জিন্দাবাদ, পাকি পতাকা এবং আমাদের প্রতিরোধ

জিন্দাবাদ, পাকি পতাকা এবং আমাদের প্রতিরোধ

সরল স্বীকার উক্তি করছি। আমার সামনে কোন বাংলাদেশী পাকিস্হান জিন্দাবাদ বলে, পাকিস্হানী পতাকা নিয়ে লাফালাফি করলে – আমার মাথা ঠিক থাকবে না। চড় থাপ্পর দিয়ে বসতে পারি। চরম পিটানিও দিতে পারি – অপ্রকৃতিস্থ করে ফেললে। তার মানে এমন নয় যে আমি একটা মহান কাজ করে ফেলেছি অথবা কাজটা ঠিক করেছি। এটা কিছুতেই সমাধান হতে পারে না।

কিছু বিষয়, কিছু প্রশ্ন নিয়ে ভাবছি, যেমন:

১. একজন বাংলাদেশীর হাতে পাকিস্হানী পতাকা এলো কেন? যার এই দেশেই জন্ম বেড়ে ওঠা।
২. পাকিস্হান জিন্দাবাদ বলবে কেন? এই শব্দ গুলো তো এই দেশে তার পরিচিত হবার কথা নয়।
৩. এমন মন মানষিকতার পেছনের কারন কি? সমাজ ব্যবস্হা, কাদের সাথে তার উঠা বসা করে সে।
৪. পারিবারিক ইতিহাস কি এর সাথে জড়িত? তার পরিবারে কি রাজাকার, আলবদর, আল-সামস বা ঐ ঘরনার কেউ আছে কি?
৫. সে কি সব বিষয়েই স্রোতের বিপরিতে? এটা একটা মানষিক অবস্হা; গুরত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।
৬. “জয় বাংলা” তে তার সমস্যাটা কোথায়? যে দেশে জন্ম বড় হওয়া, সে কি সেই দেশের জন্ম ইতিহাস জানে? বিদ্যালয় গুলো কি তাদের দ্বায়িত্ব পালন করছে?
৭. বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্বের বিষয়ে – তার নানা ভুল ব্যাখ্যার মূল সু্ত্র কি? তাকে এ বিষয়ে কারা সহায়তা করছে?
৮. কোন রাজনৈতিক দলের প্রভাব কি তার উপর পড়ছে? যারা বাংলাদেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক পার্টি – তারা কি ভাবে স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলে? রাষ্ট্র কি করছে এগুলোর জন্যে? আমরা কি করছি?
৯. একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক কেন বেড়ে উঠবে – নিজ জাতি, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সভ্যতার বিপরিতে? আমরা – যারা নিতি নির্ধারকরা – কে কি করছি?
১০. স্বাধীনতার ইতিহাস না জেনে কেনো একজন বাংলাদেশী বলবে? – মুসলমান, আমাদের ভাই; আমাদের সাপোর্ট করা উচিৎ। খেলা নিয়ে রাজনীতি করা উচিৎ নয়। কিন্তু পতাকা, জিন্দাবাদ তো রাজনীতিরই অংশ। এই প্রজন্মকে ইতিহাস জানানোর দ্বায়িত্ব কার?

জয় বাংলা পছন্দ করে না আবার জিন্দাবাদও পছন্দ করে না; এমন বেশ কয়েকজন কে আমি বিভিন্ন সময়ে পেয়েছি। যাদের মধ্যে অনেক সংখ্যালঘুও আছে। লাগামহীন আঁতেল টাইপের হ্ওয়াতে বেশি দুর এগুতে পারিনি ওদের সাথে। ওদের চিন্তার গভীরতা এতই গভীর যে – ডুবে যাবার ভয় করি। অতটা লেখা পড়া আমার নেই যে – সারা পৃথিবীর ইতিহাস এক খানে নিয়ে এসে বিচার, তুলনা করবো। ওরা অন্যদের চিন্তা ভাবনাকে থোরাই কেয়ার করে। অন্যদের ভাবনা গুলো “রাবিশ”, নিন্ম মানের – বলতেও পিছপা হয় না।

পরিস্থিতি পরিবেশের জীবন্ত বলি যারা, তাদেরকে শাস্তি না দিয়ে – আমরা কি পরিস্থিতি পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি না? আমরা কি পারি না, একসাথে কাজ করে এই জন্জাল চিন্তা চেতনাকে বিনাশ করে দিতে? আমরা কি পারি না – মৌ-দুধেদের জন্ম ঠেকাতে? অথবা যাহারা তাহাদের জন্ম দেয় – তাহাদের বন্ধা করে দিতে?

হাজারো প্রশ্ন মনে আসে। কিছু কিছুর উ্ত্তর আছে – কিছু কিছুর নেই – আমার কাছে। ভাবি, অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছি – আমরা – আমাদের জাতীয় বীর’রা। এ ব‌্যাপার গুলোয় খুব একটা ঝটিল নয়, সমাধানের জন‌্যে। এর চেয়েও ঢের বড় বড় সমস্যা – সমাধান করেছি – করেছে বাঙালিরা। এর চেয়েও বড় বড় শকুন আমরা বিলুপ্ত করেছি এ দেশ থেকে। তা খুব একটা বেশি দিন আগের কথা নয়।

শেষ কথা, জিন্দাবাদ বা পাকি পতাকা হাতে কাউকে দেখলে কতদিন নীতিকথা আওড়াতে পারবো সেটাই দেখার, বোঝায় বিষয়। আমার তা জানা নেই।  মাথা খারাপ হলে কারোরই হিতাহীত জ্ঞান থাকে না।  সহনশীলতা, মানবতা, মানবিকতার নামে দুষ্ট লোকের মাথা বাঁচাবার কোন উপায় আছে এই বঙ্গ দেশে এমন মনে হয় না।

 

Shahadat Manik

Shahadat Manik

Writer, poet, lyricist and social activist.



Place your ads here!

Related Articles

Deshattobodh

দেশাত্ববোধঃ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোন পথে আলমামুন আশরাফী রাজনীতিবিদদের গালমন্দ করা সমাজের এখন একটা অংশ হয়ে গেছে যারা যুগের পর যুগ

শেখ হাসিনাকে আমার কৃতজ্ঞতা

আমি যখন পায়ে হেঁটে বাংলাদেশ ভ্রমনের সময় রাজাকারের তালিকা সংগ্রহ করতাম তখন অনেকে অবাক হয়ে আমাকে দেখতো। কারন পর্যটকরা সাধারনত

নারীর ক্ষমতায়ন এবং একজন নিরুপমার কথা

গত কয়েকদিন থেকে নীরুপমার জন্য মনটা বিষন্ন হয়ে আছে। আমার শুধু নীরুপমার মা এর কান্নাভেজা ভিডিও চ্যাটের ছবিটি চোখে ভাসছে।

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment