিনি আমাদের নিয়ে তারাবির নামাজ পড়লেন না। অবশেষে যখন মাত্র সাত দিন বাকি রইল, তিনি তখন আমাদের নিয়ে তারাবির নামাজ পড়লেন। এ নামাজে রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয়ে গেল। ষষ্ঠ দিন তিনি আমাদের সঙ্গে নামাজ পড়লেন না। যখন পাঁচ দিন বাকি রইল, তখন তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ পড়লেন, যাতে রাতের অর্ধেক অতিবাহিত হয়ে গেল। অতঃপর আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসূল, যদি রাতের বাকি অংশও আমাদের নিয়ে নামাজ পড়তেন! তিনি বলেন : রাসূল সা. বললেন : যে ব্যক্তি ইমামের চলে যাওয়ার আগ পর্যš– ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়ল, তার জন্য পূর্ণ রাতের সওয়াব গণ্য করা হবে। তিনি বলেন : যখন চতুর্থ রাত হল, তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ পড়লেন না। যখন তৃতীয় রাত উপনীত হল, তখন রাসূল সা. নিজ পরিবার ও নিজ স্ত্রীদের এবং সবাইকে জমা করে নামাজ পড়লেন। এক পর্যায়ে আমাদের আশঙ্কা হল, হয়তো ‘ফালাহ’ ছুটে যাবে। সে বলল : আমি জিজ্ঞাসা করলাম : ‘ফালাহ’ কি? তিনি বললেন : সেহরি। অতঃপর মাসের অবশিষ্ট দিনগুলোতে তিনি আমাদের নিয়ে আর নামাজ পড়েননি। [আবু দাউদ , ইবনে মাজাহ ]

রমজানের ফজিলত

জান্নাতে একটি দরজা আছে যাকে রাইয়ান বলা হয় কেয়ামত দিবসে সেখান দিয়ে রোজাদার প্রবেশ করবে, রোজাদার ছাড়া আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করবে না। বলা হবে: রোজাদার কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে, তারা ছাড়া আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করবে না, যখন প্রবেশ করবে দরজা বন্দ করে দেয়া হবে আর কেউ সেখানে প্রবেশ করবে না। [বুখারী ]

যখন রমযানের প্রথম রাত্রি আগমন করে, তখন শয়তান এবং অবাধ্য জিনদের শৃঙ্খলিত করা হয়, জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়; খোলা রাখা হয় না কোন দ্বার, জান্নাতের দুয়ারগুলো অর্গলমুক্ত করে দেয়া হয়; বদ্ধ রাখা হয় না কোন তোরণ। এদিকে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন- ‘হে পুণ্যের প্রত্যাশী, অগ্রসর হও। হে মন্দের প্রত্যাশী, থেমে যাও’। আবার অনেক ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আর এমনটি করা হয় রমজানের প্রতি রাতেই। [তিরমীযী , ইবনে মাজাহ ]

রমযান পূর্বলগ্নে রোজা সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা

তোমাদের কেউ যেন রমযানের এক বা দু’দিন আগে রোজা না রাখে। তবে সে যদি এমন হয় যে, আগে থেকেই এ দিন রোজা রেখে আসছে, তাহলে এ দিন রোজা রাখতে পারে। [বুখারী , মুসলিম]

মৃত্যু ব্যক্তির পক্ষ থেকে রোজা রাখা

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন:

যে ব্যক্তি রোজা না রেখে মারা গেল, তার পক্ষ থেকে তার অভিভাবক রোযা রাখবে। [বুখারী , মুসলিম ]

বুরাইদা রা. বলেন,

আমি যখন রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট বসা ছিলাম এক মহিলা তাঁর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার মায়ের জন্য একজন দাসি সদকা করেছি এবং তিনি মারা গেছেন

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল সা. বললেন: তুমি প্রতিদান অবশ্যই পাবে এবং তুমি তাকে পাবে উত্তরাধিকার হিসেবে। মহিলাটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তার জিম্মায় একমাসের রোজা ছিল, আমি কি তার পক্ষ থেকে রোজা রাখব? রাসূল সা. বললেন: তার পক্ষ থেকে রোজা রাখ। সে বলল, তিনি কখনও হজ করেন নি আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করব? রাসূল বললেন: তার পক্ষ থেকে হজ কর। [মুসলিম , আবু দাউদ , তিরমিজী ,ইবন মাজাহ]


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment