E-voting and Peoples Involvement

E-voting and Peoples Involvement

ই-ভোটিং ও জনগণের সম্পৃক্ততা

আলমামুন আশরাফী

লেটেষ্ট টেকনোলজি নানা টেকনিকের জন্ম দিচ্ছে, ঘরে বসেই ব্লগে-ব্লগে নানামুনির নানামত তুলে ধরার সুযোগ হচ্ছে। ধন্যবাদ যারা এ সুযোগ করে দিচ্ছে আপামোর জনগণের জন্য। এটা একটা মহৎ জনসেবা যেখানে লাভের অংক নেগেটিভ। অথচ যারা পলিটিক্স করে দেশের স্বার্থে তাদের লাভের অংক লিমিটলেস। আনলিমিটেড ফ্লাক্সিলোডে ব্যাংকের একাউন্ট অভারলোডের রাস্তা খুজে বেড়াচ্ছে দেশ-দেশান্তরে। খালেদা জিয়া আসন্ন ক্ষমতা ফ্লাক্সি করতে ব্যস্ত আমেরিকায়, আর শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত সফরের নামে স্বপরিবারে দুনিয়া চষে বেড়াচ্ছে রাজকোষের দাক্ষিণে। অথচ লিকুইডিটির অভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশর স্বপ্ন ধুসর, স্টক মার্কেট অচল। থলের হুলো বিড়াল লুকাতে বেসামাল অর্থমন্ত্রী, সংসদ উত্তপ্ত আর কেচ ঠুকছে খালেদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার ৩ বছরে অর্জন মাত্র কয়েকটা ওয়েভপেজ উদ্ভোধন যা বস্তুত অকেজো, ভিতরে ঢুকলে আন্ডার কন্সট্রাকশন সাইনবোর্ড। সাদা সাইন রঙিন করতে ইলেকশনের আগেই তাই আবার নানারকম ফন্দিফিকির/ছলচাতুরী শুরু করেছে দুদল জনগণের জানমাল ধ্বংশ করে। এ ধারার পুরাতন গ্লানি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, আর নূতন আমদানি হালের ই-ভোটিং সিষ্টেম চালু করা। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা যে ভিসনলেস ছিল তা এখন পরিষ্কার, মাঝপথে নিরিহ মানূষ হারালো হাজার-হাজার কোটী টাকা। ফলে ই-ভোটিং আবার ভিশনলেস হোক কোটি টাকা নষ্ট করে অন্তত জনগণ তা চাইবে না বলে আমার বিশ্বাস।

তত্ত্বাবধায়ক সিস্টেম জন্মে যেমন জনগণের কোন সম্পৃক্ততা ছিল না (এটা রাজনীতিবিদদের নষ্ট রাজনীতির সার্টিফিকেট), তেমনি ই-ভোটিং ব্যবস্থায় জনগণের সম্পৃক্ততা আজোব্দি হয় নাই। মানুষ আজো জানে না ই-ভোটিং কি, কোন রেশনে আমদানি। সম্প্রতি ইসি কয়েকজন নামী-দামী লোক (সুশীল সমাজ) ডেকে মিটিং করল এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। অনেকে বললেন আমরা পিছনে ফিরতে চাই না। অথচ শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালে ফিরে যাওয়ায় বিভোর তাতে কোন ভ্রক্ষেপ নেই সুশীল সমাজের! তবে কি ধরে নেব, মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত? যদি তাই হয় তাহলে অযাথা বিবেক দেবার প্রয়োজন আছে কি? আমার কাছে মনে হচ্ছে ই-ভোটিং ব্যবস্থা চালু করার আগে এ নিয়ে যথারীতি জনগণের মধ্যে জাগরণ গড়ে তুলতে হবে। তারা যেন বুঝতে পারে যে, ই-ভোটিং ভাল ব্যবস্থা এবং এটাতে ভোট কারচুপি রোধ করা সম্ভব। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব মডেল এটি। এ ক্ষেত্রে প্রথমে মডেল হিসাবে ১/২ টি কেন্দ্রে চালু করে দেখা যেতে পারে! বলে রাখি, আমি নিজেও ই-ভোটিং ব্যবস্থার বিপরীতে নয়।

ই-ভোটিং হঠাৎ করে চালু করলে ভোট মিস/রিগিং হবার সম্ভাবনা প্রখর। বুঝতে উনিশ থেকে কুড়ি হলেই ভোট কাঙ্ক্ষিত ই-বাক্সে না ঢুকে চলে যাবে অন্য ঘরে যা সহজেই অনুমেয় উপরের ছবি থেকে। যাদের এ সম্বন্ধে কোন ধারণাই নেই তারা কিভাবে এ থেকে উপকৃত হবে? এমনিতেই ভোটের সময় নানা রকম বিপদ ভর করে, মারা যাই মানুষ; তার উপর মরার উপর খাড়ার ঘা। ইলেকশন বুথের শিক্ষিত/বেকার মানুষ চালাকি করে ডুকায়ে দিবে অন্যের ভোট মামার মার্কায়। আমার বাড়ি ঝিনেদা, উইপি নির্বাচন হচ্ছে। প্রতিদিন গুলাগুলি হচ্ছে কারণ যারা প্রার্থী তারা হয় সর্বহারা দলের প্রাক্তন কসাই, নয়তো পুরাতন মস্তান। গুলাগুলির দাপটে মানুষের আত্তা খাচা ছাড়া, সন্ধ্যা হলে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ চলছে। পত্রিকার পাতা ঘাটলেই এর ভরি-ভরি প্রমান পাওয়া যাবে। যেমন ঝিনাইদহ ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা, মৃত ৩ – – দৈনিক সংবাদ, ১৩ জুন ২০১১; নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, মৃত ৫ – – মানবজমিন, ১৩ জুন ২০১১; সরাইলে নির্বাচন সহিংসতা, মৃত ৩ – – দৈনিক দিনের শেষে, ১৩ জুন ২০১১। এগুলো কয়েকটা টুকরো খবর মাত্র, রিয়েলিটি আরো ডেনজারাস, ধরা ছুয়ার বাইরে। মিডিয়া এখনো এসব অন্ধকার গলিতে আলো দিতে পারেনি। এগুলোতে সময় না দিয়ে নির্বাচন কমিশন ব্যস্ত ই-ভোট নিয়ে (সংলাপ নিয়ে ব্যস্ত ইসি, নির্বাচন মনিটরিংয়ে ডিলেডালা ভাব, দৈনিক মানবজমিন, ১৩ জুন ২০১১)। এখন প্রশ্ন হল, জনগণ কিভাবে ইসিকে বিশ্বাস করবে যে, ই-ভোটিং হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? যৌক্তিকতা কোথায়? আস্তা কিভাবে আসবে ইসির উপর যেখানে ইউপি ইলেকশন নিয়ে লেজে-গবরে অবস্থা, মানুষ মরছে পাখির মত?

একটা গল্প না বলে পারছি না। কিছুদিন আগে ব্যাংকে গেলাম। যাবার সাথে সাথে তারা কাসুন্দি শুরু করলো নূতন অফার নিয়ে। আমি বললাম যেটাতে আছি তার কি অবস্থা? উত্তর আগেরটার সুবিধা মিসিং হয়ে গেছে। আমি বললাম আগে উঠা ঠিক কর তারপর নূতন অফার দাও। এটা থেকে আমি বলতে চাইছি যে, ইসি যদি উইপি নির্বাচনই ঠিক করে করতে না পারে, তাহলে অন্যগুলো সঠিকভাবে হবে তার নিশ্চয়তা কোথায়, সাথে ই-ভোটিং ব্যবস্থা? এতকিছু উপেক্ষা করে ইসি কেন নূতন মডেল নিয়ে ব্যস্ত হঠাৎ করে তা বোধগম্য নয়। হতে পারে সরকারের ডিজিটালের দুঃস্বপ্ন ডিজিটাল ভোটিং ব্যবস্থা দিয়ে কিছুটা সান্তনা দিতে চাচ্ছে মিথ্যা অজুহাতে জনগণকে। অনেকটা দুটি ভগ্ন ডিজিটাল বাইট জোড়া দিয়ে আন্তমহাদেশীয় ক্যাবলে সংযোগ স্থাপন করে বিদেশে ডায়াগোনাইজ/অস্ত্রপাচারের ব্যবস্থা হচ্ছে।

রাজনৈতিক দলগুলো হরহামেশা জনগণের দোহাই দিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে নদী পার হয়। কিন্তু জনগণের সম্পৃক্ততা যাচাই করার কোন উপায় নেই। যেমন বিএনপি এখন বলছে হরতাল জনগণের দাবি আর পুলিশ জনগণের জানমাল রক্ষায় ব্যস্ত! এগুলো ডাহা মিথ্যা কারণ আমাদের দেশের পুলিশ বা রাজনৈতিক দল জনগণের জানমাল দেখভাল করে এটা মানুষ বিশ্বাস করে বলে মনে হয় না। এই ডাহা মিথ্যা প্রমাণ বা তুলে ধরার জন্য মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। ১০০০/২০০০ মানুষের মতামত নিয়ে একটা ডাটা তৈরী করা কঠিন কিছু নয়। এগুলো করলে মিডিয়ার প্রতি মানুষের আস্তা আরো বাড়বে। ১৬ কোটী লোকের দেশে অন্তত ৬৪টা মিডিয়া জরুরী। এবারের জনগণের স্লোগান হওয়া উচিত মিডিয়া শক্তিশালীকরণ। আওয়ামেলিগ/বিএনপি যেই ক্ষমতায় আসুক তারা মিডিয়াকে স্বাধীন করবে এবং নূতন দিক নির্দেশনা থাকবে ইলেকশন মেনুফেষ্টুতে। মিডিয়া সরকারের ভুল শুধরে দেবে ডিজিটাল আর্কাইভ ঘেটে। যেমন শেখ হাসিনার ১০ টাকার চাল খওয়ানোর মিথ্যা আশ্বাস ভন্ডুল করতে পারেনি মিডিয়ার কারণে। এতে করে রাজনীতিবিদদের মিথ্যাচার কমবে, হরহামেশা জনগণের দোহাই দিতে পারবে না।

লেখক গভেষক ও শিক্ষক

2011/pdf/evote_593657198.pdf ( B) 


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment