অরূপ ও ঝড়ের রাত

অরূপ ও ঝড়ের রাত

সকালের  সোনা রোদ গায়ে  মেখে  আদিবা  বেতের দোল চেয়ারে বসে তাকিয়েছিল ।  দৃষ্টি  তার শূণ্যতায় নিবদ্ধ ছিল না । দূরে ব্যাডমিন্টন  কোর্টে  ঘাসের উপরে ছেলে অরূপ । তার হাতে রেকেট । সে  চেষ্টা করছে  খেলার । তাকেই  আদিবা  দেখছিল । ট্রেইনার  আর সাহায্যকারীও  আছে  অরূপের সাথে ।

মাত্র কয়দিনে কি  অদ্ভুত  পরিবর্তন  মা ছেলের জীবনে । যদি  ওইরাতে ভয়ংকর  ঝড়  না হতো আর সমুদ্র থেকে  মরণ আলিঙ্গন দিতে  জলোচ্ছাস  ছুটে  না আসতো  তবে  কি তাদের  কপালে  এত প্রাপ্তি  ঘটতো ? মনে  হয় না । দেশের  দক্ষিণে  সমুদ্র  ফুঁসে উঠেছিল প্রচন্ড  রাগে । সব সম্বল  পিছনে  ফেলে অগুন্তি  অসহায়  মানুষ   প্রাণটুকু  হাতে  নিয়ে আশ্রয়  কেন্দ্রের  দিকে  ছুটেছিল ।  আদিবা  কি এক  আচানক উপায়ে নাকি অলৌকিক ভাবে ছেলেকে  নিয়ে  আশ্রয়  কেন্দ্রে  আগেভাগেই  পৌঁছে  গিয়েছিল ।  যখন চারদিকে ধ্বংসের হুঙ্কার আর মৃত্যুর আর্তনাদ  তখন কেউ যেন ওদের সবকিছু থেকে বাঁচিয়ে আলগোছে  উড়িয়ে নিয়ে নামিয়ে দিয়েছিল  ওই আশ্রয় কেন্দ্রে। । আদিবার ভাইয়ের  বউটা ঝড়ের কোপ  থেকে  বাঁচতে  পারেনি ।  সরল  মায়াবতী  বউটা  আদিবার একমাত্র  সহায়  ছিল ।  ভাইয়ের হৃদয়বতী  বউটাই আদিবার দুঃসময়ে প্রথম   বলেছিল

-আল্লাহপাক  আদিবাকে  নিয়ে  নিষ্ঠুর  খেলায়  মেতেছেন ।

আদিবার  মায়ের  পেটের  ভাই  বিষয়টা  একেবারেই  বুঝতে চায়নি । বউটা  ভাইকে  আরও বলেছিল

-দেখ  এমন এক  সন্তান  দিয়ে আল্লাহ  ওকে  যে  কষ্টের  মাঝে ফেলেছেন  তা  দেখে  আমাদের উচিত  নয় কি ওকে  মায়া আর দরদ দেখানো ।

আদিবার  ধান্ধাবাজ  স্বার্থপর  ভাই তাকে  বাপের  সম্পত্তি  থেকে  বঞ্চিত  করেছে, গর্ভবতী বোনের খোঁজও নেয়নি। এমন কি বাচ্চাটাকেও হাসপাতালে দেখতে আসেনি । বরং  সে রাগে  চিড়বিড় করে উঠেছিল ।  

-ও কেন বাচ্চাটাকে  হাসপাতালে  ফেলে আসেনি? কেন?  বাপ আর দাদী তো বাচ্চার  ভয়ংকর  রূপ  দেখেই  পালিয়েছে। ওরা তো আর আসেনি।

বউ  বলেছিল

-মা কখনো বাচ্চাকে  ফেলতে  পারে না । ও ভয়ংকর নয়, ও ছোট্টবাচ্চা, ও একটা মানুষ।

আদিবা কান্নায় ভেঙ্গে  পড়ে বলেছিল

-আল্লাহ্ ওকে  রূপ  দেননি  ও হচ্ছে  অরূপ । ভাই  আমি  কোথায়  যাব বল?

ভাইয়ের  সরল বউটা  বলেছিল

-কোথায়  যাবে মানে? এইখানে  থাকবি । আমি খেলে তুই আর তোর  ছেলেও খাবে । আমি মারা  গেলে এই বাড়ী  থেকে  চলে  যাাস ।

বেরহম পিশাচের মত ভাই তার  বউকে বলেছিল

-তুমি বোকারও  অধম ।

ভাইয়ের  বাড়ীতেই  অবহেলা  অনাদর,  গঞ্জনা  সয়ে  এতোগুলো বছর  পার করেছে আদিবা । ভাইয়ের  চোখের  সামনে  সহজে  ছেলে  অরূপকে  যেতে  দিত না ।  ঝড়ে  ভাইয়ের বউ  মারা  যাওয়ার  পর  ভাই আশ্রয়কেন্দ্রেই  আঙ্গুল  দিয়ে  অরূপকে  দেখিয়ে  রাগী  গলায় বলেছিল 

-এইটা  কেন  মরলো না , হ্যাঁ?  এ মরলে  বাঁচতাম । শোন্  আদিবা  আমার  কাছে  তোদের  আর  ঠাঁই  হবে না ।

ঝড়ের পর আশ্রয়কেন্দ্রে  দেশীবিদেশী  ডাক্তার নার্স  মানুষের  সেবায়  ভিড় করেছে ।  ঝড়ে  আহত  মানুষও  অনেক ।  চিকিৎসা শিবির  খুলে কাউকে ওষুধ, কাউকে ব্যান্ডেজ, কাউকে  রক্ত  দিয়ে  বাঁচানোর  চেষ্টা  চলছে । ডাক্তারদের  ডাকে সারা দিয়ে যারা  অক্ষত ও সুস্থ  তারা  রক্ত  দেওয়ার  জন্য  লাইন  দিয়ে  দাড়িয়েছে ।  সে লাইনে খর্বাকৃতি,  ছোটখাটো  মাথা, প্রায় ধনুকের  মত বাঁকানো  পা, কনুই থেকে কব্জি  পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়েও ছোট হাতের  স্বাস্থ্যবান  বোবা  অরূপও ছিল ।  অরূপের  রক্ত  নিয়েই  ডাক্তারদের  মাঝে  কানাঘুষা । ওর রক্তের  মধ্যে  অসাধারন  মৌলিক  কিছু  উপাদান  ছিল  যা দেখে  বিশেষজ্ঞ  ডাক্তাররাও হতবাক ।  তারপরই  বিদেশী ডাক্তারদের  টীম অরূপ ও তার মাকে  সবার  মাঝ থেকে  আলাদা করে নিয়ে আসে ।  কত পথ পেরিয়ে  শেষমেশ এ্যারোপ্লেনে  তারা এখানে  এসে  পৌঁছে  যায় । তারা দু’জনে  এখন  এই  পাহাড়ঘেরা  স্বাস্থ্য গবেষণা  কেন্দ্রে  আছে । জায়গাটা ভারতের  মেঘালয় রাজ্য ঘেষা  বাংলাদেশের  সীমান্তে।

যদিও এখানে আসার ব্যাপারে  আদিবা ভীত, সন্ত্রস্ত ছিল ।  ঝড়ের আশ্রয়কেন্দ্রেই  কেউ ভয় দেখিয়ে বলেছিল

-তোমার ছেলের চোখ, কিডনী, হৃদপিন্ড  বড়লোকদের কাছে বিক্রি করার জ্ন্যই বিদেশী ডাক্তারদের যত  ফন্দিফিকির  । অরূপের রক্তের গুণ আছে এগুলো সব ভাওতাবাজী  ।

একজন বুড়ো ফকির কিসিমের মানুষই শুধু আদিবাকে আশার কথা শুনিয়ে  বলেছিলেন

-দেখ গো মা, ওদের কথা সত্য হতেও পারে । এমন নদী, এমন অনেক কুয়া এই  দুনিয়ায় আছে  যার পানি মানুষের রোগ বালাই  সারায় । তোমার ছেলেও ওই  উপকারী নদীর মত কেউ একজন হবে হয়তো ।

  এই গবেষণা কেন্দ্রে অরূপের  জন্য  নানা  প্রশিক্ষণের  ব্যবস্থা  নেওয়া  হয়েছে  । ডাক্তাররা ওর রক্ত  নিচ্ছে  পরীক্ষা করার জন্য । অরূপের মা আদিবা শুনতে  পেয়েছে  যে  যেকোন  রোগীকেই  অরূপের  রক্ত  দিয়ে  সুস্থ করা যাচ্ছে  । আরও  অবাক  করার মত  ব্যাপার  হল  কঠিন  অসুখে ভোগা মানুষকেও  অরূপের  রক্ত থেকে নেয়া প্লাজমা  সামান্য  পরিমানে দিলেও  সে মানুষও অসুখ থেকে  মুক্তি  পাচ্ছে ।  এসব আদিবা শুনেছে  মাত্র । সত্যিমিথ্যা  যাচাই  করার ক্ষমতা  তার ছিল না । এই কেন্দ্রে  অরূপকে  নিয়ে বিস্ময়ের  যেমন  কমতি  নাই তেমনি  অরূপের  যত্নআত্তিরও  কোন কমতি  নাই । আদিবারও অনেক  স্বস্থি,  শান্তি ও আয়েশের জীবন এখন ।

আদিবার অতীত  বিচিত্র । মা ছাড়াই  মানুষ হয়েছে সে । আদিবার বয়স  তখন  বছরখানেক । দুপুরে ঘুমে ছিল সে । বাইরে  হঠাৎ  প্রচন্ড  বেগে  ঘূর্নিঝড় উঠলো । বৃষ্টিও নামলো ।  ছাতা মাথায় মা বেরিয়ে ছিল  বাইরে শুকাতে  দেওয়া কাপড় তুলতে । অল্পক্ষণের মাঝে  কয়েকটি  ঘর,  কিছু গাছপালা শিকড়শুদ্ধ উপড়ে তুলে নিয়ে  ঘূর্নিঝড় কোথায়  যেন চলে  গেল ।  চারদিক শান্ত  হল একসময় । সে ঝড় আদিবার মাকে  জড়িয়ে পেচিয়ে কোথায় যে নিয়ে  গেল  তাকে কেউ কোনদিন  আর  খুঁজে পায়নি ।

কলেজে পড়তে পড়তেই  বাবা ভাল  ছেলের সাথে  আদিবার  বিয়ে দেয় । শাশুড়ী ও স্বামীর ছোট্ট  সংসারে  আদিবা ভালই ছিল । বাচ্চাটা আসলো বিয়ের  বছর সাতেক পর । বাচ্চা  হচ্ছে না তা নিয়ে  মন খারাপ  ছিল সবার । আদিবার বাবার নাতির  মুখ দেখা হয় নি ।  সে  মানুষটি  তাড়াহুড়ো  করে  চলে গেছে তখন অন্য ভুবনে ।  বাচ্চা আসছে এই আনন্দে  আবিষ্ট  ছিল আদিবা আর তার স্বামী । জন্মের পর  বাচ্চা কাঁদে নি প্রথমে । তবে ওর  অবয়ব দেখে  শাশুড়ী, স্বামী  বিতৃষ্ণায় মুখ ফিরিয়ে  নিয়েছিল । বাচ্চাকে  মৃত  ভেবে  বাপ আর দাদী  খুশীই  হয়েছিল । সবাই  মৃত ভাবা সত্ত্বেও  বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিয়েছিল  আদিবা । পাথর  হয়ে বসেই ছিল  সে । স্বামী  কত সাধলো ওকে  বাড়ী যেতে । আদিবা নড়লো না । কথাটা বললো না । এর মাঝে  আচমকা নড়েচড়ে  চিৎকার করে কান্না জুড়লো আদিবার ছেলে । চারপাশে সবাই  অবাক ।  নার্স আর ডাক্তারদের  ছুটাছুটি  শুরু হল  বাচ্চাটাকে  নিয়ে ।  যখন হৈচৈ চলছে  আদিবার বিস্ময়  বাবুকে নিয়ে  তখন দাদী-বাবা  নিষ্ঠুরের  মত  মা-ছেলেকে  ফেলে রেখে  চলে  গেল । আর  ফিরে আসেনি ওরা । পরদিন  আদিবার ভাইয়ের  মিষ্টি বউটা  এসেছিল  বাচ্চা  দেখতে । এসে যখন  দেখলো  বিদঘুটে  বাচ্চা দেখে  স্বামী-শাশুড়ী  নারাজ হয়ে  ওদের  হাসপাতালে  ফেলে  রেখে  চলে গেছে সে ব্যথিত  হল খুব ।  সরলমনা মায়াবতী  আদিবার ভাবীটিই ওদের নিয়ে বাড়ী ফিরলো ।   

তারপর  অনেক কষ্টের  মাঝ  দিয়ে  দিন কেটে গেছে  আদিবা আর অরূপের । আদিবাও  মানুষ ।  মানবিক  অনুভূতি  কামনা বাসনা  তারও  ছিল । পড়শী  এক  তুতোভাই  আদিবার  জন্য  ব্যাকুল হয়েছিল এক  সময়ে । আদিবাও  তার প্রতি  আকর্ষণ বোধ  করছিল  একটু  একটু  করে ।  তবে  একসময়ে  যখন  বুঝলো  ওর  ছেলেকে  ত্যাগ  করতে  হবে  তখনই  তার হুশ  ফিরলো ।

সে  পিছিয়ে আসলো সুখের  হাতছানি থেকে । অনেক  গঞ্জনা অপমান  সহ্য  করেও  আদিবা আর অরূপ বেঁচে  রইলো । আদিবার ভাইও  বোন আর বোনের  ছেলেকে ঘাড় থেকে  নামানোর  জন্য  ওর বিয়ের  ব্যবস্থা  করতে মরিয়া  হয়ে উঠলো ।  মৃতদার  অবস্থাপন্ন  এক  বৃদ্ধলোক  পুত্রসহ  আদিবাকে  বিয়ে  করতে  এগিয়ে  আসলো । বৃদ্ধের কন্যা আর  পুত্রবধুরা  এসেছিল  আদিবার  সঙ্গে  দেখা করতে ও কথা বলতে । তারা সবাই আদিবার চেয়েও বয়সে বড় । অনেক উপহারও  এনেছিল ওরা ।  আদিবার অসহ্য  কষ্টের  জীবন  দেখে  ওরাই  দুঃখীত  হল  বেশী । উপহারসামগ্রী  রেখে  বিয়ের কথা  বাতিল করে  আদিবাকে  মুক্তি  দিয়ে চলে গেল । চারপাশের  সবাই তখন দীর্ঘশ্বাস  ফেলে  ভাবলো অন্তহীন  কষ্টই  বোধহয়  আদিবার অদৃষ্টের লিখন । অদৃশ্য  শক্তি  হেসেছিল কি তখন ?

চৌদ্দ  বছরে  পৌঁছলো  অরূপ । আদিবা এরমাঝে আশপাশের বাড়ীর ছোটছোট  কয়েকটি বাচ্চাকে  হোমওয়ার্কে  সাহায্য  করা শুরু করেছিল  । পড়ন্ত দুপুরে  ভাই  বাড়ী  থাকতো না । ঘরের  বারান্দায়  পাঁচ ছ’টি  শিশুর  সাথে  অরূপও  বসতো । খেলতো  কখনো । কখনো বা অরূপ কাগজ পেন্সিল  পেলে  আঁকিবুকি  আঁকতো ।  ওর পেন্সিল-কাগজ নিয়ে  খেলার  আগ্রহ  দেখে  মামী অর্থাৎ  আদিবার  ভায়ের বউ  খাতা পেন্সিল  কিনে  দিয়েছিল । অরূপ  শান্তশিষ্ট  ছিল । খাতা পেন্সিল পেয়ে  নিয়ম করে  মায়ের  পড়ুয়াদের  পাটিতে বসে  আঁকতে  থাকলো । পেন্সিল  তার বশ মানলো । সুন্দর  করে  পেন্সিল  ধরা  শিখলো । আপন মনে  কিসব  ছবিও  আঁকতে  শুরু  করলো ।

আদিবার ছাত্র  যারা  তাদের  মা-বাবারা  পয়সা কড়ি  দিতো না  বা পয়সা দেওয়ার মত সামর্থ্যও তাদের ছিল না। তবে কেউ কেউ অরূপের  জন্য  জামা টামা  কিনে দিতো  মাঝে মাঝে ।  ঈদের সময়  ওরা  চাঁদা তুলে  মা-ছেলের  জন্য  নতুন  কাপড় জুতা  উপহার দিতো । অরূপের  মামী  প্রতি  শীতে  ওর জন্য  ফ্লানেলের  শার্ট  এনে  দিতো ।  তাতেই ওর  চলতো । অরূপের  তেমন অসুখবিসুখ  করতো না । অতি সাধারন  খাবার খেয়ে, সামান্য  কাপড়চোপড়ে  অরূপ-আদিবার  জীবন  চলে যাচ্ছিল । আদিবা  ভাবতে চাইতো না  তবুও একটা ভয়ংকর  ভাবনা  মনে  হানা  দিতো  মাঝে মাঝে । ভাবনা হতো ভাই বের করে দিলে  কি উপায়  হবে, কোথায় বা  যাবে  ওরা । ভাবলে  আদিবা  অস্থির  হয়ে  পড়তো । ছেলের  পিঠে  মাথায়  হাত বুলাতো  আর  অবিরাম  স্রষ্টাকে স্মরণ  করতো । একটা স্বপ্ন আদিবা  দেখতে  ভালবাসতো  তা হল একদিন  ঝড় আসবে, ভীষণ এক ঝড় ।  তেমন ঝড় যে ঝড় আদিবার মাকে  কোন এক  অজানায়  নিয়ে চলে গেছে ।  সেই ঝড়  তাকে ও অরূপকে উড়িয়ে নিয়ে চলে যাবে ।  কারোর দয়ায়  তাদের বাঁচতে  হবে না , তারা আর কারও  উপর বোঝা হয়ে  থাকবে না ।

আদিবার দূর্ভাগ্য দেখে কেউ দুঃখ করতো । কেউ আবার অপয়া বলে ওদের করুণা করতো ।  তবে একরাতের  তুমুল ঝড়  তার  কষ্টের ললাটলিখন  ধুয়ে মুছে  দিয়ে তাদের যেন  রূপকথার  রাজ্যে পৌঁছে  দিল  ।

মেঘালয়ের সীমান্তে সিলেটের সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের  মাঝে এই স্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্র । এখানে  আসার  পর রঙিন কাগজ  পেন্সিল  দিয়ে  অরূপকে  উৎসাহিত  করা  হচ্ছে  নানা ভাবে। কিছু  একটা  আঁকা  হলেই অরূপ মাকে  এনে  দেখাচ্ছে । অরূপের  অতটুকু  চেষ্টা  দেখেই  আদিবা  আনন্দে  আপন মনে আত্মহারা  ।

পৃথিবী যখন করোনা রোগের দাপটে অসহায় ভাবে কাঁপছে  তখনই  বঙ্গোপসাগরে উঠলো আম্পান নামের ভয়ংকর ঘূর্নিঝড়। আর  সেই ঝড়ের বিস্ময়কর প্রাপ্তি ছিল  অরূপ নামের রূপহীন বালক ।  একদিন ভিনদেশী  চিকিৎসাবিজ্ঞানীর একদল  উপস্থিত  হল  এই  কেন্দ্রে । তারা গবেষণার  জন্য অরূপকে আদিবাসহ  ভিয়েনা  নিয়ে  যেতে এসেছে ।  তাদের চেষ্টা অরূপের রক্তের প্লাজমাকে  অসংখ্য করে  তা দিয়ে করোনা রোগ সারানো। 

এখন অরূপ ও আদিবা আর  কারোর জন্য যন্ত্রণা নয়।  কারোর উপর  তারা বোঝা নয় ।  বোধহয় মানুষের জন্য কল্যাণকর  কিছু  হবে  বলেই, কল্যান বয়ে আনবে বলেই  জন্মেছে  অরূপ নামের রূপহীন ছেলেটি ।


Place your ads here!

Related Articles

নাড়ির টান

স্বভাবসুলভ আড্ডাবাজ বলতে যা বোঝায় মিলি অনেকটা সেরকম। বয়স কতই বা হবে- সাত কিংবা আট। স্কুলের বন্ধুদের সাথেসারাক্ষণ হা হা

দিন যায়, দিন আসে: পর্ব ১

শীতের বিকালে মতি মিঞার চায়ের দোকানে তিন বন্ধুর আড্ডা জমে- সবুজ, লাল্টু আর আকাশ। লাল্টুঃ নসীব, নসীব, মধ্যবিত্তের নসীব। প্রাচ্যের

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment