শক্তির চেয়ে কি আসক্তি বড় ?
ফিজিক্সে শক্তির নিত্যতা সূত্র বলে একটা সূত্র পড়েছিলাম, “মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমান সমান । নতুন কোন শক্তি তৈরী বা ধ্বংস করা যায়না । শক্তিকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তর করা যায় মাত্র। “
এই সূত্রের সূত্র ধরে, নতুন একটা সূত্রের সূত্রপাত হতে পারে এমন – “আসক্তির নিত্যতা সূত্র – মহাবিশ্বে মোট আসক্তির পরিমান সমান, নতুন কোন আসক্তি তৈরী বা ধ্বংস করা যায়না । আসক্তির নিয়ামক সময়ের সাথে সাথে রুপান্তরিত হয় এবং ক্ষতির বিস্তৃতি ও তীব্রতা বাড়ায় ।”
আসক্তি বিষয়টা সৃষ্টির আদিকাল অর্থাৎ সেই আদম হওয়ার যুগ থেকেই আছে । নিষিদ্ধ গন্ধমে আসক্ত বা আকর্ষিত হয়ে স্বর্গলোক ছাড়তে হয়েছিল হজরত আদম (আ:) কে । জাহেলি যুগে মদ, আফিম ও মেয়েমানুষে আসক্তি ছিল কমন এবং ওপেন ঘটনা । এরপর হাজার বছর পেরিয়ে গেছে, খেয়াল করলে দেখবেন, এই নেশার দ্রব্যগুলো উপকরণ, নাম ও তীব্রতা পাল্টেছে শুধু, এর রূপ অথবা নেশার ফলাফল বদলায়নি । আজও সারা বিশ্বে মিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ নেশাসক্ত …. তা সে যেই নেশায়ই হোক ।
পৃথিবী গোল্লায় যাক, দেশ নিয়ে একটু ভাবতে বসি । সম্প্রতি পুলিশ দম্পতি খুনের ঘটনা আরো একবার চোখের সামনে নিয়ে আসল মাদকের ভয়াবহতা । সত্যি বলি, অনেক দিন থেকেই মনে হচ্ছিলো কিছু একটা হবে, ভয়ংকর কিছু ! বলছি, ঠিক কবে থেকে । আমার খালাতো বোন এবার ও-লেভেল দিলো । বছর খানেক আগে কোচিং সেন্টারে ক্লাস চলাকালীন ওর পাশে বসে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ড্রাগ নেয় । যতদূর মনে পড়ে, ও বলেছিল ওই দুটো ছেলেমেয়ে হাতের চামড়া কেটে অথবা সূচ ফুটিয়ে অর্থাৎ রক্তে সরাসরি মাদক ঢোকায়, এবং বলতে থাকে – আহ কি শান্তি !
আমার বোনটি এই দৃশ্য দেখে ভয়ঙ্করভাবে ঘাবড়ে যায় এবং বাসায় ফিরে বেশ কিছুদিন অস্বাভাবিক জ্বরে ভোগে । আমি বিষয়টা শুনে হতভম্ব হয়ে যাই ! তখন থেকেই সিক্সথ সেন্স বলছিল কিছু একটা হবে, ভয়ংকর কিছু ! হলোও তাই ।
কিছুদিন আগে পত্রিকা পড়ে জানতে পারি অভিনেত্রী শ্রাবস্তী তিন্নি মারাত্মকভাবে মাদকাসক্ত ।তিন্নির ঘটনা খুব বিস্তারিত আমি জানি না যদিও, তবে ধারণা করি অধিকাংশ মানুষই বলে বসবেন ওহ ! মিডিয়া, গ্ল্যামার জগত ? ওখানে তো এসব কোনো ব্যাপারই না !ওর অভিনয় আমার ভালো লাগতো ।ঠিক কেন বা কি পরিস্থিতিতে তিন্নি এই পর্যায়ে গেলেন, তা আমার জানা নেই । আমি যা জানি, তা হলো তার একটা ফুলের মত ফুটফুটে সন্তান আছে । আজ থেকে ঠিক ৬ / ৭ বছর আগে তার জীবনটা এমন ছিল না । আজ থেকে ৬ /৭ বছর পরে তার জীবনটা কেমন হবে ভাবতেই আমি শিউরে উঠি ! ঠিক কোন পারিপার্শ্বিকতায় একজন মায়ের কাছে সন্তানের চেয়ে মাদক বড় হতে পারে …. আমি হিসাব মেলাতে পারি না !
সারা বিশ্ব জুড়েই মিডিয়ার একটি অন্ধকার জগত আছে । আর ব্যাপারটা এমনও নয় যে মিডিয়ার কেউ কেউ ই শুধু উশৃঙ্খল, সমাজের বাকি পেশার কেউ মাদক ছোয় না, উশৃঙ্খলতা করে না । তাই অনুরোধ রইলো কেউ বিষয়টিকে ব্যক্তিগত ভাবে নেবেন না ।
এখন যেসব ফুটফুটে মেয়ে মিডিয়ার গ্ল্যামার গার্ল হবার জন্য মুখিয়ে আছে, তাদের দিকে তাকালে আমার বুকটা হু হু করে ওঠে ! প্রতি মুহুর্তে নিজের শারীরিক খুঁত ঢাকার প্রানান্ত চেষ্টায় কেউ শুকিয়ে কাঠ, কেউ ছলা কলায় ব্যস্ত, কেউবা এমন সব করে বেড়াচ্ছে যা মূল্যবোধের মাপকাঠির এক্কেবারে তলানিতেও পড়ে না । ঈদ সংখ্যায় অথবা বিলবোর্ডে অনেকের এমন সব ছবি যার সাথে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের সংমিশ্রনে তৈরী ঐতিহ্যময় এই সংস্কৃতির কোনো মিলই পাইনা আমি !
আমি মূর্খ মেয়েগুলোর বোকামী দেখে হাহাকার করে উঠি !
বইপত্র ছুঁড়ে ফেলে কি অবলীলায়ই না কেউ কেউ লিকুইড ডায়েট, জিম, উপটান আর শসার রসে নিজেদের ডুবিয়ে ফেলে । কে ওদের বোঝাবে শরীর পুঁজি করে খুব বেশিদূর যাওয়া যায় না … কে ওদের দেখাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে যে, অপি করিম মিডিয়ায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকার সময়ও চলে গিয়েছিলেন উচ্চ শিক্ষা নিতে । ব্যক্তিগত জীবনের ঝড় ঝাপটা তিনি তাই খুব চমত্কার ভাবেই সামলেছেন, সেইটুকু শিক্ষা, বুদ্ধি আর ম্যাচিওরিটি ছিল বলেই, অথবা তিনি শরীর সর্বস্ব গ্ল্যামারে আসক্ত ছিলেন না বলেই !
হে কন্যা, পুঁজিবাদী এই সমাজ তোমাকে পণ্য বানানোর জন্য মুখিয়ে আছে । কারণ এর পেছনে মিলিয়ন ডলার এর খেলা । মাছ যখন টোপ গিলে, সে জানে না টোপের আড়ালে হুক আছে । কাজেই তোমার রূপের ওপর ভর করেই মিডিয়া মোগলরা রাজত্ব করবে, যুগে যুগে কালে কালে এমনটাই হয়েছে, এমনটাই হবে ! যদি সত্যিকার অর্থে বিবেকবান মানুষ না হও আর নিজেকে বিকিয়ে বিলিয়ে একাকার করে দাও গ্ল্যামারের চোরাবালিতে, একসময় তুমি নিজেকে আবিষ্কার করবে আস্তাকুঁড়ে … ততদিনে বড় বেশি দেরী হয়ে যাবে … হয়তো তিন্নির মতো ।
ঐশীর ঘটনা ধরলে দেখা যাবে পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথা আসছে, আসবে । আলোচনা, সমালোচনা, মতামত, করনীয়, বর্জনীয় অনেক কিছু । মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে হবে । কেউ বলছেন এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা । কেউ জোর দিয়ে বলেছেন ঐশী একটা নষ্টা, খুনি। কেউ বলছেন বাবা মায়ের শাসন করার ধরনই তবে ঠিক ছিল না । কেউ বলছেন বাবার অবৈধ উপার্জনের অর্থ মেয়েকে বিপথগামী করেছে। কেউবা ঠোঁট উল্টে বলছেন, কেন বাপু ইংলিশ মিডিয়াম ? বাংলা মিডিয়ামে পড়ে আমরা যেন আর মানুষ হইনি ! সব নষ্টের দল ! উত্তরে ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরা দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বলছেন, এস ইফ, তোমাদের বাংলা মিডিয়ামের ছেলে মেয়েরা ড্রাগস চেনে না ! কেউ বলছেন, কি হলো এইবার ? যখন বলেছিলাম দেশে আল্লাহর আইন চাই, তখন তো তোমাদের গা জ্বলত ! এইবার বোঝো ঠ্যালা ! এমনি নানা রকম বিশ্লেষণ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে …. চলবে আরো কিছুদিন । ধারণা করি এই ঘটনার পরে শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে । যেই বাবা মা সন্তানের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ না, তারাও হয়তো মাথায় হাত রেখে সন্তানকে বলেছেন, কিরে? ভালো আছিস বাবা? সব ঠিকঠাক ? সন্তান তো মোটামুটি তব্দা ! অন্যদিকে বিনা কারণে কেউ কেউ সন্দেহ, নজরদারী বাড়িয়ে দিচ্ছেন সন্তানের প্রতি। আবার সবকিছুতেই প্যানিক হয়ে যাওয়া বাবা মায়ের দল ধুমাধুম ছেলেমেয়ের কল লিস্ট, ব্রাউসিং হিস্ট্রি, বন্ধু বান্ধবের নাড়ী নক্ষত্রের ডাটাবেইস আপডেট করছেন ।
ঐশীর ঘটনাটা আমি আমার মতো করে ভাবতে বসলাম । আমার যা মনে হয়েছে, তা হলো এটা লোড বিয়ারিং ক্যাপাসিটি ফেইলিউর এর একটা সতর্কসংকেত । সমাজ থেকে পরিবার সবখানে সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে লোড বা চাপ। উশৃঙ্খলতার অভিযোগ ইংরেজী মাধ্যমের প্রতি বেশি হওয়ায় আমি সেটা নিয়েই একটু ভাবলাম । আমার জানামতে বাংলাদেশের ইংরেজী মাধ্যম স্কুলগুলি বাংলা মাধ্যমের তুলনায় অনেক গুন এক্সপেন্সিভ । নি:সন্দেহে এই অর্থের যোগান দেয়া একটি বড় চাপ হয়ে দাড়ায় বাবা মায়ের প্রতি । আবার শুধু অর্থ দিয়েই তো সব হচ্ছে না । সাধ্য ছাড়িয়ে কষ্ট করে হলেও গাড়ি ড্রাইভার নিয়ে মাও ছুটছেন বাচ্চার পেছনে কারণ বাচ্চাকে একা ছাড়া নিরাপদ বোধ করছেন না । আমি দেখেছি ঢাকার অনেক বাচ্চা স্কুল থেকে বেরিয়ে কয়েকটি কোচিং সেন্টার, স্যারের বাসা হয়ে বাসায় ফেরে রাতে । মা পুরোটা সময় বসে থাকেন কোচিং সেন্টারের বারান্দায় ! বাচ্চা তো বটেই, পাশাপাশি এই যে অমানুষিক চাপ দিনের পর দিন নিচ্ছেন বাবা মা, তার ফলস্বরূপ বাচ্চাটার উপরেও তারা প্রত্যাশার চাপ তৈরী করছেন । উনিশ থেকে বিশ হলেই বলে বসছেন টাকা কি গাছ থেকে পড়ে ? নম্বর কম পেলি কেন ? কোনটা তোকে কম দেয়া হয় ? কোন কষ্টটা কম করা হয় তোর্ পিছনে ? এই চাপ গুলো বাচ্চাকে ঠেলে দিচ্ছে দূরে, বন্ধুর কাছে … কখনো নেশার কাছে । দিনের পর দিন নিতে নিতে এই চাপ সহ্যসীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে … সবারই । একপক্ষের কাছে অন্যপক্ষ হয়ে উঠছে চোখের বিষ !
আবার বাবা মায়ের উপর এই চাপ সমাজের তৈরী । সমাজের দশজনের চেয়ে ছেলে মেয়ে পিছিয়ে পড়ুক তা কোনো বাবা মাই চায় না । তারা সন্তানের সর্বোচ্চ মঙ্গল কামনা করেই শ্রম দেন, তা সঠিক না বেঠিক, অনেকসময় যাচাই না করেই । একসময় কোনো এক পক্ষের লোড বিয়ারিং ক্যাপাসিটি কলাপ্স করে, নেমে আসে অশান্তি । কারো ঘরে প্রতি রাতে নামে, কারো তা সয়ে যায়, কেউ কেউ একদিন ভয়ংকর হয়ে ওঠে !
সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করা বলতে মনোবিজ্ঞানীরা কি বোঝান আমি জানি না, তবে আমি এটুকু জানি, ঢাকা শহরে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে ৫ মিনিট দেরী হলে আমার বাবাকে সন্তোষজনক কৈফিয়ত দিয়েই তবে ঘরের সদর দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারতাম আমি । তার অর্থ এই নয় আমার বন্দী জীবন ছিলো । স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি এমন কোনো পর্যায় নেই যেখানে আমি এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিজ করিনি । আমার অভিজ্ঞতা বলে, শাসন অনুশাসন গোল্লায় ঠেলে দিয়ে সন্তানের বন্ধু হওয়া আত্মঘাতী । অবশ্য, এ আমার একান্ত নিজস্ব অভিমত ।
আমার হিসাবে এই ঘটনা গুলো আরো বাড়বে ।টাইটানিকের মত ডুবছে সমাজ সংসার প্রজন্ম, আমরা কি করে এর দায় এড়াই ? কি করে আমরা অস্বীকার করি যে স্ট্যাটাস রক্ষা করতে গিয়ে আমরা বিসর্জন দিচ্ছি নৈতিকতা ! ঠিক কি বিচারে একটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাদ্রাসা, বাংলা মিডিয়াম, বাংলা মিডিয়াম (ইংলিশ ভার্সন), ইংলিশ মিডিয়াম এতো শ্রেনীবিভাগ থাকে? ঠিক কোন বিবেচনায় কোথাও ১০০ টাকা আর কোথাও লক্ষ টাকা হয় বাচ্চার স্কুলের মাসিক খরচ – একই দেশে, একই শহরে ? যতদিন কোনো সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে অর্থ, কারিকুলাম, স্ট্যান্ডার্ড এগুলোর নুন্যতম কোনো সমতা তৈরী করতে পারবে না, যতদিন মাদ্রাসার ছেলেগুলো নিগৃহীত, বাংলা মিডিয়ামের বাচ্চাগুলো কনফিউসড আর ইংলিশ মিডিয়ামের বাচ্চাগুলো ওভার স্মার্টনেস নিয়ে বড় হবে, যতদিন এই গরিব দেশে স্যামসং গ্যালাক্সি নোট ২ টিপতে টিপতে সিগন্যালে থেমে থাকা গাড়ির জানালায় টোকা দেয়া ভিখারীকে আমরা মানুষের কাতারে ফেলবো না, ততদিন এ সমস্যা প্রকট থেকে প্রকটতর হবে । যতদিন না বাবা মা’রা একটু স্থির মাথায় ভাবতে শিখবেন, শিক্ষার জন্য জীবন না জীবনের জন্য শিক্ষা ? যতদিন তারা সন্তানটি লেখাপড়ায় আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারলে খুঁজে দেখার চেষ্টা করবেন ওর আসলে কিসে ইন্টারেস্ট অথবা ও আসলে কিসে আসক্ত, যতদিন না আমরা সবাই এক হয়ে এই উর্ধশ্বাসে অজানা গন্তব্যে ছোটা বন্ধ করবো, ততদিন এই ধ্বস ঠেকানো অসম্ভব !
আমার মনে হয়, প্রথমে প্রয়োজন বাবা মায়ের শুদ্ধি, একটু ভাবা প্রয়োজন, কি করছি, কিভাবে করছি এবং এটা কী ফল আনবে। অন্ধের মতো বাচ্চা নিয়ে প্যানিক খেয়ে ছুটাছুটি করলেই কি বাচ্চা মানুষ হয়? যতদিন বাচ্চাকে কোলে নিয়ে মা সুর করে “আতা গাছে তোতা পাখি” শোনানোর বদলে বাচ্চার হাতে আইপ্যাড ধরিয়ে কিংবা ডরেমন দেখতে দিয়ে হিন্দি সিরিয়াল গিলে যাবেন, যতদিন বাবা মা ধর্মীয় (সব ধর্মের কথাই বলছি কেননা সব ধর্মই সত্কর্মের উপদেশ দেয়) ও সামাজিক মূল্যবোধ মাথায় রেখে ছেলে মেয়েকে বিবেক, আচার আচরণ, মানবিকতা, বোধ ও বিশ্বাসের ভিত্তি গড়ে না দিয়ে উল্টো যাবতীয় রীতি নীতি সসপ্যানে করে চুলোয় তুলে নিজের সন্তানের গায়ে উপটান আর শশার রস মেখে তাকে বিউটি কুইন কনটেস্ট উইন করে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড এর সুপারস্টার হতে পাঠাবেন, যতদিন আমাদের কাছে স্ট্যাটাস সিম্বল হবে সীসা বার, ডিজে পার্টি, নেশার সামগ্রী অথবা প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের ন্যাকামী ধরনের ঢং – আমি তো কোনদিন কিচেনেই যাইনি ! যতদিন পর্যন্ত কোমরের আধা হাত নিচে ছেড়া ফাটা জিন্সের প্যান্ট পরে চুলে জেল দিয়ে দু অক্ষর ইংরেজীর সাথে বিকৃত বাংলা মিশিয়ে কথা বলা প্রতিবেশী অত্যাধুনিক উঠতি তরুনের দুই গালে মুরুব্বি হিসাবে দুটো চড় কষানোর শক্তি সাহস আমাদের হবে না …. ততদিন আমরা তিন্নি, ঐশী বা তার ড্যান্সার ছেলেবন্ধুদের ব্যাপক হারে উত্পাদন করে যাবো … সংখ্যার বিচারে একসময় তারা লক্ষ থেকে কোটি হয়ে ছুরি চালাতে আসবে আমাদেরই বুকে ।
জী, সেই দিন বেশী দূরে নয় … কাজ সহজ করে দিতে সন্তানকে শিখিয়ে দিন ঠিক কোন জায়গায় পোচ দিলে তাড়াতাড়ি মরবেন আপনি !
পুনশ্চ : দয়া করে কেউ ভাববেন না আমি ব্যক্তিগত অথবা সমষ্টিগতভাবে কাউকে আক্রমন করতে চাইছি । আমি এও বলতে চাইছিনা সবকিছু নষ্টদের দখলে । আমি শুধু বলতে চাচ্ছি, এমন চললে সামনে দিন আসলেই খারাপ ! সতর্কতা প্রয়োজন, আজ …. এখুনি !