এই সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার দেশ

এই সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার দেশ

মুস্তফা সরওয়ার ফারুকি

দাদাবাড়ির মাঝি নাদের আলী বলেছিলো, “ট্রানজিট দে, দেখিস একদিন তিস্তা দিয়ে দিবো। জঙ্গি হটা, বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে দিবো।” দাদা সব নিয়ে নিয়েছে, দেয়নি কিছুই। আমাদেরও দেখা হয়নি কিছুই। ৪৩ বছর কেটে গেল। বাজার গেছে, আকাশ গেছে, পত্রিকার পাতাগুলো গেছে, চিন্তা গেছে। সিনেমা হলটা বাকি ছিলো, এবার সেটাও যাচ্ছে। যে দেশের মন্ত্রীর একমাত্র এজেন্ডা মনে হয় ভারতের ছবি আমদানি (তাও আবার ভারতের সবচেয়ে অখাদ্য ছবিগুলো), যে দেশের মন্ত্রী মনে করেন যে বাংলাদেশের সিনেমার উন্নতির একমাত্র উপায় ভারতের ছবি আনা এবং আমাদের ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক ভারতীয় কোনো সংস্থাকে দেয়া, সে দেশের ভবিষ্যৎ চরম উজ্জ্বল। এই রকম চিন্তাশীল মানুষ যদি দেশ চালান, তাহলে সে দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল না হয়ে পারে না। আশা করি অন্যান্য দেশও (যাদের সিনেমার অবস্থা খারাপ) আমাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে চলচ্চিত্র বিপ্লব সাধন করবে।

বি.দ্র. পাশে বসা ছোটো ভাই বললো দুই দেশের ছবি না বিনিময় হওয়ার কথা। আমি তাকে পুনরায় ‘নাদের আলী’র কবিতা পড়তে বললাম।

খুশী হয়ে ছোট্ট ভাই আমাকে “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জঙ্গি দমনের গুরুত্ব” বিষয়ে একটা বক্তৃতার রিপোর্ট ধরিয়ে দিয়ে বললো, ‘দেশ চালাতে এইরকম প্রতিভাই আসলে দরকার!’

আমি বললাম “এইরকম একটা মন্ত্রী তুই ফুসলিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে দে, আমরা বেঁচে যাই!”

-সুপ্রভাত! ইহা একটি সম্পূরক স্ট্যাটাস। কারো যদি আমার স্পিরিট বুঝতে সমস্যা হয় তাই বলছি। আমি ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতায় পূর্ণ আস্থাশীল। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় ছবি হোক, তাও চাই। রিসোর্স শেয়ার হোক, তাও চাই। আমাদের ছবি ভারতে চলুক, তাদেরটাও এখানে চলুক। কিন্তু তার জন্য যে একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করা দরকার, কর কাঠামো তৈরি করা দরকার, বছরে কতগুলো ছবি আসবে- কতগুলো যাবে এটা ঠিক করা দরকার, আমাদের হলগুলো ভারতীয় ছবি কত পার্সেন্ট স্ক্রিনিং করতে পারবে, ভারত আদৌ আমাদের ছবি চালাতে আন্তরিক কি-না, তাদের দিক থেকে কোনো রকম আইওয়াশ বা শুভংকরের অংক আছে কিনা- এই সব বিষয়ে খোলা মন নিয়ে কাজ করা দরকার।

কিন্তু এসব নিয়ে যখন কোনো উত্তেজনা দেখি না, উত্তেজনা দেখি যে ‘শুধু যেভাবেই পারো ভারতের ছবি ঢুকিয়ে দাও’- এই নিয়ে তখন প্রশ্ন আসে। যখন প্রেসক্রিপশন দেয়া হয় ‘বাংলাদেশের সিনেমার উন্নতির জন্য’ই ভারতের ছবি আনতে হবে তখনই বোঝা হয়ে যায় ‘ডাল মে কেয়া হায়!’

আগেও যেমন বলেছি- কলকাতায় হিন্দি ছবি চালালে ২৫% কর দিতে হয়, বাংলা চালাতে ২% এর মতো। কেন একই দেশে এই বৈষম্য? নিজের বাজার আর সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করা?

একটা রাজ্য সরকার যা পারে, স্বাধীন দেশের সরকার তার চেয়ে তো বেশিই পারার কথা। আমাদের নীতিমালা আমাদের লাভের দিকে তাকিয়ে করতে হবে, অন্য কারো লাভের দিকে তাকিয়ে না। বিনিময় বা বন্ধুত্ব তখনই জমে যখন দুই তরফে আন্তরিকতা থাকে। কলকাতার পত্রিকার পাতায় আমরা এখনো মহকুমার চেয়েও ছোট, কিন্তু আমাদের পাতায় ওরা সুপার পাওয়ার। আমাদের টিভি ওখানে কৌশলে বন্ধ, আমাদের এখানে ওদের টিভি সানি লিওনের মতো খোলা। আরো একশোটা ইন্ডিকেটর দেখানো যাবে যেটা আসলে বন্ধুত্বের কথা বলে না। বললে ভালো হতো। বোঝা গেছে জিনিসটা?

আনিসুল হক

এ তো সামগ্রিক নৈরাজ্যের লক্ষণ। চারদিকে ধুলায় অন্ধকার। যে যাকে পারছে মার দিচ্ছে। কেউ কোনো কিছুর দায়িত্ব নিচ্ছে না। অপরাধ কমবেশি সব দেশেই সংঘটিত হয়। সভ্য দেশে অপরাধ সংঘটিত হলে সুষ্ঠু তদন্ত হয়, বিচার হয়, অপরাধীর সাজা হয়। অপরাধের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। আমাদের দেশে সেই চেষ্টারও কোনো লক্ষণ নেই। হাল ছেড়ে দেওয়ার লক্ষণ। এর চেয়ে খারাপ আর কিছুই হতে পারে না। ফলে হুমায়ুন আজাদের ভাষায় বলতে হয়, এখন প্রকৃত আশাবাদীর আর কিছুই করার নেই, কেবল হতাশ হওয়া ছাড়া।

আব্দুন নূর তুষার

ভারত তার স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে ! এটাই আসল চেহারা ! দাঙ্গা , সংখ্যালঘু নির্যাতন , নিপীড়ন ও অধিকারহরণ সেখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা , এগুলি নিয়ে ওদের মিডিয়া মাথাও ঘামায় না ! গুজরাটের কসাই তাই এখন প্রধান মন্ত্রী !! ধর্মনিরপেক্ষতা একটি মানসিক অবস্থান , এটা সংবিধানে লিখে রাখলেই মানুষ উদার হয়ে যায় না !

হানিফ সংকেত

মৃত্যুশয্যায় আলেকজান্ডার তার সেনাপতিদের ডেকে বললেন,”আমার মৃত্যুর পর আমার তিনটা ইচ্ছা তোমরা পূরণ করবে”।

আমার প্রথম অভিপ্রায় হচ্ছে ,”আমার কফিন আমার চিকিৎসকেরাই বহন করবেন।”

আমার দ্বিতীয় অভিপ্রায় হচ্ছে,”আমার কফিন যে পথ দিয়ে গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে,সেই পথে আমার কোষাগারের সোনা,রুপা ও অন্যান্য মূল্যবান পাথর ছড়িয়ে দিতে হবে।

আমার শেষ অভিপ্রায় হচ্ছে,”আমার কফিন বহনের সময় আমার দুই হাত বাহিরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।তার

মৃত্যুশয্যায় উপস্থিত লোকজন মাহাবীর আলেকজান্ডারের এই অদ্ভুত অভিপ্রায়ে বিস্মিত হন।

কিন্তু তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করার সাহস পাচ্ছিলেন না কেউ ।তখন তার প্রিয় সেনাপতি তার হাতটা তুলে ধরে চুম্বন করে বললেন,”হে মহাবীর অবশ্যই আপনার সব অভিপ্রায় পূরন করা হবে;কিন্তু আপনি কেন এই বিচিএ অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন?

তিনি একটা শ্বাস গ্রহন করে বললেন।”

আমি দুনিয়ার সামনে তিনটা শিক্ষা রেখে যেতে চাই।

আমার চিকিৎসকদের কফিন বহন করতে বলেছি এই জন্য যে,যাতে লোকে অনুধাবন করতে পারে চিকিৎসকেরা আসলে মানুষকে সারাতে পারে না।তারা ক্ষমতাহীন আর মৃত্যুর থাবা থেকে কাউকে বাঁচাতে অক্ষম।

গোরস্থানের পথে সোনা দানা ছড়িয়ে রাখতে বলেছি, মানুষ যাতে বোঝে সোনা দানার একটা কনাও আমার সঙ্গে যাবে না।আমি এগুলো পেতে সারাটি জীবন ব্যয় করেছি।কিন্তু নিজের সঙ্গে কিছুই নিয়ে যেতে পারছি না ।মানুষ যেন বুঝে যে ধন সম্পদের পিছনে ছুটা সময় অপচয় মাত্র।কফিনের বাইরে আমার হাত ঝুলিয়ে রাখতে বলেছি,কারন মানুষ তা জানুক যে,খালি হাতে এই পৃথিবীতে এসেছিলাম আর খালি হাতেই পৃথিবী ছেরে চলে যাচ্ছি।


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment