দ্বি-খন্ডিত জাতীয়তা: কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব?
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে সম্প্রতিকালে কিছু লেখা ছেপেছে বাংলাদেশের পত্রিকা। সেসব লেখা প্রমাণ করে নেতৃত্বের সংকট উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা। ১/১১ পর মাইনাস ফর্মুলা নিয়ে ও নোবেল বিজয়ী ড. ইঊনুসকে নিয়ে যারা অগ্রসর হয়েছেন তাদের চিন্তার সঙ্গে এই লেখাগুলোর একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে। আমাদের সেনাপ্রধানও একসময় এররকম মনে করতেন– হয়তো তাঁদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে বা স্বত:প্রণোদিত হয়ে। আর তাই তিনি এক পর্যায়ে বলেই ফেললেন দুই নেত্রী আমাদেরকে দূশাসন দিয়েছেন। এসব আলোচনা যে ধারার সৃষ্টি করছে তা
উন্নয়নতত্ত্ব সম্পর্কে আমরা প্রথম পরিচয় অস্ট্রেলিয়ার নিঊ সাঊথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০১ সালে ‘International Development Policy’ ক্লাসে। সেই ক্লাসে আমাদের এক ভাই বর্তমানে সচিব, একটি ছবি এঁকে বাংলাদেশের উন্নয়ন এর চেহারা তুলে ধরেন। আমার এখনও সেই ছবিটি চোখের সামনে ভাসে। তিনি দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের চোহ
ারাটা হল পেট মোটা একটি মানুষ যার বাকি সবকিছু লিকলিকে। অর্থাৎ আমাদের উন্নয়ন সুসম নয়, এবং সুন্দরও নয়। তিনি যথার্থই বলেছেন। কারণ, একদিকে ইমারতের জঙ্গল আর আরেক দিকে হাহাকার।
ওই ক্লাসে ক্যামব্রিজ থেকে দিক্ষিত শিক্ষক মাইকেল জনসন এর কাছ থেকে যা শিখেছি তার সুত্রধরে সুশাসন ও ন্যায় নিয়ে গবেষণায় আকৃষ্ট হই। মাইকেল অবশ্য ড. ইঊনুসের ভক্ত। আমি ততটা নই। কারণ আমি সুদ ও ঘুষ দুই এর বিপক্ষে। তাতে যদি আমরা রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে কারোও মনে সন্দেহ জাগে তাতে আমি ভীত নই।
উন্নয়ন নিয়ে গত ৭ বছর যা পড়েছি তাতে আমার বারবার মনে হয়েছে জার্মান লেখক W Sachs অনেকাংশে সঠিক বলেছেন। তিনি বলেছেন উন্নয়ন ধারণাটি অত্যন্ত সুকৌশলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ১৯৪৯ সালে ‘রাজনৈতিক মূদ্রা’ হিসেব চালু করে দেন। টেকসই উন্নয়ন তারই বিবর্তিত সংস্করণ। আসলে আমরা যারা তাঁর চোখে অনুন্নত তাঁরা কোন দিন উন্নয়নকে ছুঁতে পারবো না। কারণ আমরাতো তাদের চোখে বামুন। তাই উন্নয়ন আমাদের জন্য একটি মীথ।
পাশাচাত্যরা যে উন্নয়নের ধারণা দেন তা কেবল আমাদেরকে লোভী span> করে তোলে। আমরা তখন পরিশ্রম, শোষণ ও লুন্ঠনের পথ বেছে নেই। এবং এতেই খুলে যায় পাশ্চ্যাত্যের বাজার। আমরা আর তখন হাওরের জোছনায় বা জোনাকীর আলোতে সুখ পাই না। আমরা বেলী ফুলের মালায় তুপ্ত হই না। আমরা ছুটি সোনারগা, রেডিসন বা ফেরারী গাড়ির পিছনে কিংবা ঝলমলে সোডিয়াম বাতির দিকে। W Sachs এর লেখা পড়ার পর আমি টেকসই উন্নয়নের বিপক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়ি। সমালোচনা করে পাতার পর পাতা লিখে ফেলি। মাইকেলকে বলি উন্নয়ন একটি দ্বিপার্শ ধারালো ছুরি। এটা যেদিকে যায় সেদিকেই কাটে
আর রক্ত ঝরায়। মাইকেল আমার সঙ্গে একমত হন। তবে তিনি আমাকে ভাল নম্বর দেন না। কারণ আমিতো তাঁদের তোসামদ করছি না।
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে আমার ভাবনা চলছেই। আর তাই বিগত লেখার পরিপ্রেক্ষিতে ছয়টি অচেনা মানুষের কাছ থেকে ইমেল পেয়েছি।
দীর্ঘদিন উন্নয়ন তত্ত্ব নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমার মনে হয়েছে দ্বিধাবিভক্ত জাতীয় চেতনাই বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্তরায়। ১৯৭১ সালে আমরা এক বাঙালী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। কিন্তু ভারতের আগ্রাসী ভুমিকা ও সমাজতন্ত্রের নাস্তিকতা আমাদের অপমান করে। আমরা আবার বিভক্ত হয়ে পড়ি। সেই বিভক্ত অবস্থার সুযোগ নিয়ে সংগঠিত হয় রাজাকার–আলবদর ও আলশামসসহ পাকিস্তানীরা। কেবল পাকিস্তানীই নয় ভারতীয় মুসলিমরাও যারা মামু(মালদাহ ও মুর্শিদাবাদ নিবাসী) বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে চলে যান। তারাও যুক্ত হয় এবং আরব বিশ্বে প্রচার করে দেওয়া হয় বাংলাদেশ কিভাবে নাস্তিকতার দিকে যাচ্ছে।
Please click on below attached pdf file for full article.