বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড: ওভাল, লন্ডন

বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড: ওভাল, লন্ডন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জিততে শিখেছে, একদিনের ম্যাচে ৩০০ র বেশি রানও করছে, ভালো খেলছেও, তবে সমস্যা কোথায়? ইংরেজিতে একটা কথা আছে, Cricket।s something more than a game. এই something more টা বাংলাদেশ ক্রিকেটের এখনো শেখা হয়ে উঠছেনা- এমনটাই মনে হচ্ছে, তাই হেরে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন এনালিস্ট আছে জানি, তা উনার কাজটা কি? নিজেদের অবস্থা, প্রতিপক্ষের অবস্থা, মাঠের কন্ডিশন, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্ল্যান-এ, প্ল্যান-বি, বা একটা কন্টিনজেন্সি প্ল্যান রাখে। পানির বোতল বা তোয়ালে নিয়ে দ্বাদশ ব্যক্তি বা ফিজিওর মাধ্যমে খেলোয়াড়দের প্লানের কথা মনে করিয়ে দেয়া খুব পুরানো ব্যাপার। আবার অবস্থা বুঝে বুদ্ধিমান প্লেয়ার নিজের খেলার ধরণ দলের এবং সময়ের প্রয়োজনে বদল করে নিজের game reading power ব্যবহার করে। ১৯৮৬ সালের দিকে ঢাকা মোহামেডান ইরান বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক গোলরক্ষক নাসের হেজাযীকে কোচ হিসেবে এনেছিল। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কায়সার হামিদের প্রশংসা করে বলেছিলেন যে কায়সারের গেম রিডিং পাওয়ার অসাধারণ ; খেলা শুরুর ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় এবং পুরো খেলাকে বুঝে নিয়ে নিজের রক্ষণভাগকে সাজিয়ে গোলরক্ষককেও টিপস দিয়ে দিতো। আমাদের প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের তো অবসরে যাবার সময় হচ্ছে, তারপরেও এতদিনে এদের গেম রিডিং পাওয়ার গ্রো করলো না! Something more টাও এদের মধ্যে দেখতে পাই না। এই সক্ষমতা অর্জন করতে না পারলে চারশো রান করেও হারতে হবে। মাঝে হয়তো দুই চারটা ম্যাচ জিতে যাবে, ক্রিকেট খেলে যাবে, কিন্তু game টা শেখা হবে না।

খেলার ধারা অনুযায়ী গতকাল বাংলাদেশ দলের রান হওয়া উচিত ছিল ৩২৫ থেকে ৩৫০। ইতিহাস বলে লন্ডন শহরের ওভাল মাঠে প্রথমে সামান্য আর্দ্রতা থাকে, ৫-১০ ওভারের মধ্যেই আর কোন আর্দ্রতা থাকে না, খটখটা লালমাটি; তেমন সুইং থাকে না, থাকে শুধু বাউন্স। স্পিনার ২৭০ ডিগ্রী কব্জি উল্টে বোলিং করলেও লাভ নেই। তামিমকে সবাই সাবাসি দিচ্ছেন দেন কিন্তু তার ঐরকম পাগল হবার কি দরকার ছিল? কোনো ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করার পর যদি মনে করে যে তার দায়িত্ব শেষ তাহলে বলার কিছু নেই। শেষ দশ ওভারে যেখানে রান উঠে ৮০ থেকে ৯০, সেখানে বাংলাদেশ মাত্র করেছে ৫৪ রান। তামিম এবং মুশফিক থাকলে ওই রান উঠে আসতো- খেলার ধারা তাই বলেছে। তামিমের ব্যাট বদল কি খুব দরকার ছিল? ক্লান্ত শরীরে ভারী ব্যাট নেয়া কি খুব বুদ্ধিমানের কাজ? পেস বোলিংইতো চলছিল, তা ভারী ব্যাটের দরকার কি পড়লো? নতুন ব্যাট হাতে নিয়ে অন্তত একটা বল দেখে খেলা উচিত ছিল, তা না করে পরের বলটাই পুল করতে গিয়ে টপ এজে লাগিয়ে একটা সহজ ক্যাচ দিলো। এইটা একটা হাসির খোরাক হলো না! যে কোনো কিছুতেই over confidence খারাপ, আর ক্রিকেটে আরো বেশি খারাপ। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রিকি পন্টিং ওল্ড ট্রাফোর্ডে ১৫৮ রান করে আউট হয়ে ফিরে আসার সময় দর্শকদের অভিনন্দনের কোনো জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে ছিল। রিকি পন্টিং খুবই অনুতপ্ত ছিল কারণ ম্যাচটা জিতার জন্য সেট হওয়া রিকি পন্টিংয়ের ক্রিজে আরো অনেকক্ষণ থাকার দরকার ছিল। পরের বলেই মুশফিক আউট হলো। দুই ভায়রা ভাইকে আমার প্রায়ই ইডিয়ট মনে হয়। মুশফিকের মতো এতো পুরানো ব্যাটসম্যানের কি একবার ভাবা উচিত ছিল না যে নতুন ব্যাটসম্যানের সাথে তার টিকে থাকে দরকার? সাকিব ইদানিং unpredictable. ওর বিকল্প খুঁজতে হবে। পরের ব্যাটসম্যানদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। দলে তাসকিন ছিল না কেন?

অনেকদিন পর ইংল্যান্ড একটা ব্যালান্সড দল গড়েছে… সবাই কম বেশি ব্যাট করতে পারে, বোলিংও। বাংলাদেশ ৩০০ করে মনে হয় একটু আত্ব তুষ্টিতে ভুগছিল। মাশরাফি কি ক্লান্ত? ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুস্তাফিজকে বোলিংয়ে আনার পরেও মাশরাফি ফিল্ডিংয়ে কোনো পরিবর্তন আনে নাই, কেন? তাই ব্যাটসম্যানরা নির্ধিধায় খেলে গেছে। ইংল্যান্ড দলনায়ক মর্গ্যানের clean hitting ছিল ঈর্ষা জাগানিয়া। সাকিবের ওয়াইড এবং শর্ট ডেলিভারি খুব পীড়াদায়ক ছিল। আসলে পীচে কিছুই ছিল না। ব্যাটসম্যান আউট হয়েছে নিজের দোষে। মাশরাফির বোলারদের ডট বল করার কোনো চিন্তা বা টেকনিক চোখে পড়েছে কি?

গতকাল বাংলাদেশ ৩০০ র বেশি রান করেছে তামিম এবং মুশফিকের সৌজন্যে। হেরেছেও এই দুইজনের গোয়ার্তুমির জন্য।



Place your ads here!

Related Articles

রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ একক এবং একা

আওয়ামীলীগের বর্তমান অবস্থা দেখে একটা গানই ঘুরে ফিরে মনে আসছে, “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল

শ্রোতা-দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করলেন সাবিনা ইয়াসমিন

বিএমএস-এর বার্ষিক নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শ্রোতা-দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করলেন সাবিনা ইয়াসমিন হারানো দিনের বাংলা চলচ্চিত্রের গান গেয়ে শ্রোতা-দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করলেন

Successful Delivery of Bangladesh eGovernment Strategy by Australian National University

Several events in Dhaka, Bangladesh marked the delivery of major project outputs to develop e-government capacity in Bangladesh government being

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment