ভার্চুয়াল চিঠি (পর্ব – আট)
ভালবাসা কোনও কিনে নেওয়া বিষয় নয়, কোনও মূল্যবান সম্পত্তি নয়। একটা বোধ, তাতে আর যাই হোক স্টেপ জাম্প হয় না। জিতে নিতে হয়, ছিনিয়ে নেওয়া যায় না। তাই আমাদের এই ছিনিয়ে নেওয়া জীবনে প্রেম বড় দুর্লভ ।
ভার্চুয়াল প্রেমের আবেগ উদযাপনের ব্যপারটা যেন কিছুটা অবগুণ্ঠিদ্বারে বসন্ত জাগ্রত, শিয়রে প্রেমের মরশুম, কিন্তু এই ফেসবুকি উল্লাসী জীবনের মাঝে প্রেম বড়ই ম্যাড়মেড়ে আবেগহীন হয়ে উঠেছে।
ঘটা করে উদযাপনে রয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়াতেও রয়েছে, কিন্তু জীবনে তার বড্ড অভাব।
না এখানে ঠিক প্রেম বলবো না, বলবো সম্পর্ক, ভালোবাসা। যার উদযাপনের মাত্রাটা পৃথক। যার স্পর্শ-টা তেমন মোটা দাগের নয়। নিভৃতে যে নিজেকে গুছিয়ে রাখে এক মোলায়েম চারাগাছের মতো। তবে তাতে একদিনের, দুদিনের জোর বৃষ্টির দরকার হয় না। দরকার হয় প্রতিদিনের অল্প জলের। কিন্তু এখন মানুষের সেই সময় কোথায়?
একদিন হেদিয়ে ভালোবাসা দেখিয়ে তারপর বছর ভর শুধু অভিযোগ এবং একটু এদিক ওদিক ছুঁক ছুঁক। আহা ওই ছুঁক-ছুঁকানি আজকাল আধুনিকতা। অন্তত এমনটি তাদের ধারণা বইকি। তারপর কথায় কথায় বিবাহবিচ্ছেদ, সম্পর্ক বিচ্ছেদ এবং আরও দ্রুততায় নতুন কোনও ব্লক আনফ্রেন্ড , স্কিনশর্ট , সম্পর্কের সন্ধান।
বিশেষত যেখানে প্রেমটাই এতো সহজলভ্য। বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট আছে যেখানে সহজেই প্রেমে পরা যায়। তাই থেমে চলা মুশকিল। এই চমৎকার মুখ দেখানো সভ্যতায়এক স্বেচ্ছা নির্বাসন নেওয়া নাবিক কজন?
আসলে যে মানুষ একবার বুঝে যায় চমকের অগভীরতা সে খুব ভাবে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চায়, মননে, সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে চায় একটি জগত সুন্দর করে গড়ে তুলতে। এই ক্ষেত্রে একটি বিন্দু থাকা খুব আবশ্যক। সূচনা বিন্দু। একটি লক্ষ্য বা এপিসেন্টার।
সেটা চিরকালই প্রেম। একটি মানুষের ভালোবাসায় বিশ্বাস করা। এবং সেই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে একটি মায়া-জগত গড়ে তোলা। আমাদের মন বারবার এরকম একটি জগত গড়ে তুলতে চায় যেখানে আমরা ভালো থাকি। বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে এই জগত বিভিন্ন প্রকার। কেউ উচ্চ কোনো আদর্শকে কেন্দ্র করে একটা জগত গড়ে তোলেন, কেউ বা একটা রাজনীতি বোধ থেকে।
আসলে যাদের সহজেই নাগাল পাচ্ছি এই মনুষ্য-জীবনে তাদের সঠিক মূল্য দিতে শিখছি না মোটেও । যে রূপজ এবং দেহজ সৌন্দর্যের প্রতি আমরা উন্মত্ত হয়ে ভুল পথে গিয়েছিলাম সেসব মোহ আর নেই আজকাল।
আজকাল মানুষের মনের প্রতি এক তীব্র লোভ। কিন্তু মানুষের মনের প্রতি তীব্র লোভ থাকলে যে নিজের মনটিকেও গুছিয়ে নিতে হয়, সাজিয়ে নিতে হয়। দুটি মন নানাভাবে কাছে আসতে পারে। দৈহিক সৌন্দর্য একটি বড় বিষয়।মানসিক এবং দৈহিক। পূর্বরাগের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত দরকারি। মানুষের গুণ দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে একে অপরের কাছে আসে মানুষ।কোনও একটি দর্শন, একটি চমৎকার বোধ, অথবা অস্তিত্ব চেতনা দুটো মানুষকে সহজেই কাছে আনতে পারে।
রূপের তুলনায় এই গুনের টান পাওয়া মানুষগুলো একটু অন্য গোত্রের হয়। তাদের মধ্যে এক শিল্প-চেতনা এমন ভাবে বিরাজ করে যাতে করে জীবনের অনেক গভীর স্তরে তাদের বসবাস।
যে রূপ তারা দেখতে পায় তা সকলে দেখতে পায় না। শরীরে নৈকট্য আসে। মানসিক প্রেম শরীরকে গ্রহণ করে অধিকারের ভীত আরও একটু মজবুত করতে চায়। এই কাছে আসায় এক অদ্ভুত আনন্দ, অন্তত এই নীল গ্রহে একটি প্রাণ ওপর প্রাণকে অধিকারে বাঁধতে চাইছে এই বোধ বাঁধতেও আছে, বাঁধা পড়াতেও আছে।
। চিঠি নেই, অপেক্ষা নেই, চিরকুট নেই, চোখে চোখে কথা বলা নেই, একটা আলতো ছোঁয়ায় বুঝিয়ে দেওয়া নেই, কেবল আছে চিৎকার, উল্লাস, প্রেমের প্রকাশ্য-স্থূল উদযাপন এবং নিয়মিত কদর্য যৌনতা। তাতে শিল্প নেই, দুটো শরীরের মিলন নেই।
প্রেম বিবাহে পরিণত হয়, প্রেম অভ্যাসে পরিণত হয়, একে অপরের ছোট ছোট চেষ্টা, আদতে একটি মানুষকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকাই শ্রেষ্ঠ আধুনিকতা, অন্তত থাকার জন্য লড়াইটা। বয়স, সময় নির্বিশেষে প্রতিদিন দুটো মানুষের একে অপরের জন্য আপাত নিরীহ কিন্তু প্রচণ্ড দামী চেষ্টাগুলো, বিশ্বাসগুলোই বাঁচিয়ে রাখতে পারে ভালোবাসা, সম্পর্ক।
এই অবিশ্বাসী সময়ের বুকে, প্রচণ্ড গতিশীল জীবনের গতিশীল সম্পর্ক এবং ব্রেক-আপে তাই বিশ্বাস- একটা আলো আধারি গলি ধরে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া, একটা স্নান ভেজা শরীরে জড়ানো আঁচলের গন্ধে লেখা- ভালবাসি। ভালোবাসা গভীর নদীর নিঃশব্দে বয়ে চলা। ভালোবাসা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শ্রেষ্ঠ বিশ্বাস, একটা নরম বুকের আশ্রয়। কে না চায় !
বন্ধুরা কেউ যদি বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে .. তাতে মন ভাঙ্গে না শুধু ,প্রেম ভাঙ্গে না শুধু , সম্পর্ক ভাঙ্গে না শুধু , ইবাদত নামা নষ্ট হয়ে যায় ।
চলুন তবে পড়ে ফেলি ৮ম পর্ব ভার্চুয়াল চিঠির ।
ভূমিকায় যা লিখলাম এই বিষয় নিয়ে একজন সাইকাটিষ্টের লেখা পড়েছিলাম , অনেক লাইন নিজের মতো করে বলে দিয়েছি , কথা গুলো তো আমাদের আজকের কথা সমসাময়িক সমস্যার কথা …যত দিন যাবে ততই আমরা মুখামুখি হবো হচ্ছি ।
বন্ধুরা সব ফেরার মাদকতা উচ্ছ্বাস কি এক , কতটুকু আবেগ ক্ষয় করে মানুষ ঠিক আগের জায়গাটাতে বসতে পারে , চলুন পড়ে ফেলি
ভার্চুয়াল চিঠি- ৮ম পর্ব
?
স্নিগ্ধতমা,
ভার্চুয়াল প্রেম নিয়ে ভাবছিলাম। রিয়েল প্রেমের তো পরিণতি থাকে। হয় সে মিলনে বিলীন হবে, দ্রবীভূত হবে, না হয় বিরহের যাতনাযাপনে দগ্ধ হবে, হয়তো তার বিরহী “পরানে আমার পথহারা” গানের পথিক ঘুরে মরবে।
কিন্তু ভার্চুয়াল প্রেম কী পরিণতি পাবে?
পৌঁছুবে কি সে কোনো গন্তব্যে? না, পৌঁছুবে না।
তার ঈপ্সার মানব জমিনে সে পাবে না ঠাঁই! তোমার বুকের জায়নামাজে পড়বে না তার সিজদা।
চুমুকে চুমুকে সে করবে না পান সুবেহ সাদিকের মতো তোমার বুকের আলো। দেখতে পাবে না সে একটি ঈষৎ নীল আলো তোমার পাঁজরের ফাঁকে ঝরছে।
যে আলোর জন্য প্রেমার্ত প্রেমিকের হাত এতোটা ব্যাকুল হয়ে স্পর্শের সান্নিধ্য যাঞ্চা করে — ‘গোডো’র মতো প্রতীক্ষার প্রহর গোনে।
ভার্চুয়াল প্রেমের পরিণতি কি তবে চিরকাল ত্রিশঙ্কুর ঝুলে থাকার মতো?
ভার্চুয়াল প্রেম কি তবে গ্রীক তান্তালসের মীথ? নাকের ডগায় ঝুলে থাকবে টসটসে ফল। পাবে না কামড়ের সান্নিধ্য। জল কল্লোলে দাঁড়িয়ে থাকবে চিরকাল প্রবল পিপাসায় যতোবার চুমুক চাইবে সরে যাবে জল পাতালে। ভার্চুয়াল প্রেমের নায়ক জানি পড়ে থাকবে অভিসারের পুকুরে জলবন্দী, ত্রিশঙ্কুর আকাশে ঝুলন্ত দিন।
নিজেকে বলেছি, বোকা তান্তালস! উঠে যা ডাঙ্গায়! প্রেমের প্রার্থনায় স্থির আর ঝুলন্ত জীবনের চেয়ে প্রেমহীন গতিময় জীবন ঢের ভালো।
আমি তাই ভার্চুয়াল প্রেমের বিমূর্ত শিকল ছিড়ে চলে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম ফিরব না নারী — ফিরব না আকাশে তোমার স্পর্শহীন আহাজারি!
তোমাকে ছেড়ে গিয়ে তোমাকে কাঁদিয়েছিলাম কিনা জানিনা। তবে আমার সারাদিনমান হু হু করে কেটেছিল। শরতের নিসর্গে ম্যাপেল, মাহগিনি, ওক, বার্চ গাছের পাতায় ঘুরলাম ঝরা পাতার ঋতু ‘ফল’ মর্মরে।
পাতায় পাতায় নেমেছে ফলিয়েজ, রঙিন পাতার নাচ। ঝরছে পাতার পর্ণরাজি। ফলিয়েজ আর্টওয়ার্ক, ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিংস ছড়িয়ে আছে উত্তরের গাছে গাছে।
মন আরো হু হু করে গেল। বার্ড সং লেনে বিকেল নামলো, সেখানে ফিরল না একটিও পাখি নিস্পত্র ডালে। কোথায় হারালো পাখিরা তবে! ওরা কি পথহারা পাখি? হারিয়েছে পথ কালো মেঘের আকাশে?
না, পাখিরা হারায়নি পথ।পাখিদের ডানা উড়েছে উষ্ণতার দিকে, অভয়ারণ্যের শাখায়। আমিও পাখির মতো খুঁজলাম উষ্ণতার বুক। আমার হৃদয়ের জিপিএস আমাকে পৌছে দিল আমার ঈপ্সিত গন্তব্যে।
যে বুক চেয়েছি চিরকাল সেই বুকের উষ্ণতায় মুখ ডুবিয়ে যে ঘ্রাণে মাতাল হলো আমার হৃদয়, সন্ধ্যার আন্ধারে তা খুব চেনা লাগল। বুকের ঘ্রাণ স্মৃতিতে স্তরীভূত থাকে, তা সে ফিজিক্যাল হোক আর ভার্চ্যুয়াল হোক।
লহমায় চিনতে পারলাম এ ঘ্রাণ তোমার বুকের ঘ্রাণ। তোমার বুক তবে কি আমার চির আরাধ্য গন্তব্য? লেখা ছিল কি জন্ম জন্মান্তরে!
তুমি পরেছিলে ঘন নীল একটি শাড়ি।
তোমাকে সঘন নীল শাড়িতে দেখে মনে হলো আঁচলে ও জমিনে বাজিছে ব্লু-নোট জাজ —
বাজিছে স্যাক্সোফোন, পিয়ানো, ট্রম্বোন, ট্রাম্পেট, ক্লারিনেট।
আঁচলে ঝরিছে নীলাম্বরী রাগ
ঝরিছে নীল আকাশ, নীল সাগর।
নীল টেনে নেয় সীমাহীন স্বাধীনতায়।
টেনে নিয়ে যায় ভালোবাসার ইনফিনিট যাত্রায়।
তোমার নীল অঙ্গের জাজ ও নীলাম্বরী রাগে একটি কবিতার জন্ম হবে এই দেহে।
কবিতাটি জড়িয়ে নিও তোমার নীল শাড়ির ভাজে, দেহকাব্যের বাঁকে।
প্রিয়তমা লিগপা, তোমাকে শূণ্যতায় ভালোবেসেছি। ভার্চুয়াল ভালোবাসায় তোমাকে ওন করতে চেয়েছিলাম। বাঙালি পুরুষ না আমরা! নারীপ্রেম পেলে সেটার একচ্ছত্র মালিকানাও পেতে চাই তীব্র।
বলতে পারো মেল-শভ্যিনিজম।
আমরা তো বেড়ে উঠেছি নারীকে জ্বালিয়ে। মাকে সারা জীবন জ্বালিয়েছি। বোনদের উপর খবরদারী করেছি। প্রেমিকা যতোদিন অধরা, ভিখিরির মতো প্রেম মাঙি, যাঞ্চা করি, মাগন করি। প্রেমিকার হৃদয় পেয়ে গেলে আমরা প্রেমিকার সমর্পণের মালিকানাও পেতে চাই।
আমাদের মধ্যে ব্যক্তি মালিকানার বোধ জেগে ওঠে। আমিতো চেস্টা করি আদিমশ্রেণিহীন সাম্যবাদী সমাজের মতো ব্যক্তিমালিকানার বোধবিবর্জিত হতে।
তোমাকে একটা অবাধ, আকাশচারী স্বাধীন পাখির মতো ভাবতে চাই। সেই পাখিটাকে ভালোবাসতে চাই। হয়তো পারবো। হাজার বছরের মেল-শভ্যিনিজমের বোধ আমাদের ডিএনএ প্রোফাইলে লেখা আছে।
জিনিওলজির মধ্যে এমবেডেড হয়ে আছে। খোদিত কোডিং তাকে খেদাই কি করে! একটু আরো সময় দাও, মানিক!
তোমাকে পেয়েছি সাড়ে তিনহাত সাইজের পীজন-ব্লাড কালারের রুবী রত্ন পেয়েছি, তাকে হারিয়ে ফেললাম বুঝি — এই ভয়ে এমন আচরণ করেছি। চলে গিয়েছিলাম। ফিরে এসেছি।
মেনে নিও আমার প্রেমিক হৃদয়ের এই হাজার বছরের অসহায়তা টুকু। মনে নেই ওথেলোর ট্রাজিক প্রেমের কথা! ঈর্ষার গমকে কেমন করে ডেসডিমোনার রক্তে ভাসিয়েছিল ভালোবাসার শয্যা!
এসো, আমরা একটা সেন্ট্রিস্ট বোঝাপড়ার দাগ কেঁটে সেখানে দুজন দুজনকে জড়িয়ে থাকি।
হোক না পরিণতিহীন, গতিহীন ভার্চ্যুয়াল প্রেমের বৃন্দাবন। বলো, ও বনমালী, নে আমারে, আমি তোর রাই।
তোমাতে হারাই!
Najmin Mortuza
দার্শনিক বোধ তাড়িত সময় সচেতন নিষ্ঠাবান কবি। চলমান বাস্তবতাকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের পরম্পরায় জারিত করে তিনি কাব্য রূপান্তরে অভ্যস্ত। কাব্য রচনার পাশাপাশি ক্ষেত্রসমীক্ষাধর্মী মৌলিক গবেষণা ও কথাসাহিত্য সাধনায় তাঁর নিবেদন উল্লেখ করার মতো। গবেষণাকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্যঃ জারিগানের আসরে "বিষাদ-সিন্ধু" আত্তীকরণ ও পরিবেশন পদ্ধতি শীর্ষক গ্রন্থের জন্য সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১২ অর্জন করেছেন।
Related Articles
My Feelings on Prime Minister Kevin Rudd’s Apology to Australia’s Stolen Generations
Today, the 13th of February 2008, is National Reconciliation Day. This is truly a historic day for Australia. The Prime
Pitha Mela on 23 August at Chandler
Dear Community Members We are welcoming all of you to attend a Massive Festival of the Year the Pitha Mela,
ইয়াসুনারি কাওয়াবাতার গল্প: পাখি – অনুবাদ : ফজল হাসান
দিনের শুরু থেকেই পাখিটা কর্কশ স্বরে চিৎকার করছিল। সাত-সকালে বাড়ির লোকেরা যখন দরজা খোলে, তখন নজরে আসার আগেই পাখিটা ফুড়–ৎ