সাদা কথা-পরিচয় সংকট

সাদা কথা-পরিচয় সংকট

সাদা কথা-পরিচয় সংকট
১৯২৪ সাল মার্চ ৩, তুরস্কের জাতীয় সংসদ খেলাফত বিলুপ্তি ঘোষনা করে আইন পাশ করলো । যার পরিপেক্ষিতে আরবে অশান্তি, একদিকে আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ আন্যদিকে হোসেইন বিন আলি যিনি নিজেকে হাসেমাইট বলে দাবি করতেন তাদের বিরোধটা প্রবর্তিত হলো সারা আরব ভূখন্ড থেকে ইসলামি বিশ্বে, যাকে অনেক ঐতিহাসিক বলেন তথাকথিত প্রথম আরব বসন্ত । মজার বিষয় হচ্ছে এই দুজনকেই সবরকমের সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে এসেছিলো সে সময়ের পরাশক্তি ইংল্যান্ড । আমাদের শাসন ব্যবচ্ছাটা কেমন হবে? খেলাফত টিকে থাকবে কিনা ? না থাকলে মুসলমানরা কি ধরনের শাসন ব্যবস্থা গ্রহন করবে ? এই বিষয় গুলো তখনকার সমাজ ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব ফেললো। কায়রোতে সম্মেলন আয়োজন করা হলো মে ১৯২৬ সালে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে, যা কিনা ইতিহাসে খেলাফত কংগ্রেস নামেও পরিচিত। সমাধান আসলোনা কোন ।
ঠিক কাছাকাছি সময় জুন-জুলাই ১৯২৬ আরেকটা সম্মেলন আয়োজন করা হলো মক্কায়, যা ইতিহাসে বিশ্ব মুসলিম কংগ্রেস, মক্কা, নামে পরিচিত , আব্দুল আজীজ বিন সৌদ এর আয়োজনে। আরও একটা সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিলো ডিসেম্বর ১৯৩১ জেরুজালেমে, সাধারন ইসলামিক কংগ্রেস নামে। এই সময়টাতে উপমহাদেশের মুসলমানদের কি ভুমিকা ছিলো তা কিন্তু সত্যিকার অর্থে বেশ গুরুত্ব বহন করে । মাওলানা মোহাম্মদ আলী ও শওকত আলীর নেতৃত্বে খেলাফত রক্ষা আন্দোলন , বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো অবিভক্ত ভারতে । হাজী শরিয়ত উল্লাহর ফরায়েজি কিংবা তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা এসবই ছিলো উপমহাদেশের মুসলমানদের আত্ব পরিচয় সন্ধানের টেষ্টা । সে বিষয়ে যাচ্ছি না আজকের আলোচনায় । মক্কা সম্মেলনটা শেষ পর্যন্ত মুসলমানদের একটা, বলা যায় নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা উপহার দিলো। আনান্সম্মেলন গুলো সাফল্য পেলোনা । রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থা থাকলো একটা পরিবারের হাতে আর ধর্ম সংক্রান্ত বিষয় গুলো তুলে দেয়া হলো একটা বিশেষ ধর্ম গোষ্টীর হাতে। ইসলামের সমসাময়িক ইতিহাসে অনেক ঐতিহাসিক একে সৌদ পরিবার এবং ওহাবি সালাফি আন্দোলনের গোপন সমঝোতা বলে অভিহিত করেন । কিন্তু এই সমঝোতা ইসলামের জন্য কতটা কল্যান হয়ে আসলো তা কিন্তু গভীর আলোচনার বিষয় । অনেক ধর্ম তত্ববীধই বলছেন তারই প্রতিকৃয়ায় আজ মুসলমানদের মধ্যে এত ধর্ম তত্বের বিরোধ। আই এস, আল কায়দা , তালেবান, উপমহাদেশের মউদুদি মুভমেনট এসবই হচ্ছে ঐ সমঝোতার ফসল। আর এসবের মাধ্যমেই ইসলামকে তার চিরায়ত রুপ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে যাকে অনেক সমকালীন ধর্ম তত্ববীধ বলছেন ইসলামের প্রটেষটাইনিজম । এই বিরোধ গোষ্ঠীর পযায় থেকে এখন সামাজিক এবং ব্যক্তিগত পর্যায়েও চলে এসছে। মসজিদ গুলো আর সার্বজনীন থাকছেনা। আমাদের কমিউনিটির সবাইকে এই বিষয়টা নিয়ে গভীর ভাবে ভাবা উচিত। তবলীগী, জামাতী, ওহাবি, সালাফি, আহালে সুন্নাহ এসবই থাক আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায় । মসজিদ হোক সবার , যেখানে ইসলামের চিরায়ত রুপটাই উজ্জ্বল থাকবে, মাযহাবকে সমমান করা হবে এবং সকল মাযহাবে গ্রহণযোগ্য একজন ইমাম থাকবে। অন্যথায় মসজিদ গুলো হবে ইমারত সর্বস্ব ।
মাকসুদ আলম
Source : The Caliphate The Hejaz And The Saudi-Wahhabi Nation State : Imran N Hosain


Place your ads here!

Related Articles

Ebarer Shongram… Kintu Mukti Kothy?

এবারের সংগ্রাম… কিন্তু মুক্তি কোথায়?জাতির জনক ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনের। বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। কিন্তু

আবদুল্লাহ আবু সাইদ আমার শিক্ষক নন তারও বেশী কিছু

আমরা যখন সদ্য কৈশোর ছাড়িয়ে কলেজে গিয়েছি আমাদের এক মুগ্ধকর আকৃষ্ট করলেন। তখন স্যার বিরাট বিশাল আবদুল্লাহ্‌ আবু সাঈদ হয়ে

একুশে’র চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন” বাস্তবায়নের রূপরেখা-৩ (প্রায়োগিক কৌশল)

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদ কর্তৃক মহান একুশে ফেব্রুয়ারি’কে বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, এবং সকল সদস্যরাষ্ট্র

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment