সিনেমার সর্বজয়া আর সাহিত্যের সর্বজয়া
বিভূতিভূষণ মানবজীবনের গভীর ভাষ্যের রূপ অসাধারন কারুকার্যে তুলে ধরেছেন তাঁর উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’তে। তারই ভিত্তিতে সত্যজিৎএর সৃষ্টি অনবদ্য সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’। এ দু’টি সম্বন্ধে জানেন না এমন শিক্ষিত ও সচেতন বাঙ্গালী কদাচ দেখা যাবে। সত্যজিতের ওই সিনেমাতে সাদা কালোতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মায়াবী স্বস্থির পাশাপাশি অভাব দারিদ্রের কঠিন চিত্র মনে গাঢ় বেদনা জাগায়।
সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ মাত্র ছাপ্পান্ন বছর যার আয়ূষ্কাল, তার সৃষ্টির আয়ূ নব্বই বছর পার হয়ে আজও পর্যন্ত সজীব, এবং কতকাল আর আগামীতে আরও কতকাল হবে তা বলা কঠিন। তার এই উপন্যাসটি ১৯২৮সালে কলকাতার একটি পিরিয়ডিক্যালে প্রথম প্রকাশিত হয়। তারপরের বছর অর্থাৎ ১৯২৯এ বই আকারে প্রকাশ হয়। এই সৃষ্টি বিস্তৃত হয়ে অনন্য হয়েছে সত্যজিৎ কর্তৃক তা চলচ্চিত্রে রূপায়নের মাধ্যমে । সত্যজিৎ ১৯৫২তে ‘পথের পাঁচালী’র চলচ্চিত্রে রূপদান শুরু করেন এবং শেষ করেন ১৯৫৫এ। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে অর্থাভাবই চলচ্চিত্রটির নির্মানে দীর্ঘ সময় লাগে। যা ভাবতে বিস্ময় লাগে। এমন এক শিল্পকর্মের জন্যও কায়ক্লেশে অর্থ জোগার হয়েছিল? তবে সত্যজিতের এই সিনেমা বা চলচ্চিত্র তাঁর দেশ ও জাতির জন্য বিপুল গৌরবই কেবল বয়ে এনেছে। বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’কে সত্যজিৎ রায় বলেছেন ‘গ্রামবাংলার এনসাইক্লোপেডিয়া’।
এই উপন্যাস গভীর অভিনিবেশসহ পড়তে পড়তে মনে হল মানব চরিত্রের বৈচিত্র দেখার দূরবীন হচ্ছে বিভূতিভূষণের অমর সৃষ্টি ‘পথের পাঁচালী’।
সিনেমার সর্বজয়া
নিশ্চিন্দিপুর গাঁয়ের অভাবী ব্রাহ্মন হরিহর রায়ের স্ত্রী সর্বজয়া। হরিহর রায় অর্থবিত্তেই শুধু দরিদ্র নয় বাস্তব বুদ্ধির ভান্ডারও তার তেমন সমৃদ্ধ নয়। তবে হরিহর পড়াশোনা জানে, সে লিখে এবং পূজাআচ্চার শ্লোকমন্ত্র তার ভালই করায়ত্ত। তবে তার স্বপ্ন অন্যরকম। স্ত্রী সর্বজয়াকে হরিহর বলে যে তার লেখা পালা একদিন লোকে ঘরে এসে নিয়ে যাবে, অভিনীত হবে গ্রাম গঞ্জে। মানুষ সে সব পালাগান রাত জেগে জেগে দেখবে।
অভাবের সংসারে সর্বজয়া স্বাচ্ছল্যের আশায় আশায় কোনমতে দিন যাপন করে। নিজেদের দু’টি সন্তান অপূ দূর্গাসহ তারা চারজন তো আছেই তার উপর বোঝার উপর শাকের আটির মত আছেন ইন্দির ঠাকরুন। ইনি হরিহর রায়ের দূর সম্পর্কের এক জ্ঞাতি বিধবা বোন। বহুকাল আগে তার বিয়ে হয়েছিল তবে স্বামীর ঘর কোথায় জানা নেই, যাওয়া হয়নি কোনদিন। সেই ব্রাহ্মন স্বামী সে সময়ের রেওয়জ বা চলতি প্রথা অনুযায়ী মাঝে সাঝে আসতো। স্বামীর এই যাওয়াআসার কালেই কোন এক সময়ে ইন্দির ঠাকরুন গর্ভবতী হোন। একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারপর খবর আসে ইন্দির ঠাকরুনের স্বামী লোকান্তরিত হয়েছেন। হিন্দু মেয়েরা সে সময়ে পৈত্রিক সম্পত্তিতে অধিকার পেতোনা। অধিকারহীন এক নারী ইন্দির ঠাকরুন সংসারে উটকো এক অস্তিত্ত্ব। কথোপকথন থেকে জানা যায় তার মেয়ে বিশ্বেশরী বিয়ের পর মারা যায় আর এই কারনেই বোধহয় জ্ঞাতিভাই হরিহর রায়ের কন্যা ভাইজি দূর্গার উপর সমস্ত আদর স্নেহ ঢেলে দেয় ইন্দির ঠাকরুন। দূর্গাও পিসির সাংঘাতিক ন্যাওটা।
অভাবের সংসারে ঠাকুরঝি ইন্দিরা খাবারেতো ভাগ বসায়ই তার উপর উপেক্ষিত, অনাদৃত তুচ্ছতাচ্ছিল্যের পাত্রী হতভাগিনী পিসির প্রতি মেয়ে দূর্গার যে মনোযোগ ও ভালবাসা তা সর্বজয়ার ভীষণ না-পছন্দ। কতবার যে সর্বজয়া অসহায় ইন্দির ঠাকরুনকে বাড়ি থেকে বের দিয়েছে। ঘুরতে ঘুরতে যখন আবার পিসি ফিরে এসেছে দু’হাত বাড়িয়ে দূর্গা তাকে যতটা সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছে ততোটাই লাঞ্ছনা গঞ্জণা জুটেছে সর্বজয়ার কাছ থেকে। সিনেমাতে দেখা যায় দূর্গা তার পিসির প্রতি মায়ায় কাতর আর ইন্দির ঠাকরুনও ছোট্ট ভাইজিটিকে গভীর মমতায় জড়িয়ে রাখছে। পিসির প্রতি দূর্গার আদর আকর্ষণ এতো বেশী যে অন্যের গাছ তলায় কুড়িয়ে পেয়ে, কখনো বা লুকিয়ে চুরিয়ে পেড়ে এনে ফলপাকড়, নোনাফল পিসির ভাঙ্গা ঘরের মাটির ঘটিতে রেখে যায়। ক্ষুধার্ত ইন্দির ঠাকরুন মহা তৃপ্তির সাথে সে ফল খায়। তা দেখতে পেয়ে দূর্গার মা সর্বজয়া তাকে কটু কথা শোনাতে পিছপা হয় না। দূর্গা যখন পিসির দাওয়ায় বসে পিসির গায়ে লেপ্টে আদর কাড়ে সর্বজয়ার সেটাও পছন্দ হয় না। মেয়েকে সে বকাঝকা দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়।
সিনেমাতে দেখা যায় দারিদ্রের কষাঘাতে দীর্নবিদীর্ন, ভাঙ্গাচুড়া হতশ্রী বাড়ীর ঘরনী রুক্ষ, শুষ্ক সর্বজয়া হরিহরের অসহায় বিধবা জ্ঞাতিবোন বৃদ্ধা ইন্দির ঠাকরুনের প্রতি একটি বারের জন্যও নম্র ব্যবহার করেনি। সর্বজয়ার দয়ামায়াহীন কঠিন আচরণে অশিতিপর দরিদ্র বৃদ্ধা ইন্দির ঠাকরুন বার বার হরিহরের বাড়ী থেকে বিতাড়িত হয়েছে। সর্বজয়ার ভাড়ার ঘর থেকে ইন্দির ঠাকরুন যখন লুকিয়ে একটুখানি লবন বা সামান্য মরিচ তুলে নিয়ে ধরা পড়ে যায় তখনও ভ্রাতৃবধুর অপমানজনক কথার ছোবল তাকে সইতে হয়।
সিনেমার একটি দৃশ্যে সর্বজয়ার নিষ্ঠুরতা বুকের গহীনে ঘা দেয়। শেষবার বাড়ী থেকে বিতাড়িতা ইন্দির ঠাকরুন এক খরতপ্ত দুপুরে ঘুরতে ঘুরতে বাড়ীতে ঢুকে। সর্বজয়া দাওয়ায় বসে একটি থালায় নিয়ে কিছু একটা খাচ্ছিল, সে নিজেও ক্ষুধার্তের মতই মুখে খাবার পুড়ছিল। খাবার দেখে বুভুক্ষা লোলচর্মসার ইন্দির ঠাকরুনের চোখ যেন ক্ষুৎপিপাসায় জ্বলে উঠলো। সর্বজয়া খাবার তো সাধলোই না তারপরও যখন তৃষ্ণার্ত ইন্দির ঠাকরুন একটু পানি চাইলো তখন সর্বজয়া দাওয়ায় রাখা কলসী বা ঘটি দেখিয়ে তা থেকে ঢেলে পানি খেতে বললো। এবারও সর্বজয়া কঠোরভাবে তাকে স্মরণ করালো যে এই বাড়ীতে ইন্দির ঠাকরুনের আর ঠাঁই হবে না।
এই বিশাল পৃথিবীতে ইন্দির ঠাকরুনের মত মানুষের এতোটুকু জায়গাও কোথাও ছিল না। সেই যে ক্ষুধা-তৃর্ষ্ণা নিয়ে শেষবারের মত বিতাড়িত হল সে তারপর তার অপমান, ক্ষুধা, পিপাসা ভুলিয়ে মৃত্যুই তাকে পরম যত্নে কোলে টেনে নিল।
জানি সর্বজয়া দরিদ্র, জানি নিজের সন্তানদেরও জন্যও প্রয়োজনীয় সব কিছু তারা জোটাতে পারে না। তারপরও অসহায়, আশ্রয়হীন বিধবার প্রতি আচরণে তার যে নিষ্ঠুরতা তা অপরিমেয় বেদনায় আমাদের আপ্লুত করে। সিনেমাতে কখনো একটি বারের জন্যও হতভাগিনী ইন্দির ঠাকরুনের জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর পরেও তার জন্য মায়া বা সহানুভূতির একটি বাক্য সর্বজয়া উচ্চারণ করতে দেখা যায়নি। মনে মনে কি এতোটুকু মায়ামমতা বা সহানুভূতি সর্বজয়া অনুভব করেছিল? হয়তো। হয়তো বা না। অথবা সিনেমাতে তা ধারন করা যায়নি বা প্রকাশ করা সম্ভব হয় নি।
সিনেমা শেষ হয় ভিটাবাড়ি ছেড়ে সর্বজয়ার পরিবারের ভাগ্যের অন্বেষণে দূর কোন লোকালয়ে যাত্রার মাধ্যমে।
সাহিত্যের সর্বজয়া
বিভূতিভূষণের উপন্যাস ‘পথের পাচাঁলী’র প্রথম দিকেই জানা যায় অপমানিত, অবহেলিত, ক্ষুধা ও বয়সের নিষ্ঠুর ছোবলে নুয়ে পড়া ইন্দির ঠাকরুন বার বার গৃহ থেকে বিতাড়িত হয়। পূর্ব ইতিহাস তার এই যে হিন্দু ব্রাহ্মনের বিধবা সে। সে সময়ের আরও অনেক মেয়ের মতই(শরৎচন্দ্রের বইয়ে এমন অনেক ঘটনা দেখা যায়) তারও স্বামীর ঘরবাড়ী কোথায় জানা নাই, স্বামীগৃহে যাওয়া হয়নি কোনদিন। তৎকালীন সময়ের প্রথামত স্বামী এসেছে দু’এক বার। কখনো সখনো ইন্দির ঠাকরুন যে ক্ষনিক স্বামী সংসর্গ পেয়েছিল তা থেকে একটি সন্তানেরও জন্ম হয় । একদিন খবর আসে স্বামী তার পরলোকবাসী হয়েছে। তখুণি শাখা, সিঁদুর খুলিয়ে বিধবার বেশ তুলে দেওয়া হয় তার অঙ্গে। একমাত্র সন্তান তার বিশ্বেশ্বরী। বয়ঃপ্রাপ্ত হলে সে মেয়েকেও বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভাগিনী ইন্দির ঠাকরুনের কন্যাটিও কম বয়সেই মারা যায়। তারপর থেকে ইন্দির ঠাকরুন বিশাল এই পৃথিবীতে সম্পূর্ণ একা। হরিহর তার আপন কেউ নয়। জ্ঞাতি ভাই মাত্র। তৎকালীন সময়ে হিন্দু মেয়েরা উত্তরাধিকার সূত্রে বাপের সম্পত্তিতে কিছুই পেতো না অন্যদিকে স্বামীর বাড়ী যাওয়াই হতোনা অনেক ব্রাহ্মনের মেয়ের। একদিকে পৈতৃক সম্পত্তি বঞ্চিত আর অন্যদিকে স্বামীর বাড়ীর হদিশ যার জানা নাই সে তো আরও অভাগিনী। তেমন অভাগিনীদের একজন ‘পথের পাঁচালী’র ইন্দির ঠাকরুনও।
হরিহরের দারিদ্রই তার স্ত্রী সর্বজয়াকে ইন্দির ঠাকরুনের প্রতি নিষ্ঠুর ও কঠোর করে তুলেছিল। ভাবলে অবাক লাগে সর্বজয়া মায়া, ভালবাসা বাদ যাক সামান্য একটু দয়া কি অসহায় বিধবা বৃদ্ধা ইন্দির ঠাকরুনকে দেখাতে পারতো না? একটি বারের জন্যও ইন্দির ঠাকরুনের উদ্দেশ্যে কড়া কথা বলা থেকে সর্বজয়া বিরত হয় নি। ‘ইন্দির ঠাকরুন ফিরিয়া আসিয়াছে ছয়-সাত মাস হইল, সর্বজয়া কিন্তু ইহার মধ্যে একদিনও বুড়ির সঙ্গে ভালো করিয়া কথা কহে নাই’( পঞ্চম পরিচ্ছেদ ‘পথের পাঁচালী’)।
হ্যাঁ সিনেমাতে সর্বজয়া দয়া দেখায়নি, অনুশোচনা করে নি তা সত্যি। তবে এক পর্যায়ে সাহিত্যের সর্বজয়ার একান্ত উপলব্ধি ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করে আমরা মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থলের নিবেদন প্রত্যক্ষ করি। মানুষ তাহলে একান্তে এমনও করে! করতে পারে! যা দেখানোর জন্য নয়। যা তার ভেতরের তাগিদ থেকে আন্তরিকভাবে উৎসারিত হয়। তবে সাহিত্যিক তা পর্যবেক্ষণ করার গভীর ক্ষমতা রাখেন ও তার সৃষ্ট চরিত্রের মাঝ দিয়ে তুলে ধরেন। বর্ণের সাথে বর্ণ জুড়ে, শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে সাহিত্যিকই পারেন মনের গভীরে আলোড়িত অনুভূতির চিত্র আঁকতে।
সর্বজয়ার স্বামী হরিহর রায় যখন বাড়ি থেকে দূরে কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে মরছে, তখন সর্বজয়া ঘটিবাটী বিক্রি করে দু’টি সন্তানসহ বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে । দূর্গা মারাও গেল বিনা চিকিৎসায় যা তার দূরপ্রবাসী বাপ জানলোই না। হরিহর এক সময়ে সামান্য অর্থ সংস্থান করতে পেরে বাড়ি ফেরে। দূর্গার জন্য একটি শাড়ি ও সর্বজয়ার ফরমাস মত রুটি বেলার বেলনী পিড়ি ও লক্ষীর পট নিয়ে ফেরে সে। ফিরে এসে দেখে দূর্গা আর বেঁচে নেই।
অভাবে অভাবে পর্যুদস্থ, দিশেহারা হরিহর আপন নিবাস ছেড়ে স্ত্রীপুত্রসহ কাশীবাসী হয়। আশা সেখানে পূজারীর কাজকর্ম করে অন্নসংস্থান করা যাবে। সেখানে অল্পদিন পরেই হরিহরের মৃত্যু ঘটে। তারপরে পুত্রকে নিয়ে সর্বজয়া এক ধনীর বাড়িতে রাধুনী বামনীর কাজে যোগ দেয়। সিনেমাতে যা দেখানো হয় নি। বা দেখানোর দরকার হয়নি হয়তো।
সে বাড়িতে একদিন দুই তিনটি ঝি চাকরানীসহ ষোল বেহারার পালকিতে চড়ে তাদের এক ধনী আত্মীয়া বেড়াতে আসেন। পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও রাধুনী, চাকরানীরা সবাই মিলে সেই বৃদ্ধার প্রতি যে আদরআপ্যায়ন ও শ্রদ্ধাসন্মান প্রদর্শন করে তা প্রত্যক্ষ করে সর্বজয়ার হঠাৎ কি যেন মনে পড়লো, কাকে যেন মনে পড়লো। সেই বৃদ্ধারই বয়সী কেউ একজন তার মনের কোনে ভেসে উঠলো। ওই ধনী নারীর বিদায়পর্বের শেষে রাধুনীচাকরানীদের জন্য নির্ধারিত নিজের থাকার ঘরে ফিরে ‘এইমাত্র তাহার(সর্বজয়ার) মনে পড়িয়াছে। অনেকটা এই রকম চেহারার ও এই রকম বয়সের-সেই তাহার বুড়ি ঠাকুরঝি ইন্দির ঠাকরুন, সেই ছেড়া কাপড় গেরো দিয়ে পরা, ভাঙ্গা পাথরে আমড়া ভাতে ভাত, তুচ্ছ একটা নোনা ফলের জন্য কত অপমান, কেউ পোঁছে না, কেউ মানে না, দুপুরবেলায় সেই বাড়ী হইতে বিদায় করিয়া দেওয়া, পথে পড়িয়া সেই দীন মৃত্যু…
সর্বজয়ার অশ্রু বাধা মানিল না।
মানুষের অন্তর-বেদনা মৃত্যুর পরপারে পৌঁছায় কি না সর্বজয়া জানে না, তবু সে আজ বারবার মনে মনে ক্ষমা চাহিয়া অপরিণত বয়সের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করিতে চাহিল।’*
উপন্যাসটি অভিনিবেশসহ পড়লেই সর্বজয়ার অনুশোচনার পর্বটি বোঝা যায় বা জানা যায়। যা সংবেদী পাঠকের মনকে কখনো সখনো অবশ্যই ব্যথিত করবে। ওই যে বলেছি সাহিত্যিক গভীর পর্যবেক্ষক তাই তিনিই পারেন সৃষ্ট চরিত্রের মাঝ দিয়ে মানব মনের দুঃখ সুখের ঢেউ এঁকে পাঠককে উদ্বেলিত ও আপ্লুত করতে।
*উৎস: শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদনা হায়াত মাহমুদ, তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৬
Related Articles
প্রিয় মানুষের শহর – ৪
[প্রিয় মানুষের শহর] আবুল ভাইদের একটা সবার উপরে আমরা গ্রুপ আছে – এই প্রবাসে। সব অনুষ্ঠান তাঁরা নিজেরা আয়োজন করে।
বহে যায় দিন – কেবল বেদনা অনন্ত হয়, আমি বেদনায় বেঁচে থাকি
> বহে-যায়-দিন সকল প্রকাশিত পর্ব > ।। পাঁচ ৷৷ কেবল বেদনা অনন্ত হয়, আমি বেদনায় বেঁচে থাকি জন্মগত সূত্রে প্রায় প্রত্যেকটি
ব্যর্থতা কি আওয়ামী সরকারের নয়?
ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা ও নৃশংস আক্রমনের খবর প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে। এদেশের ইতিহাসে হিন্দু