Suranjit Sen Gupta
সুরঞ্জিত বাবু, সব বিষয়েই অভিজ্ঞতা আর প্রশিক্ষনের কোনো বিকল্প নেই
সুরঞ্জিত বাবু আপনি বড়ই হতাশ করলেন দূর্নিতি লালক, দূর্নিতি তোষক এই মহান জাতিকে।
পাঁচ পাঁচ দশকের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ঘাঁগু রাজনিতিক আপনি, সেই আপনি কি করে ভুলে গেলেন যে সব কিছুর মতোই দুর্নিতি আর চুরি করতেও অভিজ্ঞতা আর প্রশিক্ষনের কোনো বিকল্প নেই। সুরঞ্জিত বাবু আপনি সত্যিই বড় হতাশ করলেন দূর্নিতি লালক, দূর্নিতি তোষক এই মহান জাতিকে।
বুঝলাম, জিবন সায়াহ্নে সরকারের শেষ বেলায় মন্ত্রি হয়ে আপনি যত তাড়াতাড়ি যত বেশী মালকামানোর অদম্য কামনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। হয় হয়, বুড়ো বয়সে অনেকেরই এইরকম ভিমরতি হয়। তার উপর আপনি আবার পাঁচ পাঁচ দশকের মালকামানোর অবদমিত কামনায় জর্জরিত – এতদিন ক্ষমতার এত কাছাকাছি থেকেও সুযোগ পাননি, তাই তিব্র হতাশায় নিতি কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন – সবই বুঝে, জাতি ক্ষমাসুন্দর, আপনার সব যতনা আর তাড়নাই বোঝে।
কিন্তু, তারপরেও আপনার মত পাঁচ পাঁচ দশকের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ঘাঁগু রাজনিতিকের ঘটের সব বুদ্ধি লোপ পায় কেমন করে সেইটা বুঝে আসে না। আপনার নাইলে বড় দুর্নিতিতে অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে সুযোগের অভাবে, কিন্তু আপনি কি সেই ঘাটতি পুরন করতে একজন দুর্নিতি চুরিতে অভিজ্ঞ এপিএস রাখতে পারতেন না। গত ৪২ বছরে এতগুলি সরকার আর মন্ত্রী পরিষদ কম কইরা হইলেও কয়েক হাজার দুর্নিতি চুরিতে বিশেষ ভাবে অভিজ্ঞ highly efficient এপিএস তৈরী করছে এই সোনার দেশে। তাদের কাউকে কি নিতে পারতেন না। তা না কইরা এপিএস বানাইলেন একটা আনাড়ী অনভিজ্ঞ বেকারকে – এখন বোঝেন সস্তার তিন অবস্থা।
সবকিছুর মূ্লে আছে আপনার দুর্নিতি চুরিতে অভিজ্ঞতা আর প্রশিক্ষনের অভাব। আপনার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হয় নাই বা সুযোগ কইরা নিতে পারেন নাই, মানলাম। কিন্তু তাই বইলা কি প্রশিক্ষন নিতে পারতেন না কারো কাছ ত্থেকে। এই সুজলা সফল বাংলাদেশে কি দেশবরেন্য বিশ্ববরেন্য সফল দুর্নিতবাজদের কোনো অভাব আছে। এরশাদ সাহেব তো এক সপ্তাহের ক্রাশ কোর্সে আপনাকে দুর্নিতিতে PhD করাইয়া দিতে পারতো শতভাগ গ্যারান্টিসহ। ওনাকে afford করতে না পারলে নিজের দলেই আরো কতো রথি মহারথি আছে, কতো দুর্নিতিতে ঘাগু প্রাক্তন আমলা পুলিশ আছে, তাদের যেই কারো কাছে যাইতে পারতেন। কিন্তু আপনি কিছুই করেন নাই, কোনোরকম প্রশিক্ষন না নিয়া মালকামানোর অবদমিত কামনায় জর্জরিত হইয়া আনাড়ীর মতো নিয়োগ বানিজ্যে নাইমা ধরা খাইলেন।
কমপক্ষে আপনার পূর্বসুরি আবুল হোসেনের ঘটনা থকেও আপনার দুর্নিতিতে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষনের অপরিহার্য্যিতা অনুধাবন করা উচিত ছিল। আবুল হোসেন ব্যাবসায়ি থেকে মন্ত্রি, তার ঘুষ দেওয়ার ব্যাপক অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তার ঘুষ গ্রহনের সিমিত অভিজ্ঞতাই তার কাল হয়ে দাঁড়ায়।
সত্যি সুরঞ্জিত বাবু আপনি বড়ই হতাশ করলেন দূর্নিতি লালক, দূর্নিতি তোষক এই মহান জাতিকে। নিজের অনভিজ্ঞতায় কালিমা লিপ্ত করলেন বহুবার দুর্নিতিতে বিশ্ব চাম্পিয়ন হওয়া এই মহান দেশকে।
যাই হোক শেষ সুরঞ্জিত বাবু, পরের খবরটায় আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আপনার নেত্রী, অপরিপক্ক হলেও বিবেচনাহিন নন। দুর্নিতিতে আপনার অভিজ্ঞতা আর প্রশিক্ষনের অভাব বুঝতে পেরে, আপনাকে অভিজ্ঞতা আর প্রশিক্ষন অর্জনের সুবিধা করে দিলেন, দপ্তরবিহিন বা শিক্ষানবিশ মন্ত্রির পদ দিয়ে। এতে আপনি প্রোটেকশনসহ দুর্নিতিতে অভিজ্ঞতা অর্জন ও প্রশিক্ষন গ্রহনের সুযোগ পেলেন। আশা করি আপনি আপনার মহান নেত্রির এই বদন্যতা হেলায় হারাবেন না – আপনি আবার যা বলদ।
আপনার নেত্রির উদ্যোগে আশান্বিত হলাম, বাংলার দুর্নিতি উজ্জ্বল আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা হয়তো কেটে যাবে – আমরা হয়তো আবার দুর্নিতিতে আমাদের ১ নম্বর ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংটা ফিরে পাব।
তবে আপনার নেত্রী যা অপরিপক্ক ও অদূরদর্শি। তার সফলতা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে – সামান্য আজম ড্রইভারেরা, পিওনেরা, কাজের লোকেরা, রিকশাওয়ালা, চাকুরিপ্রার্থি অপমার সাধারন পাবলিক যদি দুর্নিতির বখরা নিতে চায়, তবে তো দুর্নিতি করার মূল ইন্সেন্টিভই নষ্ট হয়ে সব শেষ হয়ে যাবে।
যাই হোক, আপনি, আপনার নেত্রী আর আপনার দল যদি অনঅভিজ্ঞিতা আর অপরিপক্কতার কারনে ভেসেও যান – বেগম সাহেবা তো আছেন। তিনি ও তার দলের ভীষন অভিজ্ঞরা নিশ্চয় সব সামলে নেবেন, আমরা নিশ্চয় আবার দুর্নিতিতে আমাদের ১ নম্বর ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংটা ফিরে পাব।
নির্বোধ
১৮ এপ্রিল, ২০১২