চৈতালী ত্রিপুরা এখন অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে

চৈতালী ত্রিপুরা এখন অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে

Pallab Rangei: অনেকটা নীরবে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন আমাদের সুহৃদ সহযোদ্ধা চৈতালী ত্রিপুরা। স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য স্বপরিবারে পাড়ি জমালেন অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে। চৈতালীকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। দেশে সে স্বনামে পরিচিত ছিল। এক সময়ে হিল উইমেনস ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সভানেত্রী ছিলেন। ছিলেন রাজপথের লড়াকু সৈনিক। পাহাড় এবং সমতলের আদিবাসীদের রাজনৈতিক অধিকারের জন্য সোচ্চার ছিলেন সবসময়। আদিবাসী নারী আন্দোলনে নিভু নিভু নেতৃত্বের মধ্যেও জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের দায়িত্ব নিয়ে। একই সাথে কাপেং ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপার্সন হিসেবে এদেশের আদিবাসীদের মানবাধিকারের আন্দোলনেও ছিলেন সম্মুখ সারিতে। তাই দেশ ছেড়ে তার এই চলে যাওয়া আদিবাসীদের অধিকার আন্দোলনে এবং নারী নেতৃত্বে শূন্যতা সৃষ্টি করবে বৈকি।

এদেশটা দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। সবার জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে। তাইতো চোখের জলে চোখ ভাসিয়ে অনেকে আত্মীয় পরিজন আপনজনদের আপরিসীম ভালোবাসাকে উপেক্ষা করে বেছে নিচ্ছেন প্রবাস জীবন। অনেক অনিশ্চয়তায় ভরা সে জীবন। কিন্তু তবুও একটু নিরাপত্তা, একটু স্বাচ্ছন্দ্য আর একটা সুন্দর আগামীর জন্য বাজী ধরছেন অনেকেই। তেমনি চৈতালী-সন্তোষ দা’রাও ধরলেন।

যাই হোক, এই পরিবারটিকে আমরা খুব মিস করবো। আগামীতে রাজপথের কোন মিছিলে, মানববন্ধনের ব্যানার হাতে, বিক্ষোভ সমাবেশের জ্বালাময়ী বক্তৃতায় কিংবা টিভি টকশোতে আদিবাসী নারীদের আলোচনায় অনেকেই খুঁজবে চৈতালীকে। আমরা আরও মিস করবো তার দুষ্ট এবং আদুরে দুই ছেলে – রাংচাক আর নকথরকে। ফোকলা দাঁতে কী সুন্দর ককবরক বলে নকথর। আশা করি ইংরেজির আধিপত্যের মধ্যেও সে সহজে ভুলে যাবেনা তার এই মায়ের ভাষা। আমি জানি রাংচাক গরম গরম সিঙ্গারা খুব বেশি মিস করবে ওখানে। অসুবিধা নেই রাংচাক তোমার জন্য আমরাও এখন অফিসে আর সিঙ্গারা না খেয়ে অন্য কিছু খাবো। না হলে আমরাই তোমাকে বেশি মিস করবো।

আমাদের সকলের শুভ কামনা! আপনাদের ডারউইন অভিযান সফল হোক।


Place your ads here!

Related Articles

আমরাই তো বাংলাদেশ

জোসেফ ও স্টেলা দুই মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মী । পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের আজাইরা মানুষজনকে কিভাবে দক্ষ মানবসম্পদে পরিনত করা যায়, তা

অতঃপর হুমায়ূন আহমেদ

দিলরুবা শাহানা: হুমায়ূন আহমেদ ভক্তপাঠকের ভাল লাগার জায়গায় চিরস্থায়ী আসন পেয়ে গেছেন বললে ভুল বলা হবেনা। তার পাঠকেরা শুধু লেখা

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment