২৫ মার্চ এবং আজকের আমরা
……. আজ মধ্যরাতে শহর জুড়ে নামবে অদৃশ্য জলপাই রঙের ট্যাংক .. গর্জে উঠবে কিছু প্রেতাত্মা কন্ঠ – “খতম কার দো সাব কো” ।
রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে নীলক্ষেত স্টাফ কোয়ার্টার .. ঢাকার এমাথা থেকে ওমাথা .. ভেসে যাবে অদৃশ্য রক্তের বন্যায়, মাঝরাতের অন্ধকার ফুঁড়ে মিলিটারী ক্র্যাক ডাউনের শিখা আজরাইল হয়ে হামলে পড়বে খেটে খাওয়া দিনমুজুর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক কর্মচারী … আমারই পূর্ব পুরুষের ওপর ।
গণহত্যার আনুষ্ঠানিক আতশবাজি ফুটবে আজ পাকিস্তানি আর রাজাকারদের মনের আকাশে … ।
পৃথিবীর সবটুকু আলো জ্বেলেও যেই রাতের অন্ধকার কখনো দূর হবে না .. সেই ২৫ শে মার্চের কালো রাত আজ।
আমি বা আপনি বন্ধু, স্বামী, স্ত্রী, মা, বাবা কিংবা সন্তান টিকে নিয়ে রাত জাগব আজকে .. কাল তো ছুটির দিন ! হোক না একটু আড্ডা ..।
অত:পর নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যাব একটি অলস সকালের প্রতিক্ষায় ………
৪৩ বছর আগে, যেই সকাল টি একটি জীবন্ত শহরকে বানিয়েছিল মর্গ ..
৪৩ বছর আগে, যেই সকাল টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে করেছিল মৃত্যুপুরী …
৪৩ বছর আগে, যেই সকাল টি স্বয়ং নরক টেনে এনেছিল পৃথিবীর বুকে …
৪৩ বছর আগে, যেই সকাল টি ” মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই ” এর অভূতপূর্ব নিদর্শন দিয়েছিল আমাদের …
৪৩ বছর আগের সেই সকাল টি মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় ধরে শিখিয়ে দিয়েছিল .. জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার .. তবু মাথা নোয়াবার নয় … ।
৪৩ বছর …. অ — নে — ক অনেক দীর্ঘ সময় ! এত কিছু কি মনে থাকে নাকি বলেন ???
থাকে না বলেই তো
আমি আপনি কাল জম্পেশ ভাবে ছুটি উদযাপন করব
স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে অন্য দেশের পতাকা উড়িয়ে বিজাতীয় উল্লাস করবো ..
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের সেলিব্রেশন কনসার্টে শেষ মুহুর্তে জাতির মান সম্মান ডুবিয়ে শিল্পীরা নিজেরা মারামারি করবেন এবং আমরা তুমুল নির্লজ্জের মতো পক্ষ নেবো …..
দ্বিধা বিভক্ত হোবো জাতীয় সঙ্গীতের রেকর্ড গড়ার আয়োজনে টাকার অঙ্ক নিয়ে, ইসলামী ব্যাঙ্কের অনুদানের হালাল হারাম বিশেষণে ….
গোলাম আজম সরকারী সুবিধা ভোগ করেই যাবে আমৃত্যু ….
সাইদী – নিজামী – মুজাহিদ বেঁচে থাকবে মৃত্যুর পরোয়ানা কে পরোয়া না করে …
.
.
.
.
অত:পর আমি আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যাব একটি অলস সকালের প্রতিক্ষায় ………!