স্মৃতি
আমার নীলাম্বরী আজ আসমানি রঙের হাল্কা থ্রিপিস পরে আছে, যেন একখন্ড আকাশ! নৌকার গলুইয়ে বসে পা ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমায় ডেকে বলল, “এই যে কবি! খাতা কোথায়, নাকি হ্যান্ড সেটেই লিখবে কবিতা!”
“কোন কালে কবিতা তো লিখিনি, কবি বলছো যে!”
“লেখনি, তবে অচিরেই শুরু করবে বলে মনে হচ্ছে! আজকাল যা ভাব দেখছি!”
“ভাব নয়, ভাবনা! কি করব তুমি এমন গ্রাস করেছ যে আমি…”
“আহা-রে!”
আজ আমি তার আজ্ঞাবহ হয়ে সোনালী সাধ মেটাতে নিয়ে এসেছি নৌকায়, শহর ছেড়ে একটু দূরে। মেয়েটা যেন প্রজাপতির ডানা মেলে দিয়েছে। মাঝিকে দিয়ে ভাত-তরকারি যোগাড় করিয়েছি। মধ্যদুপুরে গনগনে সূর্য মাথায় নিয়ে আমরা ভাত খেতে বসেছি। মাঝিকে বললাম, মাঝ নদীতেই তরী রাখতে। তাকে নিয়েই আমরা ভাত খেতে বসলাম; বেচার ইতস্থত করছিল লজ্জা পাচ্ছিল। আবার আমাদেরকে দেখে একরকম আনন্দিত-চমকিতও বটে! পুঁটিমাছ ভাজা, টেংরা মাছ দিয়ে পালং শাকের ঝোল, শুকনো মরিচ ভাজা দিয়ে মাখা আলুভর্তা আর পাতলা ডাল… আহা! অমৃত!!
খেয়ে দেয়ে নীলা বলল, “এত খেয়েছি এখন কি করব! দাঁড়িয়ে থাকতে হবে তো!”
“থাকো, কাকতাড়ুয়া হলে মন্দ লাগবে না, তবে সুন্দরী কাকতাড়ুয়া দেখলে কাক ভীড় করবে আরও!”
“আমি কাকতাড়ুয়া না? যাও!”
কয়েকঘন্টা নৌকায় কাটিয়ে বিকেলের দিকে তারা গেল এক খোলা প্রান্তরে। রেললাইনের কাছে। সামনে অবারিত ক্ষেত। সর্ষের কুঁড়ি এখনো পুরোপুরি মুখ বের করেনি তবে কিছুদিন বাদে এই ক্ষেত ঢেকে যাবে হলুদ আবরনে।
তারা আজ সূর্যাস্ত দেখবে একসাথে।
হাল্কা শীতের পড়ন্ত রোদ মানুষকে কেমন যেন অন্যরকম বানিয়ে দেয়। পাশেই আপনজন থাকতে বিকেলটা বিষন্ন লাগে। নীলাকে কেমন অন্যরকম দেখাচ্ছে। সেই চঞ্চলাতা, আহ্লাদি ভাবটা কোথায় হারিয়ে গেছে। পাতলা একটা চাদর জড়িয়েছে গায়, মুখটা ম্লান। সূর্যটা তখন হয়ে উঠেছে কুসুম রঙয়ের দগদগে এক টিপ। ওর কপালে পরাবো? চোখের দিকে চেয়ে দেখি দৃষ্টি তার দিগন্তেরও ওপাশে, সেই দৃষ্টিতে কী যে আশ্চর্য এক অভিব্যক্তি যা আমার বুকের ভেতরে গিয়ে হু হু করতে লাগল।
এমনটি কখনো দেখিনি ওকে।
বললাম, “কি হয়েছে? ভালো লাগছে না? চলো যাই তাহলে।”
শান্ত গলায় বলল, “না, ভালো লাগছে।” ঘাড় বাঁকিয়ে আমার পানে চেয়ে বলল, “তোমায় একটা কথা বলি? বলা হয়নি। কাউকেই বলিনি কোনদিন। কিন্তু তোমায় বলা দরকার।”
“হ্যাঁ, বলো, আমি তো না করিনি।”
“সহ্য করতে পারবে? আমায় ভালো জানতে পারবে তো তারপরে?” তার চোখ ছলছল করছে।
হেসে বললাম,”কি বলছো, ভালো জানবো না, ভালবাসা অবিরত চিরকাল”, তাকে হাল্কা করতে চাইলাম।
সে হাসল না, সিরিয়াস। জ়ীবনের ঘটে যাওয়া সবচেয়ে অপ্রিয় কাহিনী আজ সে আমায় বর্ণনা করতে শুরু করল। আমার রীতিমত মাথা ঘুরতে লাগলো, হঠাৎ করেই যেন গা ঠান্ডা লাগতে লাগলো। ওদিকে সূর্য ডুবে অন্ধকার নেমে এসেছে…
Related Articles
ICC চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৭- ইংল্যান্ড
আজ থেকে ইংল্যান্ডে শুরু হলো।CC Champions Trophy টুর্নামেন্টের অষ্টম আসর। ইংল্যান্ডে দ্বিতীয়বারের মতো এই আসর বসলো। টুর্নামেন্টের প্রথম আসর ১৯৯৮
Old-mind set of political leaders needs to be changed in South Asia for peace and harmony
A seminar on “Dynamics of Security of South Asia” was organised by the South Asian Group Studies, Sydney University on
মোসলেহ উদ্দিন নামের কোন লোক ধরা পড়েনি ভারতে
ফজলুল বারী: নিজের বিরুদ্ধে আজ রিপোর্ট লিখছি। নিজের বিরুদ্ধে কী রিপোর্ট লেখা যায়? রিপোর্ট যদি সত্য হয় তাহলে লিখা যাবেনা