সাবধান – জামাত আর ইসলাম একাকার করে জামাতিদের হাতে লাইফ লাইন ধরিয়ে দিবেন না
ইদানিংকার অনেক বক্তব্য আর ব্লগ পোষ্টেই জামাত আর ঢালাও ইসলাম তথা ধর্ম বিরোধিতাকে একাকার করে ফেলা হচ্ছে। জামাতের যুদ্ধাপরাধ আর ইসলামকে এক করে এই ধর্মভিরু স্বল্পশিক্ষিত ৯২% মুসলিম অধুষ্যিত দেশে এভাবেই আমরা বার বার জামাতকে রাজনিতিক লাইফ লাইন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি গত বিয়াল্লিশ বছর ধরে।
শাহবাগে নতুন প্রজন্ম রাজাকারদের ফাসি চাচ্ছে, সমাবেশে সামিল হচ্ছে তাদের মানবতবিরোধি স্বাধিনতাবিরোধি নৃশংষ অপরাধের শাস্তির জন্য? না তারা ধর্ম ভিত্তিক রাজনিতি করে বলে? (জামাতি রাজনিতি নয়, যা আইনত অলরেডি নিষিদ্ধ) পৃথিবির একটা গনতান্ত্রিক দেশ দেখান যেখানে ধর্মভিত্তিক রাজনিতির অস্তিত্ব নেই। এমনকি এত দশকের কমিউনিজমের পরেও চিনেও ধর্মভিত্তিক রাজনিতির অস্তিত্ব আছে। হাজার বছরের ইতিহাসের অভিজ্ঞতায় এটাই বলে যে যতদিন এই বিশ্বে ধর্মভিরু মানুষ থাকবে ততদিন ধর্মভিত্তিক রাজনিতির অস্তিত্ব থাকবেই, প্রকাশ্যে অথবা গোপনে।
এধরনের ঢালাও ইসলাম বিরোধি প্রচারনার আড়ালেই ঢাকা পড়ে গেছে রাজাকারদের নৃশংষ যুদ্ধাপরাধগুলি, যা সাধারন মানুষ আর নতুন প্রজন্ম হয় জানতে পারে নি যথাযথ প্রচারনার অভাবে, অথবা জেনেও বিশ্বাস করে নি ইসলাম বিরোধিদের মিথ্যা প্রচারোনা মনে করে।
খুনি যুদ্ধাপরাধি জামাতি আর রাজাকার নেতারা আমাদের দেওয়া সেই লাইফ লাইন ধরেই বিভ্রান্ত করে দলে ভিড়িয়েছে ধর্মভিরু নতুন প্রজন্মের হাজার হাজার শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের। তারা যদি জানতো আর বিশ্বাস করতো, কতো বড় ক্রিমিনাল আর ভন্ড ধার্মিক তাদের নেতারা, তবে তারা যে রাজনিতিই করুক না কেন, ওই যুদ্ধাপরাধিদের বাচানোর জন্য রাস্তায় নামতো না।
শাহাবাগের নতুন প্রজন্মের ব্লগারদের আন্দোলন একাটা সুবর্ন সুযোগ দিয়েছে সারা দেশকে, নুতন প্রজন্মকে, বিশেষ করে নুতন প্রজন্মের জামাতি আর শিবিরদের তাদের নেতাদের নৃশংষ যুদ্ধাপরাধগুলি জানানোর।
শাহাবাগের নতুন প্রজন্মের আন্দোলনে সারা দেশ যখন এক হচ্ছে যুদ্ধাপরাধিদের বিচারে, তখন দয়া করে ঢালাও ইসলামবিরোধি বক্তব্য দিয়ে সবকিছু আবার ঘোলাটে করে দিয়েন না – সারা দেশ আবার বিভ্রান্ত হবে আর জামাতিরা সে সুযোগটা লুফে নেবে।
সব যুদ্ধাপরাধিদের ফাসির চেয়েও এই আন্দোলোনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হবে যদি নতুন প্রজন্মের জামাতি আর শিবিররাও তাদের নেতাদের ফাসির দাবিতে শাহাবাগে সামিল হতে থাকে। তা হবে বাংলাদেশের অবক্ষয়ি রাজনিতির একটা মৌলিক গুনগত পরিবর্তনের ইঙ্গিতবহ।
নির্বোধ/মরেনো,
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
nirbodh@gmail.com
http://nirbodh.wordpress.com/