Bipod Aashche Bipod!

Bipod Aashche Bipod!

বিপদ আসছে বিপদ! -ড.ফরিদ আহমেদ

বাংলাদেশ যা ছিল এক সময়ে স্বপ্নের দেশ সেটি এখন চরম সামাজিক নিরাপত্তার হুমকিতে। ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চেতনায় পাকিস্তানের সঙ্গে জোট বেঁধে পূর্বপাকিস্তান সৃষ্টি করে এদেশের মানুষ শান্তি পায়নি। পাকিস্তানীদের শোষণ ও ৭১ এর বর্বরতা অবসান ঘটিয়ে বীর বাঙালী দেশটিকে স্বাধীন করার পর মুসলিম বিশ্বে বন্ধুহীন হয়ে পড়ে। ভারতীয় দৌরাত্ব নতুন করে যন্ত্রনা দিতে থাকে। চারদিকে সব শোষক- কি বৃটিশ কি পাকিস্তানী কি ভারত সবাই এদেশের মানুষকে কেবল শোষণ করতে চায়। বন্ধুবেশে আদর্শ বিক্রি করতে চায়।

এমনি সব টানা পোড়ন আর বাংলাদেশ সইতে পারছে না। একদিকে জঙ্গিবাদ আর অপরদিকে এর নির্মুলের বিভিন্ন ভ্রান্ত চেষ্টা। এসব কিছুর সাথে যুক্ত সামাজিক বঞ্চনা। ধনী-দরিদ্র বৈষম্য জন সংখ্যার চাপে এতই প্রকট হয়েছে যে যেকোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে সামাজিক বন্ধন। যেকোন মুহুর্তে তাঁরা মেতে ঊঠতে পারে হানাহানিতে। নীরবে অনেক কিছু মানুষ সহ্য করছে বটে। কিন্তু যে কোন সময় মানুষ বেঁকে বসতে পারে। বিডিআর বিদ্রোহ, গার্মেন্টস অশান্ত, দ্রব্যমূল্য, বেকারত্ব, বিদেশী শ্রমবাজারে ধস সামাজিক অস্থিরতাকে প্রকট করে তুলেছে। মালিক আর আগের মত নিরাপদ বোধ করেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা গানম্যান চেয়েছেন। এসব বিষয় অতি তুচ্ছ মনে হলেও আমি এসব কিছু তুচ্ছ করে দেখতে পারছিনা।

জনসংখ্যা শক্তি হিসেবে দেখার দিন শেষ। এখন তাঁরা এমনই একটি জীবন চায় যা সহজেই পাওয়া সম্ভব নয়। আর তাই বেছে নিচ্ছে নানা ধরণের অগ্রহণযোগ্য পথ। আমরা অনেক এজেন্ডা সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়েছি বটে। কিন্তু সেগুলি বাস্তবায়নের জন্য যা প্রয়োজন তা ( ঝড়পরধষ ঈধঢ়রঃধষ) বাংলাদেশের আছে কি? ২০০৯ সালে ব্যাপক বিজয় লাভের পর দলটি চট্রগ্রাম মেয়র নির্বাচনে হেরেছে। নিজামী-মুজাহিদদের জেলে নিয়ে সাময়িক রক্ষা পেলেও ইতিমধ্যে যে আরোও লক্ষ মুজাহিদ জম্ম নিয়েছে তাঁদের মোকাবেলার করবার শক্তি সরকারের আছে কি? ধর্ম ও বঞ্চনা দুটি যখন বন্ধু হয় তখন কি ভয়ানক হয় তা সহজেই অনুমেয়। প্রয়োজন সচেতনতার। কিন্তু কারোও মধ্যে সেটি দেখা যাচ্ছে না। বরং মারমুখি হয়ে উঠছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ।

আজ সময় এসেছে অগ্রাধিকার নির্বাচনের। অর্থনীতির কাছে শিক্ষা হেরে গেছে। তাই বন্দ হয়ে গেছে স্কুল-কলেজ। এর থেকে উত্তরণের চেষ্টায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু কেক কেটে আমরা সেই ঐক্য নষ্ট করছি। ছুরি যেন কেকে নয় জনগণের গলায় চালানো হচ্ছে। পেছনে আছে ধর্মান্ধতা। মুক্তি কিসে জানিনা। তবে বিপদ আসছে তা সহজেই আঁচ করছি।

লেখক: অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment