ক জ্ঞ ফোটা রক্তে এক ফোটা চোখের জল হয়, বলতে পার বন্ধু …
১.
উপরের শব্দগুলো আমার নিজস্ব সৃষ্টি কোন লেখা নয় , কথাগুলো কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি সুুন্দর সমৃতিচারণমূলক কবিতার চরণের কতগুলো শব্দের অংশ । আমার নিজস্ব পছন্দের কবিতাগুলোর মধ্যেকার একটি । অসাধারন সুন্দর একটি কবিতা , মনযোগ সহকারে পড়লে নিজের অজান্তে চোখের জল গড়িয়ে যাবে -।
পিতৃশোক , মাতৃশোক , ভ্রাতা হারানোর শোক ,বোন হারানোর শোক ,নিজস্ব একান্ত আপনজন হারানোর শোক বা ব্যাথাগুলো ; যারা হারাননি তাদের পক্ষে মর্মে মর্মে উপলব্দি করা যে কত কঠিন , তা যারা হারাননি তাদের পক্ষে বুঝা সত্যিই , মুশকিল । কত যে ভয়াবহ এবং নির্মম এ ব্যাথা তা যারা হারিয়েছেন তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতে পারেন ?
শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন – নেত্রী বলুন দেখি , আপনার পরিজন হারানোর কষ্ট ? বলুন দেখি, নিষপাপ শিশু ভাই হারানোর কষ্ট ; বলুন দেখি , নিরীহ নিষপাপ মা হারানোর কষ্ট ; বলুন দেখি , বাবা হারানোর কষ্ট ? উত্তর আসবে একটিই – তা হলো রক্ত দিয়ে শরীরের ভেতরে গড়া চোখের জল ! য়ের চেয়ে বেশী কিছু নয় , আশা করা ও উচিত নয় । শেখ হাসিনা যদি গজনীর সুলতানদের মত হতেন – তাহলে গজনীর সুুলতানরা যেভাবে আপন ভাতৃ হত্যা প্রতিশোধ নেবার জন্যে সাত দিন – সাত রাত্রি দিল্লীর মসনদ পুঁড়িয়েছেন , সে রকম হতে পারত । কিন্তু তা হবার নয় ; কারন তিনি যে সেই ঔরসে জন্ম নেয়া একজন মেয়ে , যার অঙ্গুলি হেলনে সোনার বাংলার নদীর জলে , ধান -সরষের ক্ষেতে নাচন ধরে যায় ; যার কল্যাণে প্রবাসে আমি মাথা উচুঁ করে বলি , আমার দেশের নাম বাংলাদেশ । সেই পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা তিনি । পিতা অসত্য , অন্যায় , হিংস্রতার শিক্ষা তার সন্তানদের দিয়ে যাননি , শিখেননি ,জানেন ও না । মানুষকে অসম্মান করা শেখেননি ।
সবচেয়ে আশ্চর্যয়ের ব্যাপার হোল, দেশের বিচারকরা নাকি একটি আত্মস্বীকৃত হত্যাকারীদের হত্যার রায় প্রদানে অস্বস্তিবোধ করেন । আমাদের চিন্তার সময় এসেছে , এই জাতিয় লোকদেরকে আমরা প্রজাতন্তের কর্মচারী হিসেবে রাখব , নাকি রাখা উচিত ? যারা সত্যের , সুুন্দরের , ন্যায়ের পক্ষে লড়তে জানে না , তাকে বা তাদেরকে আমাদের কোন প্রয়োজন নেই ; হউক সে যত বড় ডিগ্রীধারী । পিতা হত্যার প্রতিশোধ নেবার জন্যে কি , আমাদেরকে আরো অপেক্ষা করতে হবে ? কিন্তু কেন ???
সালাউদ্দিন কাদের চৌধূরী পিতা ফজলুল কাদের চৌধূরী , যেমন পিতা তেমন তার সন্তান , এটাই বাস্তব চরম সত্য । মানুষ কি রকমের অসভ্যতা জানলে পিতার মৃত্যুর কয়েকদিন আগে বলতে পারে , ১৫ই আগষ্টের হত্যাকান্ডটি নাকি সঠিক ছিল , কত বড় বুকের পাটা সাকাচৌর , বাংলার মানুষ এবার তার পোষ্টমর্টেম করে বের করবে । আমি বুঝি না , এখন ও আওয়ামী লীগের লোকজন কেন এই ইস্যূতে শক্ত অবস্থান নিচ্ছেন না । শেখ হাসিনা না হয় , ভদ্রতার খাতিরে হউক ; শেখ মুজিবুরের কন্যা হিসেবে হউক অথবা সরকার প্রদান হিসেবে হউক কিছু করছেন না বা করতে চান না । কিন্তু আমার প্রশ্ন হোল, আওয়ামী লীগের লক্ষ- কোটি কর্মী সমর্থকরা এখন ও পর্যন্ত করছেটা কি ? তাদের শরীরের চামড়া কি গন্ডারের চামড়ার চেয়ে ও মোটা যে , অনুভূতি আসতে মাসাধিকাল অপেক্ষা করতে হয় ? ১৫ই আগষ্টের হত্যাকান্ডের পরে এদলের লোকজন যেভাবে নির্লিপ্ত অবস্থায় ছিল এখন ও যদি তা হয় – তাহলে আমাদের বলতে হয় যে , তোমাদের রাজনীতি করবার প্রয়োজন নেই , তার চেয়ে ভাল সন্ন্যাসবৃত্তি গ্রহন কর , এটাই উত্তম এবং মঙ্গলজনক ! বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে আওয়ামী লীগ হোল বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের দল , দলের জনপ্রিয়তা ও সব সময় তুঙ্গে কিন্তু শুধুমাত্র উপর থেকে ফ্রন্ট লাইন পর্যন্ত আজেবাজে লোকজনের নেতৃত্বের কারনে কায়েমী স্বার্থবাদী দল ও আমাদের তথাকথিত শত্রুরা বারবার গোল দিয়ে যাচ্ছে । কিন্তু প্রশ্ন হোল আর কতকাল ?
২.
একজন মানুষ যে রকম তার চিন্তা – চেতনা , অনুভূতি ,কর্মফলগুলো ও হবে সেই রকমের । মানুষ ইতর- অসভ্য হলে সে বন্ধুত্ব করবে , খুঁজে ফিরবে সেই রকমের লোকজনদের , এটাই চরম সত্য কথা ।ভাল হলে ভাল । খালেদা জিয়ার পছন্দের মানুষ হলেন সাকাচৌরা , মওদুদরা । যেই সাকাচৌ খালেদা জিয়াকে নাকি বলেছেন – কুকুরের চেয়ে লেজ বড় , খালেদা জিয়ার যদি নূন্যতম আত্মসম্মানবোধ থাকত তাহলে সাকাচৌ কে রাজনীতি থেকে শুধু নন দেশ ছাড়া করতেন , খালেদা জিয়া তা করেননি বা পারেননি কারন উনি এই জাতিয় কথা বলতে এবং শুনতে পছন্দ করেন । তা নাহলে আমি হলে বলতাম প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব , তবুও ইতরদের সাথে নয় ।যেটা করবার সাহস দেখিয়েছেন বি চৌধূরী , প্রয়োজনে নিজের হাতে গড়া দল ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সাকাচৌরা বায়না ধরে খালেদা জিয়ার কাছে সংসদের দুই নম্বর সিটের জন্যে ; যার নাকি সংসদে আসবার ই যোগ্যতা নেই । খালেদা জিয়া মওদুদ আহমেদদের তোয়াজ করেন , কিন্তু কাদের জন্যে , কিসের স্বার্থে ? যেই মওদুদ আহমেদের এলাকার লোকজন তাকে ছুঁড়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন , সেই মওদুদ আহমদকে খালেদা জিয়া তার নিজের আসন থেকে সংসদে এনেছেন , আবার শুনা যাচ্ছে দুই নম্বর আসনটি ও নাকি পেতে যাচ্ছেন ? কিন্ত ু প্রশ্ন হোল বিএনপি কি এখন ও কিছু শেখে নাই অতীত থেকে – বাস্তবতা থেকে । এই হোল সেই ভদ্রবেশী মওদুদ , যে নাকি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে খুনী মুশতাকের পর সবচেয়ে জঘন্য প্রাণী ।বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে ইতর প্রাণীটির নাম হোল মওদুদ যে নাকি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ধ্বংসের জন্যে এমন কোন কাজ নেই যা করেনি । তারপর ও বিএনপি তাকে ভাসলবাসে কারন যে, যেরকমের পছন্দ ও সেরকমের।
৩.
পরিশেষে সংক্ষেপে বলতে চাই – তিনটি ফ্রন্টে বর্তমান সরকারকে একযোগে লড়তে হবে ।
ক. সোনার বাংলা প্রতিষ্টার জন্যে গণতন্ত্র ও উন্নয়ণের জন্যে ।
খ. দেশের অনীষ্ট সাধনে ব্রতীতেরত ৭১য়ের পরাজিত দেশী- বিদেশী শত্রু ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ।
গ. সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের মধ্যেকার ঘাপটি মেরে বসে থাকা দেশের অনীষ্ট সাধনেরত তথাকথিত শিক্ষিত ইতরদের বিরুদ্ধে ।
আরশাদ হোসেন ভূঁইয়া ।
এডেলেইড , অষ্ট্রেলিয়া —
১৭ই আগষ্ট ২০০৯
লেখক পরিচিতি : ডিপ্লোমা এন্ড এডভান্সড ডিপ্লোমা অফ হোটেল ম্যানেজম্যান্ট (ক্যানবেরা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ) , ব্যাচেলার অফ হোটেল ম্যানেজম্যান্ট ( ইউনির্ভিিসটি অফ ক্যানবেরা ) ,গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ ইংলিশ ফর প্রফেশনাল পারপাজেজ ( ইউনির্ভিিসটি অফ ক্যানবেরা ) ,কোয়ালিটি ম্যানেজম্যান্ট অন সাপোর্টিং ইনডাসট্রিজ ( পি , এস , বি সিংগাপুর ) , বিএস এস অনার্স , এম এস এস রাষ্ট্রবিজ্ঞান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ) । লেখক ক্যানবেরা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ষ্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের ২০০১ /০২ দুই ,দুইবার নির্বাচিত প্রতিনিধি ।