Bribie Island
শান্ত-সুন্দর ব্রাইবি, (Bribie Island)……:)
আগেই বলেছি একটু অবসর মিললোতো আমি দে ছুট !! পাখীর মত ডানা মেলে উড়ে বেড়াই যাই এক যায়গা থেকে আর এক যায়গায়……:)
তারপর মন প্রান ভরে উপভোগ করি পৃথিবীর অপার সৌন্দর্য্য !!
দুচোখ ভরে দেখি সেসব আর স্মৃতির মনি কোঠায় জমিয়ে রাখি যাতে করে ভবিষ্যতে স্মৃতির মালা থেকে একটি একটি ফুল তুলে তার গন্ধ শুঁকে সেই বর্তমানকে করে তুলতে পারি অতীতের মত সুখময় !:)
কোথাও বেড়াতে যাবার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে কোথায় যাব আর সাথে থাকবে কে বা কারা ?:|
সৌভাগ্যক্রমে আমি সবসময় খুব ভাল সফরসন্গী পেয়ে যাই, নিজের পরিবারতো আছেই তাছাড়া সাথে কিছু বন্ধু যদি থাকে যাদের সাহচর্যে ভ্রমনের মুহুর্তগুলি আনন্দঘন হয়ে ওঠে তাহলে মন্দ কি ?;)
এভাবে চিন্তা করতে করতে হটাৎই আমি আর আরিয়ানা মিলে প্ল্যান করে ফেললাম, শহর থেকে কিছুটা দূরে “ব্রাইবি আইল্যান্ড”এ যাবার, আসলে যায়গাটার প্রস্তাব আরিয়ানাই দিল আমাকে।
আমিও এমন যায়গায় যেতে চাচ্ছিলাম, যেখানে দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায়, কারন প্রোগ্রামটা করছি আমরা স্বাভাবিক ছুটির দিন গুলিতে, কোন এক্সট্রা ছুটি নাই কারও।
আমরা যথারীতি রওনা হোলাম এক শনিবার ভোরের বেলায় , সাথে মিষ্টি মেয়ে আরিয়ানা আর ওর হাস্যোজ্বল স্বামী ক্লিফ……..:)
মনের সুখে পিন্টুকে মনে করে গুনগুনানো শুরু করলাম…….
ছোট্ট সুন্দর এক দ্বীপ এই ব্রাইবী আইল্যান্ড, শান্ত সৌন্দর্যে ভরপুর ! ব্রিজবেন থেকে দেড় ঘন্টা আর এয়ারপোর্ট থেকে ৪৫ মিনিট ড্রাইভ এই বালি-দ্বীপটি মর্টন বে তে অবস্থিত যেটা কিনা দৈর্ঘ্যে ৩৪ আর প্রস্থে ৮ কিলোমিটার।
আরিয়ানাদের সাথে গল্প করতে করতে আর চারিপার্শ্বের সৌন্দর্য্য দেখতে দেখতে কখন যে পৌছে গেলাম টেরই পেলামনা…..সারাটা রাস্তা খুবই আনন্দের মাঝ দিয়ে কেটে গেল।:D
মর্টন বে ‘র তিনটি প্রধান বালিদ্বীপের ভেতর এটাই সবচেয়ে ছোট দ্বীপ। বাকী দ্বীপ দুটি যথাক্রমে নর্থ স্ট্র্যাডবোর্ড (North Stradbroke Island) আর মর্টন বে আইল্যান্ড (Moreton Island), এই তিনটি দ্বীপই সমুদ্র পারকে ভেংগে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
সাগরের শান্ত অপরুপ দৃশ্যে মন গেয়ে ওঠলো হেমন্তের সেই……….
দ্বীপটির অধিকাংশ এলাকাই বসতিহীন, এটাকে ন্যাশনাল রিসার্ভ ফরেস্ট হিসেবে গন্য করা হয়। ১৯৬৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ল্যান্ডের সাথে যোগাযোগের জন্য একটি ব্রীজ স্থাপিত হয়।
পৌছানোর পর দ্বীপটির সবুজ শান্ত স্নিগ্ধতা আমাকে অভিভূত করে ফেললো ! পানির গভীরেও কি লুকিয়ে থাকতে পারে এমন সৌন্দর্য্য !!
প্রতিটি বস্তুই যেন এক একটি আলাদা তাৎপর্য্য বহন করে !
শুকনা গাছের গুড়িগুলিও যেন নদীর সাথে সাথে থাকতে চায় !
পাতাহিন গাছ গুলি দেখে মনে হোল শুকনা কাঠেও কি এতটা সৌন্দর্য্য লুকিয়ে থাকতে পারে ?
গাছের গুড়িগুলি যে কি চমৎকার ভাবে বিছিয়ে আছে, মনে হচ্ছে কেও গিয়ে সাজিয়ে রেখে এসেছে অথচ ওগুলি প্রাকৃতিক ভাবেই ওভাবে সাজানো !
ঘুরতে ঘুরতে হটাৎ চোখে পড়লো “জেলি ফিস”……:)
বালির বস্তাগুলি যায়গায় যায়গায় বিছানো ! যেগুলি কিনা সমুদ্র পারকে ভাংগনের হাত থেকে রক্ষা করে………।
এগুলিকে “ম্যান গ্রো ট্রি” বলা হয়, কেন ? নিজেও জানিনা…….:|
পাখিটি অনেকক্ষণ ধরে এভাবে চুপচাপ বসে…….কাছে গেলেও , ছবি তুললেও নড়ছেনা, কিছুক্ষণ পর আবিষ্কার করলাম, ওর পা ভাংগা……/#)
ঘুরতে ঘুরতে খাওয়া দাওয়াতো চলছেই যথারিতী……..এবার সময় হোল লান্চের…..:P
গাড়িতে বসে গরম চা ! ফেরার সময় বৃষ্টি যেন আমাদের বেড়ানোর আমেজটাকে পরিপূর্ণ করে দিল ।
বুক ভরা প্রশান্তি নিয়ে ঘরের দিকে রওনা হোলাম…….