গাছ, প্রকৃতি ও আমরা
প্রতিদিন কাজে যাবার আর বাসায় ফেরবার সময় রাস্তার পার্শ্বে এই অসাধারন সুন্দর গাছগুলিকে দেখি। আমার বাসার পার্শ্বে রাস্তায়, উল্টা দিকের পার্কে চমতকার ভাবে সাজানো সারি সারি এই গাছগুলি,যেগুলি সকালে একরুপ আর সন্ধ্যায় তার আর এক রুপ নিয়ে প্রতিনিয়ত আত্মপ্রকাশ করে! বিশাল আকাশের নীচে মাথা উচু করে থরে থরে সাজানো এই গাছগুলি যেন ঘটনা বহুল এই পৃথিবীর হাজারো সাখ্খি বহন করে চলছে!! গাছ- গাছালির প্রতি এক দুর্বার আকর্ষন আমার অনেক ছোটবেলা থেকেই, ছোটকালে আম্মাকে দেখতাম কেমন করে বাড়ির আশ পাশ বিভিন্ন রকম গাছ দিয়ে ঘিরে রাখতেন আর আব্বা পরম উতসাহে সেসব এর যত্নের ব্যবস্থা করতেন। তখন গাছের গুরুত্ব অতটা বুঝতামনা, তারপর স্কুলে যখন জগদীশ চন্দ্র বসুর ” গাছের কথা” পড়লাম তখন গাছ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম,ভালবাসাও ধীরে ধীরে আরও গভীর হোল। কেমন যেন অদ্ভুত এক রহস্য ঘিরে আছে এই অপূর্ব সৃষ্টির মাঝে, অবাক বিস্ময়ে আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি আর ভাবি, যুগ যুগ ধরে এরা এখানে দাড়িয়ে আছে একই ভাবে, যদিও প্রকৃতি পরিবর্তনের সাথে সাথে সময় ও সুযোগ মত এরা রং-রুপ পরিবর্তন করে কিন্তু ফিরে ফিরে আসে বার বার আবার সে তার নিজস্ব রুপে। বেশী অবাক লাগে বিশেষ করে যখন বট বৃক্খ গুলিকে দেখি, কি সুন্দর ভাবে তারা তাদের শাখা প্রশাখা বিস্তার করে বুক ফুলিয়ে দাড়িয়ে থাকে আর তার চার পাশকে বিভিন্ন রকম শান্তির বাতাস বিলিয়ে দিয়ে প্রশান্তিতে আশপাশ ভরিয়ে রাখে। যেন সুখ ছড়ানোতেই তার আসল তৃপ্তি!
গাছের উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবেনা – পৃথিবীর পরিবেশ নিয়ন্ত্রন থেকে শুরু করে মানুষ তথা সকল প্রানী জগতকে কতরকম ভাবে যে সাহায্য করে আসছে তা সত্যিই চমকে দেবার মত। গাছ শহরের ড্রেইনেজ ব্যবস্থার ওপর চাপ কমায়, গাছের ছায়ার নীচে বসে মানুষ গরম থেকে আশ্রয় নেয়,বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড গাছ জমা করে তার পাতায়, শিকড়ে, কাঠে আর এভাবে পরিবেশের তাপমাত্রা কমায়। আর নিঃশ্বাসে অক্সিজেন পাওয়া যায়। মানব জাতীর জন্য এমন অপরিসীম রকম প্রয়োজনীয়তা পূরণে গাছ শুধু যে তাদের জীবিতাবস্থাতেই কাজ করে যায় তা কিন্তু না, মৃত্যুর পরও সে মানুষের উপকার করে যাচ্ছে। গাছ লাগানো হচ্ছে উত্তম সাদাকায়ে জারিয়া। লাগানো গাছ থেকে মানুষ মৃত্যুর পরেও উপকৃত হয় এবং হচ্ছে। গাছের এমন স্বকিয়তায় মানুষের সাথে এর সামন্জস্য/ তারতম্য মনে পড়ে যায়। সৃষ্টির বৈচিত্রে মুগ্ধ – পাগল এ মন এক অনাবিল আনন্দে ভরে ওঠে আর সাথে কৃতগ্গতায় মাথা নত হয়ে আসে পরম করুনাময় সৃষ্টিকর্তার প্রতি!
Dr Naila Aziz Meeta
Home town is Bangladesh, live in Australia. Love to write, read, travel, and listening to music.
Related Articles
Bangladesh, China India at the Climate Summit at the UN
The UN climate summit was held on 23rd September which was the largest high-level climate meeting since 2009. Hosted by
সংস্কারপন্থীদেরকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা উচিত -ফরিদ আহমেদ
সম্প্রতিককালে কতকগুলি ঘটনা আবার আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে যা দেশের ও জাতির জন্য অমঙ্গল হয়ে দেখা দিতে পারে। সমগ্র জাতি
চীন থেকে আনা অস্ট্রেলিয়ানদের রাখা হবে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে
ফজলুল বারী: ‘মরনেরে ডরায় সবাই’! করোনা ভাইরাস জর্জরিত চীনের উহান প্রদেশে এখন অস্ট্রেলিয়ার ৬শ’র বেশি নাগরিকের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে।