বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আগমনী অস্ট্রেলিয়ার দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আগমনী অস্ট্রেলিয়ার দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত

আগমনী অস্ট্রেলিয়া ইনক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সম্পূর্ণ ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যে বছর ব্যাপী সফলভাবে দুর্গা পূজা, কালী পূজা স্বরসতী পূজা আয়োজন করে আসছে সেই ২০১৭ সাল থেকে। তাঁদের আয়োজনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে সম্পূর্ণরূপে বাঙালি পঞ্জিকা ও লগ্ন অনুসরণ করে এই পূজা পালন করা হয়। অস্ট্রেলিয়াতে আরো বেশ কয়েক জায়গায় পূজা উৎসব পালিত হয় সাধারণত সপ্তাহান্তের সাথে মিল রেখে যাতে করে সবাই যোগদান করতে পারে কিন্তু আগমনী অস্ট্রেলিয়াই সর্বপ্রথম পাঁচ দিন ব্যাপী পূজা আয়োজনের চল শুরু করে।

আগমনী অস্ট্রেলিয়ার দুর্গা প্রতিমা

এ বছরও তারা শারদীয়া দুর্গা পূজার আয়োজন করেছিলো গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলে ৪ঠা অক্টোবর থেকে শুরু করে ৮ই অক্টোবর ২০১৯ পর্যন্ত। প্রতিদিন লগ্ন অনুসরণ করে পূজা আরতি এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি পালন করা হয়। প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থীর ভিড় দেখা গেছে তাদের পূজা মণ্ডপে। আর তাদের আপ্যায়ন থেকে শুরু করে বিনোদিত করার ব্যাপারে আয়োজকদের ছিলো কড়া নজরদারি। আর দিনশেষে সবার জন্যই ছিলো রাতের খাবারের ব্যবস্থা। আসুন একে একে জেনে নিই তাঁদের পাঁচ দিন ব্যাপী পূজার কর্মসূচি। আর পূজা উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও তারা প্রকাশ করেছিলো স্মরণিকা অঞ্জলী।

আগমনী অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ সজ্জা

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রথম দিন মহাষষ্ঠী ছিলো ৪ই অক্টোবর। এদিন উলুধ্বনি আর ঘণ্টার শব্দ এবং অঞ্জলি দেওয়ার মধ্য দিয়ে মহাষষ্ঠীর আনুষ্ঠানিকতায় শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। মন্ত্রপাঠ ও আরাধনায় আমন্ত্রণ জানানো হয় দুর্গা মাকে। শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমন উল্লেখ করে ষষ্ঠীর প্রতিপাদ্য তুলে ধরেন মন্দিরের পুরোহিতরা। তাই আগমনী অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে সবাইকে ষষ্ঠী পুজার নিমন্ত্রণ জানানো হয়।

আগত দর্শকদের একাংশ

৫ই ছিলো অক্টোবর ছিলো মহা সপ্তমী। অশুভ শক্তিকে শোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মহা সপ্তমী। শুরুতেই দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ। ঈশ্বর সব কিছুর মাঝে রয়েছেন। প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্য নয়টি গাছের ফুল, ফল, পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধন করে শুদ্ধ করে মাকে পূজা করা হবে। বিধান অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে বিহিত পূজা। মহাসপ্তমীতে ষোড়শাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা হয়। উৎসবের এই দিন সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। সকালে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে ভক্তরা অর্চণা করেন। একশো আট প্রকার দ্রব্য ও নব পত্রিকা স্নানান্তে দেবীকে আসনে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। স্থাপন ও সপ্তাদি কল্পারম্ভ, দেবীর পায়ে ভক্তদের অঞ্জলি প্রদানসহ নানা আয়োজনে মহাসপ্তমী পূজা উদযাপিত হয়। এদিন সকাল দশটা থেকে রাত্রি দশটা পর্যন্ত তাই আগমনী অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে থেকে সবাইকে পুজোতে আসার নিমন্ত্রণ জানানো হয়।

চলছে দেবী দুর্গার আরতি

সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সর্বাথসাধিকে |
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোস্তু তে ||
ছিলো ৬ই অক্টোবর মহা অষ্টমী। উত্‍সবের আলোকে আলোকিত হোক আমাদের আনন্দ উত্‍সব। আপনাদের জানাই শুভ মহা অষ্টমীর প্রীতি শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন। ভোরের শিউলি ফুল দিয়ে মায়ের পায়ে পুস্পাঞ্জলি দেওয়ার দিন আজ। আগমনী অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে থেকে সবাইকে পুজোর নিমন্ত্রণ জানানো হয়।

চলছে দেবী দুর্গার আরতি

শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী ছিলো ৭ই অক্টোবর। রামায়ণ যুগের অবতার রামচন্দ্র লংকা অধিপতি রাবণ বধের পর নবমী তিথিতে এক`শ আটটি নীল পদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। ধর্মের গ্লানি ও অধর্ম রোধ, সাধুদের রক্ষা, অসুর বধ এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতি বছর দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা ভক্তদের মধ্যে আবির্ভূত হন। তাই আগমনী অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে থেকে সবাইকে পুজোতে আসার নিমন্ত্রণ জানানো হয়।

চলছে মায়ের সাথে ছবি তোলা

৮ই অক্টোবর ছিলো বিজয়া দশমী। বাঙালি হিন্দুদের বৃহত্তম শারদীয় ধর্মীয় উৎসবের সমাপনী দিবস। শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে দেবী দুর্গার আবাহন হয়েছিল। সেদিন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটে। দেবী দুর্গা অশুভের বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক। এ বিজয় অর্জিত হয় আদ্যাশক্তি মহামায়ার সক্রিয় ভূমিকায়।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ফাঁকে আগমনীর সদস্যাবৃন্দ

এভাবে পাঁচদিন ব্যাপী অনেক উৎসাহ এবং উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে আগমনীর শারদীয়া দুর্গা পূজা উৎসব শেষ হয়। “আসছে বছর আবার হবে” স্লোগানে একসময় থামে ঢাক আর কাঁসরের বাদ্য। আমন্ত্রিত সকলে প্রাণভরে তাঁদের প্রত্যেকটা আয়োজন উপভোগ করেছেন। আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা সবাই আসছে বছর আগমনীর কাছ থেকে আবারও এমন আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একটা কথা না বললেই নয় সেটা হলো আগমনীর এইবারের পূজার আকর্ষণ ছিলো পূজার মঞ্চ। আলোকিত আলোক সজ্জায় বড় পরিসরে মঞ্চটাকে সাজানো হয়েছিলো যা ছিলো আসলেই দৃষ্টি নন্দন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ফাঁকে আগমনীর সদস্যবৃন্দ
চলছে রসাদ বিতরণের প্রস্তুতি
সিঁদুর খেলার ফাঁকে
আগমনীর স্মরণিকা “অঞ্জলী”
একই ফ্রেমে আগমনীর সকল সদস্য / সদস্যাবৃন্দ
Md Yaqub Ali

Md Yaqub Ali

আমি মোঃ ইয়াকুব আলী। দাদি নামটা রেখেছিলেন। দাদির প্রজ্ঞা দেখে আমি মুগ্ধ। উনি ঠিকই বুঝেছিলেন যে, এই ছেলে বড় হয়ে বেকুবি করবে তাই এমন নাম রেখেছিলেন হয়তোবা। যাইহোক, আমি একজন ডিগ্রিধারী রাজমিস্ত্রি। উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে অস্ট্রেলিয়াতে আমার আগমন ২০১৫ সালের মার্চে। আগে থেকেই ফেসবুকে আঁকিবুকি করতাম। ব্যক্তিজীবনে আমি দুইটা জীবের জনক। একটা হচ্ছে পাখি প্রকৃতির, নাম তার টুনটুনি, বয়স আট বছর। আর একজন হচ্ছে বিচ্ছু শ্রেণীর, নাম হচ্ছে কুদ্দুস, বয়স দুই বছর। গিন্নী ডিগ্রিধারী কবিরাজ। এই নিয়ে আমাদের সংসার। আমি বলি টম এন্ড জেরির সংসার যেখানে একজন মাত্র টম (আমার গিন্নী) আর তিনজন আছে জেরি।


Place your ads here!

Related Articles

Friend of Bangladesh Dr Geoffrey Davis passes away

Dr Geoffrey Davis, friends of Bangladesh and a great Savior of thousands of Bengali women raped by the Pakistani Army

মুজিব হত্যার সঙ্গে জিয়া জড়িত থাকাও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া বিএনপি, ছাত্রদল, জিয়া পরিষদ

এম.মোরশেদ,অস্ট্রেলিয়া থেকে: বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও শেখ মুজিব হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে জড়িত করে ৩৪

Message of High Commissioner on the Occasion of Eid-ul-Azha

On the auspicious occasion of Eid-ul-Azha, my wife and l convey our heartfelt felicitation and warm greetings to our nationals

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment