এডিলেইডে এখন রুবেল বন্দনা
সোমবারের স্মরনীয় জয়ের পর এডিলেড প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন উৎসব মুখর। নানাজনের বাসায় চলছে দাওয়াত আর খানাপিনার পার্টি! বিজয় বন্দনার আসরগুলোতে বেশি চলছে রুবেল বন্দনা। সবার মুখে এক কথা ওই ক্লোজড ম্যাচটিতে আমরা হেরে যেতেও পারতাম। কিন্তু শেষ মূহুর্তে দূর্দান্ত বোলিং’এর মাধ্যমে ম্যাচ বাঁচিয়ে জয় এনে দিয়েছেন রুবেল। এখন কেউ এটিকে বলছেন রুবেল ম্যাজিক। রুবেলের বোলিং’এ মুগ্ধ এক নারী দর্শক বলেন, রুবেলের সব অপরাধ মাপ। অনেকে রুবেলের ব্যক্তি জীবনের সঙ্গে খেলোয়াড় জীবনকে মিলিয়ে গুলিয়ে না দেখতে অনুরোধ করেছেন।
প্রবাসী আসিফ কামাল বলেন এই ম্যাচকে ঘিরে আমরা অনেক দিনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমরা সবাই দলের কাছে চাইছিলাম একটা উপভোগ্য ম্যাচ এবং জয়। কারন আমাদের দলটা অনেক বদলেছে পরিণত হয়েছে বলে এর কাছে আমাদের প্রত্যাশার পারদটা অনেক উচুতে চড়েছিল।। আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের চাওয়ার ষোল আনাই পেয়েছি সোমবারের ম্যাচে। দলটা এখন আমাদের এমন আস্থার সৃষ্টি করেছে যে চাইলে আমরা যে কাউকে হারাতে পারি। ম্যাচ উইনিং প্রবনতা যে দলের মধ্যে গড়ে উঠেছে তা সোমবারের খেলায় আরও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক, সৌম্য সহ অনেকেই ভালো খেলেছেন সোমবারের ম্যাচে। কিন্তু শেষ মূহুর্তে ম্যাচ জিতিয়েছেন রুবেল। আসিফ সবাইকে অনুরোধ করে বলেন কারো ব্যক্তিগত জীবন আর প্রফেশনাল ক্যারিয়ার যাতে গুলিয়ে ফেলা না হয়। অস্ট্রেলিয়ায় একজনের একাধিক গার্ল ফ্রেন্ড থাকতে পারে। কিন্তু সবাই তাকে দেখে তার কাজ দেখে। গার্লফ্রেন্ড দেখে নয়।
তায়ীব অনন্ত বলেন, রুবেল প্রমান করেছেন তিনি এখন বাংলাদেশ দলের অনেক পরিণত, নির্ভরযোগ্য একজন বোলার। ডেথ ওভারে এখন মাশরাফির মতো রুবেল নির্ভরযোগ্য। কিন্তু সোমবারের ম্যাচে যেখানে ১৬৩ রানে ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল সেখানে ইংল্যান্ড দল কী করে রান এতদূর নিয়ে যেতে পারলো, কেন মাশরাফি আগেই দশ ওভার বল করে ফেললেন, কেন ডেথ ওভারে তাসকিনের মতো একজন অনভিজ্ঞ নতুনের হাতে বল তুলে দেয়া হলো, সামনের ম্যাচকে সামনে রেখে এএসব খতিয়ে দেখা দরকার।
চন্দ্রবিন্দু ইমরান বলেন, রুবেলের শেষ ওভারে দূর্দান্ত দুই উইকেট আর স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইন্যালে চলে গেলাম আমরা! পুরো বিষয়টি এখনও আমার কাছে স্বপ্নের মনে হয়। চোখ বুঝলেই রুবেলের বল দুটি দেখি যেন ঝড়ের বেগে ছুটে গিয়ে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিচ্ছে ক্রিকেটের উদ্ভাবক বৃটিশ সাম্রাজ্যের কফিনে! সারা জীবন এ দৃশ্যটি ভুলবোনা। আজমাল হুদা বলেন রুবেলের বল দুটিকে মনে হয়েছে যেন ম্যাজিক! আসলে রুবেল ম্যাজিক আমাদের নিয়ে গেছে স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইন্যালে। পুরো ম্যাচে তামিম ছাড়া সবাই ভালো খেলেছেন। খেলার শ্বাসরুদ্ধকর সময়টায় তামিম ক্যাচটা ফেলে দেয়ায় ভাবছিলাম এই বুঝি আমাদের ম্যাচ মিস! উত্তেজনায় যেন প্রাণ বেরিয়ে যাবে এমন অবস্থা! ওই সময়ে আমাদের প্রান ফিরিয়ে দিলেন রুবেল। তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। এরপর থেকেই মনে হচ্ছে, ইশ রুবেলের জন্যে যদি কিছু করতে পারতাম!
নীনা রাজ্জাক বলেন, খেলা দেখতে আমরা মেলবোর্ন থেকে এডিলেইড এসেছি। দীর্ঘ ভ্রমন জনিত কারনে খুব ক্লান্ত ছিলাম। কিন্তু আমাদের সব ক্লান্তি দূর করে দিয়েছে প্রিয়দলের জয়। আর এই জয় এনে দিয়েছেন রুবেল। তার জন্যে প্রানভরে দোয়া করেছি। আসমা হুদা বলেন আমি কোন দিন কোন খেলা নিয়ে এতোটা উত্তেজনা বোধ করিনি। রুবেল আমাদের জন্যে যা করেছেন তা এক কথায় অতুলনীয়। দেশে তাকে নিয়ে যা হয়েছে তা নিয়ে আমাদের আর কোন ক্ষোভ নেই। তার সব অপরাধ মাপ। কারন রুবেল দেশের জন্যে জান দিয়ে খেলেছেন।